রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা, যিনি সাধারনত মিথিলা নামে পরিচিত, তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী অভিনেত্রী, গায়িকা এবং উন্নয়নকর্মী। মিথিলার কর্মজীবন এবং তার ব্যক্তিগত জীবনের ধারা সমানভাবে বাংলাদেশ এবং ভারতে গভীর প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশী অভিনেত্রী হিসাবে নিজের পরিচিতি তৈরি করতে এবং মিথিলার কর্মজীবনের শুরুয়ে তিনি বহু চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছেন।

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলার জীবনী পড়তে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করি, তার প্রতিভার পাশাপাশি সমাজসেবা এবং শিক্ষাক্ষেত্রেও আছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। বাংলাদেশের বিনোদন জগতে এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে মিথিলার অবদান অনস্বীকার্য।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলার শৈশব এবং পরিবার ঢাকার প্রাণকেন্দ্রেই অতিবাহিত হয়। ১৯৮৪ সালের ২৫ মে জন্মগ্রহণ করা মিথিলার শৈশব বেশ আনন্দময় ছিল। লিটল জুয়েলস স্কুল এবং ভিকারুননেসা নুন স্কুলে তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তার পরিবার শিক্ষার প্রতি অনুরাগী ছিল এবং শৈশব থেকেই শিক্ষার প্রতি যে ভালোবাসা তা তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছিল।

মিথিলার শিক্ষাজীবন খুবই উজ্জ্বল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এখানেই শেষ নয়, শৈশব এবং পরিবার থেকে প্রাপ্ত অনুপ্রেরণা নিয়ে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্টে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং চ্যান্সেলরের গোল্ড মেডেল পান। এছাড়াও তিনি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বি.এড. ডিগ্রি লাভ করেন।

২০১০ সালে মিথিলা ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটায় “কনটেম্পোরারি অ্যাপ্রোচেস টু কারিকুলাম: ইন্সট্রাকশন এন্ড এসেসমেন্ট” কোর্সে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ জেনেভাতে আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশনে পিএইচডি করছেন। মিথিলার শৈশব এবং পরিবার থেকে এই ধারাবাহিক শিক্ষার প্রবাহ একটি বিস্ময়কর উদাহরণ।

শিল্পকলা এবং নৃত্য

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা তার শিল্পকলা ও নৃত্যজীবনে একজন সৃজনশীল এবং প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃত। নাটক এবং থিয়েটার জগতের প্রতি তার আগ্রহ ছোটবেলায় থেকেই গড়ে ওঠে। শিশু বয়সে পিপলস থিয়েটারে কাজ করার মাধ্যমে মিথিলার থিয়েটার অভিজ্ঞতা আরও বেশি সমৃদ্ধ হয়।

বেনুকা ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টসে নৃত্যের চর্চা মিথিলার জীবনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখানে তিনি কত্থক, মণিপুরি এবং ভরতনাট্যম শিখেছেন। নাটক এবং থিয়েটারের পাশাপাশি মিথিলার নৃত্যের প্রতি নিবেদন তাকে একজন বহুগুণে গুণান্বিত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

  • কত্থক
  • মণিপুরি
  • ভরতনাট্যম

মিথিলার নৃত্যকর্ম শুধু একাডেমিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এবং নাটক এবং থিয়েটারে তার নৃত্যনৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন। তার নৃত্যশিল্পের প্রতিভা তাকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পীদের কাতারে নিয়ে এসেছে।

নৃত্যে মিথিলার অবদানের কারণে বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে তার একটি আলাদা স্থান তৈরি হয়েছে। তার শিল্পকলার প্রতি এই প্রেম এবং অভিনবত্বের জন্যই তিনি সবসময় স্মরণীয় থাকবেন।

কর্মজীবনের শুরু

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ২০০২ সালে যখন তিনি মডেলিং জগতে পা রাখেন। মিথিলার মডেলিং ক্যারিয়ার তার পেশাদার জীবনের প্রথম ধাপ ছিল, যা তাকে মিডিয়া ও বিনোদন জগতে জনপ্রিয় করে তোলে। এরপর, মিথিলার অভিনয় শুরু হয় ২০০৬ সালে যখন তিনি “Shunchen Ekjon Radio Jokeyr Golpo” নাটকে অভিনয় করেন।

মডেলিংয়ের মাধ্যমে মিথিলা তার কেরিয়ারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান এবং তার অভিনয় জীবনের সূচনা তাকে আরো বিন্দুতেয় পরিচিতি প্রদান করে। মিথিলার মডেলিং এবং অভিনয় দক্ষতা তাকে বাংলাদেশের বিনোদন জগতে স্থায়ী স্থান দান করে।

