জওহরলাল নেহেরু

জওহরলাল নেহেরুর জীবনী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং আধুনিক ভারতের ইতিহাসে বিশাল প্রভাব ফেলেছে। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট থেকে ১৯৬৪ সালের ২৭ মে পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৮৯ সালের ১৪ নভেম্বর আল্লাহাবাদে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬৪ সালের ২৭ মে দিল্লিতে মৃত্যুবরণ করেন নেহেরু। তাঁর জীবদ্দশায়, তিনি ভারতীয় অর্থনীতি, শিক্ষা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

নেহেরু, “আধুনিক ভারতের রূপকার” নামে পরিচিত, ছিলেন একজন প্রভাবশালী লেখক এবং বক্তা। তাঁর নেতৃত্বের সময়, তিনি সংসদীয় গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রবর্ধনের পক্ষে ছিলেন। জওহরলাল নেহেরু জীবনী এবং প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর অবদান সম্পর্কে জানতে, ভারতবর্ষ এবং বিশ্বের ইতিহাসে তাঁর অমূল্য অংশীদারিত্ব পর্যালোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Contents show

জীবন ও কাজের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

ভারতীয় রাষ্ট্রনায়ক জওহরলাল নেহেরু তার জীবন এবং কাজের মাধ্যমে না শুধুমাত্র ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন বরং তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মৌলিক পরিবর্তন এবং উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

প্রাথমিক জীবন

নেহেরুর শৈশব কেটেছে এলাহাবাদে, যেখানে তিনি ১৮৮৯ সালের ১৪ নভেম্বর এক কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোতিলাল নেহেরু ছিলেন একজন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং মা স্বরূপরানি। নেহেরুর প্রাথমিক শিক্ষা বাড়িতেই হয় এবং তার বাল্যকাল থেকেই তিনি জ্ঞানার্জনের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।

শিক্ষা পটভূমি

নেহেরুর শিক্ষাগত যাত্রা শুরু হয় তার পনেরো বছর বয়সে, যখন তিনি ইংল্যান্ডের হ্যারো স্কুলে ভর্তি হন। এর পর, তিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, যেখানে তিনি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। কেম্ব্রিজে পড়াশোনার পর তিনি লন্ডনের ইননার টেম্পল থেকে আইন শাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ভারতে ফিরে এসে তিনি একটি আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন, যা পরে তাকে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে নিয়ে আসে।

জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

জওহরলাল নেহেরু তাঁর রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সম্মুখীন হন। নেহেরুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দেশ ও জাতির জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  বিহার: এক অনন্য রাজ্যের প্রচার

রাজনৈতিক জীবন শুরু

১৯১২ সালে নেহেরু বাঁকিপুর কংগ্রেসে প্রতিনিধির হিসেবে যোগ দেন। এটি নেহেরুর রাজনৈতিক জীবনে প্রথম পদক্ষেপ ছিল। এরপর তিনি ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়কালে তিনি ভারতের নীতিগত ও জাতীয় উন্নয়নে অসংখ্য কার্যক্রম গ্রহণ করেন।

স্বাধীনতা আন্দোলনে ভূমিকা

আইরিশ সিন ফিন আন্দোলন থেকে প্রেরণা পেয়ে নেহেরু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিবেশিত হন। এই ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন নেতৃত্ব দিয়ে তিনি কেবল ভারতের স্বাধীনতা অর্জন করেননি, বরং ভারতের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গিও প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেহেরুর অবদান

জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নানা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারত তার स्वतंत्रতার পর প্রথম ধাপে স্থায়ীত্ব এবং অগ্রগতির পথে এগোতে শুরু করে।

প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদক্ষেপ

নেহেরু ১৯৪৭ সালে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন এবং গণতান্ত্রিক শাসন পদ্ধতি ও শিল্পায়নের ভিত্তি স্থাপন করেন। তাঁর সময়কালে প্রথম পাঁচ বছরের পরিকল্পনা (১৯৫১-১৯৫৬) চালু হয়, যার ফলে ৩.৬% উন্নয়ন হার অর্জন করা সম্ভব হয়। নেহেরুর অর্থনীতি মূলত কৃষি ও শিল্প খাতে উন্নয়ন কেন্দ্রীভূত ছিল। বিভিন্ন বৃহত্তর প্রকল্প যেমন ভাকরা-নাঙ্গাল বাঁধ এবং বোকারো স্টিল প্লান্ট স্থাপন করেন তিনি।

