গোবিন্দ – বলিউডের কিং অফ কমেডি
গোবিন্দ, যিনি বলিউডের অনুসন্ধানে অন্যতম প্রধান হাস্য অভিনেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর অভিনয় দক্ষতা, আর সহজাত হাস্যরস দর্শকদের মাঝে চিরস্থায়ী মনোযোগ পেয়েছে। গোবিন্দ জীবনী বলতে গেলে, এটি স্পষ্ট যে তিনি বলিউডের অনন্যত্ব এবং বহুমুখী প্রতিভা নিয়ে কাজ করেছেন।
বলিউড ক্যারিয়ারে তিনি প্রায় ১৪০টিরও বেশি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন, এবং বহুবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন এবং জয়ীও হয়েছেন। “পার্টনার” সিনেমাটি, যেখানে সালমান খান, ক্যাটরিনা কাইফ, এবং লারা দত্তও অভিনয় করেছিলেন, মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ৩০০ মিলিয়ন রুপি অর্জন করেছিল। গোবিন্দ হাস্য অভিনেতা হিসেবে বিশেষ পুরস্কারও পেয়েছেন, যা তাকে বলিউডের কিং অফ কমেডি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
গোবিন্দের শৈশব ও প্রাথমিক জীবন
গোবিন্দ অরুন আহুজা ১৯৬৩ সালের ২১শে ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের ভিরারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব এবং প্রাথমিক জীবন ছিল অসাধারণ, যা তাঁর ভবিষ্যতের পেশাদার জীবনে এক অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেছে।
জন্ম ও পরিবার
গোবিন্দের জন্ম একটি চলচ্চিত্র পরিবারে হয়। তাঁর পিতা অরুন আহুজা ছিলেন একজন পরিচিত অভিনেতা এবং মাতা নির্মলা দেবী ছিলেন একজন প্রখ্যাত গায়িকা। গোবিন্দের পরিবার তাঁকে সবসময় সমর্থন দিয়েছে এবং তাঁর প্রতিভা উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
শিক্ষাজীবন
গোবিন্দ শিক্ষাজীবন শুরু করেন আন্নাসাহেব ভার্তক কলেজে। তাঁর অধ্যাবসায় এবং প্রতিভা অল্প দিনের মধ্যেই স্বীকৃতি পায়। গোবিন্দ শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশের স্বপ্ন দেখতেন এবং সেই দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে এক সফল অভিনয় ক্যারিয়ারের দিকে নিয়ে যায়।
বিনোদন জগতে গোবিন্দ্র শুরু
গোবিন্দের বলিউডের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। তার প্রথম সিনেমা ‘ইলজাম’ অনেকেই মনে রাখবেন। এই সিনেমায় তার অভিনয় দক্ষতা দেখা মিলেছিলো প্রথমবারের মতো এবং তিনি দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হন। গোবিন্দের প্রথম সিনেমা সাফল্যের সঙ্গে পর্দায় এসেছিল এবং তাকে বলিউডে একটি দৃঢ় স্থান দিয়েছিল।
প্রথম সিনেমা
গোবিন্দের অভিষেক চলচ্চিত্র ‘ইলজাম’ বলিউডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিল। এই সিনেমাটি তাকে রাতারাতি পরিচিতি এনে দেয় এবং এতে তিনি প্রমাণ করেন যে তিনি শুধুই একজন কমেডি অভিনেতা নন, বরং অ্যাকশন এবং রোমান্সেও সমানভাবে দক্ষ। গোবিন্দ অ্যাকশন সিনেমা তার প্রথম সিনেমার পর থেকেই একটি প্রিয় ধারা হয়ে ওঠে।
অ্যাকশন হিরো হিসেবে কাজ
গোবিন্দ প্রাথমিকভাবে অ্যাকশন ও রোমান্টিক ঘরানার সিনেমাগুলোতেই কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘শোলা অউর শবনম’, ‘আখিঁয়ো সে গুলি মারে’ এবং আরো। গোবিন্দ অ্যাকশন সিনেমা অনেকেই ভালোবাসতেন এবং তার অ্যাকশন দৃশ্য দর্শকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার সাফল্যের ধারাবাহিকতা বিখ্যাত ডাইরেক্টর ডেভিড ধাওয়ানের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আরো বৃদ্ধি পায়।
গোবিন্দ এবং নীলমের পর্দার রসায়ন
