হাত পা অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

কেন আমরা শরীরের বিশেষ করে হাত পা অবশ অনুভব করি, এবং এর পেছনের কারণগুলি কি কি? হাত পা অবশের কারণ বহুমুখী হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে স্ট্রোক, কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম, ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, স্লিপ সার্ভিকাল ডিস্ক, রেনোস রোগ, কিউবিটাল টানেল সিন্ড্রোম, লুপাস, থাইরয়েড বিকার, মাইওফিশাল ব্যথা সিন্ড্রোম ইত্যাদি। প্রায়ই দেহের এই অবশতা নানা ধরনের উপসর্গ নিয়ে আসে, যেমন অনুভূতির অভাব, ঝালাপালা বা জ্বালাজ্বলা বোধ, স্পর্শকাতরতা বেড়ে যাওয়া, শক্তি হ্রাস, গরম বা ঠাণ্ডা তাপমাত্রা অনুভবের পরিবর্তন ইত্যাদি।

অবশ প্রতিকার সহজ নয়, কিন্তু তা সম্ভব। নির্ণয়ের জন্য, শারীরিক পরীক্ষা, রোগীর চিকিৎসা ইতিহাস, এমনকি এমআরআই, এক্স-রে, আল্ট্রাসাউন্ড, রক্ত পরীক্ষা প্রভৃতি ডায়াগনস্টিক টেস্ট করা প্রয়োজন হতে পারে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, অবশতা চিকিৎসা খুব জরুরি, যা রোগ নির্ণয়ে এবং ত্বরান্বিত প্রতিকারে সাহায্য করতে পারে। আর সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Contents show

অবশ হওয়ার সাধারণ কারণসমূহ

হাত ও পা অবশ হওয়া বিভিন্ন কারণের ফলে ঘটতে পারে। এর মধ্যে, রক্ত সঞ্চালনের ব্যাঘাত, স্নায়ু চাপের কারণে অবশ এবং ডায়াবেটিস উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি কারণ ভিন্ন উপসর্গ ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়, যা চিকিৎসার ধরনের উপর প্রভাব ফেলে।

রক্ত সঞ্চালন সমস্যা

হাত পা অবশতা ব্যাপকভাবে রক্ত সঞ্চালনের ব্যাঘাতের কারণে ঘটে। যখন শরীরের কোনো অংশে রক্ত প্রবাহ সঠিকভাবে হয় না, তখন সেই অংশের কোষগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পায় না, যা অবশ হওয়ার অন্যতম কারণ।

স্নায়ু চাপ সমস্যাগুলি

স্নায়ু চাপের কারণে অবশ হয়ে থাকে, বিশেষ করে যখন দীর্ঘ সময় ধরে একটি অবস্থানে থাকা হয়। উদাহরণস্বরূপ, অফিসের কাজে দীর্ঘকাল সামনে ঝুঁকে বসে থাকা বা দীর্ঘ যাত্রায় একই ভঙ্গিমায় বসে থাকা।

ডায়াবেটিসের প্রভাব

ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে হাত পা অবশতা অনেক বেশি দেখা দেয়, কারণ উচ্চ রক্ত শর্করার মাত্রা স্নায়ুকোষের ক্ষতি ঘটাতে পারে এবং রক্তনালীর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের ক্ষতি থেকে সৃষ্টি হওয়া অবশতা প্রতিরোধ করা জন্য নিয়মিত রক্ত শর্করা পর্যবেক্ষণ ও সঠিক ডায়েট মেনে চলা জরুরি।

আরও পড়ুনঃ  ফ্লুকোনাজোল কাজ করতে কত সময় নেয়?

বিশেষজ্ঞের সাহায্য ও সঠিক চিকিৎসা মাধ্যমে এই সমস্যাগুলির মধ্যে যে কোনো একটির কারণে হওয়া অবশতা নিরাময় করা সম্ভব।

স্নায়বিক রোগের সাথে সম্পর্ক

বিভিন্ন ধরণের নিউরোলজিকাল অবশতা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে এখন আরও ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে, বিশেষ করে যেগুলো হাত ও পা অবশ হওয়ার সাথে জড়িত। এই রোগগুলির মধ্যে পার্কিনসন এবং মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস অন্যতম।

পার্কিনসন রোগ

পার্কিনসন রোগের মধ্যে পার্কিনসন জটিলতা অন্যতম হল মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার যা ধীরে ধীরে ব্যক্তির মুখের এক্সপ্রেশন, হাতের কম্পন এবং সাধারণ চলাচলে প্রভাব ফেলে। গভীরভাবে এটি ব্যক্তির স্নায়বিক কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন করে তোলে এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাধা দেয়।

মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস

মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস হল একটি অটোইমিউন রোগ যা স্নায়ুতন্ত্রের মাইওলিন শিটকে ক্ষতি করে। মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস লক্ষণগুলি অনেক ভিন্ন হতে পারে যেমন দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, পেশী দুর্বলতা, চলাফেরা করতে অসুবিধা এবং উচ্চারণে সমস্যা। এগুলি মানুষের দৈনিক কাজকর্মে প্রভাব ফেলে থাকে।

