দিলীপ কুমার

দিলীপ কুমার, যার আসল নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান, ছিলেন ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্রের এক প্রধান পুরুষ অভিনেতা। ভারতীয় সিনেমায় “ট্রাজেডি কিং” নামে পরিচিত, দিলীপ কুমারকে মনে করা হয় অভিনয়ের সম্রাট। পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে, তিনি ৫৭টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর, পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি, যখন এটি ব্রিটিশ শাসনের আওতায় ছিল (বর্তমান পাকিস্তান)।

তাঁর অভূতপূর্ব প্রতিভার জন্য, দিলীপ কুমার ভারতীয় সিনেমায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন এবং বলিউডে সবচেয়ে বেশি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড সেরা অভিনেতা হিসেবে আটবার জেতার রেকর্ড রাখেন। ১৯৬০ সালে মুক্তি পাওয়া তাঁর মুঘল-এ-আজম সিনেমাটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসের সর্বোচ্চ আয়কারী ফিল্ম ছিল ১৫ বছর কী বেশি সময় ধরে। দিলীপ কুমারের জীবনী এবং তাঁর অবদানগুলি বিশ্বের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে চিরকালীন স্থায়ী হয়ে থাকবে।

প্রাথমিক জীবন

হিন্দি সিনেমার স্বর্ণযুগের অগ্রদূত দিলীপ কুমার, ১১ ডিসেম্বর ১৯২২ সালে পেশাওয়ারের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার তখনকার ব্রিটিশ ভারতের পেশাওয়ার অঞ্চলে বসবাস করতেন। দিলীপ কুমার জন্ম এই মুসলিম পরিবারে হওয়ায় তাঁর মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশে পরিবারের গভীর প্রভাব ছিল।

জন্ম এবং পারিবারিক পটভূমি

দিলীপ কুমার পারিবারিক পটভূমি সম্পর্কে জানাতে গেলে, উল্লেখ করতে হয় যে তার পিতা লালা গোলাম সারওয়ার একজন সফল ফলের ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি পেশাওয়ার ও দেওলালীতে ফলের বাগানে নিযুক্ত ছিলেন। তার মাতা আয়েশা বেগম ছিলেন একজন গৃহিণী, যিনি পরিবারটির সমস্ত দেখাশোনা করতেন।

প্রারম্ভিক শিক্ষা এবং বাবার পেশা

দিলীপ কুমারের প্রারম্ভিক শিক্ষা শুরু হয়েছিল নাসিকের বার্নস স্কুলে। তার বাবার পেশার প্রসার তার শিক্ষাজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। প্রারম্ভিক জীবনের এই সময়কালে তিনি ব্রিটিশ ভারতের পেশাওয়ারে বাবার সঙ্গে অগ্রগামী ব্যবসার নজরদারি করতেন এবং সংসারের সাহায্য করতেন।

কর্মজীবনের শুরু

দিলীপ কুমারের বলিউডে আত্মপ্রকাশ ছিল সত্তরের দশকের শুরুর দিকে, যা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে স্মরণীয় ঘটনা। তার অভিনয় দক্ষতা এবং প্রতিভা অল্প সময়ের মধ্যে তাকে বড় পর্দায় উল্লেখযোগ্য করে তুলেছিল।

প্রথম চলচ্চিত্র

১৯৪৪ সালে, দিলীপ কুমার প্রথম চলচ্চিত্র ‘জোয়ার ভাটা’ এর মাধ্যমে বলিউডে প্রবেশ করেন। এটি বোম্বে টকিজ প্রযোজিত একটি চলচ্চিত্র ছিল। যদিও ‘জোয়ার ভাটা’ বক্স অফিসে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, তবু দিলীপ কুমারের অভিনয় দক্ষতা ক্রমশ জনপ্রিয় হতে থাকে।

প্রথম সাফল্য

তার প্রথম ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র ছিল ‘জঙ্গু’ (১৯৪৭), যা বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। এই চলচ্চিত্রটি নুর জাহানের সাথে তার অভিনয়কে নুতন উচ্চতায় নিয়ে যায়। তারপরে, দিলীপ কুমার একের পর এক সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বলিউডের স্থায়ী একটি নাম হয়ে ওঠেন।

