তাপমাত্রা মাপার সহজ উপায় ও প্রয়োজনীয় তথ্য

তাপমাত্রা পরিমাপ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাপমাত্রা পরিমাপ করতে সাধারণত থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়। থার্মোমিটার হল এমন একটি যন্ত্র যা সহজ উপায়ে তাপমাত্রা পরিমাপ করতে সাহায্য করে। যদিও বিভিন্ন ধরণের থার্মোমিটার আছে, তাদের কাজের মৌলিক নীতিমালা একই থাকে: তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য এক টিউব পূর্ণ তরল ব্যবহার করা হয়, যা তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে সম্প্রসারিত হয়।

ইতিহাস থেকে বর্তমান পর্যন্ত, বিভিন্ন ধরনের থার্মোমিটার ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। আজকের দিনে, ডিজিটাল থার্মোমিটার এবং পারদ থার্মোমিটার বিশেষভাবে জনপ্রিয়। বিভিন্ন স্কেল যেমন সেলসিয়াস, ফারেনহাইট এবং কেলভিন স্কেল ব্যবহার করে তাপমাত্রা পরিমাপ করা যায়। সেলসিয়াস স্কেল বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিদ্যায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ফারেনহাইট স্কেল প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, কেলভিন স্কেল বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে অপরিহার্য।

তাপমাত্রার মৌলিক ধারণা

তাপমাত্রা হল ভৌতবিদ্যার একটি মৌলিক ধারণা যা কোনো বস্তুর গরম বা ঠান্ডা হওয়ার পরিমাণকে বোঝায়। তাপমাত্রা বোঝানোর জন্য পদার্থের ভেতরকার অণুগুলোর গড় গতিশক্তির একটা পরিমাপ হয়। এছাড়াও, এটি পদার্থের ভেতর একটি বস্তু অন্য বস্তুর সংস্পর্শে এলে সেটি কি তাপ দেবে নাকি ভাপ নেবে তা নির্ধারণ করে।

তাপমাত্রা পরিমাপ একটি সরল পদ্ধতির মাধ্যমে করা যেতে পারে, যেখানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও পরিমাপ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। সাধারণ তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র যেমন থার্মোমিটার এই কাজে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন তাপমাত্রার ক্ষেত্রে পদার্থের নির্দিষ্ট ধাতব প্রতিরোধকতা দেখা যায়, যা পরিমাপ করা হয় ওম (Ω) হিসেবে।

তাপমাত্রার পরিমাপ করতে হলে এর কিছু বৈশিষ্ট্য জানা দরকার, যেমন: পদার্থকে এক কেলভিন দ্বারা গরম করতে হলে নির্দিষ্ট তাপ প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, পানির নির্দিষ্ট তাপমাত্রা 4200 J kg⁻¹ K⁻¹ যেখানে বরফের তাপমাত্রা 2100 J kg⁻¹ K⁻¹। বিভিন্ন ধাতুর তাপমাত্রার মান আলাদা হয়, যেমন লোহা 450 J kg⁻¹ K⁻¹, তামা 390 J kg⁻¹ K⁻¹।

তাপমাত্রা ও পরিমাণ পরিমাপ করতে গেলে বিভিন্ন ভৌত ধারণা কাজে লাগে যেমন নির্দিষ্ট তাপ ক্ষমতা যা নির্দিষ্ট মাত্রার তাপমাত্রা বাড়াতে প্রয়োজনীয় তাপ। উদাহরণস্বরূপ, 1 গ্রাম পানির তাপমাত্রা 1°C বাড়াতে প্রয়োজনীয় তাপ 1 ক্যালরি যা 4.2 জুল এর সমান। মানুষের শরীরের তাপ ক্ষমতা 3470 J kg⁻¹ K⁻¹ যা অন্যান্য পদার্থের তুলনায় বেশি।

তাপমাত্রার মূল ধারণা এবং এর পরিমাণ বুঝতে গেলে বিভিন্ন সূত্র সহ হিসাবে গ্রাফিকাল উপস্থাপন প্রয়োজন হয়। তাপমাত্রার এসআই একক কেলভিন (K) হলেও সেলসিয়াস (°C) এবং ফারেনহাইট (°F) স্কেলও তাপমাত্রা পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এই সমস্ত ভৌত ধারণা ও পরিমাপ পদ্ধতি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজে লাগে।

আরও পড়ুনঃ  বংশগতির জনক কে?

