তিল থেকে ক্যান্সার হবার আশংকা চিহ্নিতকরণের উপায়

বেশিরভাগ মানুষই ত্বকের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন নয় এবং তিল থেকে ক্যান্সার হবার আশংকা চিহ্নিতকরণের বিষয়টি অনেক সময়েই উপেক্ষা করেন। ত্বকের ক্যান্সার চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া অন্যান্য ক্যান্সার থেকে একটু আলাদা। তিলের আকার, রঙ, এবং আকৃতির পরিবর্তন ত্বকের ক্যান্সারের একটি প্রধান লক্ষণ হতে পারে। গবেষণা দেখিয়েছে যে নতুন মেলের মাধ্যমে প্রায় ৭০% মেলানোমা শুরু হয়।

প্রকৃতপক্ষে, যদি কারো ত্বকে ১০টি বা তার বেশি অস্বাভাবিক তিল থাকে, তবে মেলানোমা হওয়ার ঝুঁকি ১২ গুণ বেশি। এছাড়া, একজন সাধারণ অস্বাভাবিক তিল থেকে মেলানোমা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১:১০,০০০। তাই, নিয়মিত ত্বক পরীক্ষা এবং অস্বাভাবিক কিছু দেখলে তা সাথে সাথেই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, যাদের ত্বকের ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস, অতিরিক্ত সূর্য এক্সপোজার এবং ত্বক সম্পর্কিত অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টর রয়েছে, তাদের জন্য ডার্মাটোলজিস্টের নিকট মাসিকভাবে ত্বকের পরীক্ষা করা উচিত।

Contents show

ক্যান্সার কীভাবে ঘটে

ক্যান্সারের কারণ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে এবং তিল থেকে ক্যান্সার বিকাশের প্রক্রিয়া বেশ জটিল। অনেকক্ষেত্রে ত্বকের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়, যা শেষে আশপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত তিন ধরণের ত্বকের ক্যান্সার পাওয়া যায়: বেসাল সেল কার্সিনোমা, স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা এবং মেলানোমা।

মেলানোমা হচ্ছে ত্বকের ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ রূপ। এটি মূলত সূর্যের অতিরিক্ত এক্সপোজারের কারনে হয় তবে কোন এক্সপোজার ইতিহাস ছাড়াও সম্ভব। মেলানোমা ভিন্ন ভিন্ন ফর্মে দেখা দিতে পারে যেমন সুপারফিশিয়াল স্প্রেডিং মেলানোমা, নোডুলার মেলানোমা, লেন্টিগো ম্যালিগনা মেলানোমা, এক্রাল লেন্টিজিনাস মেলানোমা এবং অ্যামেলানোটিক মেলানোমা।

মেলানোমার সাধারণ উপসর্গগুলি হলো বহুরঙ্গের তিল, অনিয়মিত সীমারেখা বা তিল, নতুন বাম্প হওয়া বা পূর্বে থাকা তিলের পরিবর্তন, এবং ব্যথাযুক্ত বা চুলকানি ল্যাম্প। কারণের মধ্যে রয়েছে অতিবেগুনী রশ্মির এক্সপোজার, অনেক তিল বা ফ্রেকল থাকার অবস্থা, ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়া এবং হালকা ত্বকের রং।

ক্যান্সার নির্ণয় এবং চিকিৎসার পদ্ধতি নির্ভর করে এটির স্তর এবং ব্যাপ্তির উপর। নিম্নলিখিত উপায়গুলোতে মেলানোমার চিকিৎসা করা হয়:

  • সার্জারি
  • কেমোথেরাপি
  • রেডিওথেরাপি
  • টার্গেটেড ড্রাগ থেরাপি
  • ইমিউনোথেরাপি
  • পেলিয়েটিভ কেয়ার

মেলানোমার চিকিৎসার সাফল্য নির্ভর করে রোগীর বয়স, স্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবস্থা, বিএআরএএফ মিউটেটেড জিনের উপস্থিতি, মেটাস্ট্যাসিসের পরিমাণ, এলডিএইচ লেভেল, ক্যান্সারের শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং লিম্ফ নোড ইনভল্ভমেন্টের উপর। মেলানোমার প্রায় 20-30% প্রাকগঠিত তিল থেকে উদ্ভূত হয়। UV রশ্মির অতিরিক্ত এক্সপোজার ক্যান্সারের মোলের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হিসাবে পরিচিত।

