মোবাইল রেডিয়েশন জানার উপায় | প্রতিরোধে পরামর্শ

বর্ধিত মোবাইল ব্যবহারের এই যুগে, রেডিয়েশনের বিষয়টি আমাদের জন্য বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যাপক মোবাইল ব্যবহারের ফলে রেডিয়েশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা স্বাস্থ্যগত সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

একটি উচ্চ মাত্রার রেডিয়েশনের নির্গমনকারী ডিভাইসগুলির মধ্যে অনেকে রয়েছেন, যেমন OnePlus, Huawei, Nokia, iPhone 7 এবং iPhone 8। জার্মানির ফেডারেল অফিস ফর রেডিয়েশন প্রোটেকশন বলছেন, মানব টিস্যুর প্রতি কিলোগ্রামে ০.৬০ ওয়াট রেডিয়েশন নির্গমনের সীমা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যান্সার সোসাইটি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, মোবাইল ফোনের ব্যবহারে মস্তিষ্কের টিউমার বা মাথা-গলায় টিউমারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। মোবাইলের অ্যান্টেনা থেকে নির্গত রেডিয়েশন সরাসরি মাথার নিকটে থাকলে ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায়। গবেষকরা ফোন থেকে শরীরের দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেন, যা রেডিয়েশন প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

এই রেডিয়েশন প্রতিরোধের টিপস এবং সুরক্ষিত মোবাইল ব্যবহার নিশ্চিত করতে, আমরা আরও সচেতন হব এবং মোবাইল রেডিয়েশন টিপস মেনে চলার চেষ্টা করব।

মোবাইল রেডিয়েশন কি?

মোবাইল রেডিয়েশন হলো মোবাইল ডিভাইস থেকে নির্গত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ, যা মানুষের স্বাস্থ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। মোবাইল রেডিয়েশন সম্পর্কে জানুন এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করা জরুরি। মোবাইল রেডিয়েশন পরিচয় এবং এর সম্ভবনার কথা চিন্তা করলে, দেখা যায় যে এটি শিশুদের মস্তিষ্কে আরও গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে কারণ তাদের ত্বক, টিস্যু এবং হাড় বড়দের তুলনায় পাতলা। অধিকাংশ দেশে ১২ বছরের নিচে শিশুদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে এর কারণেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণে না রাখলে ডিএনএ ক্ষতি, নিদ্রাহীনতা, এবং আলঝাইমার রোগের মতো স্নায়বিক রোগও হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহারে মস্তিষ্কের টিউমার এবং ক্যান্সারের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মোবাইল রেডিয়েশনকে সম্ভাব্য কার্সিনোজেন হিসেবে বিবেচনা করেছে, যা বিশেষ করে শিশুদের মস্তিষ্কের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে মোবাইল রেডিয়েশন শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন ডিপ্রেশান এবং আচরণগত পরিবর্তন। ভিডিও গেম, ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং অনলাইন ক্রিয়াকলাপে শিশুদের অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার তাদের জীবনে ডিজিটাল আসক্তি, মনোযোগের অভাব এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গবেষণাগুলি আরও দেখিয়েছে যে মোবাইল ফোনে প্রলম্বিত এক্সপোজার ডিএনএ স্ন্যাডকে টুকরো করতে পারে, ক্যান্সার বিকাশের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে।

মোবাইল রেডিয়েশন থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য কিছু সাধারণ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যেমন মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকা এবং ব্যবহার কমিয়ে রাখা। বিশেষজ্ঞদের মতে, কথা বলার সময় ফোনটি মাথা থেকে কিছুটা দূরে রাখা উচিত, হেডসেট ব্যবহার করা এবং ফোন ব্যবহারের সময়সীমা সীমাবদ্ধ করা উচিত।

রেডিয়েশন কিভাবে কাজ করে?

রেডিয়েশন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, বিশেষত মোবাইল যোগাযোগ ক্ষেত্রে। মোবাইল ফোন যখন কথা বলে বা ডেটা পাঠায়, তখন এটির মাধ্যমে নির্গত হয় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ, যা শব্দ বা তথ্য স্থানান্তর করে। এই তরঙ্গগুলি বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে ছড়িয়ে পড়ে, যার মাধ্যমে আমাদের মোবাইল ফোন কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  ফ্লিপ ফোনে সিম কার্ড কীভাবে ঢোকাবেন - একটি গাইড

ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ

ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ হল এমন একটি মাধ্যম, যার মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তরিত হয়। এটি বলতে গেলে আমরা দেখতে পারি যে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সময় বিদ্যুৎ এবং চুম্বকীয় শক্তি সার্বিকভাবে আমাদের চারপাশে থাকে এবং আমাদের যোগাযোগ সক্ষম করে। এই তরঙ্গগুলি বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতায় নির্গত হয় এবং এটা আমাদের শরীর শোষণ করতে পারে। এই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও তরঙ্গ থেকে শুরু করে X রে পর্যন্ত হতে পারে।

রেডিও ওয়েভ প্রযুক্তি

রেডিও ওয়েভ প্রযুক্তি হলো তরঙ্গ প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা আমাদেরকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ এবং গ্রহণ করতে সহায়তা করে। এটি মূলত অডিও এবং ভিডিও সংকেত শয্য়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সহজতাটা বিশাল ভূমিকা পালন করে। যেহেতু রেডিও ওয়েভ প্রযুক্তি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ ব্যবহার করে থাকে, তাই মোবাইল থেকে নির্গত রেডিয়েশন আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রতিক্রিয়া রাখতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, মোবাইল রেডিয়েশন মানুষের শরীরে মারাত্মক সমস্যা তৈরি করতে পারে। যেসব কাজ সহায়ক সেবাঅনেক সহায়ক সেবা মোবাইল ফোনের সুবিধার ক্ষেত্রে মৌল ভূমিকা পালন করে।

মোবাইল রেডিয়েশন এর ক্ষতিকর প্রভাব

মোবাইল ফোনের ব্যাপক ব্যবহার আমরা দেখতে পাচ্ছি সারা বিশ্বজুড়ে। ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩২৮ মিলিয়ন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ছিল এবং বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৫ বিলিয়ন সক্রিয় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। মোবাইল ফোনে সাধারণত ৪৫০ থেকে ২০০০ মেগাহার্টজের মধ্যবর্তী তরঙ্গ ব্যবহার হয়। সম্প্রতি গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি

জাতীয় গবেষণায় দেখা গেছে যে মোবাইল ফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ক্যান্সার এবং ব্রেইন টিউমারের মতো গুরুতর স্বাস্থ্যের সমস্যা বাড়াতে পারে। বিশেষ করে, মস্তিষ্কের ক্যান্সার, হৃদয়ের অনিয়মিত স্পন্দন এবং স্মৃতিশক্তির ক্ষয় এর সাথে রেডিয়েশনের ঝুঁকি সরাসরি সম্পর্কিত।

আরও সম্ভাব্য প্রভাব

২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনআইএস (National Institutes of Health) পরিচালিত গবেষণায় পাওয়া গেছে যে মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত তরঙ্গ মানব শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শাওমি এমআই এ১-এ রেডিয়েশন সবচেটি বেশি, প্রতি কিলোগ্রামে ১.৭৫ ওয়াট, যা স্বাস্থ্যের সমস্যা বাড়াতে পারে। চীনের ওয়ান প্লাস ৫টি এবং ওয়ান প্লাস ৬-এর ক্ষেত্রেও রেডিয়েশনের মাত্রা যথাক্রমে ১.৬৮ ও ১.৫৫ ওয়াট প্রতি কিলোগ্রাম। এজন্য মোবাইল রেডিয়েশনের ঝুঁকি কমাতে আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

How to Know Mobile Radiation

মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন সম্পর্কে জানতে প্রয়োজনীয় কিছু পদ্ধতি আছে যা সহজেই অনুসরণ করা যেতে পারে। বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্য মোবাইল রেডিয়েশন পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি করার জন্য দুটি প্রধান পদ্ধতির সুপারিশ করা হয়:

*#07# কোড ব্যবহার

অনেক মোবাইল ফোনে রেডিয়েশন পরীক্ষা করার উপায় হিসাবে একটি কৌশলগত কোড প্রদান করা হয়। আপনি আপনার মোবাইল থেকে *#07# ডায়াল করে মোবাইল রেডিয়েশন পরীক্ষা করতে পারেন। এটি ফিরতি একটি স্ক্রিন শো করে যেখানে ফোনের গুরুত্বপূর্ণ SAR মান প্রদর্শিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, iPhone 7 এবং বেশ কিছু Samsung মডেল এরSAR মান সাধারণ FCC নিয়মাবলী অতিক্রম করে। তাই, এই কোড ব্যবহারে আপনি সহজেই জানতে পারবেন আপনার ফোন নিরাপদ থাকতে কতটা রেডিয়েশন বের করছে।