থার্মোমিটার কীভাবে কাজ করে

থার্মোমিটার তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য অপরিহার্য একটি যন্ত্র। বিভিন্ন উপাদান এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি তাপমাত্রা নির্ণয় করে। সাধারণ থার্মোমিটারের মধ্যে পাওয়া যাবে পারদ, অ্যালকোহল এবং ডিজিটাল সেন্সর নির্ভর থার্মোমিটার। এগুলি ব্যবহারের মাধ্যমে এখন শারীরিক এবং পরিবেশগত তাপমাত্রা পরিমাপ করা সম্ভব হচ্ছে।

থার্মোমিটারের উপাদান

থার্মোমিটার তৈরি হয় প্রধানত তিনটি ধরনের উপাদান ব্যবহার করে:

  • পারদ: থার্মোমিটারের গ্লাস টিউবের মধ্যে পারদ রাখা হয়। পারদ উষ্ণতা পরিবর্তনের প্রতি দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায় এবং নির্ভুল ফলাফল দেয়।
  • অ্যালকোহল: অনেক থার্মোমিটারে অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয় কারণ এটি কম তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য ভাল কাজ করে।
  • ডিজিটাল সেন্সর: আধুনিক থার্মোমিটারে ডিজিটাল সেন্সর ব্যবহৃত হয়, যা তাপমাত্রা পরিমাপে আরও নির্ভুল এবং দ্রুত ফলাফল প্রদান করে।

পারদ ব্যবহারের সুবিধা

পারদযুক্ত থার্মোমিটার ব্যবহারের কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা আছে।

  1. পারদ খুব দ্রুত তাপমাত্রা পরিবর্তনের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানায়, যা ইনস্ট্যান্ট তাপমাত্রা পরিমাপে সহায়ক।
  2. পারদ তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে অন্যান্য তরল থেকে বেশি নির্ভুল ফলাফল প্রদান করে। এটি মানবদেহের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য প্রায়শই ব্যবহৃত হয়, যেমন মুখ, বগল বা কানের তাপমাত্রা।
  3. পারদ থার্মোমিটার অনেক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এর সঠিকতা পরীক্ষিত।

থার্মোমিটার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা জরুরি, যাতে তাপমাত্রা পরিমাপের ফলাফল নির্ভুল হয়। প্রতিটি ব্যবহার পূর্বে এবং পরে থার্মোমিটার পরিষ্কার করা উচিত এবং যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

Temperature পরিমাপের স্কেল

তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য প্রধানত তিনটি স্কেল ব্যবহার করা হয়: সেলসিয়াস, ফারেনহাইট এবং কেলভিন। এই স্কেলগুলি তাপমাত্রা স্কেলকে সহজ ও মানসম্মত পদ্ধতিতে বোঝার উপায় প্রদান করে। এখানে আমরা সেলসিয়াস স্কেল এবং ফারেনহাইট স্কেলের উপর গুরুত্ব আরোপ করব।

সেলসিয়াস স্কেল

সেলসিয়াস স্কেলকে ১৭৪২ সালে সুইডিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী আন্দার্স সেলসিয়াস তৈরি করেন। এই স্কেলে ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ধরা হয় পানি বরফে পরিণত হওয়ার তাপমাত্রা এবং ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ধরা হয় পানি উষ্ণ হওয়ার তাপমাত্রা। সেলসিয়াস স্কেল বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র এবং বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়।

ফারেনহাইট স্কেল

ফারেনহাইট স্কেল হল একটি সংকুচিত তাপমাত্রা স্কেল যা ১৭২৪ সালে জার্মান বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইট দ্বারা প্রস্তাবিত হয়। এই স্কেলে পানি ৩২ ডিগ্রি ফারেনহাইটে বরফে পরিণত হয় এবং ২১২ ডিগ্রি ফারেনহাইটে ফুটতে শুরু করে। তবে মানুষের শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট ধরা হয়। ফারেনহাইট স্কেল সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু ক্যারিবিয়ান দেশগুলোতে ব্যবহৃত হয়।

কেলভিন স্কেল

কেলভিন স্কেল হল বিজ্ঞানের পরিমাপে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্ভরযোগ্য স্ট্যান্ডার্ড। এটি বিশেষত পদার্থবিজ্ঞানে এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক পরিমাপের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। তাপমাত্রা পরিমাপের স্কেলগুলির মধ্যে কেলভিন স্কেল একটি সেরা পদ্ধতি যা শূন্যের নিচের অবস্থায় শুরু হয়, যেখানে ০ কেলভিন হলো পরম শূন্য.

আরও পড়ুনঃ  প্লাজমা কি?