আগেভাগেই মেলানোমার রোগ নির্ণয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সারের মোল সনাক্ত করে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা রোগীর জন্য সুরক্ষার প্রথম পদক্ষেপ। ততটা দ্রুত সম্ভব, রোগীর শরীরে ক্যান্সার বিকাশ ত্যাগ করা উচিত।

How to Tell if a Mole Is Cancerous

বারবার ধর্মী নিম্নলিখিত কিছু লক্ষণ দেখে সহজেই বোঝা যায় How to Tell if a Mole Is Cancerous:

  • আকার: স্বাভাবিক তিল সাধারণত ৬ মিলিমিটার (প্রায় ¼ ইঞ্চি) এর চেয়ে ছোট হয়। যদি এর চেয়ে বড় হয়, তবে ডাক্তারকে দেখানো উচিত।
  • উচ্চ বৃদ্ধি: নতুন তিল জীবনের পরে উপস্থিত হলে তা ডাক্তার দ্বারা যাচাই করা উচিত।
  • পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্য: যদি কোনো তিলের আকার, রং, নকশা বা অঙ্গ্ভঙ্গী পরিবর্তিত হয়, তবে লক্ষণটি মেলানোমার হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ  নিম্ন পিঠের ব্যথা দূর করে এমন উপায়

How to Tell if a Mole Is Cancerous এর জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ গাইডলাইন হল ABCDE নিয়ম:

  1. Asymmetry (অমেলে): তিলের এক প্রান্ত অন্য প্রান্ত থেকে ভিন্ন হলে।
  2. Border irregularity (সীমান্ত অস্থিতিশীলতা): তিলের সীমানা খাঁজকাটা বা অস্পষ্ট থাকলে।
  3. Color variation (রেঙের ভিন্নতা): তিলের বঙ্গর বৈচিত্র্য থাকলে, যেমন বিভিন্ন শেডের কালো, বাদামি বা লাল।
  4. Diameter (ব্যাস): তিলের ব্যাস ৬ মিলিমিটার (প্রায় ¼ ইঞ্চি) ছাড়িয়ে গেলে।
  5. Evolving (বিবর্তনশীল): তিলের আকার, রূপ বা অনুভূতি পরিবর্তিত হলে।

আরো জানতে হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করা ভালো। তিল থেকে ক্যন্সার নির্দেশ করতে পারে কি না তা নির্ধারণের জন্য চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম।

তিলের যেসব লক্ষণ ক্যান্সার নির্দেশ করতে পারে

এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা ত্বকের বিভিন্ন পরিবর্তনগুলো নিরীক্ষণ করি এবং তিলের লক্ষণগুলো সনাক্ত করি যা ক্যান্সারের সংকেত দিতে পারে। সাধারণত, ত্বকের ক্যান্সার তিনটি প্রধান ধরনে বিভক্ত: বেসাল সেল কার্সিনোমা, স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা এবং মেলানোমা। নিচে তাদের প্রাথমিক লক্ষণগুলি নিয়ে আলোচনা করা হলো।

বেসাল সেল কার্সিনোমার লক্ষণ

বেসাল সেল কার্সিনোমা (BCC) হল ত্বকের সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার ধরণ। এটি সাধারণত বেসাল কোষগুলিতে শুরু হয় যা নতুন ত্বকের কোষ তৈরি করে। BCC এর কিছু সতর্কীকরণ লক্ষণ হল:

  • খোলা ঘা যা সেরে যায় না
  • লাল প্যাচ বা বিরক্ত এলাকা
  • চকচকে বাম্প বা নডিউল
  • দাগের মতো জায়গা যা সমতল সাদা, হলুদ বা মোম রঙের

স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমার লক্ষণ

স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা (SCC) হল ত্বকের একটি অস্বাভাবিক কোষ বাড়ার ফলাফল যা এপিডার্মিসের মাঝামাঝি এবং বাইরের স্তর তৈরি করে। এই ক্যান্সার প্রকারটি দ্রুত ছড়াতে পারে এবং তাই তাড়াতাড়ি সনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। SCC’র লক্ষণগুলো অন্তর্ভুক্ত:

  • কোমল বা খসখসে লাল বাম্প
  • প্যাচ যা অনবরত চুলকায় বা স্টিং করে
  • চকচকে বা স্কেলি চেহারার ওয়ার্ট বা বাম্প
  • চারপাশের ত্বকের তুলনায় গাঢ়, মোটা স্থানে ক্রাস্ট

