ভিটামিন এ জাতীয় খাবার

আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এ খাবার যুক্ত করার গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরি। ভিটামিন এ দ্রবণীয় একটি প্রধান পুষ্টি উপাদান যা বিশেষ করে চোখের স্বাস্থ্য, ত্বকের যত্ন এবং ইমিউন সিস্টেমের শক্তি বাড়াতে অপরিহার্য। গাজর, মিষ্টি আলু, পালেং শাক, রঙালাও (কুমড়া), এবং ব্রকলি যুক্ত ডায়েট আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে এই ভিটামিনের সাপ্লাই দেয়, যার ফলে আমরা সুস্থ দৃষ্টির জন্য খাবারসমৃদ্ধ হতে পারি।

গাজরের এক কাপ আমাদের রোজকার ভিটামিন এ’র চাহিদার ৩৩৪% পূরণ করে, যা শুধুমাত্র চোখের স্বাস্থ্যের জন্য নয়, ত্বকের জন্যও অপরিসীম উপকার বয়ে আনে। অন্যদিকে, মিঠা আলু- যা ভিটামিন সি, ফাইবার এবং পটাশিয়ামেও সমৃদ্ধ, আমাদের দৃষ্টি শক্তি তো বাড়ায়ই, সেই সঙ্গে হজমে সাহায্য করে এবং রক্তের সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এই সব ভিটামিন এ যুক্ত খাবার আমাদের খাদ্য তালিকার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা সুস্থ জীবনধারা ও দীর্ঘায়ুর জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।

Contents show

ভিটামিন এ কি এবং কেন প্রয়োজন?

ভিটামিন এ একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান যা মানব দেহের বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়াকলাপের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এর প্রধান উৎস হল প্রাণী ও উদ্ভিদজাত খাবার, যাতে ক্যারোটিনয়েড এবং রেটিনোয়িড যৌগ থাকে যা দেহে ভঙ্গুর পাচনের পর ভিটামিন এ তে পরিণত হয়।

ভিটামিন এ এর ভূমিকা

ভিটামিন এ মানব শরীরের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অঙ্গের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি সুস্থ দৃষ্টি বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা দৃষ্টিশক্তির হ্রাস প্রতিরোধ করে। এছাড়াও, ভিটামিন এ সুস্থ ত্বক এর জন্য অপরিহার্য, কারণ এটি ত্বকের কোষগুলির সুস্থ বৃদ্ধি এবং মেরামতে ভূমিকা রাখে।

ভিটামিন এ এর উপকারিতা

ভিটামিন এ এর উপকারিতা অসংখ্য। এটি ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে, যা বিভিন্ন ইনফেকশন এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি চোখের রেটিনার স্বাস্থ্য রক্ষায় অপরিহার্য, যা রাত কানা বা অন্যান্য দৃষ্টি সমস্যা থেকে রক্ষা করে।

  • প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য দৈনিক ভিটামিন এ এর চাহিদা ৯০০ মাইক্রোগ্রাম।
  • পূর্ণবয়স্ক নারীর জন্য এর দৈনিক প্রয়োজন ৭০০ মাইক্রোগ্রাম।
  • ভিটামিন এ অভাবজনিত সমস্যা বেশি দেখা দেয় ৯ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে।

উপযুক্ত পরিমাণে ভিটামিন এ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এর অভাবে গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন এ জাতীয় খাবারের উৎস

ভিটামিন এ এর প্রচুর উৎস রয়েছে যা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এই ভিটামিন শরীরের বিভিন্ন জৈবিক কার্যকলাপ, যেমন দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি, ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

শাকসবজি

ভিটামিন এ শাকসবজি যেমন গাজর, মিষ্টি আলু, ও রেড ক্যাপসিকাম খুবই উপকারী। এই ধরনের খাবারগুলো বিটা-ক্যারোটিনে সমৃদ্ধ যা শরীরে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়।

