কিভাবে ISO থেকে উইন্ডোজ ইনস্টল করবেন – পূর্ণ গাইড

আপনি কি জানতে আগ্রহী কিভাবে সহজে ISO ফাইল থেকে উইন্ডোজ ইনস্টল করা যায়? এই পূর্ণ Windows Installation Guide আপনাকে প্রতিটি ধাপে সহায়তা করবে। আপনি যদি আপনার কম্পিউটারে নতুন Windows Setup করতে চান, অথবা আপনার পুরনো সিস্টেম আপডেট করতে চান, তবে এই পদ্ধতি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

Windows Installation Guide এর মধ্যে প্রতিটি স্তরের বিস্তারিত বিবরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা আপনাকে ISO File ডাউনলোড থেকে শুরু করে Windows Setup এবং ইনস্টলেশন পর্যন্ত সকল প্রক্রিয়া সম্পর্কে নির্দেশনা দেবে। চলুন, Install Windows ISO পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার পিসিতে নতুন জীবন দিন এবং সহজে উইন্ডোজ সেটআপ করুন।

প্রয়োজনীয় সিস্টেমের জন্য আবশ্যকতা

উইন্ডোজ ইনস্টল করার জন্য, আপনার কম্পিউটারের কিছু নির্দিষ্ট Minimum System Requirements পূর্ণ করতে হবে। সঠিকভাবে কাজ করার জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসেসর ও র‌্যামের বিবরণ

প্রথমেই আসি Processor Requirements এর কথায়। আপনার কম্পিউটারে অন্তত 1 GHz এর প্রসেসর থাকতে হবে। এটি কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য জরুরী। প্রসেসরের পাশাপাশি, RAM Requirements ও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার কম্পিউটারে কমপক্ষে 2GB RAM থাকতে হবে যদি আপনি উইন্ডোজ 10 চালাতে চান।

হার্ডডিস্ক স্পেসের গুরুত্ব

Hard Disk Space ও এক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উইন্ডোজ ইনস্টল করার জন্য, আপনার কম্পিউটারে কমপক্ষে 20 GB খালি হার্ডডিস্ক স্পেস থাকতে হবে। এটি না থাকলে, ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না এবং অপারেটিং সিস্টেমও সঠিকভাবে কাজ করবে না।

গ্রাফিক্স ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার

অবশেষে, Graphics Card এবং অন্যান্য হার্ডওয়্যারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। DirectX 9 সমর্থনযুক্ত গ্রাফিক্স কার্ড থাকা উচিত যাতে আপনি সুন্দরভাবে ভিজ্যুয়াল উপভোগ করতে পারেন। এছাড়াও অন্যান্য হার্ডওয়্যার ড্রাইভারগুলি সঠিকভাবে ইনস্টল করা থাকা উচিত যাতে উইন্ডোজ ইনস্টলেশনের পরে সবকিছু সঠিকভাবে কাজ করে।

আরও পড়ুনঃ  AppData Location কিভাবে খুঁজবেন - সহজ গাইড

ISO ফাইল ডাউনলোড ও প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি

ডাউনলোড ISO File এবং তৈরির প্রক্রিয়া দারুণ জটিল মনে হলেও, সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করলে সহজেই সম্পন্ন করা সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যেমন, বাংলাদেশে ৯৭% কম্পিউটার ব্যবহারকারী উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারে আগ্রহী। নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করে সহজেই মাইক্রোসফটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ISO ফাইল ডাউনলোড এবং বুটেবল USB ড্রাইভ তৈরি করা যাবে। এটি আপনাকে নতুন অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টলেশন এবং পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে।

মাইক্রোসফটের ওয়েবসাইট থেকে ISO ডাউনলোড

মাইক্রোসফটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ISO ফাইল ডাউনলোড করা হলো প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। শুরুতে Microsoft Official Website ভিজিট করুন এবং আপনার প্রয়োজনীয় উইন্ডোজ সংস্করণ নির্বাচন করুন। ডাউনলোড ISO File করার সময় নিশ্চিত হোন যে আপনি সর্বশেষ আপডেট করা সংস্করণটি গ্রহণ করছেন, কারণ এটি আপনাকে বিনামূল্যে আপডেট, উন্নত নিরাপত্তা এবং ব্যবহারযোগ্যতা সরবরাহ করবে।

  • Microsoft Official Website থেকে বৈধ ISO ফাইল ডাউনলোড করতে ভুল করবেন না।
  • প্রয়োজনীয় ফাইল নিশ্চিত করতে ১৯টি ফোল্ডার এবং ৭৯০টি ফাইলের একটি সম্মেলিত সত্তা প্রদান করা হয়েছে।
  • এটি ধাপে ধাপে ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার একটি পূর্ণ গাইড প্রদান করে।

