উইন্ডোজ ১১ এ পার্টিশন তৈরি করার সহজ পদ্ধতি

উইন্ডোজ ১১ পার্টিশন তৈরি করা এখন খুব সহজ এবং ব্যবহারকারী বান্ধব। পার্টিশন হলো হার্ড ডিস্কের বিভাজন যা আপনার অপারেটিং সিস্টেমকে ভিন্ন ভিন্ন ইউনিট ও ফাইল সিস্টেম হিসাবে দেখতে পারে। এই প্রক্রিয়া ডেটা সংরক্ষণার্থে ও ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত সহায়ক। উইন্ডোজ ১১ এর নতুন ফিচার ও টুলগুলির ব্যবহার করে আপনি সহজেই পার্টিশন তৈরি করতে পারেন।

কম্পিউটার ব্যবস্থাপনার সময় পার্টিশন তৈরির উপায় জানাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পার্টিশন তৈরি করতে হলে উইন্ডোজ ১১ এর ডিস্ক ম্যানেজমেন্ট টুলটি খুব কার্যকরী। এই টুলটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ডিস্ক সমূহকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যায়, যা তথ্যগুলোকে পৃথকভাবে সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা করতে সাহায্য করে।

নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই উইন্ডোজ ১১ পার্টিশন তৈরি করতে পারবেন:

  • প্রথমে “Computer Management” এ প্রবেশ করুন।
  • তারপর “Disk Management” টুলটি সিলেক্ট করুন।

এভাবে, আপনার কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ককে বিভিন্ন পার্টিশনে বিভক্ত করতে পারলে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত তথ্য সংরক্ষণ আরো সহজ হয়ে যাবে।

হার্ডডিস্ক পার্টিশন কী এবং কেন প্রয়োজন?

হার্ডডিস্ক পার্টিশন হল হার্ড ড্রাইভের একটি লজিক্যাল বিভাজন যা ডাটার ব্যবস্থাপনা ও দ্রুত অ্যাক্সেসে সাহায্য করে। এটি ব্যবহৃত হয় সিস্টেমের পারফরম্যান্স বাড়াতে এবং বিভিন্ন ধরনের ডাটা পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে। এখন, আমরা বোঝাবো কেন হার্ডডিস্ক পার্টিশন এবং পার্টিশনের গুরুত্ব এত গুরুত্বপূর্ন।

হার্ডডিস্ক পার্টিশন কী

হার্ডডিস্ক পার্টিশন হল একটি ড্রাইভের লজিক্যাল বিভাজন যা একাধিক ভলিউম হিসেবে কাজ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, Windows ইনস্টলেশনের সময়, সিস্টেম রিজার্ভড পার্টিশন এবং প্রধান পার্টিশন তৈরি হয়। একাধিক পার্টিশনের মাধ্যমে, ইউজার আলাদা ড্রাইভ লেটার দিয়ে বিভিন্ন ভলিউম হিসেবে তাদের ডাটা সংগঠিত করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ  Windows 10-এ ওয়েবক্যাম মিরর করার সহজ উপায়

হার্ডডিস্ক পার্টিশন কেন প্রয়োজন?

হার্ডডিস্ক পার্টিশনের গুরুত্ব ব্যাপক। এটি সিস্টেম পুনরায় ইনস্টল করার সময় ডাটা রক্ষা করে, কারণ আলাদা পার্টিশনে রাখা ডাটা মুছে যায় না। আরো একটি উদাহরণ হল যাঁরা একই ড্রাইভে Windows এবং Linux ডুয়াল বুট করতে চান, তারা আলাদা পার্টিশন করে রাখতে পারেন।

  • পার্টিশন করা হলে ডাটা সংগঠন সহজ হয়।
  • কম্পিউটারের পারফরম্যান্স উন্নত হয়।
  • ফাইল কপি এবং পেস্টের সময় দ্রুততা বৃদ্ধি পায়।
  • কম্পিউটার রিপেয়ার শপে গিয়ে খরচ কমে যায়।

পার্টিশনের গুরুত্ব বিবেচনা করে, প্রয়োজনীয় উপায়ের মাধ্যমে হার্ডডিস্ক পার্টিশন করলে কম্পিউটার ব্যবহারে আরো সুবিধা ও নিরাপত্তা পাওয়া যায়।

