গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ

গলা শুকিয়ে যাওয়া বা জিরোস্টোমিয়া এক প্রকারের গলার সমস্যা যা অনেকের মধ্যে দেখা যায়, এবং এর প্রভাবে জীবনযাপনে বিভিন্ন ধরণের বিঘ্ন ঘটে। এই অবস্থা গলার শুষ্কতা, প্রচণ্ড তৃষ্ণা, কথা বলা এবং খাওয়ায় কষ্ট, শুকনো বা লাল জিহ্বা, নাসা শুষ্কতা, এবং শ্বাসে গন্ধ অনুভব করার মতো সিম্পটমস নিয়ে আসে।

জলবায়ুর প্রভাব, বিশেষত নির্বিঘ্ন অথবা শুষ্ক আবহাওয়া, অ্যালার্জি, বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস, বিশেষ সিন্ড্রোমে, মেডিকেশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এবং আমাদের জীবনযাত্রায় বিভিন্ন অভ্যাসের কারণেও গলা শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। পানি পানের পরিমাণ না মেনে চলা, মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া, ডিহাইড্রেটিং ওষুধ গ্রহণ, অথবা ধূমপান এই সমস্যাটির জন্য দায়ী হতে পারে। প্রথম পর্যায়ে সঠিক চিকিৎসা এবং প্রাথমিক প্রতিকারের মাধ্যমে গলা শুষ্কতা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

Contents show

নির্বিঘ্ন বা শুষ্ক জলবায়ুর প্রভাব

শুষ্ক বা নির্বিঘ্ন জলবায়ু বিভিন্ন ঋতুতে মানব শারীরিক ও পরিবেশগত অবস্থানের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। গ্রীষ্মকালীন শুষ্কতা থেকে শীতল আবহাওয়ার পরিবর্তন, এই সব কিছুই মানুষের জীবনযাত্রায় কিছু বিশেষ পার্থক্য সৃষ্টি করে। এই পরিবর্তনগুলি মানব শরীরে পানির ঘাটতি এবং গলার জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।

গ্রীষ্মকালীন শুষ্কতা

গ্রীষ্মকালে তীব্র তাপ এবং কম আর্দ্রতা শরীরের পানির চাহিদাকে বাড়িয়ে দেয়। এই সময়ে শরীর বেশি পরিমাণে ঘামে, যা শরীরে পানির ঘাটতি সৃষ্টি করে। ফলস্বরূপ, বারবার পিপাসা পাওয়া এবং গলা শুকনোর অনুভূতি খুব সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে ওঠে।

শীতল তাপমাত্রার প্রভাব

শীতল আবহাওয়া অন্যরকম একটি চাপ সৃষ্টি করে। ঠান্ডা আবহাওয়া আর্দ্রতার পরিমাণকে কমিয়ে দেয়, যা গলার শুষ্কতা এবং জ্বালাপোড়া দেখা দেয়। মাঝে মাঝে, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এই সমস্যাটা পরিলক্ষিত হয়। শীতল জলবায়ু অত্যন্ত শুষ্ক হওয়ায়, এটি গলার মধ্যে টান টান ভাব সৃষ্টি করে যা খুবি বিরক্তিকর হতে পারে।

অ্যালার্জি এবং সংবেদনশীলতা

পরিবেশের উপাদান যেমন পোলেন এবং ধূলিকণা আমাদের জীবনযাত্রায় নানাবিধ প্রভাব ফেলে। এই উপাদানগুলো বিশেষ করে গলা শুষ্কতা এবং অ্যালার্জি সৃষ্টির প্রধান কারণ হতে পারে। অ্যালার্জি এবং সংবেদনশীলতা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে এই দুটি বিষয়কে অবশ্যই বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