আরও পড়ুনঃ  উবার অ্যাপে ঠিকানা সংরক্ষণ করার পদ্ধতি দেখুন

SAR মান যাচাই

অনেক মোবাইল ফোন ব্যবস্থা তাদের ব্যাপারে তথ্য প্রদান করে যা SAR মান যাচাই করতে সহায়তা করে। FCC-এর নির্ধারিত SAR মান হল 1.6 W/kg, যেখানে জার্মান সার্টিফিকেশন ‘Der Blaue Engel’ ব্যবহার করার জন্য 0.60 W/kg এর চেয়ে কম SAR মানকে অনুমতি দেয়। মোবাইল ফোন নির্মাতারা এই তথ্য মোবাইলের মেনু, ম্যানুয়াল বা তাদের ওয়েবসাইটে সরাসরি প্রকাশ করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, Samsung এর ফোনগুলির SAR সাধারণত কম থাকে এবং তারা ২০০৩ সাল থেকে নতুন অপেক্ষা স্টাইলের অ্যান্টেনা ডিজাইন ব্যবহার শুরু করেছে। SAR তথ্য যাচাই করা প্রমাণিত করে যেসব ফোনে রেডিয়েশন নির্গমন কম, তা ব্যবহার করা কতটা নিরাপদ।

রেডিয়েশন থেকে রক্ষা পেতে করণীয়

মোবাইল রেডিয়েশন প্রতিরোধ করতে হলে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপিয়ান ক্যান্সার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, নিয়মিত এবং সঠিকভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মোবাইল রেডিয়েশনের ক্ষতি কমানো সম্ভব।

নিয়মিত বিরতি নেওয়া

ফোন ব্যবহারের সময় বারবার বিরতি নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রেডিয়েশন থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি সহজ উপায়। প্রতিবার দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহার করার পর মিনিট কয়েক বিরতি নিন।

হ্যান্ডস-ফ্রি ডিভাইস ব্যবহার

হ্যান্ডস-ফ্রি ডিভাইস যেমন ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহার করা আরও একটি কার্যকর উপায় রেডিয়েশন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। এটি সরাসরি রেডিয়েশনের সংস্পর্শ থেকে আমাদের কানে এবং মস্তিষ্কে রেডিয়েশন প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

শক্তিশালী নেটওয়ার্ক কভারেজ

শক্তিশালী নেটওয়ার্ক কভারেজের স্থানে ফোন ব্যবহার করা উচিত। দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে ফোন বেশি রেডিয়েশন ছাড়ে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

উপরন্তু, মোবাইল ডিভাইসের রেডিয়েশন প্রতিরোধ করতে কিছু অতিরিক্ত টিপস গ্রহণ করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফোন ব্যবহার না করার সময় বিমান মোডে রাখা বা প্রয়োজনে স্পিকার ব্যবহার করে কথা বলা।

  • ফোন কেনার সময় SAR মান যাচাই করুন
  • ফোনে রক্ষাকবচ ব্যবহার করুন যা রেডিয়েশন থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে
  • ফোনের রেডিয়েশন কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করুন

মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ মালায়া পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে এই ধরনের প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে মোবাইল রেডিয়েশনের ক্ষতি কমানো সম্ভব। নিজের ও প্রিয়জনের জন্য এ ধরনের কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ফোন ব্যবহারের সময় সাবধানতা

মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় কিছু সহজ সাবধানতা অবলম্বন করে আপনি নিরাপদ মোবাইল ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারেন। সঠিকভাবে সতর্ক হলে সুরক্ষিত মোবাইলিয়ং সম্ভব।

ব্যাটারি লো থাকলে ব্যবহার না করা

ফোনের ব্যাটারি যখন কম থাকে, তখন তা বেশি রেডিয়েশন উৎপাদন করে। তাই ব্যাটারি লো হলে বা লাল সংকেত দেখালেই মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত। এটি নিরাপদ মোবাইল ব্যবহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

Nerdbots Lead

অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেমন একটি ভালো মানের মোবাইল কভার বা ক্যাসিং ব্যবহারের মাধ্যমে সুরক্ষিত মোবাইলিয়ং নিশ্চিত করা সম্ভব। এটি শুধুমাত্র রেডিয়েশন থেকে সুরক্ষা দেয় না, বরং ফোনের দৈনিক ক্ষতি থেকেও রক্ষা করে।

সব সময় মনে রাখতে হবে, নিরাপদ মোবাইল ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য ছোট ছোট সাবধানতার চর্চা করতে হবে। এভাবে আপনি সর্বোত্তম সুরক্ষা পাবেন মোবাইল হ্যান্ডলিংয়ে।