আরও পড়ুনঃ  শ্রীদেবীর জীবনী - অসাধারণ অভিনেত্রীর গল্প

এই সাফল্যের পিছনে ছিল তার কঠোর পরিশ্রম এবং অভিনয়ে বিরল নিখুঁততা। দিলীপ কুমার প্রথম চলচ্চিত্র ‘জোয়ার ভাটা’, নুর জাহান এর সাথে তার কাজ এবং বক্স অফিস সাফল্য তাকে বলিউডের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিণত করেছে।

Dilip Kumar এর সেরা চলচ্চিত্রসমূহ

ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারের ক্যারিয়ার বহু স্মরণীয় চলচ্চিত্রে সমৃদ্ধ। তার অভিনয় দক্ষতা এবং অনবদ্য চরিত্রায়ণ তাকে করেছে অমর। ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘গঙ্গা যমুনা’, ‘মধুমতি’, ‘দেবদাস’, এবং ‘নয়া দৌড়’ তার সেরা পাঁচটি চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রগুলি শুধু দিলীপ কুমারের অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেনি, বরং ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তাদের স্থান করে নিয়েছে।

  • মুঘল-ই-আজম: ১৯৬০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রটি দিলীপ কুমারের জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ। প্রেম এবং যুদ্ধে নিঃস্বর্গ এক সম্রাটের কাহিনী ইতিহাসে স্থায়ী স্থান অর্জন করেছে।
  • গঙ্গা যমুনা: ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রে গঙ্গার চরিত্রে দিলীপ কুমারের অভিনয় তাকে জনমানসের প্রিয় তারকাতে পরিণত করে।
  • মধুমতি: ১৯৫৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছায়াছবিটি রহস্যময় ভালোবাসার কাহিনী, যাতে দিলীপ কুমারের অনবদ্য অভিনয় দর্শকের মন জয় করে নেয়।
  • দেবদাস: ১৯৫৫ সালে এসেছিল কাশ্মীরী যুবক দাভের ব্যর্থ প্রেমের করুণ কাহিনী। এতে দিলীপ কুমার তার সামর্থ্যের প্রমাণ দেন।
  • নয়া দৌড়: ১৯৫৭ সালে এই চলচ্চিত্রে মনের দৃঢ়তা এবং পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি ছিল, যাতে দিলীপ কুমার মনোমুগ্ধকর অভিনয়ের মাধ্যমে সকলকে মুগ্ধ করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

দিলীপ কুমারের ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিক চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মুগ্ধ করেছে। অন্যান্য অনেক তারকার মতো, তার ব্যক্তিগত জীবন জটিল এবং চর্চিত হয়েছে। চলুন, তার বিবাহ এবং সম্পর্ক নিয়ে বিশদভাবে জানি।

বিবাহ এবং সম্পর্ক

১৯৬৬ সালে দিলীপ কুমার এবং সায়রা বানু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতি বলিউডে অসম্ভাব্য জুটি হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং তারা বহু বছর একসঙ্গে কাটিয়েছেন। সায়রা বানুর সাথে বিবাহিত জীবনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও, তারা একে অপরের পাশে রয়েছেন। ১৯৮১ সালে দিলীপ কুমার অস্মা রেহমানকে বিয়ে করেন, তবে এই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি এবং ১৯৮৩ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।

অন্যান সম্পর্ক

দিলীপ কুমার এবং মধুবালার সম্পর্ক বলিউডে বিশেষ চর্চিত ছিল। ১৯৫৭ সালে তাদের সম্পর্ক শুরু হলেও ‘নয়া দৌড়’ মামলার পর তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। মধুবালার সাথে দিলীপ কুমারের সম্পর্ক তাদের পেশাগত জীবনে অনেক নাটকীয় রূপ নিয়েছিল।

দিলীপ কুমারের জীবন শুধু সিনেমার পর্দাতেই নয়, বাস্তব জীবনেও ছিল রোমাঞ্চকর এবং চমকপ্রদ। সায়রা বানু, মধুবালা এবং অস্মা রেহমানের সাথে তার সম্পর্ক তার ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বলে যায়।

সম্মাননা ও পুরস্কার

দিলীপ কুমার একজন কিংবদন্তি অভিনেতা যিনি তাঁর অসামান্য অভিনয় দক্ষতার জন্য বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এ বিভাগের মাধ্যমে দিলীপ কুমারকে প্রদান করা উল্লেখযোগ্য কিছু সম্মাননা ও পুরস্কার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  জয়া আহসান