পোলেন এবং ধূলিকণা

পোলেন অ্যালার্জি

পোলেন হল ফুলের রেণু, যা বাতাসে ভেসে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং অ্যালার্জির এক প্রধান উৎস। পরিবেশের এই উপাদান নির্বিচারে বাতাসে মিশে যায় এবং অনেকের জন্য শ্বাসকষ্ট, চোখের জ্বালা, এবং গলা জ্বালা সৃষ্টি করে।

ধূলিকণার সংস্পর্শ

পোলেনের মতোই, ধূলিকণা অ্যালার্জি এবং সংবেদনশীলতা তৈরির আরেক বড় উৎস। ধূলিকণা মূলত মাটি, পোষা প্রাণীর খুশকি, এবং ফাইবার থেকে উৎপন্ন হয়। এই কণা বায়ুবাহিত হয়ে বিভিন্ন অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ঘটায়, যেমন হাঁপানি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এবং অ্যালার্জিক কনজাংক্টিভাইটিস।

  • বসন্তে পোলেনের প্রকোপ বেশি থাকে।
  • ঘরের ভেতরে ধূলিকণা জমে অ্যালার্জি বাড়াতে পারে।
আরও পড়ুনঃ  লিউকেমিয়া কি ভালো হয়?

অতএব, নিয়মিত পরিস্কার এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে অ্যালার্জি এবং গলা শুকিয়ে যাওয়ার হার কমানো সম্ভব।

স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থার প্রভাব

বিশেষ কিছু স্বাস্থ্য অবস্থা মুখ ও গলার শুষ্কতা ঘটাতে পারে, যা প্রায়শই ব্যথা এবং অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ডায়াবেটিস এবং স্যোগ্রেন’স সিন্ড্রোম উল্লেখযোগ্য। এই অবস্থাগুলোর প্রভাবে লালাগ্রন্থির কার্যকারিতা প্রভাবিত হয়, যার ফলে লালা উৎপাদন কমে যায় এবং মুখ শুকিয়ে যায়।

ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে অতিরিক্ত গ্লুকোজ রক্তে মিশে গিয়ে লালাগ্রন্থির কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে। এর ফলে লালার পরিমাণ হ্রাস পায় এবং মুখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। এছাড়াও, রক্ত গ্লুকোজের উচ্চ মাত্রা লালাগ্রন্থির ক্ষতি ঘটাতে পারে, যা স্থায়ী মুখ শুষ্কতার কারণ হতে পারে।

স্যোগ্রেন’স সিন্ড্রোম

স্যোগ্রেন’স সিন্ড্রোম একটি অটোইমিউন রোগ যা মূলত লালাগ্রন্থি এবং চোখের আশ্রুগ্রন্থিকে আক্রান্ত করে। এই রোগের প্রভাবে লালাগ্রন্থি পর্যাপ্ত লালা উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে মুখ ও গলা শুকিয়ে যায়। এই অবস্থা খাওয়া-দাওয়া এবং কথা বলার সময় অস্বস্তি সৃষ্টি করে।

এই অবস্থাগুলো চিন্তার বিষয়, কেননা স্বাস্থ্য অবস্থা যতো দ্রুত নির্ণিত হবে, ততো প্রাথমিক পর্যায়ে তার চিকিৎসা শুরু করা যাবে। সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ এই রোগীদের জীবনমান উন্নতি সাধনে অত্যন্ত সহায়ক।

শ্বাসপ্রশ্বাসের অসুখ

শ্বাসপ্রশ্বাসের জটিলতা বিভিন্ন ধরনের অসুখ এবং অবস্থার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায়, যার মধ্যে হাঁপানি এবং নাসোফ্যারিঞ্জাইটিস অন্যতম। এই ধরনের অসুখ শারীরিক অস্বস্তি ও জটিলতা তৈরি করে, যা রোগীদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

হাঁপানি

হাঁপানি হচ্ছে এক ধরনের শ্বাসপ্রশ্বাসের অসুখ যা শ্বাসনালীতে প্রদাহ এবং সংকুচন ঘটায়। এর ফলে বায়ু প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং শ্বাস নেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। রোগীরা প্রায়ই শ্বাসকষ্ট, শ্বাস প্রশ্বাসের সময় শিস ধ্বনি এবং বুকে চাপ অনুভব করে।

