কলেস্টেরল কমাতে কত সময় লাগে?

কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়া যা সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, ও প্রয়োজন হলে ওষুধের মাধ্যমে সম্ভব। এখন অনেকেই জানতে চান, কলেস্টেরল কমাতে কত সময় লাগে? আসুন, আমরা এই বিষয়ে একটু বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করি।

আগে জানতে হবে, কলেস্টেরল এক প্রকার চর্বিজাত পদার্থ যা শরীরের কোষে প্রাপ্ত হয়। স্বাভাবিক কোলেস্টেরল মাত্রা ২০০ mg/dL এর ভিতরে থাকা উচিত এবং LDL মাত্রা ১০০ mg/dL এর নিচে। তবে, এটি কমানোর ক্ষেত্রে সময়কাল নির্ভর করে বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর।

উদাহরণস্বরূপ, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে, যেমন ফাইবার রিচ ডায়েট গ্রহণ ও ফাস্টফুড এড়ানো, রক্তের LDL মাত্রা প্রায় ৬ সপ্তাহের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করা যায়। তাছাড়া, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও প্রাকৃতিক উপকরণের ব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, কাঁচা রসুন ও হলুদ রাতে খেলে কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

তবে মনে রাখতে হবে, কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সময় নিতে পারে এবং এটি নির্ভর করতে পারে ব্যক্তির স্বাস্থ্য অবস্থা, বর্তমান ওজন, এবং অন্যান্য জীবনপদ্ধতির উপর। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিক্ষার মাধ্যমে কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যায়।

Contents show

কলেস্টেরল কী এবং এর প্রকারভেদ

কোলেস্টেরল হল এক ধরনের চর্বি যা আমাদের শরীর প্রস্তুত করে এবং আমাদের রক্তে পাওয়া যায়। এটি আমাদের শরীরের কোষের গঠন, হরমোন উৎপাদন এবং ভিটামিন ডি তৈরির জন্য অপরিহার্য। কোলেস্টেরলের প্রধান তিনটি প্রকারভেদ রয়েছে:

  1. এলডিএল কোলেস্টেরল: লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন, এটি খারাপ কোলেস্টেরল নামে পরিচিত। অতিরিক্ত মাত্রায় এটি রক্তনালীতে জমা হয়ে হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
  2. এইচডিএল কোলেস্টেরল: হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন, যা ভালো কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। এটি এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  3. ট্রাইগ্লিসারাইড: এটি হল আরেক ধরনের চর্বি যা শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি থেকে তৈরি হয় এবং রক্তে উচ্চ মাত্রায় থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রতি বছর, প্রায় ১০ লাখ মানুষ কোলেস্টেরল-সংশ্লিষ্ট সমস্যার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনিয়ন্ত্রিত এলডিএল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের উচ্চ মাত্রা হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়, যা বৈশ্বিকভাবে উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যা।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে, পর্যাপ্ত মাত্রায় এলডিএল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ানো জরুরি। নিয়মিত শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং প্রয়োজন হলে ওষুধ সেবন করাই এর প্রধান উপায়।

কোলেস্টেরল সম্পর্কে জানা এবং এর সঠিক ব্যবস্থাপনা সবসময়ই আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক হবে।

কেন কোলেস্টেরল কমানো জরুরি

উচ্চ কোলেস্টেরল লেভেল হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজের মতো জটিল সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। হৃদরোগ প্রতিরোধ করা এবং আয়ু বৃদ্ধি করার জন্য কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। সাধারণত এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা ১০০-এর নিচে থাকা আদর্শ, যদিও হার্টের সমস্যা থাকলে বা ধূমপান করলে স্তরটি ৭০-এর নিচে রাখা উচিত।

আরও পড়ুনঃ  আপনার কতগুলো দাঁত থাকা উচিত

অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের কারণে ধমনীতে প্ল্যাক জমে, যা রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মধ্যে এর যেমন খাদ্যাভ্যাস পর্যন্ত সংক্রমিত।

