সেপসিসে মৃত্যু হতে কত সময় লাগে?

সেপসিস একটি গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল জরুরি অবস্থা যা বিশ্বজুড়ে প্রচুর মৃত্যুর কারণ হিসেবে পরিচিত। এটি যখন ঘটে, তখন শরীরের প্রতিরক্ষা প্রক্রিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে অত্যধিক প্রতিক্রিয়া শুরু করে। এর ফলে অতিরিক্ত রাসায়নিক সক্রিয়তার ফলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ব্যর্থতা ঘটে এবং শেষপর্যন্ত মৃত্যু ঘটতে পারে।

সেপসিসে সবচেয়ে গুরুতর পর্যায়ে, বহু-অঙ্গ ব্যর্থতা এবং সেপটিক শকে সর্বোচ্চ মৃত্যুর হার 30-50% পরিবারের মধ্যে থাকে। সেপসিসের মৃত্যুর সময়কাল নির্ভর করে অল্প সময়ের চিকিৎসা সুবিধার ওপর। সঠিক সময়ে প্রাথমিক চিকিত্সা না হলে জীবন-হুমকি পর্যন্ত হতে পারে।

সেপসিস নির্ণয়ের জন্য SOFA(qSOFA) স্কোর ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে শিরামধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক ও ভ্যাসোপ্রেসার ব্যবহার করা হয় চিকিৎসার জন্য। তাই এটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে সেপসিসের লঘুতর লক্ষণগুলি সময়মতো শনাক্ত এবং চিকিত্সা করা হয়।

Contents show

সেপসিস কী?

সেপসিস হল শরীরের অনাকাঙ্খিত এবং অত্যধিক প্রতিক্রিয়া যা সংক্রমণের পরিণামে সারা শরীরের প্রদাহ এবং অঙ্গ ক্ষতি ঘটাতে পারে। এই অবস্থাটি মূত্রথলি, ফুসফুস, পাচনতন্ত্র ইত্যাদির মতো সংক্রমণগুলি থেকে শুরু হতে পারে। সেপসিস এবং সেপ্টিসেমিয়া জনিত কারণে শরীরে ইমিউনোপ্রোটেকটিভ প্রতিক্রিয়া ঘটে।

সেপসিসের সংজ্ঞা

সেপসিসের সংজ্ঞা হল শরীরের অতিরিক্ত প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া যা সংক্রমণের কারনে উদ্ভূত হয়। এটি বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্থ করে যা সময়মত চিকিত্সা না পেলে সেপটিক শকের মাধ্যমে মৃত্যুকে ডেকে আনে। রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে SOFA এবং qSOFA স্কোরের ব্যবহার করা হয়।

সেপসিসের প্রভাব

সেপসিস রোগীর শরীরে প্রচুর প্রভাব ফেলে। এর ফলে মানসিক বিভ্রান্তি, সিস্টোলিক রক্তচাপ ১০০ mmHg এর কম হওয়া, এবং শ্বাসের হার প্রতি মিনিটে ২২ এর বেশি হয়ে যাওয়া দেখা যায়। গুরুতর অবস্থায় সেপটিক শকের সৃষ্টি হয় এবং মৃত্যুর হার ৪০% পর্যন্ত হতে পারে। ইমিউনোপ্রোটেকটিভ প্রতিক্রিয়া শক্তিশালী না হলে মৃত্যুর হার বাড়তে পারে।

সেপসিসের প্রথম লক্ষণ

সেপসিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলি অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ হতে পারে এবং এর মধ্যে রয়েছে জ্বর, ঠান্ডা লাগা, মানসিক দিগভ্রান্তি, দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস, এবং ত্বকের বর্ণহীনতা। এই সেপসিস লক্ষণগুলি দ্রুত চিহ্নিত না করা হলে রোগীর অবস্থা দ্রুত অবনতি হতে পারে। শুরুতে শনাক্তকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে ভারতে সেপসিসে আক্রান্ত ৩৪% লোক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে মারা যায়।