নাসোফ্যারিঞ্জাইটিস

নাসোফ্যারিঞ্জাইটিস হল নাক এবং গলার মিউকোজাল প্রদাহের এক অবস্থা, যা সাধারণত ভাইরাল ইনফেকশন থেকে উদ্ভূত হয়। এটি নাক বন্ধ হওয়া, গলা ব্যথা, এবং হালকা জ্বরের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। এই অবস্থা শীতকালে বিশেষ করে বেশি দেখা দেয়, যখন ভাইরাল ইনফেকশন বেশি সক্রিয় থাকে।

  • শ্বাসপ্রশ্বাসের অসুখ যেমন হাঁপানি এবং নাসোফ্যারিঞ্জাইটিস শীতল ও শুষ্ক আবহাওয়ায় বাড়তে পারে।
  • নিয়মিত মেডিকেল চেক-আপ এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এই ধরনের অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
  • যথাযথ ঔষধ এবং পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উপসর্গগুলি হ্রাস পায়।

শ্বাসপ্রশ্বাসের অসুখ যেমন হাঁপানি এবং নাসোফ্যারিঞ্জাইটিসের প্রাথমিক নিদান এবং চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরী। সঠিক চিকিৎসা এবং ঔষধের মাধ্যমে এই ধরনের অসুখের জটিলতা কমানো সম্ভব।

জীবনধারার প্রভাব

ব্যক্তিগত জীবনধারা বিশেষ করে ধূমপান এবং মদ্যপান, গলা শুকিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে অনেকাংশে প্রভাবিত করে থাকে। এসব আচরণ লালাগ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে ব্যাহত করে, যা গলা শুকনোর সমস্যাকে আরও প্রকট করে তোলে।

ধূমপান

ধূমপানের অভ্যাস নিকোটিনের মাধ্যমে শরীরের মিউকাস মেমব্রেন এবং লালাগ্রন্থির ক্রিয়াকে প্রভাবিত করে, যা গলা শুকিয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য গলার সমস্যাগুলোকে উসকে দেয়। নিয়মিত ধূমপান এর ফলে গলার সমস্যা আরও বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুনঃ  ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস প্রতিরোধের উপায়

মদ্যপান

মদ্যপান শরীর থেকে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয় যা অতিরিক্ত ডিহাইড্রেশন তৈরি করে। এই ডিহাইড্রেশন গলা শুকিয়ে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। বর্ণনা করা হয়েছে যে, মদ্যপানের পর গলা শুকিয়ে যাওয়ার অনুভূতি বৃদ্ধি পায়, যেহেতু মদ পানির বিপরীত প্রভাব সৃষ্টি করে।

  • ধূমপানের কারণে মিউকাস মেমব্রেনের ড্যামেজ হতে পারে।
  • মদ্যপান শরীরের সাধারণ হাইড্রেশনের মাত্রা ব্যাহত করে, যা গলা শুকিয়ে যাওয়ার অনুভূতিকে বাড়িয়ে তোলে।

সারাংশে, ধূমপান এবং মদ্যপান জীবনধারা-এর দুটি প্রধান উপাদান, যা গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যাকে গভীরতর করে তোলে। এইসব অভ্যাস ছাড়াও অন্যান্য জীবনধারার উপাদান যেমন যথাযথ পুষ্টি এবং পর্যাপ্ত পানি পান গলা শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।

কথা বলার স্বভাব এবং ব্যবহার

প্রতিদিনের যোগাযোগে কথা বলার ধরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, যারা পেশাগত কারণে দীর্ঘসময় ধরে কথা বলেন বা উচ্চস্বরে কথা বলেন, তাদের জন্য এটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।