কেলভিন স্কেলের বৈশিষ্ট্য

কেলভিন স্কেলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি শূন্যের ভিত্তিতে তৈরি। সম্প্রসারণ বা সংকোচন ছাড়াও এই স্কেলটি প্রকৃত ধ্রুবক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। 1 কেলভিন হলো পানির ত্রৈধ বিন্দুর তাপগতীয় তাপমাত্রার 1/273.16 ভগ্নাংশের সমান। ডিগ্রি সেলসিয়াসে প্রকাশিত একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা সংখ্যাগতভাবে কেলভিনে প্রকাশিত তাপমাত্রার চেয়ে 273.15 পরিমাণ ক্ষুদ্রতর।

আন্তর্জাতিক স্কেল অনুযায়ী বিভিন্ন পদার্থের ত্রৈধ বিন্দুর তাপমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে:

  • অক্সিজেন: 54.3584 K
  • আর্গন: 83.8058 K
  • সীসা: 234.3156 K
  • পানি: 273.16 K
  • সোনা: 1337.33 K
  • অ্যালুমিনিয়াম: 933.473 K
  • লোহা: 692.677 K
  • টিন: 505.078 K

পারদ থার্মোমিটার বনাম ডিজিটাল থার্মোমিটার

তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য পারদ থার্মোমিটার এবং ডিজিটাল থার্মোমিটার উভয়ই ব্যবহৃত হয়। যদিও উভয়েরই নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে, তাদের পার্থক্যগুলি জানা গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পারদ থার্মোমিটার এবং ডিজিটাল থার্মোমিটারের সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

পারদ থার্মোমিটার

পারদ থার্মোমিটারগুলি আক্ষরিক অর্থে তাপমাত্রা পরিমাপের সবচেয়ে প্রাচীন পদ্ধতি। এটি পারদের তাপমাত্রার পরিবর্তনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেয় এবং সঠিক মাপ প্রদান করে। সাধারণত, পারদ থার্মোমিটারগুলির দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাপমাত্রা পরিমাপের সময়, থার্মোমিটারের লেভেলটি উপরে উঠে আসে, যা সহজে পড়া যায়। তবে, ব্যবহারের সময় বড় ছোট ব্যবধান থাকতে পারে, যা নির্ভুলতা অপেক্ষা কিছু কমাতে পারে।

ডিজিটাল থার্মোমিটার

ডিজিটাল থার্মোমিটারগুলি আরও আধুনিক এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য। এগুলি দ্রুত এবং নির্ভুল তাপমাত্রা পাঠ দেয়, এবং ব্যবহার করার সময় অনেক সুবিধাজনক হয়। ডিজিটাল থার্মোমিটারগুলির দাম সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাপমাত্রা নির্ণয় করা খুবই সহজ; কেবলমাত্র বোতাম চাপলে তাপমাত্রা প্রদর্শন হয়।

তাপমাত্রা পরিবর্তনের নিয়ম

তাপমাত্রা পরিবর্তন এবং ভৌত নিয়মের নিরিখে তাপগতিবিদ্যার বেশ কিছু নিয়ম প্রযোজ্য হয়। তাপগতিবিদ্যার প্রথম ও দ্বিতীয় সূত্রের আলোকে আমরা চার প্রকারের তাপগত পরিবর্তন দেখতে পাই:

ইসোথার্মাল পরিবর্তন:

  • এই পরিবর্তনে গ্যাসের চাপ ও আয়তন রূপান্তরিত হলেও তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকে।
  • এই প্রক্রিয়ায় গ্যাসকে একটি উঁচু পরিবাহী পাত্রে রাখতে হবে এবং ধীরে ধীরে তাপ বিনিময় করতে হবে যেন তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকে।

অ্যাডিয়াবাটিক পরিবর্তন:

  • এই প্রক্রিয়ায় একটি সিস্টেম তার পরিবেশের সাথে তাপ বিনিময় করে না।
  • অ্যাডিয়াবাটিক পরিবর্তনের সমীকরণ হলো PV=constant।
  • এই পরিবর্তনে অ-পরিবাহী পাত্র এবং নিম্ন তাপমাত্রার বাহ্যিক মাধ্যমের প্রয়োজন হয়।

এই দুই প্রকারের পরিবর্তনের ভিন্ন ভিন্ন শর্ত এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাপগত পরিবর্তন ক্লিয়ার করে। তাপগত পরিবর্তন এবং ভৌত নিয়মের আপেক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক উভয় ক্ষেত্রেই এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  1. এক ক্যালরি তাপ সম্পূর্ণরূপে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হলে 4.2 জুল কাজ পাওয়া যায়।
  2. পানির ত্রৈধ বিন্দু 273.16 কেলভিন।
  3. আলুমিনিয়াম এবং তামা তাপ সুপরিবাহী পদার্থ।
  4. চাপ বৃদ্ধির মাধ্যমে তরলের স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি করা হয়।