অর্থনৈতিক নীতিমালা

নেহেরুর অর্থনীতির মূল মন্ত্র ছিল ভারতে একটি মজবুত অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করা। তিনি শিক্ষা ও কলা ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব দেন, যার একাংশ হিসেবে আইআইটি এবং আইআইএম-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিষ্ঠা করা হয়। নেহেরুর অর্থনীতি নীতি অনুসারে তিনি ১৯৫৮ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।

নেহেরু বিশ্বাস করতেন একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের প্রয়োজন। তাই তিনি বিরোধী দলগুলিকে যথাযথ সম্মান এবং সুবিচার প্রদান করতেন; যেমন ১৯৫৭ এবং ১৯৬২ সালের নির্বাচনে বিজয় অর্জনের পর। নেহেরুর অর্থনীতি এবং প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নীতি গুলো আজও প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ।

নেহেরু এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

জওহরলাল নেহেরু ছিলেন ভারতীয় রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি নিজেদের দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও অসামান্য অবদান রেখেছেন। নেহেরুর নিরপেক্ষতা নীতি দ্বারা প্রভাবিত, তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে শান্তি ও সহযোগিতা স্থাপনের চেষ্টা করেছেন।

নিরপেক্ষতা নীতি

নেহেরুর নিরপেক্ষতা নীতি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে কোনো একটি বড় শক্তির সাথে জড়িয়ে না থেকে বিশ্বের সকল দেশের সাথে সমানভাবে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। এই নীতি ‘পঞ্চশীল’ ধারণার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছিল, যা শান্তি ও সহযোগিতার পাঁচটি মুলনীতি প্রস্তাব করেছিল। নেহেরুর নিরপেক্ষতা নীতি সুপারিশ করেছিল যুদ্ধবিরোধী এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য।

চীন এবং ভারত সম্পর্ক

নেহেরু চীন-ভারত সম্পর্ক উন্নত করার জন্য উৎসুক ছিলেন। তিনি চেষ্টা করেছিলেন যাতে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও পারস্পরিক বোঝাপড়া স্থাপন করা যায়। যদিও চীন-ভারত সম্পর্ক সবসময় মসৃণ ছিল না, কিন্তু নেহেরুর প্রচেষ্টায় প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল। ১৯৫৪ সালে চীন ও ভারত ‘পঞ্চশীল’ মুলনীতি গ্রহণ করে যা দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হয়েছিল।

শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে নেহেরুর আগ্রহ

জওহরলাল নেহেরু ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা এবং সংস্কৃতির উন্নয়নে বিশেষভাবে উৎসর্গিত ছিলেন। তার নেতৃত্বে নেহেরুর শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করা হয়, যার মাধ্যমে ভারতীয় শিক্ষার একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপিত হয়। ভারতীয় সংস্কৃতির উন্নয়নেও নেহেরু অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তার আগ্রহ এবং প্রভাব পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আদর্শ স্থাপন করেছিল।

আরও পড়ুনঃ  কুষ্টিয়া জেলা

শিক্ষা সংস্কার

নেহেরুর সমর্থনে ১৯৬৯ সালে দিল্লির দক্ষিণে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (JNU) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নেহেরুর শিক্ষা নীতি অনুসারে JNU সামাজিক বিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ভাষা, এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি গবেষণা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত এবং এটি বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছে যেমন UGC এবং NAAC এর পুরস্কার। এখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশেষায়িত বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে পারেন, যা ভারতের শিক্ষার মান উন্নয়নে সাহায্য করে।

সংস্কৃতি ও শিল্পের উন্নয়ন

নেহেরু বিশ্বাস করতেন যে ভারতীয় সংস্কৃতির উন্নয়ন দেশের সমৃদ্ধি এবং ঐতিহ্যের অন্যতম মূল ভিত্তি। তিনি সংস্কৃতি এবং শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিলেন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকলা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সাথে ভারতের যোগাযোগ তৈরি করে তিনি এমন একটি পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন যেখানে ভারতের কৃষ্টি এবং সভ্যতা বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায়।