বার্তা করার লক্ষণ

অপরিণত অবস্থায় সেপসিস শুরু হলে পেশির ব্যথা, নিঃশ্বাসের কষ্ট, এবং তীব্র দুর্বলতা প্রধান লক্ষণ হতে পারে। দ্রুত ও সঠিক ভাবে শুরুতে শনাক্তকরণ করা হলে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। বিশ্বব্যাপী, সেপসিস হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের চেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটায়, যা এই মারাত্মক অবস্থা সম্পর্কে অধ্যয়ন এবং সংবেদনশীলতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে।

বিলম্বের লক্ষণ

সেপসিসের বিলম্বিত লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে রক্তচাপের উল্লেখযোগ্য হ্রাস, অঙ্গ স্পন্দনের অনিয়মিতা, এবং চামড়ায় দাগ পড়া। বয়স্ক বা দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের ব্যক্তিদের মধ্যে সেপসিস লক্ষণগুলি শনাক্ত করতে বিলম্ব হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে। শুরুতে শনাক্তকরণ করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে এবং সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। বিশ্বব্যাপী প্রতি পাঁচজন পরিষেবা গ্রহণকারী রোগীর মধ্যে একজনের মৃত্যু সেপসিসের কারণে হয়, যা এই রোগের অতিরিক্ত গুরুত্বকে নির্দেশ করে।

আরও পড়ুনঃ  এলার্জি হলে কি কি সমস্যা হয়?

সেপসিসের সাধারণ উপসর্গ

সেপসিস একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। এই রোগটি শারীরিক প্রতিক্রিয়াসেপসিস উপসর্গ দ্বারা চিহ্নিত করা যায়।

উচ্চতাপমাত্রা অথবা হিমতাপ হলো সেপসিসের একটি সাধারণ উপসর্গ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, সেপসিস রোগীদের মধ্যে উচ্চতাপমাত্রা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপস্থিত থাকে। এই ধরনের তাপমাত্রার পরিবর্তন দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজনীয় করে তুলতে পারে।

তাছাড়া, সেপসিস রোগীরা দ্রুত হৃদস্পন্দন বা ট্যাকিকার্ডিয়া অভিজ্ঞতা করতে পারে। এটি শরীরের শারীরিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখা যায়, যা সেপসিস উপসর্গের অংশ। এই উপসর্গটি সেপসিস রোগীদের মধ্যে কঠিন অবস্থার সূচক হতে পারে।

মানসিক আচরণের পরিবর্তনও সেপসিসের আরেকটি সাধারণ উপসর্গ। যেমনভাবে সেপসিস রোগীদের শরীরের অন্যান্য প্রতিক্রিয়ায় পরিবর্তন ঘটে, তেমনিভাবে মানসিক আচরণের পরিবর্তনও দেখা যায় যা তৎপর চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।

অবশেষে, অস্বাভাবিক হারে শ্বাসকষ্ট সেপসিসের প্রকৃত লক্ষণ হতে পারে। শ্বাসকষ্ট সেপসিস রোগীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে দেখা গেছে এবং এটি রোগের একটি গুরুতর অবস্থার নির্দেশক।

উপরের এই সেপসিস উপসর্গগুলি দ্রুত শনাক্ত করে চিকিৎসা করা জরুরি, যেমন উচ্চতাপমাত্রা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, মানসিক আচরণের পরিবর্তন, এবং অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট। সঠিক এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা হলে এই রোগে আক্রান্তদের বাঁচানোর সুযোগ অনেক বাড়বে।

সেপসিসের কারণসমূহ

সেপসিস সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, এবং অন্যান্য প্যাথোজেনের কারণে হয়ে থাকে যেগুলির মধ্যে রয়েছে নিউমোনিয়া, মূত্রনালি সংক্রামিত, এবং অন্ত্রের সংক্রমণ। প্যাথোজেনগুলি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা হ্রাস করে। আসুন সেপসিসের কারণগুলি বিশদভাবে দেখি।

ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ

ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হল সেপসিসের সবচেয়ে প্রধান কারণ। অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া, যেমন MRSA, শরীরের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে।

  • নিউমোনিয়া: ফুসফুসে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের ফলস্বরূপ নিউমোনিয়া হতে পারে, যা প্রায়ই সেপসিসে পরিণত হয়।
  • মূত্রনালি সংক্রামিত: কিডনি থেকে প্রস্রাবের নালিগুলি ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত হলে সেপসিসের ঝুঁকি বাড়ে।
  • অন্ত্রের সংক্রমণ: অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে সেপসিসের রাস্তা প্রসারিত হয়।