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি গোবিন্দ এবং নীলম সোনি, তাদের অসাধারণ chemistry এবং পর্দার রসায়নের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। তাদের যুগলবন্দি বলিউড প্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছিল, যা আজও বহু ভক্তদের কাছে আলোচনার বিষয়।
একসাথে ১৪টি সিনেমায় কাজ
গোবিন্দ এবং নীলম একসঙ্গে মোট ১৪টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন, যা তাদের জনপ্রিয়তার অন্যতম প্রধান কারণ। ‘লাভ ৮৬’ এবং ‘খুদ্দার’ সহ, গোবিন্দ নীলম সিনেমাগুলির মধ্যে রয়েছে একাধিক হিট সাইনেমা, যা তাদের যুগলবন্দিকে প্রমাণ করেছে অন্যতম সফল ও জনপ্রিয়।
গুঞ্জন ও বিতর্ক
গোবিন্দ ও নীলমের পর্দার রসায়ন নিয়ে তখন প্রচুর গুঞ্জন এবং বিতর্ক শোনা যেত। যদিও নীলম স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে তাদের মধ্যে কোনো রোমান্টিক সম্পর্ক ছিল না, তা সত্ত্বেও এই গোবিন্দ নীলম বিতর্ক তাদের সিনেমাগুলির প্রচার এবং জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছিল।
গোবিন্দ নীলম সিনেমা বলিউড জগতে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে নিবেন, তাদের সফল যুগলবন্দি এবং গল্পের গভীরতা নিয়ে চর্চা আজও চলছে।
কমেডি হিরো হিসেবে প্রতিষ্ঠা
নব্বই দশকে বলিউড সিনেমার দুনিয়ায় গোবিন্দ একটি নতুন ধারার সূচনা করেন। তাঁর অভিনয় এবং কমেডি টাইমিং দর্শকদের মগ্ন করে রাখত। বহু সমালোচক এবং দর্শকদের মতে, নব্বই দশকের গোবিন্দ বিভিন্ন কমেডি সিনেমার মাধ্যমে নিজের প্রতিভা প্রমাণ করে ফেলেন।
নব্বই দশকের সাফল্য
নব্বই দশকে গোবিন্দর সাফল্য আসলে এক কথায় অনবদ্য। তাঁর অভিনীত ‘রাজা বাবু’, ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’, এবং ‘হাসিনা মান জায়েগী’-র মতো সিনেমাগুলোর মাধ্যমে তিনি নিজের কমেডি প্রতিভা সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম হন। এই কালেই গোবিন্দর নাম বলিউডের অন্যতম মজার অভিনেতাদের তালিকায় স্থাপিত হয়। এসব গোবিন্দ কমেডি সিনেমা এতটাই জনপ্রিয় হয় যে সেগুলো আজও দর্শকদের মজা দিয়ে যাচ্ছে।
জনপ্রিয় আধুনিক কমেডি সিনেমা
গোবিন্দর জনপ্রিয় আধুনিক কমেডি সিনেমার মধ্যে অন্যতম হল ‘পার্টনার’। ডেভিড ধাওয়ান পরিচালিত এই ছবিতে গোবিন্দ এবং সালমান খানের অভিনয় দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়েছে। এই চলচ্চিত্রে গোবিন্দর কমেডি অভিনয়ের নিপুণতা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া ‘হিরো নাম্বার ১’ এবং ‘দুলহে রাজা’ও গোবিন্দ কমেডি সিনেমা হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আজকের দিনে দাঁড়িয়েও নব্বই দশকের গোবিন্দ সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং সবার প্রিয়।
Govinda অর্থাৎ ‘নাম্বার ওয়ান’ খ্যাতি
Govinda, বলিউড ইন্ডাস্ট্রির কমেডি কিং, তার অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা এবং ডাবল রোলের অভিনয় দক্ষতার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। এই সফলতার পিছনে তার সাবলীল অভিনয় দুর্দান্ত প্রভাব রেখেছে এবং তাকে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী করে তুলেছে। বিভিন্ন সময়ে ‘নাম্বার ওয়ান’ সিরিজে তার অসাধারণ উপস্থিতি তাকে এই বিশেষয়ূক উপাধি দিয়েছে।
সিনেমা সিরিজ ‘নাম্বার ওয়ান’