আরও পড়ুনঃ  তানজিন তিশা

তার অবদান তার অনন্য দক্ষতা এবং আগ্রহকে প্রতিফলিত করে, এবং মিথিলার মডেলিং ক্যারিয়ারমিথিলার অভিনয় শুরু তার বহুমুখী প্রতিভার একটি উদাহরণ হিসেবে গণ্য হয়।

অভিনয় এবং মডেলিং

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা তার মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০২ সালে, এখনো তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলেন। ২০০৬ সালে মিথিলা প্রথমবারের মতো অভিনয়ের জগতে পা রাখেন “শুনছেন একজন রেডিও জকির গল্প” টেলিভিশন নাটকের মাধ্যমে। 

অভিনয়ের পাশাপাশি, মিথিলা টেলিভিশন অনুষ্ঠান “আমার আমি” উপস্থাপনা করেছেন, যা বাংলাভিশনে প্রচারিত হয়। টেলিভিশন নাটক, টেলিফিল্ম এবং সঙ্গীত ভিডিওতেও তার অভিনয় দেখার সুযোগ পেয়েছে দর্শকরা। মিথিলা তার চলচ্চিত্র অভিষেক করেন ২০২২ সালে “অমানুষ” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, একই বছর তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র “আয় খুকু আয়”-এও অভিনয় করেন। টেলিভিশন নাটক এবং সিনেমা মিলিয়ে তার ক্যারিয়ারটি বহুমাত্রিক ও সমৃদ্ধ।

তাছাড়া, মিথিলা বিভিন্ন টিভি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন, যা তার মডেলিং ক্যারিয়ারে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মিথিলার টেলিভিশন নাটক এবং সিনেমা পারফরম্যান্স তার ভক্তদের মাঝে প্রভূত প্রশংসা কুড়িয়েছে। তার অভিনয় এবং মডেলিং দক্ষতা তাকে বিনোদন জগতের এক অন্যতম আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

মিথিলা শুধুমাত্র বিনোদন জগতেই আবদ্ধ নয়, তিনি শিক্ষাক্ষেত্রেও তার অবদান রেখেছেন। স্কলাস্টিকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ফ্যাকাল্টি মেম্বার এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালে আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান হিসেবে তিনি আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে কাজ করছেন।

এই বহুগুণী ব্যক্তিত্বের কার্যক্রম দেখে বোঝা যায়, তিনি শুধুমাত্র অভিনয় এবং মডেলিংয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজের উন্নয়নে বহুমুখী অবদান রেখে চলেছেন। এজন্য মিথিলার টেলিভিশন নাটক এবং সিনেমা ছাড়াও তার সমাজসেবামূলক কাজগুলোও বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।

Rafiyath Rashid Mithila: অধ্যবসায়ের গল্প

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা একজন প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী যিনি ওয়েব সিরিজ এবং চলচ্চিত্রে অসাধারণ প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। ২০২০ সালে হইচই-এর “একাত্তর” ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে তার ওয়েব সিরিজ অভিষেক ঘটে। এই শীর্ষস্থানীয় ওয়েব সিরিজ এবং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মিথিলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার প্রতিভা প্রমাণ করেছেন।

কলকাতা এবং বাংলাদেশে তিনি সমানভাবে জনপ্রিয়।

  • ২০২০ সালে হইচই-এর “একাত্তর” ওয়েব সিরিজে তার অনবদ্য অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করে।
  • মিথিলা কলকাতার সিনেমাতেও কাজ করেছেন এবং এটি তার পেশার একটি মহৎ উদাহরণ।
  • বাংলাদেশে নতুন মাল্টিপ্লেক্স চালু হওয়ার পর থেকে চলচ্চিত্র বাজারে উন্নতি হয়েছে, যা এই কার্যক্রমকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

একই সঙ্গে তিনি NGO এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমেও যুক্ত আছেন। যেমন, তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ থিয়েটার প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেছেন।

মিথিলা বলিউডের পরিচালক সৃজিত মুখার্জী সহ অনেক জনপ্রিয় পরিচালকের সাথে কাজ করেছেন। “ও অভাগী” চলচ্চিত্রের সঙ্গে তার কাজের অভিজ্ঞতা এটি প্রমাণ করে যে বাজেট সীমাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কীভাবে তিনি সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছেন। সিনেমা প্রযোজনার উচ্চ খরচ এবং সীমিত প্রদর্শনী ক্ষেত্র সত্ত্বেও তার পদক্ষেপগুলো দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

মিথিলার প্রতিশ্রুতি এবং অক্লান্ত পরিশ্রমই তাকে সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছিয়েছে, যা তার কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে একটি সুন্দর সহাবস্থানের উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লেখালেখি এবং সঙ্গীত