বুটেবল USB ড্রাইভ তৈরি

নেক্সট স্টেপ হলো একটি বুটেবল USB ড্রাইভ তৈরি করা। এ জন্য বাজারে পাওয়া যায় এমন বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন Rufus। এই সফটওয়্যারগুলি ব্যবহার করে আপনি সহজেই একটি বুটেবল USB ড্রাইভ তৈরি করতে পারবেন যা আপনাকে পুরনো বা নতুন কোনো কম্পিউটারে উইন্ডোজ ইনস্টল করতে সাহায্য করবে।

  1. প্রথমে, আপনার কম্পিউটারে Rufus ডাউনলোড এবং ইনস্টল করুন।
  2. Rufus চালু করুন এবং ডাউনলোড ISO File সিলেক্ট করুন।
  3. USB ড্রাইভ সংযুক্ত করুন এবং Create Bootable USB অপশন সিলেক্ট করুন।
  4. শুরু করার জন্য Start বাটনে ক্লিক করুন, এটি প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কিছু সময় নেবে।

এক্ষেত্রে ডাউনলোডকৃত ISO ফাইলটির আক্ষরিক নিরাপত্তা এবং নির্ভুলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো ধরণের ভুয়া বা ক্র্যাক করা সফটওয়্যার ব্যবহার না করে সঠিক এবং বৈধ ফাইল ব্যবহার করবেন। বুটেবল USB ড্রাইভ প্রস্তুত হওয়ার পর, আপনি সহজেই যেকোনো পিসি বা ল্যাপটপে উইন্ডোজ ইনস্টল করতে এবং সম্পূর্ণভাবে একটি নতুন সিস্টেম সেটআপ করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ  পেনড্রাইভ থেকে উইন্ডোজ ১০ ইনস্টল করবেন যেভাবে

PC বুট সিকোয়েন্স পরিবর্তন করার পদ্ধতি

Windows ISO থেকে ইনস্টল করার ক্ষেত্রে, PC বুট সিকোয়েন্স পরিবর্তন করা অতি গুরুত্বপূর্ণ। এটি করতে হলে আপনাকে BIOS বা UEFI তে প্রবেশ করতে হবে এবং বুট সিকোয়েন্স পরিবর্তন করতে হবে।

BIOS বা UEFI নিয়ন্ত্রণ

আপনার কম্পিউটারের BIOS (Basic Input/Output System) বা UEFI (Unified Extensible Firmware Interface) তে প্রবেশ করতে হবে। শুরুতে কম্পিউটার চালু করার সময় নির্দিষ্ট কী (যেমন F2, F10, DEL) টিপে Access BIOS করুন। BIOS বা UEFI ইন্টেফেসে গিয়ে Change Boot Sequence নির্বাচন করুন। এখানে আপনার ডিফল্ট বুট ড্রাইভ পরিবর্তন করতে পারবেন।

বুট মেনু থেকে USB নির্বাচন

BIOS বা UEFI তে প্রবেশ করার পরে, বুট মেনুতে যান এবং Select USB from Boot Menu নির্বাচন করুন যা আপনার তৈরি করা বুটেবল USB ড্রাইভকে প্রথম প্রায়োরিটি হিসেবে সেট করবে। এটি করতে হলে বুট ডিভাইস প্রায়োরিটির তালিকায় USB ড্রাইভকে উপরে তুলুন বা প্রথম স্থানে রাখুন।

অনুগ্রহ করে নিশ্চিত হন যে বুট সিকোয়েন্স ঠিকমতো পরিবর্তন করা হয়েছে, এর ফলে USB ড্রাইভ থেকে Windows ইনস্টলেশন শুরু হবে। BIOS বা UEFI সেটিংসে যে কোনো পরিবর্তন অ্যাপ্লাই করার পর সেভ করুন এবং তারপর এক্সিট করুন।

Windows Product Key সংগ্রহ ও ইনস্টলেশন

আপনার Windows Product Key সংগ্রহ এবং ইনস্টলেশন প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। সঠিক ভাবে Windows Activation কার্যকর করার জন্য, প্রথমেই একটি প্রকল্পিত প্রোডাক্ট কি সংগ্রহ করা প্রয়োজন।

কিভাবে Windows Product Key সংগ্রহ করবেন

প্রথমে, আপনি মাইক্রোসফট স্টোর বা অন্যান্য বিশ্বস্ত উৎস থেকে ক্রয় করে আপনার Windows Product Key সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়া, যদি আপনার পুরাতন কম্পিউটারের প্রোডাক্ট কি থাকে, সেটিও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি নিশ্চিত করুন যে আপনার প্রোডাক্ট কি বৈধ এবং এখনও সক্রিয় করার যোগ্য।