গোবিন্দ নাম্বার ওয়ান সিরিজ অত্যন্ত জনপ্রিয় এক ধারার সিনেমার মধ্যে অন্যতম। তার অভিনীত ‘হিরো নাম্বার ওয়ান’, ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’, এবং ‘আঁখিয়োঁ সে গোলি মারে’ অন্যতম। প্রতিটি সিনেমায় গোবিন্দের অভিনয় দক্ষতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দর্শকদের মধ্যেও এসব সিনেমা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, যা তাকে একটি বিশেষ অবস্থানে নিয়ে এসেছে।
অনন্য সিনেমা জুড়ে দ্বৈত চরিত্র
গোবিন্দ ডাবল রোল চলচ্চিত্রে একটি বিশেষ উৎসর্গ এনে দিয়েছে। তার ডাবল রোলের অভিনয় অনেক সিনেমায় অনন্য। যেমন ‘আঁখিয়োঁ সে গোলি মারে’ তে তার বিবর্তনশীল প্রতিভা প্রদর্শনী, যা দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছে। এছাড়াও, গোবিন্দের অভিনয় দক্ষতা থেকে ‘হিরো নাম্বার ওয়ান’ সিনেমায় তার চরিত্রের দ্বৈততার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়েছে যা অতুলনীয়।
গোবিন্দের ব্যক্তিগত জীবন
গোবিন্দের ব্যক্তিগত জীবন বরাবরই তার ভক্তদের মধ্যে কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলিউডের এই প্রিয় অভিনেতা ১৯৮৭ সালে সুনীতা আহুজাকে বিয়ে করেন, যিনি তার জীবনের ভালোবাসা ও সহধর্মিণী। সংসার ও কর্মজীবনের সামঞ্জস্য ঠিক রেখে গোবিন্দের পরিবারে সবসময়ই একটি সুখী পরিবেশ বিরাজমান।
সুনীতা আহুজার সঙ্গে বিবাহ
গোবিন্দ তার চলচ্চিত্র কেরিয়ারের শুরুতেই সুনীতা আহুজার প্রতি প্রণয় অনুভব করেন এবং তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক শীঘ্রই বিবাহের পথে অগ্রসর হয়। ১৯৮৭ সালে, দু’জনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং জীবনে একসাথে সকল সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে চলেছেন। সুনীতা সবসময় গোবিন্দের পাশে থেকেছেন এবং তার প্রতিটি সাফল্যে স্বামীকে উজ্জীবিত করেছেন। তাদের সম্পর্ক এখনো বলিউডের অন্যতম আদর্শ বিবাহিত জীবনের উদাহরণ।
সন্তান ও পরিবার
গোবিন্দের পরিবারও তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের দুই সন্তান রয়েছে, কন্যা নারমাদা আহুজা এবং পুত্র যশবর্ধন আহুজা। গোবিন্দের পরিবারে তাহার সন্তানেরাও বলিউডের সাথে যুক্ত হতে আগ্রহী। নারমাদা ইতিমধ্যে কিছু প্রজেক্টে কাজ করেছেন এবং যশবর্ধনও চলচ্চিত্রে অভিষেকের প্রতীক্ষায় আছেন। পরিবারের জন্য তার ভালোবাসা এবং কাজের প্রতি তার নিবেদন গোবিন্দকে করে তোলে একজন আদর্শ পারিবারিক ব্যক্তি।
গোবিন্দের পুরস্কার ও সম্মাননা
গোবিন্দ, যিনি বলিউডের ‘কিং অফ কমেডি’ হিসেবে পরিচিত, বহু পুরস্কার এবং সম্মাননা অর্জন করেছেন তার চলচ্চিত্র জীবনে। তাঁর অনন্য অভিনয় দক্ষতা এবং বিনোদনমূলক উপস্থিতি তাঁকে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে অন্যতম সেরা কমেডিয়ান করে তুলেছে।
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার
গোবিন্দ ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মাধ্যমে তার প্রতিভার স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি ফিল্মফেয়ার সেরা কমেডিয়ান অভিনেতা পুরস্কার এবং বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেছেন, যা তার অসাধারণ কমেডি দক্ষতাকে তুলে ধরেছে।
অন্য গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার
ফিল্মফেয়ার ছাড়াও গোবিন্দ অন্য বহু গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কারের মালিক। তিনি চারবার জি সিনেমা পুরস্কার জিতেছেন, যা তার অভিনয়ের বহুমুখিতা এবং জনপ্রিয়তার প্রমাণ। তাঁর প্রাপ্ত গোবিন্দ পুরস্কার এবং গোবিন্দ সম্মাননা শুধুমাত্র তার সম্মান ও সাফল্যের নিদর্শন নয়, বরং ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি।