ফলমূল

পাকা পেঁপে, আম, এবং ক্যান্টালুপ মতো ফলগুলো ভিটামিন এ এর চমৎকার উৎস। এসকল ফল নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুনঃ  হার্ট রেট কমানোর উপায় - সহজ টিপস

প্রাণিজ খাবার

ঘি, মাখন এবং মুরগির মাংস ভিটামিন এ-এর চমৎকার প্রাণিজ উৎস। এগুলো প্রত্যক্ষ রেটিনল রূপে ভিটামিন এ সরবরাহ করে যা সহজেই শরীরে শোষিত হয়।

মাছ এবং ডিম

ভিটামিন এ মাছ ও ডিম যেমন কড ফিশের যকৃত ও সাধারণ ডিম ভিটামিন এ এর অন্যতম সেরা উৎস। এসকল খাবার রোজকার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ পেয়ে থাকে।

এই বিভিন্ন উৎস থেকে ভিটামিন এ সংগ্রহ করে আমরা আমাদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে পারি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারি। খাবারের মাধ্যমে নিয়মিত ভিটামিন এ গ্রহণ করা আমাদের শরীরের সাধারণ ক্রিয়াকলাপ সুচারুরূপে চালিয়ে নিতে সহায়ক।

ভিটামিন এ এর চাহিদা

ভিটামিন এ আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য একটি পুষ্টি যা বিভিন্ন বয়স ও জীবনের পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে প্রয়োজন হয়। বয়স ও বিশেষ অবস্থান যেমন গর্ভাবস্থা, অনুযায়ী এর চাহিদা পরিবর্তিত হয়।

বয়স অনুযায়ী চাহিদা

দৈনিক ভিটামিন এ দৈনিক চাহিদা বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, একজন পূর্ণবয়স্ক মহিলার প্রয়োজন প্রায় ৭০০ মাইক্রোগ্রাম, অন্যদিকে পুরুষের জন্য এই পরিমাণ হতে পারে প্রায় ৯০০ মাইক্রোগ্রাম। শিশুদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ আরও কম হয়।

গর্ভবতী নারীদের জন্য

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারী ভিটামিন এ এর চাহিদা সাধারণ চাহিদার চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এই সময়ে মহিলাদের দৈনিক প্রায় ৭৭০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ গ্রহণ করা উচিত। যথাযথ ভিটামিন এ গ্রহণ শিশুর স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং গর্ভবতী মায়ের সাধারণ স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অপরিহার্য।

  • গর্ভাবস্থায় উচ্চ মাত্রার ভিটামিন এ গ্রহণ করা উচিত নয় কারণ এতে ভ্রূণের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
  • পুষ্টিকর ও বৈচিত্র্যময় খাদ্য তালিকার মাধ্যমে দৈনিক ভিটামিন এ চাহিদা মেটানো উচিত।

এভাবে, বয়স ও জীবনের পর্যায় অনুযায়ী ভিটামিন এ এর চাহিদা নিরূপণ করা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে গর্ভাবস্থা ও শৈশবকালে।

ভিটামিন এ এর অভাব

ভিটামিন এ এর অভাব একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিভিন্ন শারীরিক এবং চিকিৎসাগত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এর সুপ্ত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করা ও সঠিক চিকিৎসা নেওয়া অপরিহার্য।

লক্ষণ এবং উপসর্গ

ভিটামিন এ অভাবের লক্ষণ বিভিন্ন আকারে প্রকাশ পায়, যা ধীরে ধীরে শনাক্ত হয়। এই সমস্যাগুলো হলো রাতকানা, চোখের শুকনোভাব এবং ইনফেকশনের প্রবণতা বৃদ্ধি।

  • দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া, বিশেষ করে কম আলোতে।
  • চোখের সমস্যায় প্রদাহ ও কষ্ট।
  • ত্বকের অবস্থার অবনতি, যেমন শুষ্কতা ও ফাটা।

দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব

ভিটামিন এ অভাব যদি দীর্ঘমেয়াদে অবহেলিত হয়, তবে তা ক্রনিক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই সমস্যাগুলি হতে পারে:

  1. চিরস্থায়ী চোখের রোগ যা অন্ধত্বের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
  2. ইমিউনোলজিকাল অক্ষমতা, যা সারা বছর বারবার ইনফেকশন ঘটায়।
  3. গর্ভাবস্থা ও ল্যাকটেশনের সময়ে জটিলতা।

সময়মতো চিকিৎসা এবং যথাযথ খাদ্যাভ্যাস ভিটামিন এ অভাব ঠেকাতে পারে।

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার রান্নার পদ্ধতি

শরীরের সুস্থতা এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে ভিটামিন এ খাবার রান্না অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রান্নার কৌশলগুলি ঠিক মতো অনুসরণ করলে, খাবারের ভিটামিন এ সম্ভার সংরক্ষণ করা যায়, যা পুষ্টির মান বজায় রাখতে সাহায্য করে।

সেদ্ধ করা শাকসবজি

ভিটামিন এ যুক্ত শাকসবজি যেমন মিষ্টি আলু, গাজর, এবং কুমড়া সেদ্ধ করে রান্না করা হলে এর পুষ্টি গুণাগুণ অক্ষুন্ন থাকে। সেদ্ধ করার পদ্ধতিতে, শাকসবজির সেল পর্দা ভেঙে যায়, যা ভিটামিন এ এর শোষণকে সহজতর করে। এটি একটি টেন্ডার এবং স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি যা ভিটামিন এ খাবার রান্নার ক্ষেত্রে উপকারী।

আরও পড়ুনঃ  রাতে চুলকানি পা সামালানোর উপায়

সালাদে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার

নানা ধরনের সালাদে কাঁচা সবজি যোগ করা হয়। টমেটো, মরিচ, এবং গাজরের মতো ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার কাঁচা খাওয়ার মাধ্যমে শরীর সহজেই ভিটামিন এ গ্রহণ করতে পারে। সালাদের আবেদন বাড়ানোর জন্য, বিভিন্ন রকমের ড্রেসিং এবং গার্নিশ ব্যবহার করা যেতে পারে, যা একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর ও মুখরোচক।

  • ভিটামিন এ খাবার রান্না শরীরের জন্য উপকারী এবং দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়।
  • সেদ্ধ করা এবং কাঁচা খাওয়া—উভয় পদ্ধতিই ভিটামিন এ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • সালাদ এ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এ যুক্ত খাবার মিশিয়ে একটি পুষ্টিকর খাবার প্রস্তুত করা যায়।

ভিটামিন এ খাবার রান্নার প্রতিটি পদ্ধতি শরীরের জন্য অপরিহার্য পুষ্টি সরবরাহ করে, যা সুস্থ থাকতে এবং চমকপ্রদ দৃষ্টি বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করে, আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনার খাবারে ভিটামিন এ এর সম্ভাব্য উপস্থিতি সর্বোচ্চ মাত্রায় রয়েছে।

ভিটামিন এ এর উৎসের আলোচনা

ভিটামিন এ যা চোখের স্বাস্থ্য এবং ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা অত্যন্ত জোরালো করে তোলে, তার দুই প্রধান উৎস হলো ক্যারোটিনয়েড এবং রেটিনল। এই উপাদানগুলির প্রাপ্যতার বিস্তারিত জানা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে সাহায্য করে এবং খাবারের নানান ধরনের ক্যারোটিনয়েডস উৎস এবং রেটিনল খাবার চিনে নিয়ে, আমাদের দৈনিক ডায়েটে এগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার

  • গাজর – এতে বিটা-ক্যারোটিন প্রচুর, যা শরীরে ভিটামিন এ তে পরিণত হয়।
  • মিষ্টি আলু – অন্যান্য ক্যারোটিনয়েড পদার্থের পাশাপাশি ভিটামিন এর উৎস।
  • পালং শাক – লুটেইন এবং জিয়াজানথিন সমৃদ্ধ, যা চোখের জন্য উপকারী।