এই সংক্রমণগুলি দ্রুত চিকিৎসার অভাবে সেপটিক শক বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। CDC প্রতিবছর ১.৫ মিলিয়ন সেপসিসের কেস রিপোর্ট করে এবং এর ফলে ২৭০,০০০ এরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

ভাইরাস সংক্রমণ

ভাইরাস সংক্রমণও সেপসিসের একটি বড় কারণ এবং এটি প্যাথোজেন দ্বারা পরিচালিত হয়। যেমন:

  • ইনফ্লুয়েঞ্জা: সাধারণত এটি ফ্লু ভাইরাসের আক্রমণ থেকে হয়, যা সেপসিসের বিকাশ করতে পারে।
  • এইচআইভি: এই ভাইরাসটি ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে, সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা হ্রাস করে এবং সেপসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রতি বছরে বিশ্বব্যাপী সেপসিসের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি এবং শীঘ্র চিকিত্সা গ্রহণ করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় এবং সেপসিসের ঝুঁকি কমানো যায়।

How Long Does It Take To Die From Sepsis

সেপসিস মৃত্যুর সময়কাল নির্ভর করে বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর যেমন সংক্রমণের প্রকৃতি, প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া এবং চিকিৎসার গতির উপর। সেপসিস কীভাবে তীব্র তা ভেদে, এটি মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারাত্মক পরিণতির দিকে যেতে পারে। প্রায় ১.৭ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তি প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে সেপসিসে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে ৩৫০,০০০ সাধারণত হাসপাতাল বা হসপিস কেয়ারে মারা যান। এই কঠিন পরিস্থিতি আসলেই চিকিৎসার জরুরি আবশ্যকতা নির্ধারণ করে।

আরও পড়ুনঃ  হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণের উপায়

প্রতিটা ঘন্টা চিকিৎসার বিলম্বের সাথে সাথে, সেপসিসের ঝুঁকি ৪-৯% বৃদ্ধি পায়। এই কারণে দ্রুত এবং কার্যকর চিকিৎসা পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেপসিস একটি গুরুতর অসুস্থতা, যা ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে। তবে, রোগীর সাধারণ স্বাস্থ্যের ওপর সেপসিস মৃত্যুর সময়কাল নির্ভর করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে, প্রায় ২৫০,০০০ মানুষ সেপসিসের কারণে হাসপাতালে মারা যায়, এবং এক-তৃতীয়াংশ থেকে এক-চতুর্থাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তির আগের সপ্তাহে স্বাস্থ্যকর্মীদের পেশাগত পরামর্শ নিয়েছিলেন। তাই প্রাথমিক চিহ্নগুলি স্বীকৃতি এবং চিকিৎসার জরুরি আবশ্যকতা বাধ্যতামূলক।

দ্রুত চিকিৎসা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে সাফল্যমণ্ডিত সনাক্তকরণ সেপসিস থেকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে, সেপসিসে আক্রান্ত প্রায় ৯০% প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৭০% শিশুদের কোন না কোন উপসর্গ মূলকারণ হিসেবে ক্রিয়া করে। এছাড়া, ব্ল্যাক এবং হিস্পানিক শিশুদের ২৫% বেশি মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে সেপসিসের কারণে।

সবশেষে, প্রতিদিনের জীবনে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি এবং দ্রুত চিকিৎসা দ্বারা সেপসিস প্রতিরোধ করা সম্ভব, যাতে করে এই মরনংকিত অসুখটি কেনা যায় এবং চিকিৎসার জরুরি আবশ্যকতা মেটানো যায।

সেপসিস প্রতিরোধের উপায়

সেপসিস থেকে নিজেকে ও প্রিয়জনদের রক্ষা করা একটি জরুরি প্রয়োজনীয়তা। এ জন্য প্রাথমিক হাইজিন প্র্যাক্টিস এবং সংক্রমণের দ্রুত শনাক্তকরণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা

একটি সঠিক স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করার মাধ্যমে সেপসিস প্রতিরোধ সম্ভব। সাধারণ কিছু হাইজিন প্র্যাক্টিসের মাধ্যমে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমানো যায়। এতে সহায়ক উপায়সমূহ হল:

