পৃথিবীতে মোট জনসংখ্যা কত?

আমাদের গ্রহে মানুষের সংখ্যা চমকপ্রদ হারে বেড়ে চলেছে, এবং সাম্প্রতিক সময়ের জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্ব জনসংখ্যা গ্লোবাল পপুলেশন প্রায় ৮.০৭ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, ভারত খুব বেশি সংখ্যালঘু নয়; এপ্রিল ২০২৩ এর হিসেবে ১,৪৩৩,৭৮৩,৬৮৬ জনসংখ্যা নিয়ে এশিয়ায় শীর্ষে আছে। চীন নিকট অনুসরণ করে ১,৩৬৬,৪১৭,৭৫৪ জনসংখ্যা নিয়ে, এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যা ২৭ টি সদস্য দেশ নিয়ে গঠিত, ৫১২,৪৯৭,৮৮৭ জনসংখ্যা এর সাথে এগিয়ে চলেছে।

পৃথিবীর জনসংখ্যার বৃদ্ধির প্রবণতা একই রকমের স্থির নেই — কিছু দেশে যেমন বৃদ্ধি হার ধীর, কিছু দেশে এটি তুলনামূলকভাবে দ্রুত; উদাহরণস্বরূপ, নাইজেরিয়া আফ্রিকায় ২০০,৯৬৩,৫৯৯ জন জনসংখ্যা নিয়ে এবং বাংলাদেশ আসিয়ায় ১৬৫,১৫৮,৬১৬ জন জনসংখ্যা নিয়ে বাড়ছে। এই সকল মানুষের সংখ্যা এর প্রবৃদ্ধি ও তাদের সম্মিলিত প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে, এটা প্রকাশ পাচ্ছে যে, বৈশ্বিক পরিসরে জনসংখ্যার ঘনবসতির এই যাত্রাপথ, পরিকল্পনা ও পলিসি নির্ধারণে অগ্রাধিকার হবে।

বর্তমান জনসংখ্যার তথ্য

বিশ্বের আজকের জনসংখ্যা প্রায় ৮ বিলিয়ন, যা বিভিন্ন সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব রাখছে। বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক ও আঞ্চলিক পরিসংখ্যানের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এই জনসংখ্যার গতিধারা।

বিশ্ব জনসংখ্যার সর্বশেষ পরিসংখ্যান

২০২২ সালে বিশ্ব জনসংখ্যা ২০২২ অনুযায়ী ৮ বিলিয়নে পৌঁছেছে, এবং এটি আগের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের সর্বশেষ জনসংখ্যা হার চমকপ্রদ গতিতে বাড়ছে, যা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় বিভাজন অনুযায়ী জনসংখ্যা

  • অঞ্চলভিত্তিক জনসংখ্যা বিশ্লেষণ দেখায়, উন্নত অঞ্চলগুলোর জনসংখ্যার হার কমছে বা স্থিতিশীল।
  • উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জনসংখ্যা হার ব্যাপকভাবে বাড়ছে, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানাবিধ সমস্যা তৈরি করে।
  • আঞ্চলিক জনসংখ্যা পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার মতো অঞ্চলগুলোতে বিশেষ করে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার বেশি।
  • এই বিশ্লেষণ গবেষকদেরকে বিভিন্ন অঞ্চলের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারন ও প্রভাব সম্পর্কে গভীর বোঝার ক্ষমতা দেয়।
আরও পড়ুনঃ  দর্শন কাকে বলে?

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ইতিহাস

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারাবাহিক ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে একটি সুস্পষ্ট প্রেক্ষাপট প্রয়োজন। ২০শ শতাব্দী ধরে মানব জনসংখ্যায় অসামান্য পরিবর্তন দেখা গিয়েছে – এক দিকে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি, অন্য দিকে এর বিভিন্ন প্রভাব।

বিংশ শতাব্দীতে জনসংখ্যার বৃদ্ধি

২০শ শতাব্দীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে মেডিকেল উন্নতি, পুষ্টি সংরক্ষণ এবং রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি চিহ্নিত করা হয়। এসময়ের দৌলতে, মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যায় এবং মৃত্যুহার কমে আসে।

উদীয়মান দেশগুলোর প্রভাব

উন্নয়নশীল দেশগুলির জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভাব অন্যান্য দেশের তুলনায় ভিন্ন রূপ নেয়। এর প্রধান কারণ হলো অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং বৃদ্ধির হারের সামঞ্জস্য। এই জনসংখ্যা বৃদ্ধি সাধারণত শহরায়ণ, শিক্ষার প্রসার এবং স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে অবদান রাখে।

  1. ভারতে ২০ শতাব্দীর মধ্যে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মানুষের বৃদ্ধি পেয়েছিল।
  2. চীন তার জনসংখ্যার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে যা জনসংখ্যার গতিশীলতাকে নতুন দিক দিয়েছে।

সার্বিকভাবে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ইতিহাস আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের উৎস হিসেবে রূপ নিতে পারে। এটি আমাদের পরিকল্পনা এবং নীতি নির্মাণের কাজে সাহায্য করে।

জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণ

বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যার বৃদ্ধি সমাজের অনেক দিক থেকেই প্রভাবিত হয়, যার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অর্থনীতির উন্নতি প্রধান।

স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন

স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন একটি প্রধান কারণ যা জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভাবিত করে। উন্নত মৃত্যুহার হ্রাস এবং চিকিৎসা প্রযুক্তির উন্নতিসাধনের ফলে জন্মহার ও জীবনকাল বৃদ্ধি পেয়েছে।

শিক্ষার প্রভাব

শিক্ষার হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জনগণ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা এবং পদ্ধতি সম্পর্কে অধিক সচেতন হয়ে উঠেছে। এই বৃদ্ধিতে জনসংখ্যা পরিবর্তন সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে, যা দীর্ঘমেয়াদী জনসংখ্যা গতিপ্রকৃতিকে প্রভাবিত করে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন

অর্থনীতির বৃদ্ধিও একটি বড় প্রভাবক। কর্মসংস্থান ও বাজারের বিবর্ধনের ফলে মানুষের আয় এবং মান উভয়ই বৃদ্ধি পায়, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। এর ফলে জনসংখ্যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে যা বিশ্বজনীন রূপে দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ  ১ ঘনমিটার = কত লিটার?

সব মিলিয়ে, এই তিনটি উপাদান – স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, এবং অর্থনীতি – জনসংখ্যার বৃদ্ধির প্রধান মূলধন হিসেবে কাজ করে থাকে। এগুলোর উন্নয়ন ও প্রসার জনসংখ্যা পরিবর্তনে সহায়ক হয়।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কৌশল

বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার একটি মুখ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে, যা পরিবার পরিকল্পনা ও সময়োযোগী জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ মাধ্যমে মোকাবেলা করা সম্ভব। এসব কৌশল দ্বারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে সহায়ক হতে পারে।

পরিবার পরিকল্পনা নীতিমালা

পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের একটি প্রধান উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি প্রচুর বিশ্ব উদাহরণ ও জনসংখ্যা নিযি়ন্ত্রণ সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। মাতৃ স্বাস্থ্য ও শিশু কল্যাণে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

  • জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উপকারিতা অর্জন
  • আয় ও শিক্ষার সুযোগ প্রসারে ভূমিকা রাখে
  • অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা এবং যৌনরোগ প্রতিরোধে সহায়ক

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সফল উদাহরণ

পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির ব্যাপক প্রচার ও প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।

  1. চীনের এক-সন্তান নীতি
  2. বাংলাদেশের ব্যাপক জনসংখ্যা শিক্ষা প্রকল্প
  3. ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির সফল প্রয়োগ

এই উদাহরণগুলি প্রমাণ করে যে সুপরিকল্পিত পরিবার পরিকল্পনা ও জনসংখ্যা নিয়োগ সফল হতে পারে যদি সঠিকভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়।

বৈশ্বিক গড় আয়ু ও জনসংখ্যা

সমীক্ষা অনুযায়ী জনসংখ্যা এবং গড় আয়ু উভয়ের মধ্যে এক আশ্চর্যজনক প্রসার লক্ষ্য করা গিয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমাদের পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮.২ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ১০.৩ বিলিয়ন হতে প্রস্তাবিত হচ্ছে। এই পরিবর্তন মানব সভ্যতার জন্য যেমন এক বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনি এটি নতুন সম্ভাবনাও তৈরি করে। আয়ুর প্রসার অগ্রগতি যেমন স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন সংগত, তেমনি সামগ্রিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির মাপদণ্ডেও গুরুত্বপূর্ণ।

আয়ু বাড়ার কারণসমূহ

শিশুরা আজ গড়ে ৭৩.৩ বছর বেঁচে থাকতে প্রত্যাশিত, যা ১৯৯৫ সাল থেকে ৮.৪ বছর বেশি। এর মুখ্য কারণ হিসাবে মেডিক্যাল অগ্রগতি, উন্নত স্বাস্থ্যবিধি এবং জীবনযাত্রার উন্নত মান উল্লেখ করা হয়েছে। লাইফ এক্সপেক্টেন্সি বাড়ার ফলে জীবনের মানোন্নয়ন ঘটে এবং এর সুফল বিশ্বের অনেক অংশে দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ  রাষ্ট্রের চারটি মূলস্তম্ভ কি? জানুন বিস্তারিত

স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের সাহায্যে কীভাবে আয়ু বাড়ে

২০৫০ সাল নাগাদ গড় আয়ু বেড়ে ৭৭.৪ বছর হওয়ার অনুমান করা হচ্ছে, এবং এর প্রধান অবদান রয়েছে মৃত্যুহার কমার ফলে। আধুনিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিই মহামুল্যবান এই আয়ু বৃদ্ধির কারণ। এছাড়াও, মানুষের প্রজনন ও জীবন পদ্ধতির পরিবর্তন, পোষ্য পরিচর্যা, স্থানান্তর নীতিমালা এবং শিশু ও কিশোর বয়সের জনসংখ্যা বিশ্লেষণের উন্নয়ন জনজীবনে সুস্থতা এবং অধিক আয়ু নিশ্চিত করছে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button