১ টি কলায় কত ক্যালরি?

কলা নিয়ে আগ্রহী অনেকেরই প্রশ্ন, ১ টি কলায় কত ক্যালরি থাকে? বাজারে কেনাকাটার সময় বা দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এই ফলটির উপস্থিতি এত সর্বজনীন যে, এর পুষ্টিগুণ ও ক্যালরির ভাগ জানা অত্যন্ত জরুরী। একটি মাঝারি আকারের কলায় গড়ে 105 ক্যালরি থাকে। তবে, কলার আকার ভেদে এর ক্যালরির পরিমাণ ভিন্ন হয়।

একটি ছোট কলার মধ্যে 90 ক্যালরি থাকে, যেখানে বড় কলায় তা বেড়ে 121 ক্যালরি হয়। প্রায় 93% কলা ও ক্যালরি কার্বোহাইড্রেট থেকে আসে, প্রোটিন থেকে 4%, এবং ফ্যাট থেকে 3%। সুস্থ জীবনযাত্রা এবং সমতুল ডায়েটের জন্য দৈনিক আমাদের ফলের ক্যালরি আমদানি ও খরচের একটি সুনির্দিষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। কলা প্রতিটি মানুষের খাদ্যাভ্যাসে অনন্য স্থান দখল করেছে, যা আমাদের শক্তি এবং স্বাস্থ্য উভয়ই উন্নত করে চলেছে।

Contents show

কলার পুষ্টিগুণ এবং ক্যালরি

কলা খাওয়া না কেবল স্বাদে মুখরোচক, তার সমৃদ্ধ পুষ্টি উপাদান এবং নিম্ন ক্যালরি এর মাধ্যমে এটি আমাদের দৈনন্দিন স্বাস্থ্যকারক ফলের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে। একটি মাঝারি আকারের কলা প্রায় 105 ক্যালরি সম্বলিত হয়ে থাকে, যা শক্তি প্রদানে অবদান রাখে ও দৈনিক ক্যালরির চাহিদাকে সহজে ব্যালেন্স করে।

কলার স্বাস্থ্যকারক উপাদান

কলার উপাদানগুলোর মধ্যে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজের উপস্থিতি এটিকে একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ফলে পরিণত করেছে। প্রতি 100 গ্রাম কলায় পটাশিয়ামের মাত্রা 1491 মিলিগ্রাম এবং ডায়েটারি ফাইবার 9.9 গ্রাম থাকে, যা হজমশক্তি বৃদ্ধি ও হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও, কলা ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি-র একটি ভালো উৎস, যা ইমিউন সিস্টেম বজায় রাখতে ও শরীরের টিস্যু মেরামতে গুরুত্বপূর্ণ।

ক্যালরি সংক্রান্ত তথ্য

  • একটি মাঝারি আকারের কলাতে প্রায় 105 ক্যালরি থাকে।
  • 100 গ্রাম কলা প্রায় 346 কেসিএল এনার্জি প্রদান করে।
  • এই এনার্জি মূলত শর্করা থেকে প্রাপ্ত, যা প্রায় 78.38 গ্রাম পৌঁছে।

সুতরাং, কলা একটি উচ্চ পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি কম ক্যালরির একটি ফল হিসেবে চিহ্নিত। এর শক্তি ও সুষম পুষ্টির মিশেল, তৃষ্ণা মেটানো সহ অনেক স্বাস্থ্যকারক উপকার প্রদান করে।

কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যেকোনো সময় অন্তর্ভুক্ত করা যায়, এর মধ্যে শক্তির উৎস এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা অসাধারণ।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য

যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ বা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য কলা খুবই উপকারী। কলায় স্বাস্থ্য উপকারিতা হিসেবে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা অনুভূতি দেয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

  • ফাইবার পেটের ক্রিয়াকলাপ সঠিক রাখে এবং হজমে সাহায্য করে।
  • কম ক্যালরি সত্ত্বেও কলা দীর্ঘস্থায়ী শক্তি প্রদান করে।

শক্তির উৎস হিসেবে কলা

কলা মুহূর্তে শক্তি জোগানোর জন্য পরিচিত। এর প্রাকৃতিক শর্করা দ্রুত শক্তি উৎপন্ন করে যা ব্যায়াম বা কাজের সময় ওজন নিয়ন্ত্রণ সাহায্য করে।

  • কলায় ব্যাপক পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে, যা পেশী কার্যকারিতা বাড়ায়।
  • তাৎক্ষণিক শক্তির উৎস হিসেবে কলা আপনাকে কর্মঠ এবং সক্রিয় রাখবে।
আরও পড়ুনঃ  ১০০ গ্রাম ছোলায় কত গ্রাম প্রোটিন?