দীর্ঘ সময় কথা বলা

কোনো একটি বিষয় নিয়ে অবিরাম দীর্ঘ কথা বলতে থাকলে তা গলার উপর চাপ সৃষ্টি করে। একটানা কথা বলার ফলে গলা শুকিয়ে যেতে পারে এবং মিউকাস মেমব্রেনের সংরক্ষণ কমে যেতে পারে, যা গলার চাপ বৃদ্ধি করে।

উচ্চ সুরে বা জোরে কথা বলা

উচ্চ সুরে কথা বলার প্রভাব সম্পর্কিতও গলার ব্যাপারে সচেতন থাকা দরকার। উচ্চস্বরে অথবা জোর করে কথা বলার ধরণে গলায় বাড়তি টেনশন এবং চাপ পড়ে যাতে স্বরযন্ত্রের ক্ষতি হয়ে থাকে। এই টেনশন থেকে গলা ভাব গ্রস্ত হয়ে আরও সমস্যা তৈরি করতে পারে।

খাবারের অভ্যাস

আমাদের দৈনন্দিন খাবারের অভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে ঠিক যেমনটা করে তা কতটা পানি পান করি বা ব্যায়াম করি। খাবারের অভ্যাসানুযায়ী, কিছু খাবার যেমন অতিরিক্ত ক্যাফেইন এবং মসলাদার খাবার আমাদের গলা শুকনো করার সাথে যুক্ত।

অতিরিক্ত ক্যাফেইন

ক্যাফেইন শরীরে মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে, যা শরীর থেকে পানি নির্গমন বৃদ্ধি করে। ফলে অতিরিক্ত ক্যাফেইন সেবন করলে শরীর শুষ্ক হয়ে যায় এবং গলা শুকনো হতে পারে।

মসলাদার খাবার

মসলাদার খাবার খেলে প্রায়ই গলা এবং পেটে জ্বালা অনুভূত হয়, যা গলার শুষ্কতা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের খাবারের প্রভাবে শরীরে পানির চাহিদা বাড়ে এবং যদি পর্যাপ্ত পানি পান না করা হয়, তবে গলা শুকিয়ে যেতে পারে।

সব সময় মনে রাখবেন, খাবারের অভ্যাস ও জীবনধারায় সামান্য পরিবর্তন আনা খুব জরুরি। প্রচুর পানি পান করা এবং মসলাদার বা অতিরিক্ত ক্যাফেইন যুক্ত খাবার গ্রহণের পরিমাণ হ্রাস করা গলা শুকনো হবার সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে।

মেডিকেশন এবং চিকিৎসার প্রভাব

গলা শুকানোর সমস্যায় মেডিকেশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরণের ওষুধ, যেমন ডিহাইড্রেটিং ওষুধ এবং অ্যান্টিহিস্টামিন, অনেক সময় মুখ এবং গলাকে শুষ্ক করে দেয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিরাট সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

ডিহাইড্রেটিং ওষুধ

ডিহাইড্রেশনের সাথে যুক্ত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য। এই শ্রেণীভুক্ত ওষুধ শরীরের পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয়, যার ফলে মুখ এবং গলা শুষ্ক হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, উচ্চ রক্তচাপ ও অস্থিরতার ওষুধ এই ধরণের সমস্যা তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  গর্ভনিরোধ কত সময় পর্যন্ত কাজ করে?

অ্যান্টিহিস্টামিন

অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ প্রায়ই অ্যালার্জি এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়। যদিও এই ধরণের মেডিকেশন অনেক সময় মুখের মিউকাস ঝিল্লির স্বাভাবিক সিক্ততাকে কমিয়ে দেয়, ফলে গলা শুষ্ক হয়ে যায়। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য এগুলি সচেতনভাবে ব্যবহার করা উচিত।

  • প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মাত্রায় অ্যান্টিহিস্টামিন গ্রহণ এড়িয়ে চলুন।
  • যদি ডিহাইড্রেশন লক্ষণ প্রকাশ পায়, তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পরামর্শ নিন।
  • মুখ শুষ্ক হয়ে গেলে প্রচুর পানি পান করুন।