গোবিন্দের পুরস্কার এবং সম্মাননা তাঁকে সমসাময়িক অভিনেতাদের মাঝে অগ্রণী করেছে, এবং তাঁর একক নান্দনিকতা বলিউডকে সমৃদ্ধ করেছে।
গোবিন্দের রাজনীতিক জীবন
গোবিন্দ, বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা, ২০০৪ সালে তাঁর বলিউড কেরিয়ারের বাহিরে একটি নতুন যাত্রা শুরু করেন যখন তিনি ভারতীয় কংগ্রেস দলের হয়ে উত্তর মুম্বই লোকসভা আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। তাঁর এই পদক্ষেপ ছিলেন বলিউডের তারকাদের মধ্যে অন্যতম নজির। গোবিন্দ রাজনীতির জগতে প্রবেশ করার পর জনগণের মধ্যে এক নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
সদস্য হিসেবে কার্যকাল
গোবিন্দের সাংসদ মেয়াদ ছিল প্রায় পাঁচ বছর, যা ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এই সময়কালে, তিনি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত থেকেছেন এবং জনগণের সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু ২০০৮ সালে, তিনি কংগ্রেস দল এবং রাজনৈতিক জীবন থেকে সরে দাঁড়ান।
এই পাঁচ বছরের কার্যকালকে গোবিন্দ একটি মূল্যবান অভিজ্ঞতা হিসাবে দেখেন। গোবিন্দ রাজনীতি ও বলিউড দুটি ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম হলেও, এই দুটি ক্ষেত্রেই তিনি অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, তিনি একাচল অভিনেতা। তাঁর কর্মজীবনে এ এক নতুন অধ্যায় যা ভক্তদের মধ্যে একটি পর্যায় নতুন কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে।
গোবিন্দ ও ডেভিড ধাওয়ানের যুগলবন্দি
গোবিন্দ এবং ডেভিড ধাওয়ানের যুগলবন্দি বলিউডে প্রায়শই সোনার যুগ হিসেবে পরিগণিত হয়। এই যুগলবন্দি থেকে এসেছে একের পর এক জনপ্রিয় কমেডি সিনেমা, যা দর্শকদের মনে এক বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’, ‘সাজন চলে সাসুরাল’, ‘হাসিনা মান জায়েগি’ এবং ‘পार्टনার’ সহ আরো অনেক সিনেমা এ যুগলবন্দির থেকে উপহার এসেছে। এইসব গোবিন্দ সিনেমা যুতি শুধু বক্স অফিসে নয়, দর্শকদের হৃদয়েও রাজ করেছে।
অভিনেতা গোবিন্দ ডেভিড ধাওয়ানের সাথে যে কেমিস্ট্রি তৈরি করেছেন, তা মজার আর বিনোদনপূর্ণ সিনেমার মূল চাবিকাঠি ছিল। প্রতিটি সিনেমা যেন এক নতুন আনন্দের পর্যায় নিয়ে আসত। ‘হিরো নাম্বার ওয়ান’, ‘শোলা অউর শবনম’ এবং ‘ডুলহে রাজা’র মতো ক্লাসিক চলচ্চিত্রগুলি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অভিনেতা গোবিন্দের সঙ্গে ডেভিড ধাওয়ানের এই সৃজনশীল যুগলবন্দি বলিউডে একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করেছে।
গোবিন্দ ডেভিড ধাওয়ানের যুগলবন্দি থেকে এসেছে ছয়টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার সহ অসংখ্য সম্মাননা। এই জুটির কমেডি সিনেমা দর্শকের মনের খোরাক ছিল। তাদের যুগলবন্দি শুধু বিনোদনই নয়, বলিউড চলচ্চিত্রে এক বিশেষ স্থান দখল করেছে।
সিনেমা জগতের এই কিংবদন্তি যুগলবন্দি গোবিন্দ সিনেমা যুতির উদাহরণ হিসেবে সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
গোবিন্দর বর্তমান কাজ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
গোবিন্দ, আমাদের প্রিয় বলিউডের কিং অফ কমেডি, তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড দিয়ে আবার সবার নজর কেড়েছেন। মনে হয়, তার জীবনে নতুন উজ্জ্বল অধ্যায় শুরু হয়েছে। তার অনুরাগীরা অধীর আগ্রহে বসে আছেন তার গোবিন্দ সাম্প্রতিক প্রোজেক্ট এবং গোবিন্দ ভবিষ্যৎ চলচ্চিত্র সম্পর্কে জানার জন্য।