রেটিনল উৎস

  • দুধ এবং দুধজাতীয় পণ্য – এগুলি প্রাণীজ উৎস থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন এ যা সরাসরি শরীরে ব্যবহৃত হয়।
  • মুরগির যকৃৎ – রেটিনল এর একটি প্রধান উৎস যা এন্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণে ভরপুর।
  • মাছ – বিশেষত তেলী মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকারেল যা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সহ ভিটামিন এ সরবরাহ করে।

এই খাবারগুলি আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা না শুধু ভিটামিন এ এর চাহিদা পূরণ করে, বরং সামগ্রিক পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পায়।

শিশুর জন্য ভিটামিন এ সম্পূরক

যখন বাচ্চাদের খাদ্যাভাস পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে না, তখন শিশু ভিটামিন এ সম্পূরক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। এই সম্পূরকগুলো শিশুদের বৃদ্ধি এবং সঠিক দৃষ্টিশক্তি বিকাশে সাহায্য করতে পারে।

শিশুদের জীবনের প্রথম কয়েক বছরে ভিটামিন এ এর প্রয়োজনীয়তা বেশি থাকে কারণ এটি তাদের প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে সুদৃঢ় করে তোলে এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

  • তরল সম্পূরক: বাজারে ভিটামিন এ সম্পূরকগুলি তরল, ট্যাবলেট এবং ড্রপস আকারে পাওয়া যায় যা শিশুদের জন্য সহজে গ্রহণযোগ্য।
  • ডোজের পরিমাণ: সঠিক ডোজ নির্ধারণ করা উচিত একজন যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, যাতে অতিরিক্ত সেবনের কোনো সুযোগ না থাকে।

মনে রাখতে হবে, বাচ্চাদের পুষ্টি সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে গেলে খাদ্যের পাশাপাশি সময়মতো উপযুক্ত ভিটামিন সম্পূরক দেওয়াটাও প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে, ভিটামিন এ একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে যখন বাচ্চার স্বাভাবিক খাদ্য থেকে যথেষ্ট ভিটামিন এ পাওয়া যাচ্ছে না।

অতএব, বাচ্চার সুস্থ বৃদ্ধি এবং উন্নত প্রতিরক্ষা সিস্টেমের জন্য শিশু ভিটামিন এ সম্পূরক এর প্রয়োগ অপরিহার্য। এটি তাদের আগামীদিনের পাথ যাত্রায় একটি সুদৃঢ় ভিত্তি প্রদান করবে।

খাদ্য তালিকা

সঠিক পুষ্টি প্রাপ্তির জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। ভিটামিন এ খাদ্য তালিকা এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের পরামর্শ এর মাধ্যমে আপনারা এই সুবিধা পেতে পারেন। নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হল, যেগুলি আপনার দৈনন্দিন ভিটামিন এ এর চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে:

  1. গাজর: ভিটামিন এ এর একটি উচ্চ উৎস, যা চোখের স্বাস্থ্য এবং ত্বকের যত্নে সহায়ক।
  2. মিষ্টি আলু: এতে বেটা-ক্যারোটিনের পরিমাণ প্রচুর, যা শরীরে ভিটামিন এ তে পরিণত হয়।
  3. লাল মরিচ: ভিটামিন এ এবং সি উভয়েরই একটি ভাল উৎস।
  4. কুমড়া: শরীরের প্রদাহ কমাতে এবং ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ।
  5. সবুজ শাকসবজি: যেমন পালং শাক, যা ভিটামিন এ, সি, কে, আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের একটি প্রাচুর্য উৎস।
  6. মাছ এবং ডিম: এগুলি উচ্চমানের প্রোটিন এবং ভিটামিন এ এর উৎস।
আরও পড়ুনঃ  নিউমোনিয়া সেরে উঠতে কত সময় লাগে

