আক্কেল দাঁত সেরে ওঠতে কতক্ষণ লাগে?

আক্কেল দাঁত নিরাময় প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকেরই উদ্বেগ থাকে। বেশিরভাগ মানুষের আক্কেল দাঁত ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে ওঠে। এটি সেরে ওঠার সময় বৈচিত্র্যময় হতে পারে, যদিও সম্পূর্ণ নিরাময় সাধারণত দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিতে পারে। আক্কেল দাঁত সেরে ওঠার সময় নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা এবং অস্ত্রোপচারের পর যত্নের উপর।

Contents show

আক্কেল দাঁত কী?

আক্কেল দাঁত মুখের একদম শেষ প্রান্তে ওঠে। সাধারণত এগুলি ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে ওঠে এবং মোট চারটি দাঁত ওঠে, দুই উপরে ও দুই নীচে। আক্কেল দাঁতের সংজ্ঞা অনুযায়ী, এগুলি আমাদের মুখমণ্ডলের পেছনে পাওয়া মোলার দাঁত।

আক্কেল দাঁতের প্রাথমিক ভূমিকা ছিল মুখের প্রাথমিক চিবানোর কাজ সহজ করা, বিশেষত কঠিন খাবারের জন্য। কিন্তু আধুনিক খাদ্যাভ্যাসের জন্য এদের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমে গেছে। আক্কেল দাঁতের সংজ্ঞা জানার পরও অনেকেই তাঁদের কার্যক্ষমতা সম্পর্কে বিভ্রান্ত থাকেন। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই আক্কেল দাঁতের ওঠায় নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয়।

  • প্রথমত: আক্কেল দাঁত ওঠার সময় প্রচুর ব্যথা অনুভূত হয়। অধিকাংশ সময়ে একে intractable দাঁতের মতো মনে হয়।
  • দ্বিতীয়ত: মাড়ির ফোলাভাব ও মাঝে মাঝে ইনফেকশন হতে পারে, যা অনেক দুঃখজনক হয়।
  • তৃতীয়ত: অনেক সময় আক্কেল দাঁত ওঠার জন্য অন্যান্য দাঁতে সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন অসকাশ বা স্থান সংকুলানের সমস্যার জন্য দাঁতের সরাসরি মেরুদণ্ডে চাপ পড়া।

আক্কেল দাঁতের সংজ্ঞা বোঝার পর, আরও দেখা যায় যে প্রায়শই আক্কেল দাঁত খুব ছোট এলাকার মধ্যে বদ্ধ হয়ে যায়, যা দাঁতের ক্ষয়, পেরিকোরোনাইটিস, গহ্বর এবং সংক্রমণ সৃষ্টি করে। সুতরাং, চিকিৎসকরা প্রায়শই এই দাঁত অপসারণের পরামর্শ দেন।

আক্কেল দাঁত ওঠার সময় ব্যথা কেন হয়?

আক্কেল দাঁত সাধারণত ১৮-২৫ বছরের মধ্যে ওঠে, এবং এই সময় প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। আক্কেল দাঁতের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে প্রধান দুটি কারণ হল মাড়ির ফোলাভাব এবং দাঁতের চাপ। চলুন দেখে নেওয়া যাক এই ব্যথার পেছনে থাকা প্রধান দু’টি কারণ।

প্রথমত প্রচণ্ড ব্যথা

আক্কেল দাঁত ওঠার সময়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। যখন দাঁতটি গজাতে শুরু করে, তখন আশেপাশের টিস্যুতে চাপ সৃষ্টি হয়, যা প্রচণ্ড ব্যথার কারণ হতে পারে। অনেক সময় এই দাঁতের জন্য অপারেশনও করতে হতে পারে। সংক্রমণ বাড়তে পারে এবং গলার দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রতি বছরে প্রায় ৫ মিলিয়ন রোগীর প্রায় ১০ মিলিয়ন আক্কেল দাঁত ওঠে।

মাড়ির ফোলাভাব

উঠার সময় মাড়ির ফোলাভাব একটি সাধারণ উপসর্গ। আক্কেল দাঁতের ব্যথা যখন শুরু হয়, তখন মাড়ি ফুলে যেতে পারে, যা ফোলাভাব ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে। মুখের ভেতরের অন্যান্য অংশও এতে প্রভাবিত হতে পারে। ক্যাভিটি মুখের ভেতরে হওয়া কম হয়েছে এবং মানুষের চোয়াল অংশগুলি সংকুচিত হয়েছে, ফলে আক্কেল দাঁতের স্থান সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়ার ফলে চারটা দাঁতই একবারে তুলে ফেলার কাজ সহজ হয়।