সাম্প্রতিক কাজ
সম্প্রতি গোবিন্দ অভিনীত ‘ফ্রাইডে’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে, যা অনেকেই পছন্দ করেছেন। যদিও সে অভিনয় থেকে কিছুটা দুরে ছিলেন, কিন্তু তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড আবারো বলিউডের মঞ্চে তাকে ফিরিয়ে এনেছে। কিছুদিন আগে, এক ঘটনায় তার ব্যক্তিগত বন্দুকের গুলির আঘাতে তার হাত আহত হয়। মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলেছে এবং গুরুতর আঘাত হলেও তা জীবনহানিকর ছিল না।
- অভিযোগের তদন্ত চলছে
- পরিবার এবং বন্ধুরা তার পাশে ছিলেন
- ফ্যান এবং সহকর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভকামনা জানাচ্ছেন
নতুন সিনেমার তালিকা
অনেকের মতে, গোবিন্দর সাম্প্রতিক প্রোজেক্ট এর সাথে যোগ হবে নতুন কিছু সিনেমা। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় কিছু উল্লেখযোগ্য প্রকল্প রয়েছে, যেখানে ভিন্ন ধরনের চরিত্রে তাকে দেখা যাবে। তিনি বলিউডে দৃঢ় ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং নতুন সিনেমার প্রস্তাবনাগুলোর উপর কাজ করছেন, যা তার গোবিন্দ ভবিষ্যৎ চলচ্চিত্র এর সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে।
- নতুন সামরিক থ্রিলার সিনেমা
- নতুন কমেডি সিরিজ
- একাধিক আন্তর্জাতিক প্রকল্পে কাজের প্রকল্প
গোবিন্দর প্রতি মানুষের ভালোবাসা এবং সমর্থন দেখে গোবিন্দ সাম্প্রতিক প্রোজেক্ট এবং গোবিন্দ ভবিষ্যৎ চলচ্চিত্রের জন্য আমরা সত্যিই আশাবাদী। সবার দোয়া ও সাথে, আমরা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি এবং তার দুর্দান্ত ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি।
সমাপ্তি
গোবিন্দর ক্যারিয়ার জুড়ে অগণিত অনুরাগী তাঁকে ভালোবাসা দিয়েছেন এবং বারবার অসাধারণ কমেডির মাধ্যমে তাঁকে স্মরণীয় করে রেখেছেন। ১৯৮৬ সালে রিলিজ হওয়া সিনেমা ইলজাম বক্স অফিসে সফল ছিল এবং তা পঞ্চম সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র হিসাবে ইতিহাস রচনা করে। ইলজাম ছিল গোবিন্দের মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা এবং সেই থেকেই তাঁর অসাধারণ অভিনয়কুশলতা সকলের নজরে আসে।
গোবিন্দ প্রায় ৪০টি সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ১৯৮৫ সালে চুক্তিবদ্ধ হন। এটি তাঁর কর্মজীবনের প্রারম্ভিক পথকে মসৃণ করেছিল। নব্বই দশকের সাফল্যমণ্ডিত সময়ে, গোবিন্দ একমাত্র অভিনেতা হিসেবে একটি বিশেষ শিরোনাম সম্পন্ন সিনেমা সিরিজে অভিনয় করেছেন যা তাঁকে ‘নাম্বার ওয়ান’ খ্যাতি এনে দিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হল ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’, ‘রাজা বাবু’, ও ‘হাসিনা মান জায়েগি’।
শুধু নব্বই দশক নয়, ২০০০ দশকে সকলানোর পরও গোবিন্দর সাম্প্রতিক সফল সিনেমাগুলো হল ভাগাম ভাগ, পার্টনার, লাইফ পার্টনার, এবং রাবণ। তাঁর কর্মজীবনের এই দীর্ঘ যাত্রাপথে গোবিন্দ অক্লান্ত পরিশ্রম ও দক্ষতার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যা বর্ণময় তার ক্যারিয়ারের সারাংশ তুলে ধরেছে।
সাহিত্য থেকে চলচ্চিত্র, রাজনীতি থেকে ব্যক্তিগত জীবনে, গোবিন্দ সব ক্ষেত্রেই তাঁর প্রতিভার ছাপ রেখেছেন। আজও তিনি বলিউডের অন্যতম সেরা কমেডি অভিনেতা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। তাঁর এই অনন্য যাত্রাপথ এবং অনবদ্য কৃতিত্বের জন্য আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।