এই ভিটামিন এ খাদ্য তালিকা মেনে চলা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবারের পরামর্শ অনুসরণ করা আপনাকে একটি ভালো এবং সক্রিয় জীবন যাপনে সাহায্য করবে।

স্বাস্থ্যকর খাবারের পরামর্শ

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা ছাড়াও, সামগ্রিক ডায়েটে নিম্নলিখিত নিয়মাবলী মেনে চলুন:

  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
  • অতিরিক্ত চিনি এবং সোডিয়াম যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • বাইরের খাবারের চেয়ে ঘরে তৈরি খাবার গ্রহণ করুন।
  • ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম এবং বীজ নিয়মিত খান।
  • প্রতিদিনের খাবারে ফলমূল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করুন।

এই স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি আপনার প্রাত্যহিক জীবনব্যবস্থাকে উন্নত করতে এবং সুস্থ থাকতে সহায়তা করবে।

ভিটামিন এ এর অতিরিক্ত পরিমাণ

ভিটামিন এ ভিটামিনগুলির মধ্যে একটি অত্যাবশ্যক উপাদান যা আমাদের চোখের স্বাস্থ্য, ত্বকের উন্নতি এবং ইমিউন ফাংশন বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে, ভিটামিন এ অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে এর কিছু নেগেটিভ প্রভাবও আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

লক্ষণ ও সমস্যা

ভিটামিন এ এর অতিরিক্ত পরিমাণের কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • হজমের সমস্যা
  • মাথা ঘোরা
  • গর্ভপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি
  • যকৃতের ক্ষতি

এই লক্ষণগুলি তাদের সময়মত চিকিৎসা না করলে গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।

নিরাপদ সীমানা

ভিটামিন এ নিরাপদ সীমা বজায় রাখা আমাদের পুষ্টি চার্টের একটি অংশ হওয়া উচিৎ। অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণ এড়িয়ে চলার জন্যে:

  1. পুষ্টিবিজ্ঞানীর পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েট প্ল্যান তৈরি করা।
  2. সুপরামর্শিত পরিমাণের বাইরে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ এড়ানো।
  3. নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা।

যথাযথ মাত্রায় ভিটামিন এ গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারী ও জরুরি।

ভিটামিন এ এর অন্যান্য পুষ্টি উপাদান

ভিটামিন এ শুধু আমাদের শারীরিক পুষ্টির জন্য নয়, অন্যান্য সুষম খাদ্য উপাদানের সাথে এর পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। সঠিক খনিজ এবং অন্যান্য ভিটামিনের সাথে মিলে এই ভিটাম আমাদের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। একটি সুষম খাদ্য তালিকা অনুসারে এর আদান-প্রদান, শরীরের বিভিন্ন ক্রিয়া সঞ্চালনের জন্য অপরিহার্য।

ভিটামিন সি এবং ই এর সাথে সম্পর্ক

ভিটামিন এ, বিশেষ করে বেটা-ক্যারোটিনের সাথে ভিটামিন সি এবং ই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এরা একে অন্যের কার্যকারিতা বাড়িয়ে থাকে এবং মুক্ত র‌্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে কোষকে রক্ষা করে। এই সম্পর্কটি ঝালাই বা ইনফ্ল্যামেশনের মাত্রা কমানো এবং অ্যাজ ফ্যাক্টর দ্বারা উৎপন্ন সমস্যা প্রতিরোধে কার্যকরী।

খনিজ পদার্থের প্রভাব

খনিজ উপাদান, যেমন জিংক এবং লৌহ, ভিটাম এর শোষণে এবং মেটাবলিজমে সাহায্য করে। সঠিক খনিজের উপস্থিতি শরীরে ভিটামিন এর কার্যকারিতা উন্নত করে। অনুকূল মানের খনিজ সামগ্রীও আমাদের চোখের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক সেলুলার ফাংশনের জন্য অপরিহার্য।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button