হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণের উপায়

বাংলাদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের একজন উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগছেন, যা বাংলাদেশের জাতীয় স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৭-১৮ অনুসারে। বিশ্বের প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত এবং প্রায় ৭০ লাখ লোকের মৃত্যু ঘটে প্রতি বছর এই রোগের কারণে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

উচ্চ রক্তচাপ নিরাময় বা হাই ব্লাড প্রেশার টিপস সম্পর্কে আলোচনা করবো। স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ mmHg হলে স্বাস্থ্যকর বলে গণ্য করা হয়। বিভিন্ন কারণ যেমন অতিরিক্ত ওজন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, ধূমপান এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ায়।

ঠিকমতো খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং লবণ ও অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকলে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এ সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের প্রবন্ধ পড়তে থাকুন, যাতে উচ্চ রক্তচাপ নিরাময়ের বিভিন্ন উপায় এবং প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।

Contents show

উচ্চ রক্তচাপ কী এবং কেন দেখা দেয়

উচ্চ রক্তচাপ, যা সাধারণত হাইপারটেনশন নামে পরিচিত, হচ্ছে যখন রক্তনালীগুলিতে রক্তের চাপ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেড়ে যায়। এটি ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবেও পরিচিত, কারণ অনেক সময় লক্ষণগুলি স্পষ্ট হয় না, কিন্তু এই সমস্যাটি গুরুতর স্বাস্থ্যগত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, যা একটি উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যা।

বাংলাদেশে এক চতুর্থাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন যা একটি উদ্বেগজনক অবস্থা। উচ্চ রক্তচাপের কারণ সম্পর্কে জানলে আমরা এটি নিয়ন্ত্রণ করার উপায় খুঁজে পেতে পারি। প্রধানত, এটি দুই ধরণের হতে পারে:

  • প্রাথমিক হাইপারটেনশন (৯০-৯৫% ক্ষেত্রে)
  • দ্বিতীয় হাইপারটেনশন, যা বিভিন্ন রোগের কারণে ঘটে (৫-১০% ক্ষেত্রে)

উচ্চ রক্তচাপের কারণ বহুবিধ হতে পারে, যার মধ্যে আছে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, স্থূলতা, মানসিক চাপ এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি বিকলতা, এবং অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর প্রায় ৯৪ লাখ মানুষ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। সুতরাং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিভিন্ন হেলথ টিপস অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, নিয়মিত রক্তচাপ পর্যবেক্ষণ করা, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, সুষম খাদ্য গ্রহণ, এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা।

রক্তচাপ নির্ধারণ করার জন্য এটি বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা হয়েছে:

  1. স্বাভাবিক: সিস্টোলিক ৯০-১১৯ mmHg এবং ডায়াস্টোলিক ৬০-৭৯ mmHg
  2. প্রিহাইপারটেনশন: সিস্টোলিক ১২০-১৩৯ mmHg এবং ডায়াস্টোলিক ৮০-৮৯ mmHg
  3. প্রথম ধাপ হাইপারটেনশন: সিস্টোলিক ১৪০-১৫৯ mmHg এবং ডায়াস্টোলিক ৯০-৯৯ mmHg
  4. দ্বিতীয় ধাপ হাইপারটেনশন: সিস্টোলিক ≥১৬০ mmHg এবং ডায়াস্টোলিক ≥১০০ mmHg
আরও পড়ুনঃ  ঘুমের সূচি ঠিক করার উপায় | সহজ টিপস

উচ্চ রক্তচাপ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য হেলথ টিপস অনুসরণ করলে এটি প্রতিরোধযোগ্য এবং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী অবস্থান এবং যথাযথ চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মাধ্যমে এটি মোকাবেলা করা যেতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন প্রায়শই নির্দিষ্ট লক্ষণ ছাড়াই দেখা দেয়, এজন্য একে “নীরব ঘাতক” বলা হয়। তবে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ চিহ্নিত করা যায় যা স্বাস্থ্যাবস্থানে সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা বোঝায়।

মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরা

উচ্চ রক্তচাপের এক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হল গুরুতর মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরা। অনেক সময় চরম মানসিক চাপ বা কোন শারীরিক পরিশ্রমের পরে এই ঘটনা ঘটে। মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরা যদি বারবার দেখা দেয়, তাহলে তা রক্তচাপের লক্ষণ হতে পারে।

বুক ধড়ফড় করা

বুকে ধড়ফড় বা বুক ব্যথা উচ্চ রক্তচাপের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ। হার্ট ভালোভাবে কাজ না করলে বা অতিরিক্ত চাপে থাকলে বুক ধড়ফড় দেখা দেয়। এই অবস্থায়, স্বাস্থ্যাবস্থা নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত।