সব মিলিয়ে, মেডিকেশনের প্রভাব এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে সজাগ থাকা জরুরি। সঠিক ওষুধের ব্যবহার এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করাই এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার সেরা উপায়।

ঘুমের অভাব এবং মানসিক চাপ

আধুনিক জীবনযাত্রায় নিদ্রাহীনতামানসিক চাপ গলার শুষ্কতা সমস্যায় অবদান রাখতে পারে। ঘুমের অভাব যেমন শারীরিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে, তেমনি মানসিক চাপ, উদ্বেগ, এবং স্ট্রেসও অনেক সমস্যার উৎস।

নিদ্রাহীনতার প্রভাবে

পর্যাপ্ত নিদ্রা না হলে শরীর ও মন উভয়ের উপর প্রভাব ফেলে। এ অবস্থা নিদ্রাহীনতা বলে পরিচিত এবং এটি মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে। সাধারণত, অপর্যাপ্ত ঘুম থেকে উদ্ভূত ক্ষোভ বা একাগ্রতার অভাব দেখা দেয়, যা কর্মক্ষেত্রে এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

উদ্বেগের প্রভাব

উদ্বেগ এমন একটি মানসিক অবস্থা যা শারীরিক লক্ষণগুলিকেও প্রভাবিত করে। উচ্চ মাত্রার উদ্বেগের ফলে, ব্যক্তি স্ট্রেস অনুভব করতে পারে যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতা প্রভাবিত করে, যেমন গলা ও মুখ শুকানো। মানসিক চাপ হ্রাস পেলে, এর ফলে উপস্থিত বিভিন্ন সমস্যাও কমতে থাকে।

সার্বিকভাবে, নিয়মিত যথেষ্ট ঘুম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এই দুইয়ের সমন্বয়ে গলা শুকনো ও অন্যান্য সমস্যাগুলির উপশম হতে পারে। অতএব, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় যথেষ্ট নিদ্রা ও চাপমুক্ত জীবন গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিকার এবং প্রতিরোধের পদ্ধতি

গলা শুকিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং হাইড্রেশন বজায় রাখার জন্য, বিজ্ঞান বলছে প্রচুর পানি পান করা উচিত। পর্যাপ্ত পানি পান শরীর ও গলার ভেতরে আর্দ্রতা বজায় রাখে, যা ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি ব্যথা হ্রাস এবং স্বস্তি প্রদানেও উপকারী। এছাড়াও, পরিষ্কার এবং পবিত্র পরিবেশে সচেতন থাকলে এই ধরনের অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

প্রচুর পানি পান

একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। শতাধিক প্রকার ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের মধ্যে ফ্লু, সর্দি, পারটুসিস, চিকেনপক্স, এবং মাম্পস সহজে গলা সংক্রমিত করতে পারে যা ৯০% কেসে দেখা যায়। পানি পানের মাধ্যমে এসব সংক্রামক বিষাণু শরীরের বাইরে নিষ্কাশনে সাহায্য করে।

গরম পানির উপকারিতা

গরম পানি পানের সাহায্যে নাক ও গলার শ্লেষ্মা নরম হয়, যা সংক্রমণের দ্রুত প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। গ্রুপ A স্ট্রেপ্তোকক্কাল গলার ভাইরাসের বিরুদ্ধে এমন প্রতিকার অত্যন্ত উপকারী। এক্ষেত্রে, উত্তপ্ত জলের বাস্প গ্রহণ বা গরম পানীয় গলা পরিষ্কার করতে ও শান্তি প্রদান করতে সাহায্য করে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি গলা শুকিয়ে যাওয়া শুরু হলে অথবা অস্বস্তির প্রথম লক্ষণ দেখা দিলে তৎক্ষণাত্ এসকল পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button