নেহেরুর লেখা সাহিত্য এবং বক্তৃতা

জওহরলাল নেহেরু ছিলেন একজন বিশিষ্ট লেখক এবং বক্তা, যাঁর কাজ আজও প্রাসঙ্গিক। তাঁর লেখা বই এবং বক্তৃতাগুলো তাঁকে একজন মহান চিন্তাবিদ এবং নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নেহেরুর বইয়ের তালিকা এবং নেহেরুর বক্তৃতা দেশ ও বিশ্বের ইতিহাসে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

“দ্য ড্যাস অফ হোপ”

নেহেরুর অন্যতম প্রকাশিত বই “দ্য ড্যাস অফ হোপ”। এই বইতে তাঁর ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং আদর্শের সমন্বয় পাওয়া যায়। তাঁর লেখনী সুনিপুণ এবং বিচক্ষণতায় সমৃদ্ধ যা পাঠকদের মনকে আলোড়িত করে। “দ্য ড্যাস অফ হোপ” পরিচালিত করে তাঁর আশা এবং স্বপ্নের প্রতিফলন। বইটি তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা তিনি তাঁর দেশবাসীর প্রতি অর্পণ করেছেন।

বক্তৃতার বিশেষ মুহূর্ত

নেহেরুর বক্তৃতার মুহূর্তগুলো ছিল চিরস্মরণীয় এবং অনু্প্রেরণামূলক। তাঁর বক্তব্যগুলি দেশের মানুষের মনের গহীনে আলো জ্বালত। এর মধ্যে অনেক বক্তৃতাই ইতিহাসের পৃষ্ঠায় গভীরভাবে খোদিত। বিশেষ করে তার “ট্রিস্ট উইথ ডেস্টিনি” বক্তৃতাটি স্বাধীনতা প্রাপ্তির মুহূর্তে মানব ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বক্তৃতা। নেহেরুর বইয়ের তালিকা যেমন বৈচিত্র্যপূর্ণ, তেমনই নেহেরুর বক্তৃতা দেশবাসীকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে।

মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সম্পর্ক

মহাত্মা গান্ধী ও জওহরলাল নেহেরু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের দুই প্রধান নেতা ছিলেন। তাদের সম্পর্কটি ছিল শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং ব্যক্তিগত ও আদর্শগত প্রেক্ষাপটে গভীর ও মধুর। নেহেরু ও গান্ধীর সম্পর্ক ভারতীয় রাজনীতিতে বিশেষ স্থান অর্জন করেছে এবং তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা স্বাধীনতার আন্দোলনকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছিল।

রাজনৈতিক সহযোগিতা

গান্ধীবাদী নেতা নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর আন্দোলনের প্রতি সমর্থক ছিলেন এবং গান্ধীজির আদর্শ অনুসরণ করতেন। নেহেরুর প্রতি গান্ধীর আস্থা ছিল অপরিসীম, যা রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হয়েছে। নেহেরু ও গান্ধীর সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত একসাথে গ্রহণ করতেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতেন। ১৯৪৬ সালে ক্যাবিনেট মিশনের সময় থেকে শুরু করে, নেহেরু ও গান্ধী একযোগে কাজ করেছেন। বিশেষ করে, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা এবং অন্যান্য আঞ্চলিক সমস্যা মোকাবিলায় তাদের যৌথ প্রচেষ্টা সমৃদ্ধ ফল দিয়েছে।

গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা

নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করতেন এবং তার আদর্শ ও দর্শনের সম্মান রাখতেন। নেহেরু ও গান্ধীর সম্পর্ক ছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা, যা ভারতীয় রাজনীতিতে বহুল প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, নেহেরু গান্ধীর আদর্শের প্রতি অনুপ্রেরিত হয়ে তার বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলেন। নেহেরু ও গান্ধীর সম্পর্ক শুধু একটি রাজনৈতিক সহযোগিতা নয়, বরং এক বন্ধুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক সম্পর্কের প্রতীক হয়ে আছে যা প্রজন্ম ধরে ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে যাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ

FAQ

জওহরলাল নেহেরুর জীবনী কী?