উইন্ডোজ ১১ এর নিজস্ব টুলের ব্যবহার

উইন্ডোজ ১১ এ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিল্ট-ইন টুল রয়েছে যা ডিস্ক এবং পার্টিশন ম্যানেজমেন্ট সহজ করে দেয়। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই নতুন পার্টিশন তৈরি, পুরানো পার্টিশন মুছে ফেলা বা আকার পরিবর্তন করতে পারেন। নিচে এই কার্যকরী টুল ব্যবহারের বিস্তারিত ধাপগুলো বর্ণনা করা হয়েছে।

Disk Management টুলের পরিচিতি

ডিস্ক ম্যানেজমেন্ট হল উইন্ডোজ এর একটি অন্তর্নির্মিত টুল যা হার্ডডিস্কের পার্টিশন ম্যানেজমেন্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই টুলটি দিয়ে আপনি সহজেই পার্টিশন তৈরি, মুছে ফেলা, এবং বিস্তৃত করাসহ অন্যান্য কাজগুলো করতে পারেন। ডিস্ক ম্যানেজমেন্ট টুলের মাধ্যমে আপনি হার্ডডিস্কের সম্পূর্ণ কনফিগারেশন কন্ট্রোল করতে সক্ষম।

Disk Management টুল খোলা

ডিস্ক ম্যানেজমেন্ট টুল খোলার জন্য, প্রথমে Windows + X কী চাপুন এবং পপ-আপ মেনু থেকে Disk Management নির্বাচন করুন। এরপর আপনি “Computer Management” উইন্ডোতে প্রবেশ করবেন, যেখানে বাম পাশের মেনুতে “Disk Management” বিকল্পটি ক্লিক করলেই টুলটি খুলে যাবে। এখানে আপনি পার্টিশন ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার করে পছন্দনীয় পরিবর্তন করতে পারবেন।

How to Create Partition in Windows 11

Windows 11 ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি কম্পিউটার ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার করে সহজেই পার্টিশন তৈরি করতে পারেন। প্রথমে আপনাকে Computer Management এ প্রবেশ করতে হবে এবং তারপর ডিস্ক ম্যানেজমেন্ট টুল সিলেক্ট করতে হবে। নিচে ধাপে ধাপে এটি করার পদ্ধতি দেওয়া হলো:

আরও পড়ুনঃ  উইন্ডোজ ১০ এ নেটওয়ার্ক পিসি দেখার উপায়

পার্টিশন তৈরির প্রথম ধাপ: Computer Management এ প্রবেশ

১. Start Menu থেকে Computer Management এ প্রবেশ করুন। Windows 11 এ এটি খুঁজে পাওয়া খুব সহজ। শুধু Start Menu তে যান এবং সেখান থেকে ‘Computer Management’ টাইপ করুন। এটি খুলুন এবং একবার প্রবেশ করলে আপনি বিভিন্ন ম্যানেজমেন্ট অপশন দেখতে পাবেন।

পার্টিশন তৈরির দ্বিতীয় ধাপ: Disk Management সিলেক্ট

২. Computer Management এর ভিতর থেকে Disk Management টুল সিলেক্ট করুন। এখানে আপনি আপনার সিস্টেমের সকল হার্ড ড্রাইভ এবং তাদের ভাগগুলিকে দেখতে পাবেন। Disk Management টুল ব্যবহারকারীকে নতুন পার্টিশন তৈরি করতে, ড্রাইভ ফরম্যাট করতে এবং ডিস্ক সাইজ পরিবর্তন করতে সহায়তা করে। এটি নিশ্চিত করুন যে আপনি যেই ডিস্কে পার্টিশন তৈরি করতে চান তা নির্বাচন করেছেন।

এই পদ্ধতি অনুসরণ করে, আপনি সহজেই আপনার উইন্ডোজ ১১ কম্পিউটারে নতুন পার্টিশন তৈরি করতে পারেন। এটি সঠিকভাবে করতে পারলে আপনি নিরাপদে এবং দক্ষভাবে আপনার ফাইল এবং তথ্যগুলোকে আলাদা আলাদা পার্টিশন এ সংরক্ষণ করতে পারবেন, যা ফাইল ম্যানেজমেন্ট অনেক সহজ করে দেবে।

