১০০ গ্রাম ছোলায় কত গ্রাম প্রোটিন?
পুষ্টিসম্পন্ন আহারের এক অতুলনীয় উৎস হিসেবে ছোলা অত্যন্ত সমাদৃত। বিজ্ঞানিক নাম Cicer arietinum, এই ডাল জাতীয় খাদ্যশস্যের মধ্যে ছোলার প্রোটিন পরিমাণ বিপুল – প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা ছোলাতে রয়েছে প্রায় ১৮ গ্রাম। এই নিউট্রিশনাল ভ্যালু অফ চিক পিজ এর গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এতে কেবল প্রোটিনই নয়, অন্যান্য উপকারী খনিজ ও ভিটামিনও প্রচুর পরিমাণে আছে।
মধ্যপ্রাচ্য, পশ্চিম এশিয়া, এবং ভারতীয় উপমহাদেশে বহুকাল ধরে ছোলার চাষ হয়ে আসছে, যেখানে বিশ্বের ৬৭% ছোলা উৎপাদিত হয়। এর ছোলার পুষ্টি উপকারিতা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যগত সুবিধা অর্জনে সাহায্য করে, যেমন ওজন নিয়ন্ত্রণ ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস। তাই, সুষম খাদ্যতালিকার জন্য ছোলা একটি অপরিহার্য উপাদান।
ছোলার পুষ্টিগুণ ও প্রোটিনের গুরুত্ব
ছোলা একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার যা বিভিন্ন ধরনের মিনারেল, ভিটামিন এবং প্রোটিনের উৎস হিসেবে পরিচিত। এর উচ্চ প্রোটিন এবং কম ফ্যাটের মাত্রা এটিকে মানব শরীরে প্রোটিন এর একটি আদর্শ উৎস করে তোলে, বিশেষ করে নিরামিষভোজীদের জন্য।
ছোলার পুষ্টিগুণ
- ছোলা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ।
- এটি ভিটামিন B1, B2, B6, এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত।
- ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার, এবং লৌহ সহ নানা খনিজ উপাদানে ভরপুর।
প্রোটিনের ভূমিকা মানব শরীরে
মানব শরীরে প্রোটিন এর উপস্থিতি শারীরিক ক্ষমতা এবং সুস্থ্য মাংসপেশীর গঠনে অপরিহার্য। ছোলার উচ্চ প্রোটিন সামগ্রী এর কারণে এটি ছোলার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক বেশি।
- শক্তির জোগান দেয় এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
- পেশী নির্মাণে এবং মেরামতে সহায়ক।
- শরীরের তরল এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখে।
এই সমস্ত উপাদান মিলে ছোলা কে একটি অপরিহার্য খাদ্য উপাদান করে তোলে, যা ছোলার স্বাস্থ্য উপকারিতা এর কথা সবাইকে জানাতে সাহায্য করে।
১০০ গ্রাম ছোলায় প্রোটিনের পরিমাণ
ছোলা বিশেষ করে তার প্রোটিন সামগ্রীর জন্য পরিচিত, যা একে পুষ্টিকর ডালের তালিকায় অগ্রণী করে তোলে। নিয়মিত ছোলার সেবন আমাদের পুষ্টিচাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রোটিনের মোট পরিমাণ
গবেষণা অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ১৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা একে অত্যন্ত পুষ্টিকর করে তোলে। এই ছোলায় প্রোটিন সামগ্রী কার্যকরভাবে দেহের মেরামত ও নবায়নে সহায়তা করে।
অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান
- ফাইবার: প্রতি ১০০ গ্রামে ১২ গ্রাম ফাইবার থাকে।
- ক্যালোরি: ছোলার ক্যালোরি মাত্রা প্রতি ১০০ গ্রামে ৩৭৮ ক্যালোরি।
- ভিটামিন ও খনিজ: ক্যালসিয়াম, আয়রণ এবং পটাশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ বাস্তবিকভাবে এই খাবারটিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
সারাংশত, ছোলা এমন একটি খাদ্য উপাদান, যা আমাদের দৈনিক পুষ্টির চাহিদাকে সমৃদ্ধ করে থাকে এবং এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ একে একটি পুষ্টিকর ডালের তকমা দেয়।
ছোলার প্রোটিনের উৎস