মোবাইলের বিকিরণ কমানোর উপায়

আপনার মোবাইল ডিভাইস থেকে বিকিরণ কমানোর জন্য কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে। বিশেষ করে উন্নত মানের ফোন কেস ব্যবহার এবং অপ্রয়োজনীয় ফিচার বন্ধ রাখা সুরক্ষিত ডিভাইস ব্যবহারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  মেসেঞ্জার লাইট ইনস্টল করার সহজ নিয়ম | টিউটোরিয়াল

উত্তম কেস ব্যবহার

ভাল মানের মোবাইল কেস ব্যবহার করলে বিকিরণ কমানোর সাহায্য করতে পারে। কিছু কেস এমনও আছে যা বিকিরণ প্রতিরোধক চিপ অন্তর্ভুক্ত করে। এটি সুরক্ষিত ডিভাইস ব্যবহারের একটি সহজ এবং কার্যকরী উপায়।

ব্লুটুথ, ওয়াইফাই বন্ধ রাখা

যদি আপনি ব্লুটুথ এবং ওয়াইফাই প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার না করেন, তাহলে এই ফিচারগুলো বন্ধ রাখা উচিত। এটি এক প্রকারের বিকিরণ কমানোর টিপস যা আপনার মোবাইলের অতিরিক্ত রেডিয়েশন কার্যকর ভাবে হ্রাস করতে পারে। সুরক্ষিত ডিভাইস ব্যবহারের জন্য এধরনের ছোট ছোট পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব মানুষ অতিরিক্ত মেয়াদ ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন, তাদের বিকিরণজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেশি। বিশ্বে এখন প্রায় ৫ বিলিয়ন সক্রিয় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী আছে এবং এদের বিরুদ্ধে বিকিরণ দূষণের প্রমাণও বাড়ছে। তাই মোবাইল বিকিরণ কমানো আমাদের সকলের জন্যই অপরিহার্য।

এছাড়া, ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোনটি শরীর থেকে কিছুটা দূরে রাখা বা মোটেই ব্যবহার না করাও একটি বিকিরণ কমানোর ভাল উপায় হতে পারে।

রেডিয়েশনের ক্ষতি এড়ানোর টিপস

রাডিয়েশন প্রতিরোধ করতে এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখতে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে কিছু সতর্কতা অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই টিপসগুলো আপনাকে রেডিয়েশনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে এবং আপনার দৈনন্দিন জীবনের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

ফোন থেকে নিজেকে দূরে রাখা

ফোনকে প্রায়ই গা থেকে দূরে রাখুন, বিশেষ করে ঘুমানোর সময়। ফোন থেকে নির্গত মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশনের মাত্রা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই রাডিয়েশন প্রতিরোধের জন্য ফোনের ব্যবহার কমিয়ে দিন এবং এমন জায়গায় রাখুন যেখানে শরীরের সাথে সরাসরি সংস্পর্শে আসবে না।

আবদ্ধ পরিবেশে ফোন ব্যবহার না করা

ঘরের আবদ্ধ পরিবেশে ফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। গবেষণায় দেখা গেছে, আবদ্ধ পরিবেশে ফোন ব্যবহার করলে রেডিয়েশন এর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে যা স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। তাই বাড়ির বাইরে গিয়ে বা খোলা পরিবেশে ফোন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।

শিশুদের জন্য মোবাইল রেডিয়েশন কতটা বিপজ্জনক?

বাংলাদেশের প্রায় ৫০% অপ্রাপ্তবয়স্করা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, যা শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর রেডিয়েশনের বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। মোবাইল ফোন থেকে নির্গত নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন, যা বিশেষ করে শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশে প্রভাব ফেলে।

খুব কম রেডিয়েশনের ফোন ব্যবহার

শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় খুবই স্বল্প রেডিয়েশনের ফোন বেছে নেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার এবং ফোনের এসএআর (Specific Absorption Rate) মান যাচাই করা জরুরি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় দৈনিক মাত্র ১ ঘণ্টা এবং একটানা ২০ সেকেন্ডের বেশি কথা না বলাই শ্রেয়।

শিশুদের মোবাইল রেডিয়েশন যতটা সম্ভব কম রাখতে পরিবারের সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। পারিবারিক বিধি এবং মোবাইলের ব্যবহার সময় নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। অপর্যাপ্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহার থেকে সতর্ক থাকা উচিত, কেননা এটি এতে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে।

মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের সতর্ক থাকতে হবে। মোবাইল ফোন ব্যবহারে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, শ্রবণশক্তি হ্রাস এবং কান ক্ষতির মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। উল্লেখযোগ্যভাবে, গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল রেডিয়েশন শিশুদের শরীরে বিশেষত প্রভাব ফেলে। সুতরাং, মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের স্বাস্থ্যের কথা খেয়াল রাখবেন।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button