এতে করে কলার স্বাস্থ্য উপকারিতা আপনার দৈনন্দিন জীবনকে আরও উন্নত, প্রাণবন্ত এবং স্বাস্থ্যকর করতে পারে।

কলা এবং শর্করা

কলা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি ফল যা তার স্বাদ, পুষ্টিগুণ, এবং সুবিধাজনক গ্রহণযোগ্যতার জন্য পরিচিত। কলায় থাকা প্রাকৃতিক শর্করা এটিকে মিষ্টি এবং সুস্বাদু করে তোলে, যা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর শর্করা হিসেবে কাজ করে। এই শর্করা শক্তি প্রদানের একটি দ্রুত উৎস হিসেবে কাজ করে, যা বিশেষ করে শারীরিক কর্মকান্ডের আগে খাওয়া উপকারী।

কলায় থাকা প্রাকৃতিক শর্করা

কলার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা মূলত গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সাকারোজ এর মিশ্রণে গঠিত। এই শর্করাগুলি শরীরে দ্রুত শোষিত হয়, যা একটি দ্রুত শক্তির উদ্রেক দেয়। তবে, কলায় আরো থাকা আঁশ এই শর্করার শোষণ ধীর করে, যা একটি স্বাস্থ্যকর শর্করার উৎস হিসাবে তাকে আরও উপকারী করে তোলে।

কলার Glycemic ইন্ডেক্স

কলার Glycemic ইন্ডেক্স (GI) মধ্যম থেকে উচ্চ, যা সাধারণত 42 থেকে 62 পর্যন্ত হতে পারে। এই গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স এর মান কলার পাকা অবস্থান উপর নির্ভর করে। পুরোপুরি পাকা কলায় GI মান বেশি থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। অতএব, ডায়াবেটিক বা প্রিডায়াবেটিক ব্যক্তিদের কলা খাওয়ার পূর্বে তার Glycemic ইন্ডেক্স সম্পর্কে অবগত থাকা উচিত।

কলার প্রতিটি আকারের ক্যালরি

কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা থাকলেও, বাজারে বিভিন্ন আকারের কলা পাওয়া যায় যার প্রতিটির ক্যালরির পরিমাণ ভিন্ন। এই ভিন্নতা বুঝতে এবং সচেতনভাবে কলা নির্বাচন করতে গেলে কলার আকার এবং তাদের আকার অনুসারে ক্যালরি সম্পর্কে জানা জরুরি।

ছোট কলা

ছোট কলার পেক্ষাপটে ক্যালরির পরিমাণ সাধারণত প্রায় 90 ক্যালরি হয়। এই ধরনের কলা অল্প খেতে চাইলে বা ছোট স্ন্যাক হিসেবে খুব উপযুক্ত।

মাঝারি কলা

মাঝারি আকারের কলায় প্রায় 105 ক্যালরি থাকে। এটি সাধারণত দৈনিক ডায়েটের জন্য আদর্শ আকার হিসেবে গণ্য করা হয়, কারণ এটি পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করে তবে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ করে না।

বড় কলা

বড় আকারের কলায় ক্যালরির পরিমাণ হল প্রায় 120 ক্যালরি। ব্যায়াম বা ব্যাপক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের পরে এই ধরনের কলা খাওয়া উপযুক্ত, কারণ এটি দ্রুত এনার্জি প্রদান করে।

সব মিলিয়ে, কলার আকার অনুসারে ক্যালরির পরিমাণের বিবেচনা করা আপনার দৈনিক খাদ্যাভ্যাসের পরিপূরক হতে পারে এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে সহায়ক হতে পারে। যখনই কলা খাবেন, তার আকার এবং ক্যালরির পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন।

দৈনিক ক্যালরি চাহিদা অনুযায়ী কলার অংশ

যেহেতু প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক ক্যালরি চাহিদার পরিমাণ গড়ে ২০০০ ক্যালরি, তাই নিরাপদ খাদ্য পরিমাণ হিসেবে কলা খাওয়া জরুরি। দৈনিক ক্যালরি চাহিদা বিবেচনায় এনে, আপনি যে খাদ্য গ্রহণ করবেন তা যেন আপনার শরীরের জন্য উপযুক্ত হয়।

কতটুকু কলা নিরাপদ?

