উইন্ডোজ ১১ এ মনিটর রিনেম করার পদ্ধতি

উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদের জন্য মনিটরের নাম পরিবর্তন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হতে পারে, বিশেষ করে যারা একাধিক মনিটর ব্যবহার করেন। এই উইন্ডোজ ১১ টিউটোরিয়াল আপনাকে দেখাবে কিভাবে সহজেই মনিটর নাম পরিবর্তন করবেন।

মনিটর রিনেম করার মাধ্যমে আপনি সহজে বিভিন্ন মনিটর সনাক্ত করতে পারেন এবং কাজের পরিবেশকে আরও সুষ্ঠু করতে পারেন। এই ব্যবহারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, আমরা আপনাকে প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে দেখাবো ताकि আপনি নিজেই আপনার মনিটরের নাম পরিবর্তন করতে পারেন।

কিন্তু কেন এই মনিটর নাম পরিবর্তন পদ্ধতি এত গুরুত্বপূর্ণ? একাধিক মনিটর ব্যবহারের সময় আমরা বিভিন্ন কাজের জন্য আলাদা মনিটর ব্যবহার করি এবং তাদের সনাক্ত করা প্রয়োজন হয় যে কোন কার্যক্রমের জন্য। এই টিউটোরিয়ালে, আমরা আপনাকে দেখাবো কিভাবে উইন্ডোজ ১১ এ সহজেই মনিটরের নাম পরিবর্তন করবেন।

উইন্ডোজ ১১ এর নতুন সম্ভাব্যতা

উইন্ডোজ ১১ এর সর্বশেষ আপডেটে, Microsoft বেশ কিছু নতুন ফিচার এনেছে যা আপনার কাজের এবং বিনোদনের অভিজ্ঞতাকে তরান্বিত করবে। এই উইন্ডোজ ১১ ফিচারসমূহ ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন দিক থেকে সুবিধা প্রদান করে, বিশেষ করে সিস্টেমের কাস্টমাইজেশন এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে তুলেছে।

নতুন উইন্ডোজ আপডেট বিভিন্ন কার্যকারিতা পরিবেশে আরো উন্নত সুবিধা নিয়ে এসেছে, যা ব্যবহারকারীদের আরো কার্যকরী এবং মসৃণ ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করতে সহায়তা করে। নিচে উইন্ডোজ ১১ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার উল্লেখ করা হলো:

  • উন্নত স্টার্ট মেনু: নতুন স্টার্ট মেনুতে কাস্টমাইজেশন সুবিধা মিলবে যা ব্যবহারে খুবই সহজ।
  • ভয়েস টাইপিং: এই ফিচারের মাধ্যমে কিবোর্ড ব্যবহারের প্রয়োজন ছাড়াই কেবল কন্ঠে টাইপ করা সম্ভব।
  • নতুন উইন্ডোজ স্ন্যাপ ফাংশন: মাল্টিটাস্কিং অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে সাহায্য করবে এই ফাংশন।
  • দ্রুত আপডেট: নতুন উইন্ডোজ আপডেট দ্রুত ইনস্টলেশন এবং কম সময়ে সিস্টেম আপগ্রেড করার ক্ষমতা রাখে।

উইন্ডোজ ১১ ফিচারসমূহ এবং নতুন উইন্ডোজ আপডেট এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা পাবেন আরো সুসংহত এবং উন্নত সিস্টেম পরিবেশ। এই ফিচারগুলি আপনার দৈনন্দিন কাজকে সহজতর করে তুলবে এবং আরো সৃজনশীলভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করবে।

আরও পড়ুনঃ  উইন্ডোজ ১০ কীবোর্ড এনাবল করার নিয়ম

মনিটর রিনেম করার প্রয়োজনীয়তা

বহু মনিটর ব্যবহার করার সময়, প্রতিটি মনিটরকে স্বতন্ত্রভাবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন যাতে কাজের সুবিধা হয়। বিশেষ করে যখন বিভিন্ন প্রজেক্ট বা কাজ একসাথে করা হচ্ছে, তখন প্রতিটি মনিটরের সঠিক সনাক্তকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কারনে মনিটর রিনেম করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।