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার

দিলীপ কুমার তাঁর আটবারের ফিল্মফেয়ার পুরস্কার বিজয়ী সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অভিনেতা হিসেবে গণ্য হন। তাঁর শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার সংখ্যা শাহরুখ খানের সাথে সমান। ১৯৯১ সালে তাকে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এর পাশাপাশি, ১৯৯৪ সালে অভিনয়ের শীর্ষ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন।

দিলীপ কুমার শুধু ভারতেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও স্বীকৃতি পেয়েছেন। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় নাগরিক সম্মান, ১৯৯৮ সালে নিশান-ই-ইমতিয়াজ, তাঁকে প্রদান করা হয়। একটানা অভিনয় জীবনে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতাপ্রকাশে, ২০১৫ সালে তাকে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

সামাজিক ও রাজনৈতিক অবদান

দিলীপ কুমার শুধুমাত্র একজন চিত্রতারকা হিসেবে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং সমাজ এবং রাজনীতিতেও তার বিশেষ অবদান ছিল। ভারতীয় পার্লামেন্টে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমাজসেবায় তার নিষ্ঠা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড জনকল্যাণে যেমন ভূমিকা রেখেছিল, তেমনি রাজনীতিতেও তিনি একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড

২০০০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দিলীপ কুমার রাজ্যসভা সদস্য হিসেবে ভারতীয় পার্লামেন্ট এর অংশ ছিলেন। এই সময়ে তিনি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে জনগণের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট হন। রাজনীতি এবং সমাজের উন্নয়নে তাঁর সক্রিয় সহযোগিতা ছিল উল্লেখযোগ্য। প্রধানমন্ত্রীর গণতান্ত্রিক সমাজবাদ ও মিশ্র অর্থনীতির ধারণা সম্পর্কে তার কাজ অবদান রেখেছিল, যা সমকালীন ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্ববহ ছিল।

সমাজসেবা

দিলীপ কুমার বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে অত্যন্ত নিয়মিত ছিলেন। সামাজিক সমস্যার সমাধান এবং জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য তিনি তার প্রভাব ও সম্পদ ব্যবহার করতেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তিনি জনসাধারণের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনতেন এবং সেই সমস্যার সমাধানে যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন। তার প্রচেষ্টায় অনেক সামাজিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছিল, যা আজও মানুষের উপকারে আসছে।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের শৈলী

দিলীপ কুমার ভারতীয় চলচ্চিত্রে ‘পদ্ধতি অভিনয়’-এর পথিকৃত হিসেবে পরিচিত। তার অভিনয় শৈলী সুক্ষ্ম আবেগপূর্ণ এবং বাস্তবসম্মত হয়ে থাকে, যা দর্শকদের গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তিনি তার সমস্ত চরিত্রে অদ্বিতীয় দক্ষতা ও ভাবপ্রবণতা অনুসরণ করেছেন।

পদ্ধতি অভিনয়

দিলীপ কুমারের অভিনয় শৈলী ‘পদ্ধতি অভিনয়’ নামে প্রশংসিত হয়েছে। সত্যজিৎ রায় তাকে নিখুঁত এবং সংবেদনশীল অভিনেতা হিসেবে বিবেচিত করেন। কুমারের বিশেষজ্ঞতা ছিল চরিত্রের গভীরতায় প্রবেশ করা, যাতে দর্শকরা চরিত্রের কষ্ট ও আনন্দ অনুভব করতে পারেন। ‘মধুমতি’, ‘দেবদাস’, এবং ‘মুঘল-ই-আজম’-এর মতো চলচ্চিত্রে তার ‘পদ্ধতি অভিনয়’ পরিপূর্ণ প্রদর্শিত হয়েছিল।

আলোচিত ভূমিকায়

ভূমিকা নির্বাচন এবং অভিনেতা দিলীপ কুমার অসাধারণ প্রতিভাবান ছিলেন, যা সোহ্নিতে উঁচু ছিল। তার বহু চরিত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অভিব্যক্তি দেন, বিশেষত ‘ট্র্যাজিক কিং’ হিসেবে পরিচিত। তার অভিনীত ‘দেবদাস’ ছবিতে একটি কবি প্রতিকৃতি বাস্তবায়িত হয়েছিল। পাশাপাশি ‘কোহিনূর’-এ তার দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকার জন্য তিনি সি৩তর বাজানোও শিখেছিলেন। এছাড়া, অভিনেতা দিলীপ কুমারের নর্মাল এবং ঘুর্ণি চিত্রায়িত ভূমিকাগুলি অভূতপূর্ব ছিল।