কলা যেহেতু একটি উচ্চ-ক্যালরি ফল, তাই এটি খাওয়ার পরিমাণ সঠিকভাবে মাপা দরকার। একটি মাঝারি আকারের কলায় প্রায় ১০৫ থেকে ক্যালরি থাকে, এবং দৈনিক ক্যালরি চাহিদা অনুযায়ী দুটি মাঝারি কলা পর্যন্ত খাওয়া নিরাপদ।

কিভাবে রোজ কলা খান?

সুস্থ খাদ্যাভাস গড়ে তোলার জন্য কলা খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করা উচিত। কলা খাওয়ার সেরা সময় হলো সকালের নাশতায় বা দুপুরের খাবারের পর। সঠিক পরিমাণে কলা খেলে এটি আপনাকে দীর্ঘসময় পর্যন্ত শক্তি যোগান দেবে এবং আপনার দৈনিক ক্যালরি চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে।

স্বাস্থ্যকর রেসিপি যেখানে কলা ব্যবহৃত হয়

কলা এমন একটি ফল যা নানাবিধ স্বাস্থ্যকর রেসিপির সাথে চমৎকারভাবে মিশে যায়। এর মিষ্টি স্বাদ ও হালকা টেক্সচার যেকোনো খাবারকে মুখরোচক করে তোলে। নীচে কিছু স্বাস্থ্যকর রেসিপি দেওয়া হল যেখানে প্রধান উপাদান হিসেবে কলা ব্যবহৃত হয়েছে।

কলা স্মুদি

কলা স্মুদি প্রস্তুত করা অত্যন্ত সহজ। একটি পাকা কলা, দুধ (গরুর দুধ বা যেকোনো প্লান্ট-বেজড দুধ), মধু, ও চিমটি বরফ লাগবে। সবগুলো উপকরণ ব্লেন্ডারে দিয়ে মিশ্রণটিকে মসৃণ করুন। এই কলা স্মুদি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সকালের নাস্তা হিসেবে আদর্শ।

আরও পড়ুনঃ  ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা?

কলা প্যানকেক

কলা প্যানকেক তৈরির জন্য, একটি পাকা কলা, ডিম, ময়দা, দুধ এবং চিনি লাগবে। প্রথমে কলাটিকে ম্যাশ করে নিন, এরপর এতে ডিম, ময়দা, দুধ এবং চিনি যোগ করে মিক্সারে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর গরম তাওয়ায় একটি একটি করে প্যানকেক ঢালুন ও দুদিক ভালো করে সেঁকে নিন। মধু বা ম্যাপল সিরাপের সাথে পরিবেশন করলে এটি বিশেষ সুস্বাদু হয়।

এই দুই স্বাস্থ্যকর রেসিপি, কলা স্মুদিকলা প্যানকেক, না শুধু সুস্বাদু, তবে পুষ্টিকরও বটে। এগুলি আপনার দৈনিক ডায়েটে ঐচ্ছিক হতে পারে এবং আপনি যদি স্বাস্থ্যসচেতন হন তবে এগুলি আপনার জন্য আদর্শ।

কলার খাবারের সময় উপযোগিতা

কলা একটি সার্বজনীন ফল যার পুষ্টিগুণ এবং সহজলভ্যতা এটিকে দিনের যেকোন সময়ের জন্য আদর্শ খাবার করে তোলে। এই ফলটি বিশেষ করে ব্রেকফাস্ট এবং বিকেলের স্ন্যাক হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। যারা সময় অনুযায়ী খাওয়ার পরিকল্পনা অনুসরণ করেন, তাদের জন্য কলা একটি চমৎকার বিকল্প।

সকালের ব্রেকফাস্টে কলা

সকালের ব্রেকফাস্টে কলা খাওয়ার অনেক সুবিধা আছে। এটি দ্রুত শক্তি প্রদান করে, যা দিনের শুরুতে কর্মক্ষমতা বাড়ায়। কলা হজমে সহায়ক, যা সকালের চাপ এবং তাড়াহুড়োর মাঝে একটি বড় সুবিধা।

  • ঘন ঘন তৃপ্তি দেয়
  • অতিরিক্ত ক্যালরি জোগান দেয় না
  • পাকস্থলীকে ভালো রাখে

বিকেলের স্ন্যাকের জন্য কলা

বিকালের ক্ষুধা মেটানোর জন্য কলা একটি আদর্শ স্ন্যাক। এটি না শুধু শক্তি যোগায়, বরং দীর্ঘ সময় ধরে তৃপ্তি প্রদান করে এবং অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে বিরত রাখে।

  • ন্যাচারাল শর্করা ও ফাইবারে ভরা
  • মেজাজ উন্নত করে
  • বিকেলের চা অথবা কফির সঙ্গে চমৎকার যায়