  • হাত ধোয়া: খাবারের আগে ও পরে, টয়লেট ব্যবহার করার পরে, এবং রোগীদের স্পর্শ করার পরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া উচিত।
  • নিজেদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ব্যবহার: আসবাবপত্র, বাথরুমের টাওয়েল, এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত আইটেম শেয়ার না করা।
  • পরিস্কার পরিবেশ বজায় রাখা: নিয়মিত সমস্ত বাড়ির স্থান এবং বাহ্যিক স্থানগুলি পরিস্কার রাখা উচিত।

প্রাথমিক চিকিত্সা

সেপসিস প্রতিরোধের জন্য প্রাথমিক চিকিত্সা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংক্রমণের সনাক্তকরণ এবং দ্রুত চিকিত্সা শুরু করা প্রয়োজন:

  1. সংক্রমণ সনাক্তকরণ: প্রাথমিক লক্ষণ দেখা গেলে অবিলম্বে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  2. প্রাথমিক চিকিৎসা: শতাব্দীকালব্যাপী পরিচালিত গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে দ্রুত ও সমর্থিত চিকিৎসা পদ্ধতি, যেমন দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি, রোগীর জীবন রক্ষা করতে সহায়ক।
  3. চিকিত্সা সঠিক তথ্য সংরক্ষণ: চিকিৎসা প্রক্রিয়ার তথ্য সঠিকভাবে নথিভুক্ত করা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, যাতে জাতীয় বা উপজাতীয় পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা যায়।

বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ২.৬ মিলিয়ন নবজাতক বছরে জন্মের ২৮ দিনের মধ্যে মারা যায়। সঠিক ও সময়মত চিকিৎসা নিশ্চিত করা সেপসিস প্রতিরোধের জন্য অত্যাবশ্যক।

সেপসিসের চিকিৎসার ধরন

সেপসিস একটি প্রাণঘাতী রোগ হিসাবে বিবেচিত হয়, যা সংক্রমণের প্রতি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অবনতির কারণে হয়ে থাকে। সেপসিসের চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে গেলে, প্রধানত তিনটি ধাপ উল্লেখযোগ্য: অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি, ভ্যাসোপ্রেসার ওষুধ, এবং রক্তে প্রবাহে সাপোর্টিভ কেয়ার।

প্রথমত, অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি সেপসিস চিকিৎসার মৌলিক স্তম্ভ। রোগনির্ণয়ের পর যত দ্রুত সম্ভব উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সময়োপযোগী চিকিৎসা প্রদানে মৃত্যুহার কমানোর সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত সেপসিসের গুরুতর অবস্থায় মৃত্যুহার ৩০-৫০% পর্যন্ত হতে পারে, যা প্রায়ই দ্রুত অ্যান্টিবা� প্রতিরোধ করা যায় না।

আরও পড়ুনঃ  হাত পা ঝিমঝিম করার প্রতিকার

দ্বিতীয়ত, রোগীর রক্তচাপ ঠিক রাখতে ভ্যাসোপ্রেসার ওষুধ ব্যবহার করা হয়। স্বল্প সিস্টোলিক রক্তচাপ (১০০ mmHg এর কম) এবং উচ্চ শ্বাসের হার (প্রতি মিনিটে ২২ শ্বাস বা তার বেশি) দুটি লক্ষণই সেপসিসের শকের ইঙ্গিত দেয়, যা প্রতিরোধে ভ্যাসোপ্রেসার অতি কার্যকর।

তৃতীয়ত, সাপোর্টিভ কেয়ার এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রোগীর শরীরের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তরল বা ফ্লুইড থেরাপি। আধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে যেমন CARE Hospitals এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইন্টারডিসিপ্লিনারি কেয়ার এর মাধ্যমে সেপসিস রোগীকে সুস্থ করার প্রচেষ্টা করা হয়।

SOFA (qSOFA) স্কোরের মাধ্যমে রোগীদের অবস্থা মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, যেখানে স্কোর ২ বা তার উপরে সেপসিসের ইঙ্গিত হিসাবে বিবেচিত হয়। সম্প্রতি সেপটিক রোগীদের মধ্যে মানসিক বিভ্রান্তি, শ্বাসকষ্ট, এবং কম রক্তচাপের মতো প্রধান লক্ষণগুলি সময়মতো চিহ্নিত করে সঠিক সাপোর্টিভ কেয়ার প্রদান করা হচ্ছে।

সেপসিসের চিকিৎসার ধরন

সেপসিসে মৃত্যু হতে কত সময় লাগে?