আক্কেল দাঁত তোলার কারণ

আক্কেল দাঁত সমস্যা সাধারণত ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে প্রকাশ পেতে শুরু করে। বেশিরভাগ মানুষ চারটি আক্কেল দাঁত বিকাশ করে, যা ১৮ বছর বয়সের কাছাকাছি উঠতে শুরু করে। আক্কেল দাঁত ওঠার সময় অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে আক্কেল দাঁত অপসারণ প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

  1. বৈকল্য – আক্কেল দাঁত যদি সঠিকভাবে না ওঠে বা যদি পাশের দাঁতে ক্ষতি ঘটে, তবে তা অপসারণ করা প্রয়োজন।
  2. ব্যথা – দাঁত উঠার সময় প্রচণ্ড ব্যথা হলে তা তোলার দরকার পড়ে।
  3. আংশিক ওঠা – আক্কেল দাঁত যদি আংশিকভাবে ওঠে এবং সম্পূর্ণ বের না হয়, তাতে পার্শ্ববর্তী স্থানে খাবার জমা হতে পারে এবং ইনফেকশন হতে পারে।
  4. ইমপ্যাকশন – দাঁত যদি চোয়ালের ভেতরে আটকে যায় এবং স্বাভাবিকভাবে না উঠতে পারে, তবে তা অপসারণ করা যায়।
  5. পরিষ্কার করার অসুবিধা – দাঁতের অবস্থানের কারণে যদি তা সঠিকভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব না হয়, তাতে দাঁতের ক্ষয় এবং ইনফেকশন হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ  নতুন চুল গজানোর উপায়

আক্কেল দাঁত সমস্যা বেশ গুরুতর হলে এবং মুখের ভেতরে অন্যান্য দাঁতের ক্ষতি সাধনের আশঙ্কা হলে, একজন দন্ত চিকিৎসক আক্কেল দাঁত অপসারণের সুপারিশ করেন। তোলার পর সঠিক যত্ন নিলে আক্কেল দাঁতের জটিলতা এড়ানো সহজ হয়।

কতদিন ব্যথা থাকে?

আক্কেল দাঁত ওঠার পর ব্যথা সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে উপশম হয়। তবে, ব্যথার তীব্রতা ও সময়কাল ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে ব্যথা উপশম সম্ভব। অধিকাংশ মানুষ ১-৫ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে আসে।

ব্যথা সহ্য করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায়

আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায় রয়েছে।

  • লবণ পানিতে কুলকুচি করা: লবণ পানিতে কুলকুচি করা কার্যকর একটি ঘরোয়া উপায়, যা ইনফেকশন প্রতিরোধ করে ও ব্যথা উপশমের সাহায্য করে।
  • লবঙ্গ তেল প্রয়োগ: লবঙ্গ তেলের অ্যান্টিসেপ্টিক গুণাগুণ ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।
  • পিপারমিন্টের তেল: পিপারমিন্টের তেল লাগানোর মাধ্যমে ব্যথা হ্রাস করা যেতে পারে, কারণ এতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে।

তেরহ উপায়গুলি কার্যকর প্রমাণিত

এছাড়াও, ব্যথা সহ্য করার জন্য আরও কিছু ঘরোয়া উপায় কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে:

  1. ঠাণ্ডা সেক: ঠাণ্ডা সেক ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
  2. অতিরিক্ত বিশ্রাম: বিশ্রামের মাধ্যমে শরীর দ্রুত পুনরুদ্ধার হতে পারে এবং ব্যথা কমে যায়।
  3. নরম খাবার খাওয়া: নরম ও শীতল খাবার খেলে আঘাত লাগার সম্ভাবনা কমে ও ব্যথা উপশম হয়।

এইসব ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করার মাধ্যমে আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানো সম্ভব এবং দ্রুত পুনরুদ্ধার সম্ভব। তবে ব্যথা যদি কয়েকদিনের বেশি স্থায়ী হয় বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তীব্র হয়, তাহলে অবশ্যই দন্তচিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

How Long Do Wisdom Teeth Take To Heal

আক্কেল দাঁত তোলার পর নিষ্কৃতি পেতে সাধারণত দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস সময় লাগে। আক্কেল দাঁতের নিরাময়কাল নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, অপারেশনের পদ্ধতি, এবং পরবর্তী যত্নের উপরে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া।