ছোলা একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রোটিন রিচ ফুড যা বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে খাওয়া হয়। এর উচ্চ প্রোটিন ও ফাইবারের মাত্রা এটিকে স্বাস্থ্যকর খাদ্যের এক অন্যতম উৎস হিসেবে গণ্য করে।
শাকসবজি এবং বাদামের সাথে তুলনা
প্রোটিনের যোগান দিতে গেলে বিনস এন্ড নাটস প্রায়ই প্রাধান্য পায়। তবে ছোলা শাকসবজি ও বাদামের তুলনায় অধিক পুষ্টিকর, কারণ এতে খনিজ, ভিটামিন এবং সম্পূর্ণ প্রোটিন উপাদান বেশি মাত্রায় থাকে।
পূর্ণাঙ্গ প্রোটিনের ধারনা
ছোলা পূর্ণাঙ্গ প্রোটিনের এক চমৎকার উৎস। সম্পূর্ণ প্রোটিন হিসেবে এর প্রোটিন গুণমানের জন্য এটি মাংস এবং ডেইরি পণ্যের একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। এটি বিশেষত নিরামিষভোজীদের জন্য যেমন উপযুক্ত, তেমনি মাংসভোজীদেরও বিভিন্ন রকম প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।
তাই, যারা তাদের ডায়েটে প্রোটিন রিচ ফুড যুক্ত করতে চান, তারা নিঃসন্দেহে ছোলা এবং বিনস এন্ড নাটস বেছে নিতে পারেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং সুস্বাদুও বটে।
ছোলা রান্নার পদ্ধতি
ছোলা শুধুমাত্র পুষ্টিকরই নয়, এর রান্নার পদ্ধতিও নানা রকমের হতে পারে। বিভিন্ন ধরণের ছোলা রান্না করার পদ্ধতি রয়েছে, যেমন সেদ্ধ করা বুট এবং ভাজা চানা। প্রতিটি পদ্ধতির তার নিজস্ব স্বাদ এবং গুণাবলী রয়েছে যা খাদ্য রসিকদের মুগ্ধ করে।
সেদ্ধ করা ছোলা
সেদ্ধ করা বুট একটি জনপ্রিয় রান্নার পদ্ধতি যা ছোলাকে নরম করে তোলে এবং এর প্রাকৃতিক স্বাদ বজায় রাখে। সেদ্ধ করার প্রক্রিয়াটি সাধারণত ছোলাকে বেশ কিছু সময় পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর মৃদু আঁচে সিদ্ধ করার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছোলার প্রোটিন ও ফাইবার সংরক্ষণ করা হয়, যা স্বাস্থ্যকর ডায়েটের জন্য আদর্শ।
ভাজা ছোলা
অন্যদিকে, ভাজা চানা একটি কমন নাশতা যা বাংলাদেশের অনেক ঘরে ঘরে প্রিয়। এই পদ্ধতিতে ছোলাকে তেলে ভাজা হয় যা একে মুচমুচে ও সুস্বাদু করে তোলে। ভাজা চানা প্রধানত চায়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। যদিও এটি অতিরিক্ত তেলের কারণে সেদ্ধ করা বুটের তুলনায় কম স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবুও এটি অসাধারণ স্বাদ প্রদান করে।
সব মিলিয়ে, ছোলা খাওয়ার উপায় বেছে নেওয়া নির্ভর করে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত পছন্দ এবং খাদ্যাভ্যাসের উপর। ছোলা রান্না করার কটি সাধারণ রান্নার পদ্ধতি হলেও, এর প্রতিটি পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ ও পুষ্টির সম্ভার নিয়ে আসে।
স্বাস্থ্যগত সুবিধা
ছোলা বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিকর উপাদানে পরিপূর্ণ, যা মানবদেহের স্বাস্থ্যগত উন্নতিতে অবদান রাখে। বিশেষ করে, ওজন হ্রাস এবং হার্ট হেলথ উন্নতির জন্য ছোলার গুণাগুণ অত্যন্ত কার্যকর। এই খাদ্যটির উন্নত ফাইবারের মাত্রা ও নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হওয়ায় এটি ছোলার স্বাস্থ্যগত সুবিধার এক অনন্য উৎস।
ওজন কমানোর উপকারিতা
উচ্চ ফাইবারের মাত্রা ও নিম্ন ক্যালোরি মান সমৃদ্ধ ছোলা ওজন নিয়ন্ত্রণে একটি অসাধারণ যোগ্যতা প্রদান করে। এটি দীর্ঘসময় পেট ভরা অনুভূতি দিয়ে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয়, যা ওজন হ্রাস এ সহায়ক।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো
- ছোলায় থাকা উচ্চ পরিমাণের ডায়েটারি ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা শিরাধমনীর স্বাস্থ্য উন্নতি করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও হ্রাস করে।
- ছোলার নিয়মিত গ্রহণ হার্ট হেলথের জন্য উপকারী বিভিন্ন খনিজ সরবরাহ করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোয় অবদান রাখে।
এই উপাদানগুলোর উপস্থিতি ছোলাকে একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর খাবারে পরিণত করে, যা সমগ্র শরীরের কল্যাণ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ছোলা ব্যবহার করার বিভিন্ন উপায়
ছোলা একটি বহুমুখী খাদ্য উপাদান যা বিভিন্ন ধরণের রান্নায় ব্যবহৃত হয়। পুষ্টিকর ও সুস্বাদু, এই দানা বীজ থেকে তৈরি হতে পারে ছোলা সালাদ, ছোলা কারি অথবা বিভিন্ন ধরণের ডাল রেসিপি। এগুলি প্রত্যেকটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের এক অপরিহার্য অংশ হতে পারে।
সালাদ প্রস্তুত করা
ছোলা সালাদ খুব সহজেই তৈরি করা যায় এবং এটি একটি পুষ্টিকর ও ভালোমানের মিল সরবরাহ করে। সাধারণ সালাদে ছোলা, টমেটো, শসা, পেঁয়াজ, ধনেপাতা এবং লেবুর রস মেশানো হয়ে থাকে।
- প্রথমে ছোলাগুলো ভালো করে সেদ্ধ করুন।
- এরপর সবজিগুলো কেটে ছোলার সাথে মিশিয়ে নিন।
- শেষে লেবুর রস, লবণ ও অলিভ অয়েল যোগ করে ভালো করে মিক্স করুন।
কারি এবং ডাল রান্না
ছোলা কারি একটি প্রিয় ডিশ যা অনেক বাঙালি ঘরে ঘরে প্রস্তুত হয়। এটি বানানো হয় পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, এবং বিভিন্ন মসলার সাথে। ডাল রেসিপি প্রস্তুতেও ছোলা ব্যবহৃত হয়।
- প্রথমে ছোলাকে রাতভর ভিজিয়ে রাখুন।
- ছোলাগুলো সেদ্ধ করে মসলা প্রস্তুত করে তাতে মেশান।
- সব উপাদান ভালো করে সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
এভাবে ছোলা ব্যবহার করে তৈরি খাবারের পুষ্টি ও স্বাদ উভয়ই বৃদ্ধি পায়, এবং এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। ছোলা তার বহুমুখী প্রকৃতির জন্য বিভিন্ন খাবারের সাথে মিলে যায় এবং এর পুষ্টিগুণের জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা দরকার।
নিরামিষবাদীদের জন্য প্রোটিন উৎস
নিরামিষ আহার অনুসারীদের মধ্যে ভেজিটেরিয়ান প্রোটিন উৎস হিসেবে ডায়েটে ছোলা অপরিহার্য একটি খাদ্য। ছোলা একটি প্রাকৃতিক উৎস যা প্রোটিন ছাড়াও ফাইবার, আয়রন এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। এই ডালটি স্বাস্থ্যকর হৃদয় এবং ওজন পরিচালনায় অবদান রাখে।
কিভাবে ছোলা খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হয়
- সালাদের মাধ্যমে: তাজা সবজির সাথে সেদ্ধ ছোলা মিশিয়ে একটি পুষ্টিকর সালাদ তৈরি করুন।
- মূল খাবার হিসেবে: ছোলা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের তরকারি তৈরি করা যায়, যা খাবারের মান বৃদ্ধি করে।
- স্ন্যাক্স হিসেবে: ছোলাকে শুকনো করে বা ভেজে স্বাদযুক্ত স্ন্যাক্স হিসেবে গ্রহণ করা যায়।
অন্যান্য মসুর ডাল
মসুর ডাল আর একটি উৎকৃষ্ট নিরামিষ প্রোটিন উৎস। মসুর ডালের গুণাগুণ আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় অপরিসীম ভূমিকা রাখে। এটি প্রোটিনের পাশাপাশি আয়রন, ফোলেট এবং ম্যাগনেসিয়াম দ্বারা সমৃদ্ধ। মসুর ডাল হজমে সহায়ক এবং এটি খাদ্যতালিকায় সহজেই অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব।
সব মিলিয়ে, ভেজিটেরিয়ান প্রোটিনের উৎস হিসেবে ছোলা এবং মসুর ডাল খুবই উপকারী। এগুলির আহারে অন্তর্ভুক্তি নিরামিষবাদীদের পুষ্টিগত চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে।
