নানি (অভিনেতা)

নাভিন বাবু ঘণ্টা, যিনি নানি নামে অধিক পরিচিত, ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে এক পরিচিত মুখ। তিনি প্রধানত তেলেগু সিনেমা জগতে অভিনয় করেন এবং অসাধারণ প্রতিভার জন্য বিখ্যাত। নানি ২৪ ফেব্রুয়া, ১৯৮৪ সালে হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তেলেগু সিনেমা জগতে তাঁর অবদান অসাধারণ। তিনি দুইটি রাজ্য নন্দী পুরস্কার এবং দুইটি ফিল্মফেয়ার ক্রিটিক্স বেস্ট এক্টর পুরস্কার অর্জন করেছেন।

নানি অভিনেতা হিসেবে ২০০৮ সালে তেলেগু সিনেমা “অষ্ট ছম্মা” দিয়ে তাঁর যাত্রা শুরু করেন। তার অভিনয় দক্ষতা ও চরিত্রের মধ্যে সত্ত্বার অভিব্যক্তি নানি কে দ্রুত জনপ্রিয় করে তোলে। নানি ভারতীয় চলচ্চিত্র তারকা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন এবং বিভিন্ন সফল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছেন।

নানির জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

নানির জন্ম হায়দ্রাবাদে, ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে। নানির জন্ম হায়দ্রাবাদের বিখ্যাত একটি হাসপাতলে হয়। তাঁর জন্ম ও শৈশব জীবন থেকে তিনি সবসময় অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন, যা পরে তাঁর তেলেগু অভিনয় জীবনে তেলেগু অভিনেতা নানি হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়।

জন্ম তারিখ ও স্থান

নানি ১৯৮৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। হায়দ্রাবাদের অভিনেতা হিসেবে তিনি শিশু কাল থেকেই তেলেগু চলচ্চিত্রের প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন।

শিক্ষা ও পরিবার

নানি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন চেকেণ্ডরাবাদের ওয়েসলি ডিগ্রি কলেজ থেকে। তাঁর শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত গৌরবান্বিত। নানির জন্ম এবং শিক্ষা জীবনের প্রতিটি পর্যায় তাঁকে ভবিষ্যতে তেলেগু অভিনেতা নানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। তাঁর পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী অঞ্জনা ইয়ালাভার্তি এবং একটি সন্তান।

আরও পড়ুনঃ  সঞ্জয় কাপুর

অভিনয়ে ক্যারিয়ারের শুরু

নানির অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল অনেক আগ্রহ ও উত্তেজনার সাথে। তাঁর প্রথম সিনেমা দিয়েই তিনি সবার নজরে আসেন এবং তার পরবর্তী সাফল্যের পথ সুগম করেন।

প্রথম সিনেমা

২০০৮ সালে নানি “আস্থা চাম্মা” ছবির মাধ্যমে তেলেগু সিনেমা জগতে অভিষেক করেন। এই সিনেমাটি শুধু বক্স অফিসে সফল হয়নি, বরং নানির অভিনয়ের জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।

প্রথম কয়েকটি হিট

“আস্থা চাম্মা”-র সফলতার পর, নানি “আলা মোদালাইনিদি” এবং “ভিমলি কাবাডি জাট্টু” ছবিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই সিনেমাগুলিও বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় এবং নানির অভিনয় ক্যারিয়ার আরও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে যায়।

তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সাফল্য

নানি তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তাঁর অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতা ও অভিনব সিনেমা নির্বাচনের মাধ্যমে। নানি তাঁর ক্যারিয়ারে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং ও বহুমুখী চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যা তাঁকে দর্শকদের কাছে বিশেষ স্থান দিয়েছে।

বড় ব্রেকথ্রু মুভি

তেলেগু সিনেমা সাফল্য অর্জনের পথে নানির ব্রেকথ্রু সিনেমা “ইয়েতো ভেল্লিপোয়indwa মানাসু” এবং “ই” উল্লেখযোগ্য। এই ছবিগুলো নানির ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য মাইলফলক, যা তাঁকে তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত করেছে।

  1. “ই”: এই সিনেমায় নানি তাঁর অভিনয় দক্ষতার গভীরতা প্রদর্শন করেছেন, যা দর্শকদের মন জিতে নিয়েছে।
  2. “ইয়েতো ভেল্লিপোয়indwa মানাসু”: এই সিনেমায় নানির প্রতিভা পূর্নমাত্রায় প্রকাশ পেয়েছে।

সমালোচকদের প্রশংসা

নানির ব্রেকথ্রু সিনেমা সমালোচকদেরও ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাঁর অভিনয় শুধু দর্শকদের নয়, সমালোচকদের মনেও জায়গা করে নিয়েছে। “ইন” এবং “ইয়েতো ভেল্লিপোয়indwa মানাসু” সিনেমার মাধ্যমে নানি যেমন বক্স অফিস লাভ করেছেন, তেমনি সমালোচকদের সাধুবাদ।