অ্যাক্টিভেশন প্রক্রিয়া

ইন্সটলেশনের সময় Windows Product Key দিয়ে Windows Activation করতে হবে।

  • প্রথমে, উইন্ডোজ ইন্সটলেশনের সময় সঠিক প্রোডাক্ট কি প্রদান করুন।
  • ইন্সটলেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, ওয়ারেন্টি অনুযায়ী উইন্ডোজকে পূর্ণভার শংসিত করুন।
  • উইন্ডোজের সকল বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহার করতে Windows Activation সম্পূর্ণ করা অত্যাবশ্যক।
আরও পড়ুনঃ  উইন্ডোজ 8.1 অ্যাক্টিভেট করার সহজ পদ্ধতি

উইন্ডোজ ১০ হোম (৩২-বিট) এর সাইজ ২.৯৩ GB এবং ৬৪-বিট এর সাইজ ৩.৮১ GB। উইন্ডোজ ১০ প্রো এর জন্য, ৩২-বিট সাইজ ২.৯৪ GB এবং ৬৪-বিট সাইজ ৩.৭৯ GB। উইন্ডোজ ১০ এন্টারপ্রাইজের ৩২-বিট এর সাইজ ২.৭২ GB এবং ৬৪-বিট এর সাইজ ৩.৬৭ GB। সঠিক প্রোডাক্ট কি এবং অ্যাক্টিভেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনি এই সব সংস্করণকে চালু করতে পারেন।

ক্লিন ইন…

ক্লিন ইন্সটলেশন বা সম্পূর্ণ নতুনভাবে উইন্ডোজ ইন্সটল করা, সিস্টেমের পারফরম্যান্স বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। ক্লিন ইন্সটলেশনের প্রধান Benefits of Clean Install হলো পুরানো ফাইল এবং অপ্রয়োজনীয় ডাটা মুছে ফেলা, যা কম্পিউটারের গতিশীলতা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করে। এটি বিশেষভাবে জরুরি যখন আপনার সিস্টেম অনেক ধীরগতির হয়ে যাচ্ছে বা ঘন ঘন ক্র্যাশ করছে।

ক্লিন ইন্সটলেশনের উপর গুরুত্ব

ক্লিন ইন্সটলেশন মাধ্যমে অপারেটিং সিস্টেম পুনরায় ইন্সটল করায় সিস্টেমটি সম্পূর্ণ নতুনভাবে ফ্রেশ হয়। এতে পুরানো ফাইল এবং অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপস সরিয়ে দেয়া হয়, যা Clean Installation vs Upgrade এর ক্ষেত্রে বড় সুবিধা প্রদান করে। সাধারণত, দ্রুত স্টার্ট-আপ সময়ের জন্য এটি অনেক কার্যকরী। এছাড়া, এসএসডি ব্যবহারের মাধ্যমে স্টার্ট-আপ টাইম আরো কমিয়ে আনা সম্ভব। কিছু সমীক্ষায় দেখা গেছে, উইন্ডোজ ১১ এর ৬০% ধীর স্টার্ট-আপ সমস্যা অপ্রয়োজনীয় স্টার্ট-আপ অ্যাপসের কারনে ঘটে।

আপগ্রেড করার সুবিধা ও অসুবিধা

অন্যদিকে, Upgrading Windows এর উপায়টি অনেক ব্যবহারকারীর জন্য সুবিধাজনক, যেহেতু এটি পুরানো ফাইল এবং সেটিংস অক্ষুন্ন রাখে। উইন্ডোজ ইন-প্লেস আপগ্রেড প্রক্রিয়া নবীন ফিচার আপডেট দেয়ার মাধ্যমে সহজ উপায়ে পাল্টানো হয়, এবং এটি সাধারণত ব্যবহারকারীদের জন্য কম ঝামেলাপূর্ণ। আপগ্রেড করার সময় অবশ্যই সমস্ত বাহ্যিক পেরিফেরাল আনপ্লাগ করতে হবে এবং অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নিষ্ক্রিয় করতে হবে। তবে, কিছু সময়ে আপগ্রেড করার ফলে কিছু ছোটখাট সমস্যা থাকতে পারে, যেমন ফাইল এবং সেটিংস বির্পযস্ত হওয়া বা সিস্টেমের কিছু অংশ সঠিকভাবে কাজ না করা।

শেষ পর্যন্ত, ক্লিন ইন্সটলেশন এবং ইন-প্লেস আপগ্রেডের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া আপনার বিশেষ প্রয়োজন এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। আপনার কম্পিউটারের পারফরম্যান্স এবং স্ট্যাবিলিটি উন্নত করার জন্য ক্লিন ইন্সটলেশন একটি ভালো সমাধান, যেখানে ইন-প্লেস আপগ্রেড দ্রুত এবং সহজ আপডেট প্রক্রিয়া সরবরাহ করে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button