এই ধরণের রোগগুলির নির্ণয় এবং চিকিীত্সার মাধ্যমে ক্ষতির গতি কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই, স্নায়ুবিজ্ঞানের অগ্রগতি ও আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি এই রোগগুলির মোকাবেলায় আশার আলো জ্বালিয়ে তুলছে।

ভিটামিন ঘাটতির কারণ

ভিটামিনের অপর্যাপ্ততা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণ হতে পারে। বিশেষত, ভিটামিন বি১২ স্বল্পতা এবং ফোলেট ঘাটতি নার্ভ ফাংশন ও রক্তসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখে থাকে। এই ধরণের ঘাটতির কারণে পুষ্টি অভাবের প্রভাব পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়।

ভিটামিন বি১২ এর অভাব

ভিটামিন বি১২, যা কোবালামিন নামেও পরিচিত, এটি মূলত প্রাণিজ খাবারে পাওয়া যায়। এই ভিটামিনের অভাব মূলত শাকাহারীদের মাঝে বেশি দেখা যায় কারণ উদ্ভিজ্জ খাবারে এর পরিমাণ খুবই কম। এর ফলে হতে পারে অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং স্নায়ু ক্ষতি।

ফোলেটের অপর্যাপ্ততা

ফোলেট, যা ভিটামিন বি৯ হিসেবে পরিচিত, এটি শারীরিক কোষ চক্র এবং ডিএনএ উত্পাদনের জন্য অপরিহার্য। ডিম্বিয় সবজি, মরিচ, ও ডাল জাতীয় খাবারে ফোলেটের পরিমাণ বেশি থাকে। ফোলেট ঘাটতি হলে এটি রক্তাল্পতা সৃষ্টি করে এবং হাত পা অবশ হয়ে যেতে পারে।

সহজে বলতে গেলে, এই ভিটামিনগুলির ঘাটতি অবশ্যই পরিহার করা উচিত এবং ডায়েটের মাধ্যমে তাদের যথাযথ পরিমাণ গ্রহণ করা জরুরি। ভিটামিনের ঘাটতি দূরীকরণের জন্য পুষ্টিকর খাবার এবং প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা স্বাস্থ্যগত পছন্দ হতে পারে।

আঘাত ও চাপের প্রভাব

কর্মস্থলের চাপ এবং আঘাত ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে হাত পায়ের আঘাত এবং চোট প্রভাব সৃষ্টি হতে পারে, যা শারীরিক চাপ বৃদ্ধি করে।

আরও পড়ুনঃ  করোনা ভাইরাস সম্পর্কে তথ্য

কাজের চাপ

পেশাগত জীবনের চাপ অনেক সময় স্নায়ুতে বাড়তি চাপ তৈরি করে, যা পার্শ্ববর্তী স্নায়ু কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই স্নায়ু চাপের ফলে হাত, পা ও অন্যান্য অঙ্গ অবশ হয়ে যেতে পারে।

  • মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা করা।
  • বিরতি নেওয়া এবং যথেষ্ট বিশ্রাম নিশ্চিত করা।
  • হালকা ব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং অনুশীলন।

হাত ও পায়ের আঘাত

ব্যায়াম বা কাজের সময় হাত ও পায়ের আঘাত পেয়ে থাকলে চোট প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। হাত পায়ের আঘাতের কারণে নার্ভ ড্যামেজ ঘটতে পারে।

  1. আঘাতজনিত এলাকায় বরফ লাগানো।
  2. প্রদাহ বর্জন করা।
  3. চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

সব মিলিয়ে, শারীরিক চাপ এবং হাত পায়ের আঘাত হালকা চিকিৎসা এবং সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিয়মিত পরিচর্যা এবং সুরক্ষা পদক্ষেপ অবলম্বন করে, আমরা এই সমস্যাগুলির প্রাদুর্ভাব হ্রাস করতে পারি।

জীবনযাত্রার অভ্যাসের প্রভাব

আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। বর্তমান যুগে, দীর্ঘকালীন বসার প্রভাব একটি উদ্বেগজনক বিষয় হয়ে উঠছে, যা নানা রকম শারীরিক অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।

দীর্ঘ সময় এক অবস্থানে থাকা

কর্মক্ষেত্রে অথবা বাড়িতে দীর্ঘ সময় ধরে একই অবস্থানে বসে থাকা রক্ত সঞ্চালন ও স্নায়বিক কাজকর্মে বাধা দেয়। একঘন্টা অবিচলিত বসে থাকার পর প্রতি বিশ মিনিটে কিছুক্ষণ হেটে নেওয়া উচিৎ।

খারাপ মন্দির গোছানো

সঠিক মন্দির গোছানো না থাকলে শরীরের উপর চাপ পড়ে, যা পীঠে ব্যথা ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে। অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হলে সঠিক চেয়ার, ডেস্ক এবং কম্পিউটার মনিটরের উচ্চতা মাপজোখ করা উচিৎ।