তেলেগু সিনেমা সাফল্য অর্জনের জন্য নানি সত্যিই একটি বড় প্রভাবশালী অভিনেতা হিসেবে দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন। নানির আরও কিছু জনপ্রিয় সিনেমা যেমন “বালে বালে মগতয়” এবং “জার্সি” তাঁর ক্যারিয়ারকে আরও উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  হেমা মালিনী

তামিল চলচ্চিত্রে পদার্পণ

তারকাখ্যাতি অর্জনের পর, নানি তামিল চলচ্চিত্রে নিজের প্রতিভা প্রমাণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তামিল চলচ্চিত্রে তাঁর প্রথম পদার্পণ হয় “వేపమ్” সিনেমার মাধ্যমে, যা সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। নানির তামিল সিনেমা তাঁর ক্যারিয়ারে এক নতুন অধ্যায় যুক্ত করে।

তামিল সিনেমার তালিকা

নানি বিভিন্ন তামিল সিনেমায় অভিনয় করেছেন যা তাঁর বহুমুখী প্রতিভার দৃষ্টান্ত। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য তামিল সিনেমার মধ্যে কয়েকটি হল:

  • వేపమ్
  • అహ సాధారణం
  • రూ

সাফল্য ও প্রভাব

নানির তামিল সিনেমা তাঁকে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তামিল সিনেমা সাফল্য তাঁকে কেবল তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই নয়, পুরো ভারতজুড়ে পরিচিতি এনে দেয়। তাঁর স্বতন্ত্র অভিনয় শৈলী এবং দক্ষতা তামিল চলচ্চিত্রের দর্শকদের মন জয় করেছে।

চলচ্চিত্র প্রযোজনা

নানি শুধু একজন প্রতিভাবান অভিনেতা নন, তিনি একজন সার্থক চলচ্চিত্র প্রযোজকও। নানির প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলোতে দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেছে। তার তেলেগু প্রযোজনা সিনেমাগুলোতে তিনি গল্প ও নিরীক্ষার জন্য অধিক প্রশংসিত হয়েছেন।

প্রথম প্রযোজিত সিনেমা

নানির প্রথম প্রযোজিত চলচ্চিত্র “ఎవడె సుబ్రమణ్యం” মুক্তি পায় ২০১৫ সালে। এটি একটি একই সময়ে ভ্রমণ এবং আবেগের গল্প, যা দর্শক হৃদয়ে গৃহীত হয়। এই সিনেমাটি প্রযোজনার মাধ্যমে, তিনি তার প্রযোজনা দক্ষতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি গভীর আগ্রহ প্রদর্শন করেন। “ఎవడె సుబ్రమణ్యం” তেলেগু প্রযোজনা ইন্ডাস্ট্রিতে একটি বিশেষ স্থান লাভ করে।

উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা

  • অ! — ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল এবং দর্শকমহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এটি নানির প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম সম্পদ।
  • জার্সি — ২০১৯ সালে মুক্তি পায়, এটি একটি উচ্চ প্রশংসিত স্পোর্টস ড্রামা যেখানে একজন প্রাক্তন ক্রিকেটারের সংগ্রামের গল্প তুলে ধরা হয়েছিল। নানির প্রযোজনা দক্ষতা এই চলচ্চিত্রে অত্যন্ত প্রশংসিত হয়।
  • হিট: দ্য ফার্স্ট কেস — ২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া এই ত্রিলার চলচ্চিত্র নানির তেলেগু প্রযোজনা হিসেবে বেশ প্রশংসিত হয়।
আরও পড়ুনঃ  দীপিকা পাড়ুকোন

নানির প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলো শুধুমাত্র বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি বরং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলে গেছে। তার তেলেগু প্রযোজনা ধারাবাহিকভাবে বিনোদন সরবরাহ করে চলেছে।

টেলিভিশন উপস্থাপক ও আরজে

সহজাত প্রতিভার গুণে শুধুমাত্র চলচ্চিত্র জগতেই নয়, টেলিভিশন উপস্থাপক ও রেডিও জকি হিসেবে নানি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তার অনবদ্য সঞ্চালন ক্ষমতা ও মিষ্টি স্বভাব দর্শক ও শ্রোতা উভয়ের মন জয় করেছে। টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি দর্শকদের বিনোদনের জন্য একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

বিগ বস তেলেগু

নানি ‘বিগ বস তেলেগু’ রিয়েলিটি শো-এর দ্বিতীয় সিজনের উপস্থাপক হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। তার মিষ্টি বাচনভঙ্গি ও দক্ষ সঞ্চালন শোটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল। নানি তার স্বতঃস্ফূর্ততা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণে সকল প্রতিযোগীর মন জয় করে নেন। এই শো-এর মাধ্যমে তিনি নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছে যান।

রেডিও জকি

চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের বাইরে নানি রেডিওতে এর আগে আরজে হিসেবেও কাজ করেছিলেন। ‘বিশেষ সকাল’ নামে একটি জনপ্রিয় রেডিও শো-এর সঞ্চালক হিসেবে নানির ভক্ত সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়। তার কণ্ঠের জাদু ও উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছিল। আরজে হিসেবে কাজ করার সময় তিনি বিভিন্ন মনোরম গল্প ও গান শোনার মাধ্যমে শ্রোতাদের মনোরঞ্জন করতেন।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button