পার্টিশনের স্পেস নির্বাচন

যখন আপনি যেকোন পার্টিশন তৈরি করবেন, প্রথমেই আপনাকে পার্টিশন স্পেস নির্বাচন করতে হবে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ এটি হার্ড ড্রাইভ স্পেস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে নির্ধারিত হবে।

উইন্ডোজ ১১ এ, Disk Management টুলের মাধ্যমে পার্টিশন স্পেস নির্ধারণ করা খুবই সহজ। আপনি Computer Management এ প্রবেশ করে Disk Management সিলেক্ট করার পর, পার্টিশনের জন্য কতটুকু স্পেস আপনি বরাদ্দ করতে চান তা নির্ধারণ করতে হবে।

  • প্রথমে, নতুন পার্টিশন তৈরির জন্য Unallocated Space সিলেক্ট করুন।
  • তারপর, New Simple Volume অপশন সিলেক্ট করুন।
  • এবার, একটি উইজার্ড আপনাকে প্রয়োজনীয় হার্ড ড্রাইভ স্পেস নির্ধারণ করতে গাইড করবে।

পার্টিশন স্পেস নির্বাচন করার সময়, আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পরিমাণ স্পেস নির্ধারণ করুন। প্রয়োজনে, আপনি পার্টিশনের আকার পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে এটি নির্ভর করবে হার্ড ড্রাইভ স্পেস ব্যবহারের উপরে।

আরও পড়ুনঃ  উইন্ডোজ ১০ স্ক্রিনসেভার সেট করার সহজ উপায়

কমপ্রেস ও নতুন ভলি�

উইন্ডোজ ১১ এ পার্টিশন তৈরি করার সময় প্রথম কাজটি হলো কমপ্রেস করা। এটি আপনার বিদ্যমান ড্রাইভ থেকে অব্যবহৃত জায়গা কমিয়ে আনতে সহায়তা করে, যা পরবর্তী পর্যায়ে নতুন একটি ভলিউম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কমপ্রেস করার জন্য, আপনার ‘Disk Management’ টুলটি ব্যবহার করতে হবে, যা উইন্ডোজ ১১ এর বিল্ট-ইন টুল।

‘Disk Management’ টুলে প্রবেশ করার পর, আপনার ড্রাইভটি নির্বাচন করুন এবং ডান ক্লিক করে ‘Shrink Volume’ অপশনটি নির্বাচন করুন। এখানে আপনি ঠিক কতটুকু মেগাবাইট কমপ্রেস করতে চান তা নির্ধারণ করতে পারবেন। বিধিক্রম অনুযায়ী, উইন্ডোজ ১১ আপনাকে NTFS ফাইল সিস্টেমে নতুন ভলিউম ফরম্যাট করতে নির্দেশ দেবে।

নতুন ভলিউম তৈরি করতে হলে, কমপ্রেস করা স্পেসটিতে ডান ক্লিক করুন এবং ‘New Simple Volume’ নির্বাচন করুন। এরপর একটি উইজার্ড আপনাকে ধাপে ধাপে নির্দেশনা দেবে, যেখানে আপনি নতুন ভলিউমের সাইজ, ড্রাইভ লেটার, এবং ফাইল সিস্টেম নির্ধারণ করতে পারবেন।

এই প্রক্রিয়াটি শেষ করার পর, আপনি একটি নতুন, অবিক্ষত ভলিউম পাবেন যা আপনি প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করতে পারবেন। যদি কখনও নতুন ভলিউমটি মুছে ফেলার প্রয়োজন হয়, তবে আপনি সহজেই ‘Disk Management’ টুলের সাহায্যে তা মুছে দিয়ে অভারলটেড স্পেসটি অন্য পার্টিশনের সাথে একীভূত করতে পারবেন। উইন্ডোজ ১১ এর এই টুলগুলি সহজ ও সুবিধাজনক করে তোলে পার্টিশনিং প্রক্রিয়া, যা আপনার সময় এবং শ্রম বাঁচায়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button