মেলানোমার লক্ষণ

মেলানোমা ত্বকের একটি গুরুতর ক্যান্সার ধরণ এবং এটি মেলানোসাইট থেকে উদ্ভূত হয়, যা মেলানিন উৎপাদন করে। মেলানোমা সনাক্ত করতে গেলে, বিশেষ করে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখে পরীক্ষা করা উচিত:

  1. ডার্ক ফ্রেকেল যা আকৃতি বা রঙ পরিবর্তন করে
  2. অনিয়মিত প্রান্ত বা অসম রঙের তিল
  3. তিল যা প্রস্থে বা বেধে বৃদ্ধি পায়
  4. দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকা নতুন তিল বা দাগগুলির উপস্থিতি

মনে রাখতে হবে, তিলের লক্ষণ পরিচিত হওয়া এবং সঠিক সময়ে চিকিত্সার জন্য প্রাথমিক পর্যায়েই কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা অত্যন্ত জরুরি।

আমাদের ত্বকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কারণসমূহ

ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে বিভিন্ন কারণ থেকে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা এবং পরিবেশগত উপাদানগুলো এই ঝুঁকির কারনে ভূমিকা রাখতে পারে। নির্দিষ্ট দুটি কারণ বিশেষভাবে ত্বকের ক্ষতি করে থাকে এবং ত্বক ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়াতে সাহায্য করে।

সূর্যের অতিরিক্ত এক্সপোজার

সূর্যের অত্যধিক এক্সপোজার ত্বকের প্রধান শত্রু। অতিরিক্ত সূর্যালোকের কারণে ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মি ত্বকে প্রবেশ করে এবং ত্বকের কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি সরাসরি ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষত মেলানোমা নামক ত্বকের ক্যান্সার সবচেয়ে বিপজ্জনক, যা প্রতি বছর সারা বিশ্বে ২৩০,০০০ এর বেশি মানুষের উপর প্রভাব ফেলে এবং ৫০,০০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষরা মহিলার চেয়ে প্রায় ১.৫ গুণ বেশি মেলানোমা সম্পৃক্ত হয়।

রাসায়নিক সামগ্রীর সংস্পর্শ

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রাসায়নিক দ্রব্যাদি বিভিন্নভাবে ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে এসব রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা ত্বকের কোষের ক্ষতির কারণ হয়। উদাহরণসরূপ, কিছু কেমিক্যাল প্রোডাক্ট, ক্লিনিং এজেন্টস এবং এমনকি কিছু প্রসাধনী ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এসব রাসায়নিক দ্রব্যাদি ত্বকের কোষে মিউটেশন ঘটিয়ে ক্যান্সার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  পায়ের ব্যথা তাৎক্ষণিক মুক্তির উপায়

এই দুই প্রধান কারণ ছাড়াও ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ানোতে আরও অনেক কারণ জড়িত থাকতে পারে। স্ত্রী এবং পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ৫০টির বেশি মোলস থাকলে মেলানোমার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য সূর্যরশ্মির অতিরিক্ত সংস্পর্শ থেকে বাঁচা এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদির ব্যবহারে সচেতন থাকা অতি গুরুত্বপূর্ণ।

কোন ভিটামিনের অভাবে ক্যান্সারের আশংকা বেড়ে যায়

ভিটামিনের অভাব থেকে ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষত উল্লেখযোগ্য কিছু ভিটামিনের ঘাটতি শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। জেনে নিই কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ে এবং কেন এসব ভিটামিন ক্যান্সার প্রতিরোধে জরুরি।

ভিটামিন সি এর অভাব

ভিটামিন সি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। এটির অভাব বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি এর ঘাটতির কারণেই স্কিন ক্যান্সারের হার বেড়ে যায়।

ভিটামিন এ এর অভাব

ভিটামিন এ এর অভাব ক্যান্সারিজেনেসিসের (ক্যান্সার তৈরির প্রক্রিয়া) প্রাথমিক স্তরগুলোতে ভূমিকা পালন করতে পারে। এই ভিটামিনের ঘাটতি শরীরে কোষের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুণরূদ্ধার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ভিটামিন ডি এর অভাব

ভিটামিন ডি এর অভাব বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি শরীরে কেলসিয়াম এবং ফসফরাস ব্যালান্স করতে সাহায্য করে। গবেষণায় প্রকাশ, যে সকল ব্যক্তিরা পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পায় না তাদের ক্যান্সার ঝুঁকি অনেক বেশি। বিশেষত, স্তন এবং কলোন ক্যান্সার রোধে ভিটামিন ডি অপরিহার্য।