জওহরলাল নেহেরু ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৬৪ সালের ২৭ মে পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। তার জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ভারতীয় ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

নেহেরুর প্রাথমিক জীবন এবং শৈশব কেমন ছিল?

নেহেরুর জন্ম ১৮৮৯ সালের ১৪ নভেম্বর এলাহাবাদে এক কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ পরিবারে। তার প্রাথমিক শিক্ষা বাড়িতেই হয়েছিল এবং পনেরো বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ডের হ্যারো স্কুলে যান।

নেহেরুর শিক্ষাগত যাত্রার ভূমিকা কী ছিল?

তিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৯১২ সালে বাঁকিপুর কংগ্রেসে প্রতিনিধির হিসেবে যোগ দেন।

জওহরলাল নেহেরু কীভাবে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন?

নেহেরু ১৯১২ সালে বাঁকিপুর কংগ্রেসে প্রতিনিধির হিসেবে যোগ দেন এবং আইরিশ সিন ফিন আন্দোলন থেকে প্রেরণা পেয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিবেশিত হন।

নেহেরুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে ভূমিকা কী ছিল?

নেহেরু স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ১৯৪৭ সালে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি গণতান্ত্রিক শাসন পদ্ধতি ও শিল্পায়নের ভিত্তি স্থাপন করেন।

প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেহেরুর প্রধান পদক্ষেপগুলি কী ছিল?

প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, নেহেরু গণতান্ত্রিক শাসন পদ্ধতি ও শিল্পায়নের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং ১৯৫৮ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।

নেহেরুর অর্থনৈতিক নীতিমালা কি ছিল?

নেহেরু পরিকল্পিত অর্থনীতির ধারণা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে ভারী শিল্পায়ন ও কৃষির উন্নয়ন ছিল মূল লক্ষ্য।

নেহেরুর নিরপেক্ষতা নীতি কী ছিল?

আন্তর্জাতিক মঞ্চে নেহেরু নিরপেক্ষতা নীতি অবলম্বন করেন এবং চীন ও ভারতের মধ্যে প্রাথমিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।

চীন এবং ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেহেরুর ভূমিকা কী ছিল?

নেহেরু চীন ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, যদিও এই সম্পর্ক পরে বিভাজিত হয়।

নেহেরুর শিক্ষা সংস্কার কী ছিল?

নেহেরু শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেন এবং তার নেতৃত্বে শিক্ষা সংস্কারের মাধ্যমে ভারতীয় যুবসমাজকে উন্নীত করা হয়।

সংস্কৃতি ও শিল্পের উন্নয়নের ক্ষেত্রে নেহেরুর কী ছিল?

নেহেরু ভারতের সংস্কৃতি ও শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন এবং ন্যাশনাল কালচারাল অর্গানাইজেশনের মত সংস্থার মাধ্যমে এই উন্নতি সাধন করেন।

নেহেরুর “দ্য ড্যাস অফ হোপ” বইটি কী বিষয়ে?

“দ্য ড্যাস অফ হোপ” হল নেহেরুর লিখিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বই যার মাধ্যমে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ধারণা প্রকাশ করেছেন।

নেহেরুর বক্তৃতার বিশেষ মুহূর্তগুলি কী কী?

নেহেরুর অনেক বিখ্যাত বক্তৃতা আছে, তবে স্বাধীনতার ঘোষণার রাতে তাঁর “ট্রিস্ট উইথ ডেসটিনি” বক্তৃতাটি অন্যতম।

মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে নেহেরুর সম্পর্ক কেমন ছিল?

নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর নিকট সহচর ছিলেন এবং গান্ধীর সহযোগিতায় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন।

গান্ধীর প্রতি নেহেরুর শ্রদ্ধা প্রকাশিত হয় কীভাবে?

নেহেরু সর্বদা গান্ধীজির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন এবং তার আদর্শ ও শিক্ষাগুলি অনুসরণ করেছেন।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button