ডা. মুখোপাধ্যায় এর দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী, এলডিএলের মাত্রা ৪০ এবং ১৬০ হলে খারাপ কোলেস্টেরল প্রতিস্থাপন করতে হবে। তবে ১০০-র উপরে এলডিএল কোলেস্টেরল থাকলে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হয়। নন-এইচডিএল ১৩০-এর বেশি থাকলে তখনও ওষুধ খেতে হবে।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখতে প্রথমেই ওষুধ না খেয়ে রোগীর উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কমানো জরুরি। এছাড়াও, ট্রাইগ্লিসারাইড ১৫০-এর নিচে স্বাভাবিক মনে হলেও, অধিক ক্ষেত্রে এটি ৪০০-এর উপরে হলেও ওষুধের পরামর্শ দেওয়া হয় না।

উচ্চ কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে না থাকলে এটি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার ফলে জীবনযাত্রার মান হ্রাস পেতে পারে এবং আয়ু বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত হতে পারে। এ জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সঠিক পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।

How Long Does It Take To Lower Cholesterol

কোলেস্টেরল কমানোর টাইমফ্রেম নির্ভর করে অনেকগুলো কারণের উপর, যেমন – ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, খাদ্যাভ্যাস, এবং ওষুধ গ্রহণ। সাধারণত, স্বাস্থ্য উন্নতির কার্যকরী পরিবর্তন দেখতে ৩-৬ মাস সময় নিতে পারে।

Lifestyle changes যেমন সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শরীরচর্চা একটানা ৩ মাস বা তার চেয়ে বেশি সময় ধরে চালিয়ে গেলে কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রান্তিক পরিবর্তন দেখতে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, কোলেস্টেরল কমানোর জন্য স্টেটিন থেরাপি সহ উচ্চ-মানের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হতে পারে। বিশেষ করে, American College of Cardiology এবং American Heart Association এর নির্দেশনা অনুযায়ী, উচ্চ LDL রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য এই থেরাপির মাধ্যমে ৫০% পর্যন্ত কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব।

একটি প্রভাবশালী ডায়েট যেমন DASH ডায়েট বা Mediterranean ডায়েট এবং ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার শরীরচর্চা সপ্তাহে অন্তত ৩-৬ মাস ধরে চালালে কোলেস্টেরল লেভেল কমতে পারে। *Dr. Eugenia Gianos* এর মতে, প্রতিদিন ৩০ গ্রাম ফাইবার খাওয়া এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কমানো কোলেস্টেরল কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তবে মনে রাখতে হবে, কোলেস্টেরল কমানোর টাইমফ্রেম পরিবর্তিত হতে পারে ব্যক্তিগত অবস্থা এবং স্বাস্থ্য পরিকল্পনার উপর। জরুরীভাবে, ভালো ফলাফল পেতে একজন চিকিত্সকের নির্দেশনা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা অনুসরণ করা উচিত। এইভাবে কোলেস্টেরল কমিয়ে স্বাস্থ্য উন্নতি লাভ করতে পারবেন।

শরীরচর্চার প্রভাব

কোলেস্টেরল কমানো এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে শরীরচর্চা অসামান্য প্রভাব ফেলে। শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব যা হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা এবং মেটাবলিক কার্যক্রমে সহায়তা করে। এছাড়াও, নিয়মিত হাটা এবং অন্যান্য ফিটনেস ব্যায়াম এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

নিয়মিত হাঁটার উপকারিতা

নিয়মিত হাটা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই শারীরিক ব্যায়ামটি ওজন হ্রাসে সহায়তা করে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। দৈনিক মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়া থেকে রক্ষা করতে পারে, যা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