সেলেনিয়ামের অভাব

সেলেনিয়ামের মতো খনিজ উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানে দিয়ে শরীরকে ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে। এর অভাব প্রোস্টেট এবং ফুস্ফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সেলেনিয়ামের ঘাটতি সরাসরি কোষের ক্ষয় এবং ডিএনএ বিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ক্যান্সার নির্ণয়ের পদ্ধতি

ক্যান্সার নির্ণয় করতে বিভিন্ন ডায়াগনোস্টিক প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয়। প্রথমত, শারীরিক পরীক্ষা মাধ্যমে সন্দেহজনক স্থান চিহ্নিত করা হয়।

পরীক্ষার প্রাথমিক ধাপে, চিকিৎসক ক্যান্সারের লক্ষণ অনুসন্ধান করেন। সন্দেহজনক অংশ বা মোল নিয়ে বিষাক্ত কোশ সংগ্রহ করে জীবাণুমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা করা হয়। ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় কোশের ম্যালিগ্ন্যান্সি চিহ্নিত করা হয়।

কিছু ক্ষেত্রে, আল্ট্রাসাউন্ড, মেমোগ্রাফি বা এক্স-রে ব্যবহৃত হয়। এই চিত্রাঙ্গুলি টিউমারের প্রকৃতি এবং আকার সনাক্ত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, মেরিনালেন্স নির্ধারণে পেট স্ক্যান বা সিটি স্ক্যান করা যেতে পারে।

ল্যাব পরীক্ষায়, আক্রান্ত অংশের জীবাণু নিয়ে গবেষণায় সত্যতা পরীক্ষা হয়। অতিরিক্ত পরীক্ষা যেমন পলিমেরেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) বা ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য সহায়ক হতে পারে।

লিকুইড বায়োপসি নামে পরিচিত আরেকটি প্রক্রিয়া রয়েছে, যেখানে রক্তে নির্দিষ্ট ক্যান্সারের জীবাণু বা স্থানান্তরিত ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়।

সবশেষে, লিন্ফ নোড পরীক্ষা করা হয় যাতে বোঝা যায় ক্যান্সার অন্য স্থানে ছড়িয়েছে কিনা। সকল ডায়াগনোস্টিক প্রক্রিয়া মিলে ক্যান্সারের সঠিক, নির্ভরযোগ্য নির্ণয় সম্ভব হয়।

ত্বকের ক্যান্সারের চিকিৎসার পদ্ধতি

ত্বকের ক্যান্সার নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। প্রতিটি পদ্ধতি নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরন, অবস্থান এবং রোগীর সাধারণ স্বাস্থ্যের উপর। সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া জরুরি। আসুন আমরা ত্বকের ক্যান্সারের প্রধান কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানি।

এক্সসিশনাল সার্জারি

এক্সসিশনাল সার্জারি হল ত্বকের ক্যান্সার অপসারণের একটি সাধারণ পদ্ধতি যেটি ছোট আকারের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সার্জনেরা আক্রান্ত ত্বকসহ কিছু সুস্থ ত্বকও কেটে বাদ দেন। এক্সসিশনাল সার্জারির পর পুনরায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে নিয়মিত ফলো-আপ প্রয়োজন।

রেডিওথেরাপি

রেডিওথেরাপি হল ত্বকের ক্যান্সার নিরাময়ের একটি বিকল্প পদ্ধতি যেখানে উচ্চ শক্তির রশ্মি ব্যবহার করা হয় ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে। বিশেষ করে, বয়স্ক বা শারীরিকভাবে দুর্বল রোগীদের জন্য এটি একটি কার্যকরী পদ্ধতি। ত্বকের নির্দিষ্ট অঞ্চলে রেডিওথেরাপি প্রয়োগ করা হয়, যা ক্যান্সারের কোষগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুনঃ  কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়

কেমোথেরাপি

কেমোথেরাপি হল ত্বকের ক্যান্সারের আরও একটি উল্লেখযোগ্য চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে রাসায়নিক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত, এই পদ্ধতি মেলানোমার মতো আক্রমণাত্মক ত্বকের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কেমোথেরাপি ওষুধগুলো মুখে খাওয়া যায় বা আঞ্চলিকভাবে প্রয়োগ করা যায়।

continued…

চিকিৎসার পদ্ধতির মধ্যে আরও আছে ইমিউনোথেরাপি এবং ফোটোডায়নামিক থেরাপি। প্রতিটি চিকিৎসার পদ্ধতির নির্দিষ্ট সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে এবং রোগীর অবস্থা অনুসারে পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তী অংশে, আমরা ইমিউনোথেরাপি এবং ফোটোডায়নামিক থেরাপি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

FAQ

তিল থেকে ক্যান্সারের আশংকা চিহ্নিতকরণের উপায় কী?