সব মিলিয়ে, কলা এমন একটি ফল যা সময় অনুযায়ী খাওয়ার পরিকল্পনায় অত্যন্ত উপযোগী। এটি ব্রেকফাস্ট এবং স্ন্যাক উভয় সময়ের জন্য আদর্শ, এবং এটির স্বাস্থ্যকর বৈশিষ্ট্যগুলো দিনের যেকোন পর্যায়ে এটিকে উপযুক্ত খাবার বানিয়ে তোলে।

কলা এবং অন্যান্য ফলের ক্যালরি তুলনা

কলার ক্যালরি সামগ্রী এবং অন্যান্য ফলের সাথে তার তুলনা করা খুবই জরুরি যখন আমরা পুষ্টি সচেতন খাদ্য পছন্দ করি। আপনার ডায়েটের ভিত্তি করে ফলের ক্যালরি মূল্যায়ন করা অপরিহার্য।

আপেল ও কলার ক্যালরি

  • প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, একটি গড় আপেলে প্রায় 95 ক্যালরি থাকে।
  • একটি গড় কলাতে প্রায় 105 ক্যালরি থাকে, যা ফলের ক্যালরি তালিকায় আপেলের তুলনায় সামান্য বেশি।

কমলা ও কলার ক্যালরি

  • একটি গড় কমলায় প্রায় 65 ক্যালরি থাকে, যা কলার ক্যালরির চেয়ে অনেক কম।
  • কমলা ভিটামিন সি এর একটি উচ্চ উৎস হওয়ায়, এটি অন্য ধরনের পুষ্টিগুণের সাথে ক্যালরি তুলনা করার ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দাবি করে।

সাধারণত, আপেল বনাম কলা এবং কমলা বনাম কলার ক্যালরি তুলনা দেখা যায় যে কলা ক্যালরির দিক দিয়ে একটু বেশি যোগান দেয়। তবে এর সাথে প্রচুর পুষ্টিকর উপাদানও যুক্ত থাকে, যা এটিকে একটি ভালো শক্তির উৎস করে তোলে।

ক্যালরি কমানোর জন্য কলা কি উপকারী?

যাঁরা স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ ডায়েট অনুসরণ করে ক্যালরি কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের জন্য কলা হতে পারে এক আদর্শ খাবার। কলায় প্রাকৃতিক চিনি এবং ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং তৃপ্তি দান করে, যা অতিরিক্ত খাওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

ভরসা দেবার পুষ্টি উপাদান

কলা রিচ সোর্স ফাইবারের পাশাপাশি ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি এবং পটাসিয়ামের। এই পুষ্টি উপাদানগুলি হৃদযন্ত্র ও নার্ভ সিস্টেমের সুস্থতা নিশ্চিত করে এবং পাচনতন্ত্র সুস্থ রাখে, যা সবমিলিয়ে পুষ্টি এবং বিজ্ঞান-এর এক নির্ভরযোগ্য উদাহরণ।

আরও পড়ুনঃ  পিৎজা

পদার্থবিজ্ঞান অনুযায়ী সঠিকতা

পদার্থবিজ্ঞানের দিক থেকে কলার ফাইবারের উপস্থিতি আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের সময় নেওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়, যা গ্লুকোজের রিলিজ ধীর হতে সাহায্য করে এবং মিটমিটে ক্ষুধার অনুভূতি কমায়। এতে করে ক্যালরি কমানো লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়।

  • কলা ফাইবারে বহুল পরিমাণে থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরতি থাকে।
  • ক্যালরি কমানোর লক্ষ্যে কলা স্ন্যাক হিসেবে যুক্তি সঙ্গত।
  • নিরাপদ ডায়েট অংশ হিসেবে কলার ব্যবহার রোজ গ্রহণযোগ্য।
  • এটি পুষ্টি চাহিদা পূরণের সাথে সাথে ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

কলা খাওয়ার সময় সচেতনতা

কলা একটি স্বাস্থ্যকর ফল, কিন্তু এর মধ্যে নিহিত পুষ্টি উপাদানের উপর নির্ভর করে খাওয়ার সময় এবং পরিমাণ ঠিক করা উচিত। সচেতনতা জোর দেয়া হয়েছে যে, সুষম ডায়েটের অংশ হিসেবে কলা গ্রহণ করা উচিত, তবে অতিরিক্ত কলা খাওয়া এড়ানো উচিত।

অতিরিক্ত কলা খেলে কি হতে পারে?