ছোলা খাওয়ার সময় সতর্কতা
ছোলা একটি পুষ্টিকর খাবার হলেও, এর সাথে জড়িত কিছু সতর্কতা রয়েছে যা মানুষের স্বাস্থ্যে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, ছোলা অ্যালার্জি এবং ছোলার সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।
অ্যালার্জি এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
কিছু মানুষের শরীরে ছোলা খাওয়ার পরে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে চুলকানি, র্যাশ বা হাপানির মতো লক্ষণ। ছোলা অ্যালার্জি এমন একটি অবস্থা যা অবশ্যই মনিটর করা উচিত, বিশেষত যদি কারও পুরানো খাদ্য অ্যালার্জির ইতিহাস থাকে।
পরিমিত ভোজনের গুরুত্ব
ছোলা যদিও প্রোটিন ও আঁশ সমৃদ্ধ, তবে পরিমিত অংশে ছোলা খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে ছোলা খাওয়া হজমে সমস্যা, পেট ফাঁপা এবং অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। নিয়মিত অভ্যাস অনুযায়ী ছোলার পরিমাণ নির্ধারণ করা বিচক্ষণতাপূর্ণ।
এই সতর্কতাগুলি মেনে চললে ছোলা আপনার দৈনন্দিন ডায়েটে একটি মূল্যবান ও সুরক্ষিত উৎস হিসেবে থাকতে পারে।
ছোলার বৈচিত্র্য
ছোলার প্রকারভেদ এবং তাদের বিস্তৃত ব্যবহার সারা বিশ্বে রান্নার ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। দেশী ছোলা এবং কাবুলী ছোলা, উভয়েই তাদের আলাদা বৈশিষ্ট্য এবং পুষ্টি-গুণের জন্য পরিচিত।
বিভিন্ন জাতের ছোলা
বিশ্বজুড়ে ছোলা শুধুমাত্র একটা প্রজাতির নয়, বরং এগুলি বিভিন্ন ধরনের। দেশী ছোলা যা সাধারণত ছোট এবং কঠিন বীজ সহ হয়, এবং কাবুলী ছোলা, যা বড় এবং হালকা রঙের হয়, দুটি সবচেয়ে পরিচিত প্রজাতি।
বিভিন্ন দেশের ছোলার ব্যবহার
ছোলা বিশাল ভৌগোলিক বৈচিত্র্যময় এলাকা জুড়ে চাষ হয়। ভারত সারা বিশ্বে ছোলার সবচেয়ে বড় উৎপাদক। এর পাশাপাশি, মায়ানমার, পাকিস্তান, তুরস্ক, রাশিয়া এবং ইথিওপিয়াও এর প্রধান চাষ ক্ষেত্র। আন্তর্জাতিক রান্নাতে এই ছোলাগুলির বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার হয়, যা রান্নার ঐতিহ্যকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উন্নীত করে।
- কাবুলী ছোলা সাধারণত সালাদ এবং হুমুসে ব্যবহার হয়।
- দেশী ছোলা ভারতীয় কারি এবং অন্যান্য স্পাইসি খাবারে প্রাধান্য পায়।
এই বৈচিত্র্যময় ব্যবহার ছোলাকে বিশ্বজুড়ে একটি প্রিয় উপাদান পরিণত করেছে, যা ক্রমশ ব্যাপক হয়ে উঠছে।
ছোলার ইতিহাস ও উৎপত্তি
ছোলার উৎপত্তি নিয়ে গবেষণা বলে, এর প্রাচীন সময়ের শিকড় মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়ায়। প্রাচীনকালে এই অঞ্চলের লোকেরা ছোলা চাষাবাদ করত এবং তারা এটি ব্যাপকভাবে খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করত। প্রাচীন সভ্যতায় ছোলা তাদের পুষ্টিকর উপাদানের জন্য পরিচিত ছিল, যা অধ্যবসায় ও শক্তির মূল উৎস ছিল।
ছোলার উৎপত্তি স্থান
গবেষণায় জানা যায়, ছোলার উৎপত্তি মধ্যপ্রাচ্যে সমাধান করা হয়েছিল, যেখানে এটি প্রাচীন সময়ে অন্যান্য ফসলের সাথে চাষ করা হত এটি প্রাচীন মিশরীয়, গ্রীক এবং রোমান সভ্যতায়ও জনপ্রিয় ছিল।
প্রাচীনকালে ছোলার ব্যবহার
প্রাচীন কালে ছোলা প্রধানত আটা, সবজি এবং দানাদার খাবার হিসেবে ব্যবহার হত। গ্রীক ও রোমান সৈন্যদের খাদ্য তালিকায় এই উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার অপরিহার্য ছিল, কারণ চিক পিজ হিস্টোরি তাদের শক্তি ও সহনশীলতা বৃদ্ধি করত।