স্বাভাবিক রক্তচাপের পরিমাপ

স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো থাকলে রক্তচাপ সাধারণত ১২০/৮০ mm Hg এর মধ্যে থাকে। এই মাত্রা থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উঠা নামা করলে তা রক্তচাপের লক্ষণ হতে পারে যা আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যাবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর খাদ্যাভ্যাস

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সুস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে সহজেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বিশেষত, পটাশিয়ামযুক্ত খাবার, শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়া এবং লবণের পরিমাণ কমানোর মাধ্যমে রক্তচাপের ঝুঁকি কমানো যায়। নিচের ডায়েট টিপস অনুসরণ করে আপনি উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করতে পারেন।

পটাশিয়ামযুক্ত খাবার

এমন খাবার যথা কলা, টমেটো, কমলা ফল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। পটাশিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ হৃদযন্ত্র সুরক্ষায় কার্যকর।

  • কলা
  • পালং শাক
  • কমলা ফল

শাকসবজি এবং ফলমূল

শাকসবজি এবং ফলমূলে ভরপুর ডায়েট উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করতে সহায়ক। এগুলিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্নায়ুতন্ত্র শান্ত করে এবং হাইপারটেনশন ডায়েট আপগ্রেড করে।

  • পালং শাক
  • টমেটো
  • কমলা লেবু

লবণের পরিমাণ কমানো

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ রক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অতএব, খাদ্য থেকে লবণের পরিমাণ কমাতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস নিশ্চিত করতে ডায়েট টিপস অনুসরণ করে দৈনিক লবণের পরিমাণ সীমিত রাখতে হবে।

  • প্রতিদিন ৫ গ্রাম বা তার কম লবণ গ্রহণ করা
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো

অস্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় খাবার এড়ানো

চর্বিজাতীয় খাবার যেমন প্রক্রিয়াকৃত চর্বি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। এই জন্য এধরনের খাবার এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা উচিত।

  • তেলে ভাজা খাবার এড়ানো
  • প্রতিদিন প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ খাদ্যতালিকায় যোগ করা

উপরোক্ত ডায়েট টিপস অনুসরণ করে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রতি বৎসর সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

How to Control Blood Pressure High

বর্তমানে, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকরী উপায়গুলো জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিক রক্তচাপের পরিমাপ: সিস্টোলিক কম ১২০ এবং ডায়াস্টোলিক কম ৮০। কিন্তু কয়েকটি সহজ ব্লাড প্রেশার কন্ট্রোল টিপস অনুসরণ করে আমরা এটি নিযন্ত্রণ করতে পারি। এখানে কিছু কার্যকরী পদ্ধতি আলোচনা করা হলো:

  • প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা: নিয়মিত ব্যায়াম ব্লাড প্রেশার প্রায় ৫ থেকে ৮ mm Hg কমাতে সহায়ক। প্রতিদিন হাঁটা এবং যোগব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: শাকসবজি, ফলমূল, এবং কম চর্বিযুক্ত দুধজাতীয় খাবার গ্রহণ করা ব্লাড প্রেশার কমাতে সাহায্য করতে পারে। ব্লাড প্রেশার কন্ট্রোল টিপসের মধ্যে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • লবণ কমানো: প্রতিদিন ২,৩০০ mg বা তার কম সোডিয়াম গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১,৫০০ mg এর কম সীমা খুবই আদর্শ।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ: প্রতিটি কিলোগ্রাম (প্রায় ২.২ পাউন্ড) ওজন কমাতে রক্তচাপ প্রায় ১ mm Hg কমে যায়। পুরুষদের কোমরের মাপ ৪০ ইঞ্চি এবং মহিলাদের ৩৫ ইঞ্চির বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
  • স্বাস্থ্যকর অভ্যাস: ধূমপান বাদ দেওয়া এবং প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ উচ্চ রক্তচাপে সহায়ক হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ  পিরিয়ডের সময় কি মিলন করা যায়?

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং নিয়মিত ব্লাড প্রেশার পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্লাড প্রেশার কন্ট্রোল টিপসে ফলে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া টোটকা

অসংখ্য গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ন্যাচারাল রেমেডির মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নীচে রক্তচাপ কমানোর কিছু প্রধান হোম ট্রিটমেন্টের পরামর্শ দেওয়া হলো:

আটা ও ময়দার রুটি

খাদ্যাভ্যাসে আটা এবং ময়দার রুটি অন্তর্ভুক্ত করা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই রুটি তৈরিতে সম্পূর্ণ আটা এবং ময়দা ব্যবহার করা হয়, যা রক্তপ্রবাহ উন্নত করে ও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কার্যকরী।

বাদামি চাল

নিয়মিত বাদামি চালের সেবন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। বাদামি চাল ফাইবারের ভালো উৎস, যা রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই হোম ট্রিটমেন্ট বেশ সহজ এবং কার্যকরী।