সেপসিস মারাত্মক হতে পারে এবং তীব্রতা এবং রোগীর সাধারণ স্বাস্থ্য অবস্থা উভয়ের উপর নির্ভর করে এটি কত দ্রুত মৃত্যু ঘটাতে পারে তা ভিন্ন হতে পারে। অল্প কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন লাগতে পারে।

সেপসিসের সংজ্ঞা

সেপসিস হল শরীরের অনাকাঙ্খিত এবং অত্যধিক প্রতিক্রিয়া যা সংক্রমণের পরিণামে সারা শরীরের প্রদাহ এবং অঙ্গ ক্ষতি ঘটাতে পারে। এই অবস্থাটি মূত্রথলি, ফুসফুস, পাচনতন্ত্র ইত্যাদির মতো সংক্রমণগুলি থেকে শুরু হতে পারে।

সেপসিসের প্রভাব

সেপসিসের প্রথম লক্ষণগুলি অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ হতে পারে এবং এর মধ্যে রয়েছে জ্বর, ঠান্ডা লাগা, মানসিক দিগ্ভ্রান্তি, দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস, এবং ত্বকের বর্ণহীনতা। এগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত না করা হলে রোগীর অবস্থা দ্রুত অবনতি হতে পারে।

বার্তা করার লক্ষণ

সেপসিসের প্রথম লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, ঠান্ডা লাগা, মানসিক দিগভ্রান্তি, দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস, এবং ত্বকের বর্ণহীনতা।

বিলম্বের লক্ষণ

যদি সেপসিসের প্রথম লক্ষণগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত না করা হয়, তবে রোগীর অবস্থা দ্রুত অবনতি হতে পারে, যার ফলে অঙ্গ ব্যর্থতা এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সেপসিসের সাধারণ উপসর্গগুলি কী?

সেপসিসের সাধারণ উপসর্গগুলি অন্তর্ভুক্ত করে উচ্চতাপমাত্রা অথবা হিমতাপ, দ্রুত হৃদস্পন্দন, মানসিক আচরণের পরিবর্তন, এবং অস্বাভাবিক হারে শ্বাসকষ্ট।

ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ

সেপসিস সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে নিউমোনিয়া, মূত্রনালি সংক্রমণ, এবং অন্ত্রের সংক্রমণ।

ভাইরাস সংক্রমণ

সেপসিস ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হতে পারে। এটি মূত্রথলি, ফুসফুস, পাচনতন্ত্র ইত্যাদির সংক্রমণ গুলির ফলাফল হতে পারে।

সেপসিসে মৃত্যু হতে কত সময় লাগে?

সেপসিস মারাত্মক হতে পারে এবং তীব্রতা এবং রোগীর সাধারণ স্বাস্থ্য অবস্থা উভয়ের উপর নির্ভর করে এটি কত দ্রুত মৃত্যু ঘটাতে পারে তা ভিন্ন হতে পারে। অল্প কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন লাগতে পারে।

স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা

সেপসিস প্রতিরোধের জন্য প্রাথমিক হাইজিন প্র্যাক্টিসের মাধ্যমে এবং সংক্রমণের সনাক্তকরণ এবং দ্রুত চিকিত্সা শুরু করার মাধ্যমে সম্ভব।

প্রাথমিক চিকিত্সা

সংক্রমণ সনাক্তকরণের পর দ্রুত চিকিত্সা শুরু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্টিবায়োটিক সময়মত ব্যবহার করলে সেপসিসের ঝুঁকি কমানো যায়।

সেপসিসের চিকিৎসার ধরন কী?

সেপসিস চিকিৎসা প্রধানত অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি এবং সাপোর্টিভ কেয়ার-এর মাধ্যমে করা হয়। প্রয়োজন হলে রোগীর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো সাপোর্টের জন্য বিশেষ যন্ত্রপাতির ব্যবহার করা হয়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button