সংক্ষেপে, ছোলার ইতিহাস অনেক গভীর এবং এটি বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং সভ্যতার মধ্যে একটি বিশেষ স্থান রাখে। এর উৎপত্তি ও প্রাচীন কালের ব্যবহার আমাদের বর্তমান খাদ্যাভাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বাজারে ছোলা কেনার পরামর্শ
বাজারে গিয়ে উচ্চমানের ছোলা কেনাকাটি করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। একটি ভাল বাজার গাইড অনুসরণ করে, আপনি সহজেই মানসম্মত ছোলা চিনতে পারেন এবং আপনার কেনাকাটি অভিজ্ঞতা অনেক ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে পারেন।
সেরা ব্র্যান্ডগুলি
- বাজারে বেশ কয়েকটি বিশ্বাসযোগ্য ও মানসম্মত ব্র্যান্ডের ছোলা পাওয়া যায়। এগুলির মধ্যে অনেকে বিশেষ করে জৈবিক ও সুস্বাদু ছোলা উৎপাদনে বিশেষজ্ঞ।
- ব্র্যান্ড নির্বাচন করার সময় তাদের উৎপাদন পদ্ধতি, গ্রাহক পর্যালোচনা এবং পণ্যের মান যাচাই করুন।
কীভাবে ভালো ছোলা চেনা যায়
- উচ্চমানের ছোলা সাধারণত বৃহত, সমান আকারের এবং মসৃণ পৃষ্ঠযুক্ত হয়ে থাকে।
- দাগ বা ছিটেফোঁটাযুক্ত ছোলা এড়িয়ে চলুন কারণ এগুলি ত্রুটিপূর্ণ অথবা পুরানো হতে পারে।
- চেনার একটি উপায় হলো ছোলা কেনাকাটি টিপস মেনে ছোলার বাইরের আবরণ এবং গন্ধ যাচাই করা। ভালো ছোলা সাধারণত নরম গন্ধ মুক্ত এবং বাইরের আবরণে কোনো অসামঞ্জস্যতা থাকে না।
সঠিক বাজার গাইড অনুসরণ করে এবং উপরের উল্লেখিত পদ্ধতিগুলি পালন করে, আপনি সহজেই বাজার থেকে উচ্চমানের ছোলা করতে পারবেন। নিশ্চিত করে নিন যে আপনি বিশ্বাসযোগ্য ও পরিচিত ব্র্যান্ডের ছোলা খুঁজছেন, যা আপনার পুষ্টি চাহিদাগুলি সেরা ভাবে পূরণ করবে।
সংশ্লিষ্ট খাবার ও তাদের প্রোটিন কন্টেন্ট
আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি যে ১০০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ১৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তবে ছোলা একমাত্র উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাবার নয়। এই বিভাগে আমরা অন্যান্য খাবার ও তাদের প্রোটিন সামগ্রী সম্পর্কে আলোচনা করব, যা আপনার ডায়েটকে আরও পুষ্টিকর করে তুলতে সাহায্য করবে।
অন্যান্য উচ্চ প্রোটিন খাবার
মাংস, মাছ, ডিম এবং দুগ্ধজাতীয় পণ্যগুলি প্রোটিনের উচ্চ উৎস হিসেবে পরিচিত। সোয়াবিন, থ্যাঙ্কুনি পাতা, এবং কুইনোয়া এর মত শস্যভিত্তিক খাবারও উচ্চ প্রোটিনে পরিপূর্ণ। এই জাতীয় খাবারগুলি বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়।
প্রোটিনের পাশাপাশি, ছোলা সমৃদ্ধ হয় কার্বোহাইড্রেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন এ’র মতো অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানে, যা মানব দেহের জন্য অপরিহার্য। এছাড়া, ছোলার নিম্ন গ্লাইসেমিক সূচক তাকে ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপযুক্ত খাবারে পরিণত করে। ইহা হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং রক্তে ধীরে ধীরে গ্লুকোজ ছাড়ে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
প্রোটিন ছাড়াও, আমাদের শরীরের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ও সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, এবং আহারী আঁশের মত উপাদানগুলি গুরুত্বপূর্ণ। এই উপাদানগুলি হাড়ের স্বাস্থ্য, পিত্তথলী এবং হৃদপিণ্ড মজবুত করে এবং নানাবিধ রোগ যেমন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এর ফলে ছোলা একটি পুষ্টিকর এবং ব্যালান্সড ডায়েটের জন্য একটি আদর্শ খাবার হিসেবে গণ্য হয়।