এই ভৌত নিয়ম নিয়ে আলচনার মাধ্যমে তাপমাত্রা পরিবর্তনের মৌলিক ধারণা এবং প্রয়োগ বোঝা সহজ হয়। আশা করি, এই আলোচনা থেকে পাঠকেরা তাপগত পরিবর্তন সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন।

আরও পড়ুনঃ  ইউনিভার্সাল গেট বা সার্বজনীন গেট কি - জানুন বিস্তারিত তথ্য

খুব কম তাপমাত্রা

খুব কম তাপমাত্রা অধ্যয়ন হল একটি অত্যন্ত জটিল বিজ্ঞান যেখানে পদার্থ -180°C এর নীচে তরলীকৃত হতে পারে, যাকে ক্রায়োজেনিক্স বলা হয়। বাস্তবিক চ্যালেঞ্জ হল বিজ্ঞানীদের জন্য পরম শূন্য তাপমাত্রা (-273.15°C) প্রাপ্তি অসম্ভব।

তাপ স্থানান্তরের তিনটি পদ্ধতি রয়েছে: পরিবহন, পরিচলন, এবং বিকিরণ। খুব কম তাপমাত্রায় এই পদ্ধতিগুলি কীভাবে প্রভাবিত করে, তা বিশ্লেষণ করা যায়।

ক্রিস্টালোগ্রাফি স্ফটিক কঠিন পদার্থে পরমাণুর বিন্যাস এবং বন্ধনের অধ্যয়ন করে, যেখানে খুব কম তাপমাত্রা পরমাণুর গতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। রসায়নে, রূপবিদ্যা বিভিন্ন আকৃতির রাসায়নিক পদার্থগুলির অধ্যয়ন করে।

শীতের দিনে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এবং বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৩ মাইল বা ৪.৫ কিলোমিটারের বেশি হলে উইন্ড চিল সূচক সক্রিয় হয়। এই সূচক সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে তীব্র শীতের সময়।

খুব কম তাপমাত্রায় মানুষ এবং জীবজন্তু কিছু যুগান্তকারী স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে, বিশেষ করে শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে নেমে গেলে হাইপোথার্মিয়ার মতো মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। খুব কম তাপমাত্রা সম্পর্কে সঠিক ধারণা এবং পরম শূন্যের সীমার মধ্যে থাকা বিষয়গুলো বোঝা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

খুব বেশি তাপমাত্রা

বর্তমানে তাপমাত্রা প্রায়শই ৪১-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাচ্ছে এবং অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে প্রায় ৪৪-৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উচ্চ তাপমাত্রা জনজীবনকে অস্থির করে তুলেছে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে। ঢাকা শহরেও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।

মানুষের দেহের তাপমাত্রা সাধারণত ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় হাইপোথ্যালামিক রেগুলেটরি সেন্টারের মাধ্যমে। তবে উষ্ণতম মাস হিসেবে এপ্রিলে তাপমাত্রার এই উচ্চতা শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রায় অভিযোজন প্রকিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ, যা সাধারণত কয়েক সপ্তাহ লাগে, এর মধ্যে ঘামের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং ঘামের সাথে লবণের পরিমাণ কমে যায়।

জলীয় বাষ্পীভবন

উচ্চ তাপমাত্রার কারণে জলীয় বাষ্পীভবন বৃদ্ধি পায়। এটি সেই প্রক্রিয়া, যেখানে পানির অণুগুলি তাপের প্রভাবে দ্রুত গতিবেগ নিয়ে বাষ্প হয়ে যায়। ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত তাপ বের হয় এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়। তবে, গরম আবহাওয়ায় ব্যয়াম করার সময় কমবয়সী সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রেও পেশিতে ব্যথা কিংবা পা চাবানোর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে চলে গেলে খাদ্য সুরক্ষা বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন। গরমের সময় খাবার সঠিকভাবে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা এবং বাসী খাবার না খাওয়া উচিত। লোডশেডিংয়ের কারণে বা বারবার গরম করা খাবারে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া তাপপ্রবাহের কারণে মানুষের কাজ শক্তি এবং ধৈর্য কমে যাওয়ায় উৎপাদনশীলতা হ্রাস পেতে পারে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button