আরও পড়ুনঃ  সিদ্ধার্থ শুক্লা

দীর্ঘ বিরতি এবং প্রত্যাবর্তন

দিলীপ কুমার তার অভিনয় জীবনে একাধিকবার দীর্ঘ বিরতি নিয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বৈরাগ’ চলচ্চিত্রের পরে তিনি প্রায় ৫২ মাসের জন্য বিরতি নেন। তখন তার বয়স ছিল ৫৩ বছর। এই দীর্ঘ বিরতি কেবল তার কর্মজীবনের একটি বিরাম ছিল, কিন্তু তার প্রভাব ছিল গোটা ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে।

অবশেষে, ১৯৮১ সালে দিলীপ কুমার ‘ক্রান্তি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আবার বড় পর্দায় ফিরে আসেন। এটি ছিল একটি বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্র প্রত্যাবর্তন, যা তার ভক্তদের মধ্যে পুনরায় প্রাণচাঞ্চল্য এনে দেয়। এরপর তিনি ‘শক্তি’, ‘কর্ম’ এবং ‘সওদাগর’ এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যা তাকে আবার দর্শকপ্রিয় করে তোলে। বিশেষ করে, ‘শক্তি’ চলচ্চিত্রটি তার কেরিয়ারে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করে।

ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে দীর্ঘ বিরতি এবং চলচ্চিত্র প্রত্যাবর্তন নতুন কিছু নয়। যেমন শাহরুখ খানও তার অভিনয় ক্যারিয়ারে ৫৩ বছর বয়সে ‘জিরো’ চলচ্চিত্রের পরে কিছুদিনের জন্য বিরতি নেন, এবং তারপর ‘পাঠান’ দিয়ে ফিরে এসে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০০০ কোটি রুপি আয় করেন।

সুপারস্টারদের মধ্যে এমন বিরতি নতুন কিছুর ইঙ্গিত দেয় না, বরং সাধারণত তাদের নতুন উদ্যোগ এবং শক্তি নিয়ে ফিরে আসারই প্রতিফলন। এত বার দীর্ঘ বিরতি এবং পুনরায় উপস্থিতি দিয়ে তারা প্রমান করেন যে তারা ভারতের চলচ্চিত্র জগতে দীর্ঘ সময় ধরে রাজত্ব করতে সক্ষম।

স্মরণীয় মুহূর্ত

দিলীপ কুমারের জীবনের স্মরণীয় মুহূর্তগুলি তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে। দিলীপ কুমারের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ১৯৪৪ সালে, “জোয়ার ভাটা” সিনেমার মাধ্যমে। তিনি প্রায় সত্তর বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কয়েকটি অসাধারণ ছবি করেছেন। তাঁর অভিনীত অসংখ্য হিট ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য, যেমন “দেবদাস,” “মধুমতি,” এবং “মুঘল-ই-আজম”।

দিলীপ কুমারের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা ছিল তাঁর এবং সায়রা বানুর ভালোবাসার গল্প। ১৯৬৬ সালের ১১ অক্টোবর, দিলীপ কুমার এবং সায়রা বানু বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের বিবাহ একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা চলচ্চিত্র জগত এবং ভক্তদের মনে অদম্যভাবে রয়ে গিয়েছে। সায়রা বানু একবার একটি নস্টালজিক পোস্টে জানিয়েছিলেন, কিভাবে এক বৃষ্টির রাতে গাড়িতে বসে থাকা অবস্থায় দিলীপ কুমার তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

দিলীপ কুমারের স্মরণীয় ঘটনা, তাঁর অসাধারণ অর্জনগুলি আজও মানুষকে মুগ্ধ করে। যেমন বিখ্যাত বই “নেহরুভিয়ান হিরো দিলীপ কুমার” উল্লেখ করে দিলীপ কুমারের সঙ্গে জওহরলাল নেহরুর গভীর সম্পর্কের কথা। দিলীপ কুমার শুধু এক বিশিষ্ট অভিনেতা ছিলেন না, তিনি ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, বক্সিং এবং ফুটবলে দক্ষ ছিলেন। এই সমস্ত স্মরণীয় ঘটনা, দিলীপ কুমারের অর্জন এবং চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান সবসময়ই স্মর্তব্য থাকবে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button