আমাদের জীবনযাত্রার অভ্যাস যদি স্বাস্থ্যকর হয়, তবে তা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যগত সুফল বয়ে আনতে পারে। তাই সকলের উচিৎ অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি নিয়মিত জীবনযাত্রার অভ্যাসগুলি যাচাই করে নেওয়া।

বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি

অবশ হওয়া একটি প্রচলিত সমস্যা যা বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা দ্বারা প্রতিকার করা সম্ভব। চিকিৎসার মেথড গুলোর মধ্যে ফিজিওথেরাপি প্রতিকারমেডিকেল প্রেসক্রিপশন বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

ফিজিওথেরাপি

ফিজিওথেরাপি হল একটি কার্যকর চিকিৎসার মেথড যা মূলত শারীরিক মুভমেন্ট, ম্যানুয়াল থেরাপি, ব্যায়াম প্রেসক্রাইব করে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের অবশতা এবং যন্ত্রণা নিরাময়ে সাহায্য করে।

চিকিৎসক কর্তৃক প্রেসক্রিপশন

মেডিকেল প্রেসক্রিপশন এর মাধ্যমে চিকিৎসা, যা অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকারের জন্যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এসব প্রেসক্রিপশনে ঔষধ, ভিটামিন সাপ্লিমেন্টস এবং অন্যান্য থেরাপিউটিক প্রটোকল অন্তর্ভুক্ত থাকে যেগুলো রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি সাধনে সহায়ক।

আরও পড়ুনঃ  গ্যাস ব্যথা দূর করার উপায় - সহজ টিপস

এই উপায়গুলো ক্রমাগত মেডিক্যাল গবেষণা এবং রোগীর ফিডব্যাকের মাধ্যমে উন্নত করা হচ্ছে, যাতে করে আরো কার্যকর এবং কম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসমূহ নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা যায়।

গৃহে প্রতিকার সমূহ

ঘরোয়া পরিবেশে হাত পা অবশ হওয়ার সমস্যা মোকাবিলা করতে বিভিন্ন প্রতিকারের প্রচলন রয়েছে। এই প্রতিকারগুলি সাধারণত ঘরে পাওয়া উপাদান দিয়ে তৈরি এবং একজনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।

নিজস্ব ব্যায়াম পদ্ধতি

ঘরে বসে নিয়মিত ব্যায়াম করা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে অবশ হওয়া প্রতিরোধ করে। হালকা স্ট্রেচিং, যোগ এবং মেডিটেশন শরীর ও মনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

গরম দুধ এবং হার্বাল চা খাবারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষা

গরম দুধ এবং হার্বাল চা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ যা স্বাস্থ্য সুরক্ষার খাবার হিসাবে পরিচিত। এগুলো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে এবং টক্সিন অপসারণে সাহায্য করে।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ডায়েট শারীরিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং মুক্ত মূলক প্রতিক্রিয়াকে কমিয়ে তোলে। ফল, সবজি, নাটস এবং সিডস এই ধরনের ডায়েটে উৎকৃষ্ট।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, আখরোট এবং ফ্ল্যাক্সসিড হৃদয় এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে ভালো প্রভাব ফেলে, যা নিয়মিত গ্রহণে অবশ হওয়া প্রতিরোধ করতে পারে।

এসব হোম রেমেডি ব্যবহার করে নিজ গৃহেই অনেক সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব। যথাযথ খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত উপযুক্ত ব্যায়ামে শারীরিক স্বাস্থ্য অনেক উন্নত হয়।

অবশ হওয়া প্রতিরোধের কৌশল

হাত ও পা অবশ হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যেটি বেশির ভাগ সময় নানান কারণে হয়ে থাকে। এর প্রধান কৌশল দুটি হল – প্রতিরোধের ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ কমানো। এই কৌশলগুলি পালন করে আমরা আমাদের জীবনযাপনকে আরও সুরক্ষিত করতে পারি।

নিয়মিত ব্যায়াম

শরীরের নিয়মিত ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালনে উন্নত ভূমিকা রাখে এবং অবশ হওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে আনে। বিশেষজ্ঞরা রিকমেন্ড করে থাকেন যে, সকলের উচিত নিয়মিত হাঁটা, জগিং অথবা জিমন্যাস্টিকস অনুশীলন করা। এছাড়াও, সাঁতার কাটাও হতে পারে একটি ভালো পছন্দ, কারণ এটি জোড়াগুলির উপর চাপ কমিয়ে দেয়।

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণের উপায়

মানসিক চাপ শারীরিক সমস্যাগুলির একটি বড় কারণ। মেডিটেশন, যোগা এবং শ্বাস প্রশ্বাসের নিয়মিত অনুশীলন মনের চাপ হ্রাস করতে সাহায্য করে। ঘুমের আগে একটি ভালো বই পড়া অথবা কোনো শান্ত মিউজিক শোনা মানসিক শান্তি আনতে প্রভাব ফেলে। সবার উচিত নিজস্ব স্ট্রেস রিলিভিং চর্চা গড়ে তোলা, যাতে মানসিক চাপ কমানো সহজ হয় এবং তার ফলে অবশ হওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button