বিভিন্ন মনিটর ব্যবহারের সুবিধা

বহু মনিটর ব্যবহার করলে আপনি এক সাথে অনেক কাজ করতে পারেন। বিষেশত, একজন গ্রাফিক ডিজাইনার বা প্রোগ্রামার হলে, বিভিন্ন মনিটরে বিভিন্ন টাস্ক আলাদা করে রাখা খুব কার্যকর হয়। প্রতিটি মনিটরকে নির্দিষ্ট নাম দিয়ে রিনেম করলে সহজে প্রতিটি মনিটর আইডেন্টিফিকেশন করা যায় এবং তাত্ক্ষণিক প্রয়োজন অনুযায়ী মনিটর স্যুইচ করা সম্ভব হয়।

সহজ সনাক্তকরণের জন্য মনিটর রিনেম

কাজের সময় দ্রুত এবং সঠিকভাবে মনিটর চিহ্নিত করার জন্য মনিটর রিনেম খুব জরুরি। এটি আপনাকে প্রতিটি মনিটরকে তার নির্ধারিত কাজ অনুযায়ী সনাক্ত করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একটি মনিটরকে “ডিজাইন” এবং অন্যটি “কোডিং” নামে রিনেম করেন, তবে সুনির্দিষ্ট কাজের প্রয়োজন হতে দ্রুত মনিটর স্বতন্ত্র করতে পারবেন। এছাড়াও, মনিটর আইডেন্টিফিকেশন করে রাখলে গোটা সেটআপ সহজতর ও কার্যকরী হয়।

উইন্ডোজ ১১ এ রিনেম করার সরঞ্জামসমূহ

উইন্ডোজ ১১ এ মনিটরের নাম পরিবর্তনে দুটি প্রধান সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়: রেজিস্ট্রি এডিটর এবং গ্রুপ পলিসি এডিটর। এই দুটি সরঞ্জাম ব্যবহার করে কিভাবে মনিটরের নাম পরিবর্তন করা যায়, তা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।

রেজিস্ট্রি এডিটর ব্যবহার

রেজিস্ট্রি এডিটিং এর মাধ্যমে মনিটরের নাম পরিবর্তন করতে প্রথমে আপনাকে রেজিস্ট্রি এডিটরে প্রবেশ করতে হবে। ডেস্কটপ পিসিতে, রেজিস্ট্রি এডিটিং করে আপনি কিভাবে মনিটর ১ এবং মনিটর ২ এর সংখ্যা পরিবর্তন করবেন তা শিখতে পারেন যখন দুটি মনিটর সংযুক্ত থাকে। পিসি ল্যাপটপে, বিল্ট-ইন মনিটর সবসময় মনিটর ১ হিসাবে স্বীকৃত হয় এবং এটি পরিবর্তন করা যায় না।

গ্রুপ পলিসি এডিটর ব্যবহার

আবার, গ্রুপ পলিসি সেটিং ব্যবহার করে মনিটরের নাম পরিবর্তন করা যেতে পারে। আপনি প্রথমে গ্রুপ পলিসি এডিটর ওপেন করবেন এবং সেখান থেকে প্রয়োজনীয় সেটিং পরিবর্তন করবেন। বিভিন্ন সংস্থায় এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মনিটর পরিচিতি সহজ করা যায়, বিশেষ করে যখন অনেকগুলি মনিটর একই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকে।

  1. ডেস্কটপে রাইট-ক্লিক করুন এবং ডিসপ্লে সেটিংস অ্যাক্সেস করুন।
  2. মনিটরগুলি কাঙ্ক্ষিত ক্রমে ড্র্যাগ করুন।
  3. যে মনিটরটিকে প্রাইমারি ডিসপ্লে করবেন তা নির্বাচন করুন।
  4. পরিবর্তনগুলি প্রয়োগ করুন।
আরও পড়ুনঃ  উইন্ডোজ ১১-এ ব্রাইটনেস স্লাইডার যোগ করার পদ্ধতি