আরও পড়ুনঃ  আপনার শরীর ডিটক্স করার উপায় - স্বাস্থ্যকর টিপস

অন্যান্য ব্যায়ামের ফলাফল

শারীরিক ব্যায়ামের মধ্যে যোগা, সাইক্লিং, এবং সাঁতারও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। যোগা মানসিক শান্তির পাশাপাশি শরীরের ফিটনেস বজায় রাখতে সহায়তা করে। সাইক্লিং এবং সাঁতার ক্যালোরি বার্ন করে এবং মেটাবলিজম উন্নত করে যা সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য আবশ্যক।

খাদ্যাভ্যাস এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য। ভূমিকা রাখতে পারে সঠিক খানাপিনার পরিমাণ ও গুণমান। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে কোলেস্টেরল কমানোর কয়েকটি কার্যকর পদ্ধতি নিম্নরূপ।

ফাইবার রিচ ডায়েট

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন সয়া বিনস, বিভিন্ন ধরনের ডাল, বাদাম, ওটস এবং শাকসবজি কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। ফাইবার খানেকের শোষণ বেঁধে দেয় যা লিভারে উৎপন্ন কোলেস্টেরল ব্যবহারে সহায়ক। গবেষণা থেকে দেখা গেছে, নিয়মিত রসুন খাওয়া কোলেস্টেরল লেভেল উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। এছাড়াও, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় লেবু যোগ করলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমা হতে বাধা দেয়।

ফাস্টফুড এড়াতে হবে

ফাস্টফুড পরিহার অত্যন্ত জরুরি কারণ সেগুলোতে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট কোলেস্টেরল স্তর বৃদ্ধির পিছনে বড় ভূমিকা পালন করে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অর্জনের জন্য ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা উচিত এবং পরিবর্তে প্ল্যান্ট-বেসড সোর্স যেমন বাদাম ও বীজ খাওয়া উচিত যা ফাইবার সমৃদ্ধ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত ক্ষতিকর স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমানো এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহণ করা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক।

ওষুধের প্রয়োজনীয়তা

কিছু ক্ষেত্রে কোলেস্টেরল কমাতে ওষুধ অত্যন্ত জরুরি। হাইপারলিপিডিমিয়া বা রক্তে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় পদার্থের পরিমাণ কমানোর জন্য চিকিৎসাপ্রেসক্রিপশন প্রায়শই প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, রসুভাস্টেটিন (Rosuvastatin) উল্লেখযোগ্যভাবে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে দেয় এবং ভাল কোলেস্টেরল (HDL) এর মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।

  • রসুভাস্টেটিন প্রায়শই শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে তারা যদি পারিবারিক হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া (familial heterozygous hypercholesterolemia) হয়।
  • এই ওষুধটি শারীরিক ব্যথা এবং দুর্বলতা ঘটাতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ক্ষেত্রে।
  • বিভিন্ন ডোজে রসুভাস্টেটিন বাজারে পাওয়া যায়, যেমন Rosuvas 10, Rozavel 10, Rozide 10, Rosuvas 20, এবং Rosuvas 5।
  • প্রতিদিনের সঠিক ডোজ এবং ব্যবহারের জন্য ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত প্রেসক্রিপশন অনুসরণ করা আবশ্যক।
  • রসুভাস্টেটিন সাধারণত কিডনির জন্য সহনশীল হয় এবং এটি কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

অন্যদিকে, এটরোভাস্টেটিন (Atorvastatin) সাধারণত,প্রথমিক ডোজ ১০ মিলিগ্রাম করে শুরু করা হয়, তবে এটি ৪০ মিলিগ্রাম থেকে ৮০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। রোগীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসক এই পরিবর্তন নির্ধারণ করেন।

  • এটরোভাস্টেটিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেমন শারীরিক ব্যথা, জিআই সমস্যা এবং অ্যালার্জি খুব কম (
  • মিস হওয়া ডোজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রহণ করা উচিৎ, তবে কখনও ডোজ ডাবল করা উচিৎ নয়।