রসুন

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন যুক্ত করলে রক্তচাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে। রসুনে প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ গুণ থাকে যা রক্তপ্রবাহে সহায়তা করে এবং রক্তচাপ হ্রাস করে। এছাড়া, এটি ন্যাচারাল রেমেডি হিসেবে স্বীকৃত এবং নিরাপদ।

উপরোক্ত খাবারগুলো রোজকার খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করলে যেমন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তেমনি স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব। তাই, ন্যাচারাল রেমেডি এবং হোম ট্রিটমেন্ট দিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রতিদিনের জীবনের অংশ করে নিন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যায়াম

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত এক্সারসাইজ ফর হাইপার টেনশন রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ থেকে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যাও হতে পারে, তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরী।

প্রতিদিন হাঁটা

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। সরল এই এক্সারসাইজ ফর হাইপার টেনশন শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমায় এবং হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।

যোগব্যায়াম

যোগব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ ফল দিতে পারে। *যোগ বেনিফিটস* হিসেবে বিশেষত শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রিত অনুশীলন এবং ধ্যান রক্তচাপ স্থির রাখতে সাহায্য করে। এটি মানসিক চাপ কমায় এবং শরীরকে আরাম দেয়।

আরও পড়ুনঃ  কিডনি ফাংশন উন্নতির উপায় - স্বাস্থ্য টিপস

প্যাকেটজাত খাবার এড়ানো

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্যাকেটজাত খাবার এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই খাবারগুলিতে উচ্চমাত্রার লবণ এবং প্রিজারভেটিভ থাকে যা রক্তচাপ বাড়াতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা উচিত।

প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ন্যাচারাল হেলথ সলিউশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাসে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান সংযোগ করে সহজেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিম্নে এই ধরনের কিছু হার্বাল রেমেডিজ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

আমলকী ও এর রস

আমলকী এক প্রাকৃতিক উপাদান যা বহুদিন ধরে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর রসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় প্রতিদিন এক গ্লাস আমলকীর রস সেবন করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

তিসি বীজ

তিসি বীজ একটি শক্তিশালী হার্বাল রেমেডি যা উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে উপকারী। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবার সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রতি খাবারে কমপক্ষে ৮ গ্রাম ফাইবার অন্তর্ভুক্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তিসি বীজ সরাসরি খাওয়া অথবা খাবারের সাথে মিশিয়ে সেবন করা যেতে পারে।

এরাচ

এরাচ বা ‘বেরাচ’ বীজ ব্যবহারে রক্তচাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি একটি নেতিবাচক আইওন যা শরীরে রক্তচাপের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত এরাচ সেবন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রাকৃতিক হেল্পার হিসেবে কাজ করে।

দারচিনি ও পেঁয়াজ

দারচিনি একটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক মসলা, যা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে এক চা চামচ দারচিনি যোগ করলে হার্বাল রেমেডিজ হিসেবে দারুণ কাজ করে। একইভাবে, পেঁয়াজে আলিসিন নামক উপাদান থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পেঁয়াজ খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারে ন্যাচারাল হেলথ সলিউশন উন্নত ফলাফল দেয়। এই উপাদানগুলি সহজলভ্য এবং নিয়মিত সেবনে উপকার পাওয়া যায়।

FAQ

উচ্চ রক্তচাপ কী এবং কেন দেখা দেয়?

উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে রক্তনালীগুলিতে রক্তের চাপ বেড়ে যাওয়া অবস্থা। এটি বিভিন্ন জীবনযাত্রার কারণে হয়ে থাকে, যেমন অসংগঠিত জীবনযাপন, ফাস্ট ফুড গ্রহণ, এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস।

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলি কী কী?

উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, এবং বুকে ভারি ভাব সৃষ্টির মতো লক্ষণ দ্বারা চিহ্নিত হয়।

স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রা কত হওয়া উচিত?

একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপ মাত্রা 120/80 mm Hg থাকা উচিত।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য কোন খাবারগুলি খাওয়া উচিত?

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পটাশিয়ামযুক্ত খাবার যেমন কলা, টমেটো, সবজি, এবং ফলের মতো খাবার গ্রহন করা জরুরী। অতিরিক্ত লবণ ও চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

রক্তচাপ কমানোর জন্য ঘরোয়া টোটকা কী কী?

আটা ও ময়দার মিশ্রণের রুটি, বাদামি চাল, এবং রসুনের মতো খাবারের উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ব্যায়াম কী কী?

প্রতিদিনের হাঁটা এবং যোগব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়া, প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

কোনো প্রাকৃতিক উপাদান উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে?

আমলকী ও এর রস, তিসি বীজ, এরাচ এবং দারচিনি ও পেঁয়াজ এর মতো প্রাকৃতিক উপাদানগুলি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button