উইন্ডোজ ১১ এর এই দুটি টুলস সঠিকভাবে ব্যবহার করলে, আপনার মনিটরের কর্মদক্ষতা বাড়াতে এবং সহজ সনাক্তকরণে সাহায্য করবে। রেজিস্ট্রি এডিটিং এবং গ্রুপ পলিসি সেটিং এর মাধ্যমে, আপনি মনিটরের নাম দ্রুত এবং সহজে পরিবর্তন করতে পারবেন।

প্রথমে যা করতে হবে: রেজিস্ট্রি এডিটর ওপেন করা

উইন্ডোজ ১১ এ মনিটর রিনেম করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রথমে প্রয়োজন রেজিস্ট্রি এডিটর ওপেন করা। রেজিস্ট্রি এডিটর একটি শক্তিশালী টুল যা উইন্ডোজের সিস্টেম সেটিংস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

রেজিস্ট্রি এডিটরে নেভিগেট করুন

রেজিস্ট্রি এডিটর নেভিগেশন করতে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে। প্রথমেই Run উইন্ডোটি ওপেন করতে হবে (Win + R দিয়ে) এবং সেখানে regedit লিখে Enter চাপুন। এরপর আপনি রেজিস্ট্রি এডিটরে প্রবেশ করবেন।

নতুন DWORD মান তৈরি করা

রেজিস্ট্রি এডিটরে নেভিগেশন সম্পন্ন করার পর, নির্দিষ্ট ফোল্ডারে গিয়ে নতুন DWORD মান তৈরি করতে হবে। প্রথমে উক্ত ফোল্ডারে রাইট-ক্লিক করুন এবং New নির্বাচন করুন, তারপর DWORD (32-bit) Value নির্বাচন করুন। আপনার প্রয়োজনীয় নামটি টেক্সট বক্সে টাইপ করুন এবং এন্টার চাপুন।

রেজিস্ট্রি এডিটর নেভিগেশন এবং DWORD মান তৈরির মাধ্যমে আপনি সহজেই উইন্ডোজ ১১ এ আপনার মনিটরের নাম পরিবর্তন করতে পারবেন। এটি আপনাকে দ্রুত এবং কার্যকরীভাবে আপনার সেটআপ কনফিগার করতে সহায়তা করবে।

Windows 11 এ মনিটর রিনেম করার পদ্ধতি

Windows 11 এ আপনার মনিটর নাম পরিবর্তন করতে নির্দিষ্ট কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করলে আপনি সহজেই এটি করতে সক্ষম হবেন:

  1. প্রথম ধাপ: ডিসপ্লে সেটিংস খুলুন। ডিসপ্লে সেটিংস খোলার জন্য, স্টার্ট মেনু তে ক্লিক করুন এবং Settings নির্বাচন করুন। এরপর System এবং তারপরে Display এ যান।
  2. দ্বিতীয় ধাপ: Multiple displays অংশে যান। এখানে আপনি আপনার সংযুক্ত সকল মনিটরের তালিকা দেখতে পাবেন।
  3. তৃতীয় ধাপ: আপনি যে মনিটরের নাম পরিবর্তন করতে চান, তা নির্বাচন করুন। সাধারণত, মনিটরের নাম ড্রপডাউন মেনুতে প্রদর্শিত হবে।
  4. চতুর্থ ধাপ: মনিটরের Name অংশে ক্লিক করুন এবং আপনি চাইলে এখানে নতুন নাম টাইপ করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি “Office Monitor” কিংবা “Gaming Monitor” নাম রাখতে পারেন।
  5. পঞ্চম ধাপ: সব কিছু ঠিক থাকলে, Apply এ ক্লিক করুন। Windows 11মনিটর নাম পরিবর্তন এর মাধ্যমে আপনার প্রতিদিনের কাজ আরও সহজ হবে।
আরও পড়ুনঃ  উইন্ডোজে নতুন ফন্ট ব্যবহার করার সহজ পদ্ধতি