মিথিলা একজন প্রজ্বলিত প্রতিভাবান লেখিকা ও গায়িকা, যিনি তার মুল্যবান লেখালেখি ও সঙ্গীত ক্যারিয়ার দিয়ে সবার মন জয় করেছেন। স্কুল জীবন থেকেই মিথিলার লেখনী মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। তার লেখা কবিতা, গল্প ও উপন্যাস পাঠকের মনের গভীরে পৌঁছেছিল। সম্প্রতি, মিথিলার গান বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

আরও পড়ুনঃ  মোনালি ঠাকুর

মিথিলার সঙ্গীত ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল একাধিক পাওয়ারফুল গানের অ্যালবাম দিয়ে। তার গানের মধ্যে সুরের বিন্যাস ও কথা পাঠকদের মন ছুঁয়েছে। অ্যালবামগুলির মধ্যে অন্যতম “রোদেলা রোদেলা” এবং “চাঁদের আলো”। এই গানগুলোতে মিথিলার লেখনী মিশ্রিত হয়েছে দক্ষ সুর ও সঙ্গীতের সাথে।

তার সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে মিথিলার লেখনী অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। এতে রয়েছে রোম্যান্টিক, দুঃখময় ও সামাজিক বার্তা। মিথিলা উল্লেখ করেছেন যে, সঙ্গীত এবং লেখালেখির মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে থাকতে চান এবং তাদের জীবনে পরিবর্তন আনতে চান।

মিথিলার সঙ্গীত ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা দিক হলো তার নিজস্ব রচনা ও সুরের সংমিশ্রণ। তাকে নিয়ে কাজ করেছেন দেশের অনেক বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সঙ্গীত তার জীবনের অঙ্গ আর লেখালেখি তার আত্মার প্রকাশ।

মিথিলার গান বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তার গানগুলিতে বাংলা ভাষার সৌন্দর্য প্রদর্শিত হয়। তার গানের যাদুতে সবাই মুগ্ধ ও বিমোহিত হয়। কখনো আবেগপূর্ণ, কখনো উচ্ছলতার সঙ্গে গান গেয়েছেন মিথিলা, যা আকর্ষণ করেছিল অসংখ্য শ্রোতা।

সমকালীন বাংলা সঙ্গীত ও সাহিত্যে মিথিলার অবদান স্বাধীনভাবে উল্লেখযোগ্য। তার সঙ্গীত ও লেখালেখি সবসময় মননশীল ও প্রাসঙ্গিক ছিল। মিথিলার লেখনী ও গানে তিনি বার্তা দেন সবার জন্য, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের জন্য যাদের তিনি নতুন দিশা দেখাতে চেয়েছেন।

একাডেমিক অবদান

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা শিক্ষকতা এবং একাডেমিক কর্মজীবনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। মিথিলা ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের প্রারম্ভিক শৈশব উন্নয়নের প্রধান হিসাবে কাজ করেছেন, যেখানে তিনি শিশু শিক্ষা এবং উন্নয়নের উপর কাজ করে যাচ্ছেন। তার শিক্ষাগত যাত্রায়, মিথিলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রারম্ভিক শৈশব উন্নয়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং সেখানে তিনি চ্যান্সেলরের স্বর্ণপদক পেয়েছেন। তার শিক্ষার পথচলা এখানেই থেমে থাকেনি; তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কারিকুলাম, ইন্সট্রাকশন এবং মূল্যায়ন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে, মিথিলা জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রারম্ভিক শৈশব শিক্ষায় ডক্টরেট প্রোগ্রাম করছেন।

আন্তর্জাতিক সংস্থায় তার কর্মরত সময়ে, মিথিলা তানজানিয়ার ১৬ মিলিয়নেরও বেশি শিশুদের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মী হিসেবে উগান্ডা, তানজানিয়া, এবং সিয়েরা লিওন সহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন।

মিথিলার একাডেমিক অবদানের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলনে অংশগ্রহণ যেমন International Quality Education Conference অন্তর্ভুক্ত, যা শিক্ষাগত উন্নয়নের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ রাখছে। এ ছাড়া, Early Childhood Development সম্পর্কে তার গবেষণামূলক কার্যক্রম এবং বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে গ্লোবাল লেভেলে তার অবদান উল্লেখযোগ্য।

তার কাজের পাশাপাশি, মিথিলা Asia-Pacific Regional Network for Early Childhood (ARNEC) এবং South Asia Forum of Early Childhood Development Professionals (SAFECDP) এর মতো প্রতিষ্ঠানের সদস্যও। শিক্ষকতা এবং শিক্ষা উন্নয়নে তার এই বিশাল ভূমিকা তাকে একজন প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রভাবশালী শিক্ষানন্দন করে তুলেছে।