  • কলায় অত্যধিক পটাসিয়াম থাকায়, অতিরিক্ত গ্রহণ করলে রক্তে পটাসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা হৃদস্পন্দনে অনিয়ম তৈরি করতে পারে।
  • অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণ পেটে গ্যাস, ফুলা ভাব এবং কখনও কখনও পেট ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।

কোন সময় বেশি খাওয়া উচিত?

খাওয়ার সঠিক সময় সচেতনতার সাথে নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কলা ভর্তি শক্তি এবং প্রাকৃতিক চিনি হওয়ায়, খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি ব্লাড সুগার স্পাইক করতে পারে। সকালের নাশতা বা ব্যায়ামের পরে কলা খাওয়া আদর্শ, যেহেতু এটি ঊর্জা প্রদান করে এবং দ্রুত পেট ভরাতে সাহায্য করে।

সব মিলিয়ে, সচেতনতা এবং সঠিক পরিমাণে কলা খাওয়ার সময় ঠিক করা আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনে গুরুত্বপূর্ণ।

কলার মৌসুমী সংরক্ষণ পদ্ধতি

কলা একটি জনপ্রিয় মৌসুমী ফল যা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই এই ফলের সংরক্ষণ পদ্ধতি জানা জরুরি। যথাযথ কলা সংরক্ষণ করলে এর পুষ্টিগুণ বজায় রাখা সম্ভব হয়, যা কলাকে আরো উপকারী করে তোলে।

কীভাবে কলা সংরক্ষণ করবেন?

  • কলাকে ঝুড়ি বা রিপেনিং স্ট্যান্ডে রাখুন।
  • কলাকে সরাসরি রোদ বা অত্যধিক আর্দ্রতার সংস্পর্শে আনবেন না।
  • কলা একটি শীতল ও শুষ্ক জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেখানে বায়ু সঞ্চালন ভালো হয়।

পুষ্টিগুণ বজায় রাখার উপায়

  1. কলাকে কাটা অবস্থায় দীর্ঘসময় ধরে রাখবেন না, এতে এর পুষ্টিগুণ হ্রাস পায়।
  2. কলা যদি খুব পাকা হয়ে যায়, তাহলে তা স্মুদি বা পেকিংয়ে ব্যবহার করুন।
  3. কলার খোসায় অভ্যন্তরীণ অংশ স্পর্শ না করা পর্যন্ত এর পুষ্টিগুণ সুরক্ষিত থাকে।

উপরোক্ত পদ্ধতি মেনে চললে কলা দীর্ঘদিন মৌসুমী ফল হিসেবে আপনার পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

উপসংহার: কলা এবং ক্যালরির সামঞ্জস্য

এই নিবন্ধে আমরা যা যা আলোচনা করেছি তার সারমর্মটি হল, কলা তার পুষ্টিমান এবং সঙ্গত ক্যালরি মাত্রার কারণে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যের তালিকায় অগ্রণী স্থান দখল করে। একটি মাঝারি মাপের কলা প্রায় ১০৫ ক্যালরি সরবরাহ করে, যা দৈনিক খাদ্যাভ্যাসে সহজেই সমন্বিত হতে পারে। কলা একটি সম্পূর্ণ খাবার যা কার্বোহাইড্রেটের হিসাবে প্রায় ৯০% এর বেশি সরবরাহ করে এবং সেই সাথে প্রোটিন ও ফ্যাটের মৌলিক মাত্রা সরবরাহ করে।

কেন কলা একটি স্বাস্থ্যকর পছন্দ?

প্রতিটি আকারের কলা সমৃদ্ধ হয় প্রধান ভিটামিন এবং মিনারেলে, উদাহরণস্বরূপ একটি মাঝারি আকারের কলায় রয়েছে ভিটামিন B6-এর ৩৩% ডেইলি ভ্যালু, প্রায় ১২% পটাসিয়াম, এবং ভিটামিন C-এর ১১%। এছাড়াও কলায় থাকে দৃষ্টিগোচর ফাইবার, যা হজম প্রক্রিয়াকে সুগম করে। একইসাথে, এর লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রক্তে সুগারের হঠাৎ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।

নিজস্ব খাদ

প্রতি ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলী ভিন্ন হতে পারে, এবং কলা তার মানানসই ক্যালরি এবং প্রাকৃতিক মিঠাসের মাধ্যমে সবাইকে একটি সঞ্চালক ঊর্জা উৎস হিসাবে পরিবেশন করতে পারে। এর বাহুল্য পুষ্টিগুণের কারণে, সহজপাচ্য এই খাবারটি আপনার সুস্থ খাদ্যাভাসের এক চমৎকার সংযোজন হতে পারে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button