মনিটর নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে, আপনি সহজেই বিভিন্ন মনিটরের মাঝে সুইচ করতে পারবেন এবং প্রতিটি মনিটরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সেটিংস অ্যাপ্লাই করতে সক্ষম হবেন। এটি আপনার কাজের গতি বাড়াবে এবং সময় বাঁচাবে।

Windows 11 এ মনিটর নাম পরিবর্তন করে, আপনি আরও অনেক সুবিধা পেতে পারবেন। LED মনিটরগুলি LCD মনিটরের তুলনায় ৪০% কম পাওয়ার ব্যবহার করে এবং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবেশবান্ধব।

LED মনিটরগুলি উন্নত প্রদর্শনের গুণমান, সূর্যালোকের নিচে ভালো দৃশ্যমানতা এবং উচ্চতর বৈপরীত্য অনুপাতে (contrast ratio) কারণে পরিচিত। এগুলি LCD মনিটরের তুলনায় বেশি টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী (প্রায় ১০০,০০০ ঘণ্টা বনাম ৬০,০০০ ঘণ্টা)।

এছাড়াও, আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন, তবে মনিটরের নাম পরিবর্তন এবং অন্যান্য সুবিধা গুলি আপনাকে ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করবে, যেমন: দৃষ্টিসংক্রান্ত স্বস্তি বাড়ানো এবং শারীরিক চাপ কমানো

অতএব, Windows 11 এ মনিটর নাম পরিবর্তন করা সত্যিই একটি কার্যকর পদ্ধতি যা আপনাকে আরো কর্মক্ষম এবং দক্ষ করবে।

গ্রুপ পলিসি এডিটরের মাধ্যমে মনিটর রিনেম

উইন্ডোজ ১১ এর গ্রুপ পলিসি এডিটরের মাধ্যমে মনিটর রিনেম করা সহজ ও কার্যকর পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি। যেহেতু গ্রুপ পলিসি এডিটর ব্যবহারের মাধ্যমেও মনিটরগুলোর নাম পরিবর্তন করা যায়, এটি ব্যবহারকারীদের কাস্টমাইজেশন ক্ষমতা জোরদার করে এবং মূলত যে কোনো সংযোগ করা ডিভাইসগুলোকে সহজে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

গ্রুপ পলিসি এডিটর ওপেন করা

প্রথমেই উইন্ডোজ ১১ এ গ্রুপ পলিসি এডিটর ওপেন করতে হবে। এর জন্য, রান ডায়ালগ বক্স খুলুন (উইন্ডোজ+R চেপে), তারপর ‘gpedit.msc’ লিখে এন্টার চাপুন। এরপর গ্রুপ পলিসি এডিটর খোলা অবস্থায় আপনাকে প্রয়োজনীয় কাঙ্ক্ষিত পলিসি খুঁজে নিতে হবে।

লগ-অন ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন

গ্রুপ পলিসি এডিটর থেকে মনিটরের নাম রিনেম করতে হলে ‘Administrative Templates’ এ যান। তারপর ‘System’ এর অধীনে ‘Logon’ এ ক্লিক করুন। এখানে ‘Show clear logon messages’ পলিসিটি খুঁজে বের করুন। এটিকে সক্রিয় করুন এবং পরিবর্ধন তথ্য প্রদান করুন যা আপনার মনিটরের জন্য প্রযোজ্য হবে।

এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার মনিটরের নামের সাথে সাথে লগ-অন ব্যাকগ্রাউন্ড অভিজ্ঞতাও কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এই পদ্ধতি শুধুমাত্র ব্যবহারের সহজতর নয়, বরং অন্যান্য মনিটরের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করে এবং কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button