প্রাথমিক সময়কাল: আক্কেল দাঁত তোলার পর প্রথম ২৪ ঘন্টায় ব্যথা, রক্তপাত এবং ফোলাভাব সবচেয়ে বেশি হয়। এই সময়ে চিকিত্সকরা আপনাকে কড়া খাদ্যাভ্যাস, অসাধারণ নিষ্কৃতির টিপস এবং ব্যথা উপশম ঔষধের পরামর্শ দেবেন।

প্রথম এক সপ্তাহ: প্রথম সাত দিনের মধ্যে আক্কেল দাঁতের নিরাময়কাল শুরু হয়। এই সময়ে আপনি হালকা ব্যথা ও ফোলাভাব অনুভব করতে পারেন, যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। অনুভবের স্থান শুকনো থাকে এবং আপনার খাদ্যাভ্যাসে মৃদু পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে আপনার ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পুনরুদ্ধার হয়।

পূর্ণ নিরাময়কাল: দুই সপ্তাহ পর্যন্ত পূর্ণ নিরাময় হতে পারে, যদিও কিছু ক্ষেত্রে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আক্কেল দাঁতের নিরাময়কাল ভালভাবে সম্পন্ন করতে আপনাকে চাই ঠান্ডা বরফ প্রয়োগ, কড়া মুখের পরিষ্কার, এবং চিকিৎসকের পরামর্শগুলি মেনে চলা।

তাত্পর্যপূর্ণ পরামর্শ: আক্কেল দাঁতের নিরাময়কালে কোনোরকম অস্বাভাবিক ব্যথা, সুজ কিংবা রক্তপাত হলে দ্রুত আপনার চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

আক্কেল দাঁত অপারেশন পরবর্তী স্বাস্থ্যসমস্যা

আক্কেল দাঁত তোলার পর কয়েকটি স্বাস্থ্যসমস্যার সম্মুখীন হওয়া স্বাভাবিক। অপারেশন সফল হওয়ার পরও কিছু অপারেশন জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা মোকাবেলায় প্রয়োজন বিশেষ যত্ন ও সচেতনতা।

আরও পড়ুনঃ  পিরিয়ডের সময় টক খেলে কি হয়?

ইনফেকশন

আক্কেল দাঁত তোলার পর ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এই ইনফেকশন সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে হয় এবং এটি দ্রুত চিকিত্সা করা প্রয়োজন। ইনফেকশনের লক্ষণ হিসেবে মুখের ভিতরে মৃদু পুঁজ বা বাজে গন্ধ অনুভূত হতে পারে।

রক্তপাত

অপারেশনের পর কিছু রোগীর রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই রক্তপাত সাধারণত প্রথম কয়েক ঘন্টায় বেশি হয়। তবে, যদি রক্তপাত দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয় কিংবা বন্ধ না হয়, তাহলে তা গুরুতর হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ভেজা ঠাণ্ডা কাপর বা তুলা দিয়ে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করতে হবে।

আক্কেল দাঁত তোলার পরের প্রথম কয়েকদিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় ইনফেকশন এবং রক্তপাতের পরিমাণ কমাতে হলে, যথাযথ পরিচর্যায় বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। এমনকি আপাতদৃষ্টিতেও যদি সবকিছু স্বাভাবিক মনে হয়, তবুও যত্নশীল হতে হবে যাতে কোনো সমস্যা না দেখা দেয়।

আক্কেল দাঁত তোলার আগে করণীয়

আক্কেল দাঁত তোলার আগে সঠিক প্রস্তুতি নেওয়া অনেক জরুরি। আক্কেল দাঁত প্রস্তুতি এবং আগের পরিকল্পনা আপনার সার্জারির সফলতা এবং দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য অপরিহার্য।

চিকিৎসকরা আক্কেল দাঁত তোলার আগে একাধিক বিষয় যাচাই করেন। যেমন, আক্কেল দাঁতের কারণে অন্য দাঁতগুলোর সমস্যা হচ্ছে কিনা, মুখের ভিতর অন্যান্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে, এবং সার্জারি করলে কী জটিলতা তৈরি হতে পারে।

আক্কেল দাঁত প্রস্তুতিকরতে নিচের ধাপগুলো মেনে চলুন:

  • ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত ডায়েট মেনে চলুন।
  • ব্লাড থিনিং মেডিকেশনের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন সার্জারির আগে।
  • চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সব তথ্য ও ডকুমেন্ট প্রস্তুত করুন।

ডায়েটের ক্ষেত্রে, আক্কেল দাঁত তোলার আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো কঠিন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। প্রথম ১২ ঘণ্টা গরম খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কিছুক্ষণ গুম বা তুলা চিবিয়ে রাখুন।