মিথিলা বলেন, “শিক্ষকতা আমার পারিবারিক সমর্থন এবং জীবনযাত্রার একটি মূল অংশ।” তার এই অবদানের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা এবং শিশু উন্নয়ন ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ হয়ে উঠেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে বিশেষ পরিচিত। তাহসান রহমান খান এর সাথে বিবাহ এবং সন্তানের জন্ম ছিল এক লোমহর্ষক অধ্যায়। মিথিলা প্রথমে তাহসান রহমান খানের সাথে ২০০৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে যার নাম আয়রা তেহরীম খান। তথাপি, তাহসান রহমান খান এর সাথে বিবাহ এবং সন্তানের জন্মের পর, নানা ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে তারা ২০১৭ সালে বিচ্ছেদ করেন।

আরও পড়ুনঃ  অপি করিম

এর পরবর্তী সময়ে, ২০১৯ সালে মিথিলা বিবাহ করেন ভারতীয় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে। এই বিবাহ নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা করে, যা মিথিলার ব্যক্তিগত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সাথে বিবাহ মিথিলা এবং সৃজিত উভয়ের পেশাগত জীবনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তাদের এই নতুন যাত্রা এখনও পর্যন্ত সুখের সঙ্গে পার করছে।

সম্মাননা এবং পুরস্কার

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা তার কর্মজীবনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় অনুষ্ঠান থেকে অজস্র সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন। মিথিলার অর্জন অনেক ব্যপক, যার মধ্যে অসাধারণ জনপ্রিয়তা গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছে।

সম্প্রতি, মিথিলা ১৪তম দাদাসাহেব ফালকে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন। এটি মিথিলার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অভিনয়ে গভীর দক্ষতার প্রমাণ স্বরূপ।

  • জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ)
  • মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার
  • বাচসাস পুরস্কার

এছাড়াও, মিথিলা বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অবদানের জন্যও সম্মানিত হয়েছেন। তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন যে যে কোন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তিনি একটি উল্লেখযোগ্য নাম।

মিথিলার সর্বশেষ মিথিলা সম্মাননা এবং পুরস্কার অর্জনগুলি তার প্রতিভার স্বীকৃতি দেয় এবং তাকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

এগুলো মিথিলার জন্য একটি বিশাল অর্জন এবং তাকে অনুপ্রাণিত করেছে ভবিষ্যতে আরও বড় এবং সাহসিক তৎপরতায় নিজেকে নিযুক্ত করতে।

এই সম্মাননা এবং পুরস্কার শুধু মিথিলার ব্যক্তিগত জীবনের একটি শুন্যতা পূরণের সাধারণ স্রোত নয়, বরং এটি একটি প্রতিনিয়ত তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ। মিথিলার এই সকল কাজ আমাদের মন জগতে সময়ে সময়ে তার অবদানকে চিহ্নিত করে নতুন নজির স্থাপন করবে।

সমাপ্তি

রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা, যিনি পেশাগতভাবে মিথিলা নামে পরিচিত, তার বহুমুখী প্রতিভা এবং ক্ষমতার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্যে এক গর্বিত নাম হয়ে উঠেছেন। তার কর্মজীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন মিথিলা। তিনি ২০০২ সালে নিলামজানা পল্লীর ফ্যাশন হাউজ থেকে মডেলিং শুরু করেন এবং পরবর্তী সময়ে অভিনয়, লেখালেখি, সঙ্গীত এবং একাডেমিক কাজের মাধ্যমে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

মিথিলার ক্যারিয়ার সমাপ্তি তার অর্জন এবং অবদানের মাধ্যমে চিহ্নিত হয়। তিনি কাজ করেছেন বিভিন্ন টেলিভিশন নাটক এবং ওয়েব সিরিজে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য “হইচই” এবং “আমানুষা”। চলচ্চিত্র জগতে তার সাফল্যও লক্ষ্যণীয়, যেমন রাজার্শি দে এবং অনির্বাণ চক্রবর্তীর পরিচালনায় “মায়া” এবং “ও আগি”। তিনি ২০২৪ সালে ১৪তম দাদাসাহেব ফালকে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন “ও আগি” চলচ্চিত্রের জন্য।

একাডেমিক কাজেও মিথিলার উপস্থিতি প্রশংসনীয়। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং নরডান বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন এবং শিশু বিকাশ প্রোগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করেন। মিথিলা বর্তমানে জেনিভা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রারম্ভিক শিশু শিক্ষা বিষয়ে ডক্টরেট করছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তার অবদান বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

মিথিলার জীবনী একটি অত্যন্ত প্রেরণাদায়ক গল্প। তার ব্যক্তিগত জীবনে, সঙ্গীতশিল্পী তাহসান রহমান খানের সাথে বিবাহ এবং পরবর্তীতে চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জীর সাথে বিবাহের মাধ্যমে এ কথা প্রতিষ্ঠিত হয় যে কাজ আর ব্যক্তিগত জীবনের সমন্বয়ই তাকে আজকের মিথিলা রূপে গড়ে তুলেছে। মিথিলার জীবনী এবং অর্জন তার সহকর্মী এবং অনুরাগীদের জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button