তিল থেকে ক্যান্সারের আশংকা চিহ্নিতকরণের জন্য প্রথমেই ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসক সাধারণত আপনার ত্বকের তিলের আকার, রঙ, সীমা এবং এর মুখাবয়ব পরীক্ষা করে থাকেন। এছাড়াও, পৃথকতম তিলের অংশ বায়োপসি করে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করেন।

ক্যান্সার কীভাবে ঘটে?

ক্যান্সার সাধারণত শরীরের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দ্বারা ঘটে। তিল থেকে ক্যান্সার ত্বকের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দ্বারা তৈরি হয়, যেটি আশেপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রধানত সূর্যের অতিরিক্ত বিকিরণ, রাসায়নিকের সংস্পর্শ এবং বংশগত কারণ থেকে ত্বকের ক্যান্সার হতে পারে।

কীভাবে বোঝা যাবে যে একটি তিল ক্যান্সারের লক্ষণ বহন করছে?

একটি তিল ক্যান্সারের লক্ষণ বহন করছে কিনা তা বোঝার জন্য তিলের আকার, রঙ, সীমারেখা এবং প্রকৃতির পরিবর্তন লক্ষ্য করতে হবে। অস্বাভাবিক আকার বা রঙ, আকর্ষণীয় বাসনায়, অসাধারণ সীমারেখা, এবং তিলের ওপরে রক্তপাত বা পুঁজ হলে এটি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

বেসাল সেল কার্সিনোমার লক্ষণ কী কী?

বেসাল সেল কার্সিনোমার লক্ষণগুলো মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ত্বকে ছোট, গোলাপী বা লাল বর্ণের গুটির উপস্থিতি যা সেলাইয়ের মতো দেখতে। ত্বকের ক্ষতের সেরে উঠতে সময় লাগা এবং ঔজ্জ্বল্যহীন ত্বকের অংশও এর লক্ষণ হতে পারে।

স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমার লক্ষণ কী কী?

স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমার লক্ষণগুলি হল স্থায়ী ফুসকুড়ি, টিউমার, কাটা বা ফাটার মতো স্ফিতিঘটন যা সেরে উঠতে চায় না। এটি সাধারণত ত্বকের রুক্ষ ভাগে দেখা যায়।

মেলানোমার লক্ষণ কী কী?

মেলানোমার প্রধান লক্ষণ হল তিলের আকৃতি, রঙ এবং অনুমান পরিবর্তন। সাধারণত তিলের রঙ একাধিক হয় এবং তা সিম্যাট্রিক হয় না। এটি খসখসে হতে পারে এবং অতিরিক্ত খোসা লক্ষ্য করা যায়।

সূর্যের অতিরিক্ত এক্সপোজার কীভাবে ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়?

সূর্যের অতিরিক্ত UV রশ্মির প্রদর্শন ত্বকের কোষের DNA ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা ত্বক ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। বেশি সময় ধরে সূর্যের তাপের অনুভাব স্পর্শ করলে ত্বকের বারবার জ্বলন্ত ভাব দেখা যায় এবং এটি কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রভাবিত করতে পারে।

রাসায়নিক সামগ্রীর সংস্পর্শ কীভাবে ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়?

নির্দিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ যেমন কারসিনোজেনসমূহ ত্বকের ক্যান্সারের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এগুলি ত্বকের কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং দীর্ঘমেয়াদী সংস্পর্শে থাকলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।

কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে?

ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং সেলেনিয়ামের অভাবে ত্বক ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ভিটামিনগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে এবং শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখে।

ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য কোন কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়?

ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা এবং পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যেমন ডার্মাটোস্কোপি, বায়োপসি, এবং অনেক সময় মাইক্রোস্কোপিক পর্যবেক্ষণ। উক্ত পরীক্ষাগুলো ত্বকের কোষের বিশ্লেষণে সাহায্য করে।

ত্বকের ক্যান্সারের চিকিৎসার পদ্ধতি কী কী?

ত্বকের ক্যান্সারের চিকিৎসার মধ্যে এক্সসিশনাল সার্জারি, যেখানে ক্যান্সার কোষগুলো শারীরিকভাবে অপসারণ করা হয়, এবং রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপি দিয়ে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন স্তরের এবং ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button