প্রতি বছরে প্রায় ৫ মিলিয়ন রোগীর ১০ মিলিয়ন আক্কেল দাঁত তোলা হয়, এবং ভালো সার্জারি এবং প্রস্তুতি দ্বারা উন্নতির সম্ভাবনা বাড়ে। তাই আক্কেল দাঁত প্রস্তুতি এবং আগের পরিকল্পনা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।

সেরে ওঠার পর স্বাস্থ্যবিধি

আক্কেল দাঁত তোলার পর সেরে ওঠার জন্য রোগীদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জানতে হবে কিভাবে নিয়মিত মুখস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হয় এবং পুনরুদ্ধার আহার সঠিক ধরনের মেনে চলতে হবে।

নিয়মিত কুলি করা

আক্কেল দাঁত তোলার পর নিয়মিত কুলি করা অপরিহার্য। প্রতিদিন ঠিকভাবে কুলি করলে মুখগহ্বরের জীবাণু দূর হয় এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে। এর ফলে নিয়মিত মুখস্বাস্থ্য বজায় থাকে এবং মুখের ভেতরটা পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। কুলির জন্য সাধারণ জল বা লবণ জল ব্যবহার করা যেতে পারে যা স্বল্প খরচে এবং সহজলভ্য।

মৃদু খাবার খাওয়া

পুনরুদ্ধার আহার হিসাবে মৃদু খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আক্কেল দাঁত তোলার পরে শক্ত বা কড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। স্যুপ, পুডিং, এবং নরম ফল সেটসমূহ খাবারের তালিকায় রাখা উচিত যা সহজেই চিবানো যায়। এই ধরনের আহার দাঁতের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে না এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।

আক্কেল দাঁত সংক্রান্ত ভুল ধারণা

আক্কেল দাঁতের মিথ নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। এক উল্লেখযোগ্য ভুল ধারণা হলো, আক্কেল দাঁত ওঠা মানেই বুদ্ধির বৃদ্ধি। বাস্তবে কিন্তু আক্কেল দাঁত এবং বুদ্ধিমত্তার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। বিজ্ঞানীরা একমত হয়েছেন যে, আক্কেল দাঁতের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি একজন ব্যক্তির মেধার পরিমাপে কোনো ভূমিকা রাখে না।

অনেকেই ধরে নেন যে আক্কেল দাঁতের মিথ দাড়িয়ে আছে দাঁতের ব্যথার উপর ভিত্তি করে। আপাত দৃষ্টিতে এটি সত্য হতে পারে; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, এই দাঁত ওঠার সময় ব্যথা হওয়া বেশ সাধারণ ঘটনা এবং এটি দাঁত মাড়ি ফোলাভাবের মতো সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে।

যাইহোক, আক্কেল দাঁত নিয়ে অন্য একটি ভুল ধারণা হলো, এটি সবচেয়ে বেশি ব্যথা দেয়। কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে, পালসেশন ইন ইয়ারস বা কানের ধুপধাপ অনুভূতি বেশি ক্ষতিকারক হতে পারে যা মোট ৮৫ বার রিপোর্ট করা হয়েছে।

আরেকটি আক্কেল দাঁতের মিথ হলো, এটি শিশুদের কম হয়। যদিও এই ধারণাটি কিছুটা সত্যি হতে পারে, তবে ক্রনিক শিশুদের ক্ষেত্রে এটি মোট ১৪ বার রিপোর্ট করা হয়েছে। এমনকি, আক্কেল দাঁত ওঠার প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ হতে প্রায় দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত সময় নিতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  ESR বেশি হলে কি কি সমস্যা হয়?

তাই, আক্কেল দাঁত নিয়ে কোনো ভুল ধারণা নিয়ে বিচলিত হওয়া উচিত নয়। সঠিক তথ্য জেনে সচেতন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

আক্কেল দাঁত তোলার পর পুনরুদ্ধারের সময়কাল

আক্কেল দাঁত তোলার পর পুনরুদ্ধারের সময়কাল সাধারণত বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত হতে পারে। এটি নির্ভর করে ব্যক্তির স্বাস্থ্যের অবস্থা ও অপারেশনের জটিলতার উপর। সাধারনতো পুনরুদ্ধারের সময়কাল কয়েক সপ্তাহ হতে পারে এবং এই সময়ের মধ্যে বেশ কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

প্রথম সপ্তাহ

প্রথম সপ্তাহে আক্কেল দাঁত তোলার পর সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। প্রথম দিকে প্রচণ্ড ব্যথা, ফোলাভাব ও হালকা রক্তপাত হতে পারে, যা খুব স্বাভাবিক। তবে এ সময়ে নিয়মিত ঠান্ডা কম্প্রেস ব্যবহার এবং ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এ সময় অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করা এবং নরম খাবার খাওয়া উচিত।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহ

দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে ধীরে ধীরে ব্যথা ও ফোলাভাব কমে আসে এবং ক্ষত সেরে ওঠা শুরু হয়। তবে এ পর্যায়ে সঠিকভাবে মুখের স্বাস্থ্যবিধি পালন না করলে ইনফেকশনের ঝুঁকি থেকে যায়। নরম খাবার খাওয়া এবং কঠিন বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়া, নিয়মিত কুলি করা উচিত যাতে ক্ষতস্থানে কোন জীবাণু প্রবেশ করতে না পারে।

মোটকথা, আক্কেল দাঁত তোলার পর পুনরুদ্ধারের সময়কালে ধৈর্য্য ও সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনও সমস্যা বা জটিলতার ক্ষেত্রে দ্রুত একজন দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

FAQ

আক্কেল দাঁত সেরে ওঠতে কতক্ষণ লাগে?

আক্কেল দাঁতের পূর্ণ নিরাময় সাধারণত দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস সময় নেয়। ধাপে ধাপে মাড়ির সেরে ওঠা শুরু হয় এবং সামগ্রিক আরোগ্য প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে কিছু সময় নিতে পারে।

আক্কেল দাঁত কী?

আক্কেল দাঁত হচ্ছে মানুষ মুখের একদম শেষ প্রান্তে ওঠা দাঁত, যা সাধারণত কিশোর বা তরুণ বয়সে গজায়। সাধারণত আক্কেল দাঁত দুই উপরে এবং দুই নীচে মিলিয়ে মোট চারটি দাঁত হয়।

প্রথমত প্রচণ্ড ব্যথা

যখন আক্কেল দাঁত ওঠে, তখন চাপের কারণে প্রচণ্ড ব্যথা হয় যা মুখের অন্যান্য অংশেও প্রভাব ফেলে।

মাড়ির ফোলাভাব

আক্কেল দাঁত ওঠার সময় মাড়ি ফুলে যায়, যা ব্যথা আরও বাড়িয়ে তোলে।

আক্কেল দাঁত তোলার কারণ

আক্কেল দাঁত যখন অস্বাভাবিকভাবে ওঠে অথবা পাশের দাঁতের স্বাস্থ্যে ক্ষতি সাধন করে তখন তা অপসারণের প্রয়োজন হয়।

ব্যথা সহ্য করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায়

লবণ পানিতে কুলকুচি, লবঙ্গ ও পিপারমিন্টের তেল প্রয়োগ করে আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানো যেতে পারে।

তেরহ উপায়গুলি কার্যকর প্রমাণিত

উপরের ঘরোয়া উপায়গুলি বেশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

How Long Do Wisdom Teeth Take To Heal

The recovery period for wisdom teeth generally ranges from two weeks to one month, with the healing of the gums commencing gradually and the overall recovery process taking some time.

ইনফেকশন

আক্কেল দাঁত অপারেশনের পর ইনফেকশন ঘটতে পারে, যা গুরুতর আকারে রূপ নিতে পারে।

রক্তপাত

অপারেশনের পর রক্তপাতের ঘটনাও ঘটতে পারে এবং অবহেলা করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

আক্কেল দাঁত তোলার আগে করণীয়

আক্কেল দাঁত তোলার আগে নির্ধারিত ডায়েট মেনে চলতে হবে এবং যেকোনো ধরনের ব্লাড থিনিং মেডিকেশন এড়িয়ে চলতে হবে।

নিয়মিত কুলি করা

আক্কেল দাঁত সেরে ওঠার পর নিয়মিত কুলি করা অত্যন্ত জরুরি।

মৃদু খাবার খাওয়া

মৃদু খাবার খাওয়া, মুখস্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং মুখের সঠিক যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

আক্কেল দাঁত সংক্রান্ত ভুল ধারণা

অনেকে মনে করেন আক্কেল দাঁত ওঠা মানেই আক্কেল হওয়া, কিন্তু এটি সত্যি নয়। আক্কেল দাঁত ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।

প্রথম সপ্তাহ

প্রথম সপ্তাহে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে ঘরোয়া উপায়গুলি ব্যবহার করা যেতে পারে।

দ্বি…

আক্কেল দাঁত তোলার পর দ্বিতীয় সপ্তাহে, ধীরে ধীরে মুখের স্বাস্থ্য উন্নত করতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button