ওষুধের প্রেসক্রিপশন গ্রহণের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা অত্যন্ত যথাযথ। এটি শুধু কোলেস্টেরল কমানোর জন্য নয়, বরং হাইপারলিপিডিমিয়া সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। প্রচলিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবগত থাকা এবং সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে রোগীরা সঠিক ফলাফল পেতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ  প্রেগনেন্সি টেস্ট কত তাড়াতাড়ি করা উচিত

কোলেস্টেরল পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা

আপনার হার্ট হেল্থ এর জন্য কোলেস্টেরল পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা হয়। তাই, সঠিক সময় মতো কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা স্থায়ী স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।

নিয়মিত পরীক্ষা

সাধারণত, প্রতি 4-6 বছরে একবার কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। তবে, যদি আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বার্ষিক পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পরীক্ষার ফলে, হৃদরোগের ঝুঁকি সম্পর্কে সময় মতো জানা সম্ভব হয়।

চিকিৎসকের নির্দেশনা

কোলেস্টেরল পরীক্ষা করার সময়, রক্তের নমুনা দেওয়ার আগে 9-12 ঘণ্টা উপবাস করতে হতে পারে। পরীক্ষার পরে হালকা ব্যথা অনুভব হতে পারে, তবে এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক সময়মতো পরীক্ষা করুন এবং বিশেষ করে হার্ট হেল্থ এর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করুন।

FAQ

কোলেস্টেরল কমাতে কত সময় লাগে?

কোলেস্টেরল কমানোর জন্য সময়সীমা নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা এবং ওষুধ গ্রহণের উপর। সাধারণত ৩-৬ মাসের মধ্যে পরিবর্তন দেখা যায়।

কোলেস্টেরল কী এবং এর প্রকারভেদ কী?

কোলেস্টেরল হল এক ধরনের চর্বি যা আমাদের রক্তে পাওয়া যায়। এর প্রকারভেদ অন্তর্ভুক্ত এলডিএল (লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন – ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল), এইচডিএল (হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন – ‘ভালো’ কোলেস্টেরল) এবং ট্রাইগ্লিসারাইড।

কেন কোলেস্টেরল কমানো জরুরি?

কোলেস্টেরল কমানো জরুরি কারণ উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এটি হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়ার অংশ কী?

হ্যাঁ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়া যা সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং প্রয়োজন হলে ওষুধের মাধ্যমে সম্ভব।

নিয়মিত হাঁটার উপকারিতা কী?

নিয়মিত হাঁটলে ওজন হ্রাস, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নয়নের পাশাপাশি কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব।

অন্যান্য ব্যায়ামের ফলাফল কী?

অন্যান্য ব্যায়াম যেমন জগিং, সাইক্লিং বা সাঁতার কোলেস্টেরল কমানোর জন্য উপকারি। এটি শরীরের ফিটনেস এবং স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক।

ফাইবার রিচ ডায়েট এর ভূমিকা কী?

ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস কোলেস্টেরলের শোষণ হ্রাস করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

ফাস্টফুড এড়াতে হবে কেন?

ফাস্টফুড সাধারণত উচ্চ পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা কোলেস্টেরল লেভেল বাড়িয়ে দেয়। তাই ফাস্টফুড পরিহার করে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা উচিত।

কেন কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের প্রয়োজন হয়?

কিছু ক্ষেত্রে কোলেস্টেরল কমানোর জন্য ওষুধ অত্যন্ত জরুরি। বিশেষত হাইপারলিপিডিমিয়া বা উচ্চ কোলেস্টেরল সমস্যায়, চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ আবশ্যক।

কোলেস্টেরল পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা কী?

নিয়মিত কোলেস্টেরল পরীক্ষা করলে শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা জানার মাধ্যমে হৃদরোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি নির্ণয় করা যায় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়।

চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কোলেস্টেরল পরীক্ষা কি গুরুত্বপূর্ণ?

অবশ্যই, চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কোলেস্টেরল পরীক্ষা করলে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button