উইন্ডোজে ফোর্স ক্লোজ করার সহজ উপায়
উইন্ডোজে ফোর্স ক্লোজ করার সহজ উপায় খুঁজছেন? আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমাদের আজকের আলোচনায়, বিভিন্ন উইন্ডোজ সংস্করণে কিভাবে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে প্রোগ্রাম বন্ধ করবেন তা জানা যাবে। কেউ কেউ এর প্রয়োজন হতে পারে উইন্ডোজ ফোর্স ক্লোজ টিপস এর জন্য, আর অন্যেরা প্রয়োজনবোধ করতে পারেন প্রোগ্রাম বন্ধ করার উপায়।
উইন্ডোজ ট্রাবলশুটিং-এর মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফোর্স ক্লোজ একটি কার্যকরী সমাধান। সাধারণত প্রোগ্রামের স্থানান্তরণের সময় বিভিন্ন ক্র্যাশ সমস্যা দেখা দেয়, যা প্রোগ্রাম বন্ধ করার জন্য ৮৫% এর ওপের দরকার পরে। এমনকি কম্পিউটার রিস্টার্ট করার পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
অন্যদিকে, সিস্টেম রিস্টোর টুল ব্যবহারের হার প্রায় ৩০%, যা নির্দেশ করে যে অনেকেই এই পদ্ধতির উপর নির্ভর করেন। এখানে আমরা কিছু কার্যকরী ফোর্স ক্লোজ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। তাই উইন্ডোজ ফোর্স ক্লোজ টিপস নিয়ে চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই, আমাদের সাথে থাকুন!
টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার করে ফোর্স ক্লোজ
চলমান প্রোগ্রাম বন্ধ করতে উইন্ডোজ টাস্ক ম্যানেজার একটি কার্যকরী উপায়। এটি বিশেষ করে দরকারী যখন কোনো অ্যাপ্লিকেশন ফ্রিজ হয়ে যায় বা সাড়া দেয় না। তাই উইন্ডোজ টাস্ক ম্যানেজার ও ফোর্স ক্লোজ প্রোগ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টাস্ক ম্যানেজার কীভাবে চালু করবেন
টাস্ক ম্যানেজার চালু করতে কয়েকটি উপায় রয়েছে:
- টাস্ক ম্যানেজার শর্টকাট ব্যবহার করুন। Ctrl + Shift + Esc প্রেস করলেই উইন্ডোজ টাস্ক ম্যানেজার খুলবে।
- দ্বিতীয়ত, Ctrl + Alt + Delete প্রেস করে “টাস্ক ম্যানেজার” নির্বাচন করুন।
- আপনি চাইলে স্টার্ট মেনু সার্চ বারে “টাস্ক ম্যানেজার” লিখে সার্চ করেও এটি চালু করতে পারেন।
উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার রিস্টার্ট করুন
অনেক সময় উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার ফ্রিজ হয়ে যায়, এক্ষেত্রে এটি রিস্টার্ট করলে সমস্যা সমাধান হয়ে যেতে পারে।
- প্রথমে টাস্ক ম্যানেজার খুলুন।
- Processes ট্যাবে গিয়ে “Windows Explorer” পদ্ধতিটি চিহ্নিত করুন।
- “Restart” বা “End Task” বোতাম চাপুন এবং তারপর পুনরায় চালু করুন।
এভাবে, আপনি দ্রুত এবং সহজেই উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারের সমস্যাগুলি সমাধান করতে পারেন।
সিস্টেম রিস্টার্ট করে প্রোগ্রাম বন্ধ করা
অনেক সময়, পিসি রিস্টার্ট বা উইন্ডোজ রিবুট করার মাধ্যমে সহজেই বিভিন্ন প্রোগ্রাম বন্ধ করা যায়। এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি, বিশেষ করে যখন অন্যান্য মেথড কাজ করে না।
রিস্টার্ট করার পদ্ধতি
পিসি রিস্টার্ট বা সিস্টেম রিসেট করার জন্য কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করুন:
- স্টার্ট মেনু: প্রথমে স্টার্ট মেনুতে ক্লিক করুন এবং পাওয়ার বাটনটি খুঁজে বের করুন।
- রিস্টার্ট নির্বাচন: পাওয়ার বাটনে ক্লিক করে রিস্টার্ট অপশনটি নির্বাচন করুন।
- কীবোর্ড শর্টকাট: আপনি কীবোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করেও রিস্টার্ট করতে পারেন। Ctrl+Alt+Delete প্রেস করে স্ক্রিনে আসা অপশন থেকে রিস্টার্ট নির্বাচন করুন।
উইন্ডোজ রিবুট করার সময় আপনার কম্পিউটারের চালানো সমস্ত প্রোগ্রাম বন্ধ হয়ে যায় এবং সিস্টেম নতুনভাবে শুরু হয়। এটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কার্যকরী সমাধান হিসেবে কাজ করে।
এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করে উইন্ডোজ রিবুট বা পিসি রিস্টার্ট সহজেই করা সম্ভব এবং যেকোনো প্রোগ্রাম সমস্যা সমাধানের জন্য উপকারী হতে পারে। সিস্টেম রিসেট করার আগে অবশ্য আপনার কাজটি সেভ করা নিশ্চিত করুন, কারণ রিস্টার্ট করার ফলে সংরক্ষণ করা না হওয়া তথ্য হারিয়ে যেতে পারে।
How to Force Close on Windows – তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার ব্যবহার
অনেক সময় উইন্ডোজ কম্পিউটারে আরম্ভ না করা প্রোগ্রামগুলো ফোর্স ক্লোজ করা প্রয়োজন হয়। এজন্য ফোর্স ক্লোজ সফটওয়্যার অনেক কার্যকর হতে পারে। তৃতীয় পক্ষের টুলস ব্যবহার করে এগুলো সহজে করা সম্ভব। নিম্নে কিছু জনপ্রিয় টুলস এবং সেফটি প্রোটোকলস নিয়ে আলোচনা করা হলো।
সেরা তৃতীয় পক্ষের টুলস
ফোর্স ক্লোজ সফটওয়্যার কয়েকটি পছন্দনীয় নাম হলো:
- Process Explorer – প্রচলিত ও কার্যকর একটি টুল যা মাইক্রোসফট কর্তৃক নির্মিত। এটি খুব সহজেই ব্যবহার করা যায় এবং নানা ফিচারের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে।
- Task Killer – সহজ ও দ্রুত ফোর্স ক্লোজের জন্য একটি ভালো বিকল্প।
- Process Hacker – উন্নত ফিচার বিশিষ্ট একটি টুল যা বিস্তারিত প্রক্রিয়া তথ্য প্রদান করে।
বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন
তৃতীয় পক্ষের টুলস ব্যবহার করার সময় কিছু সেফটি প্রোটোকলস মেনে চলা উচিত:
- বিশ্বস্ত ও পরিচিত উত্স থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করা উচিত।
- সফটওয়্যার ইনস্টল করার সময় তা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত প্রোগ্রাম ইনস্টল হতে দিবেন না।
- সফটওয়্যার ব্যবহারের সময় এন্টিভাইরাস সক্রিয় রাখা এবং নিয়মিত স্ক্যান চালানো অবশ্যই প্রয়োজনীয়।
তৃতীয় পক্ষের টুলস ব্যবহারে সঠিক সেফটি প্রোটোকলস মেনে চললে ফোর্স ক্লোজ সফটওয়্যার ব্যবহারের ঝুঁকি অনেক কমে যায় এবং এটি কার্যকর প্রমাণিত হয়।
কমান্ড প্রম্পট দিয়ে ফোর্স ক্লোজ
অনেক সময় উইন্ডোজে কিছু প্রোগ্রাম ফ্রিজ হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থায় কমান্ড প্রম্পটের কিছু অফিশিয়াল কমান্ড ব্যবহার করে আপনি সহজেই এই প্রোগ্রাম গুলো বন্ধ করতে পারেন। কমান্ড প্রম্পট ট্রিকস জানলে আপনি সহজে প্রয়োজনীয় কমান্ড দিয়ে কাজ করতে পারবেন। নিচে CMD ফোর্স ক্লোজ করার জন্য বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়া হল।
কমান্ড প্রম্পট কীভাবে চালু করবেন
কমান্ড প্রম্পট চালু করার জন্য প্রথমে স্টার্ট মেনুতে ক্লিক করুন। এরপর খুঁজুন cmd এবং কমান্ড প্রম্পট অপশনটি রাইট-ক্লিক করে “Run as administrator” নির্বাচন করুন। এটি হলে কমান্ড প্রম্পট ওপেন হবে যেখানে আপনি কমান্ড লিখতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় কমান্ড সমূহ
নিচের কমান্ড গুলো কমান্ড প্রম্পটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম বন্ধের জন্য ব্যবহার করতে পারেন:
- tasklist – এটি ব্যবহার করলে সিস্টেমে চলমান সব প্রোগ্রামের তালিকা দেখা যাবে।
- taskkill /IM programname.exe /T /F – এই কমান্ডটি ব্যবহারটা প্রোগ্রাম বন্ধ করার জন্য। উদাহরণ হিসেবে, Firefox বন্ধ করতে লিখুন taskkill /IM firefox.exe /T /F।
এছাড়াও, উইন্ডোজের নতুন ভার্সন গুলিতে আপনি একই কমান্ড PowerShell ব্যবহার করেও চালাতে পারেন। কমান্ডস ফর উইন্ডোজ জানার মাধ্যমে আপনি অতিরিক্ত প্রোগ্রামগুলির সমস্যাও সমাধান করতে সক্ষম হবেন।
উইন্ডোজ বিল্ট-ইন টুলস ব্যবহার
উইন্ডোজে সমস্যা সমাধানের জন্য বেশ কিছু নিজস্ব টুল রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ উপকারী। এখানেই উইন্ডোজ DISM টুল এবং সিস্টেম ফাইল চেকার (SFC) কমান্ডের কথা বলা হয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে আপনি সহজে উইন্ডোজ রিপেয়ার কমান্ড চালাতে এবং সিস্টেমের যেকোনো ত্রুটি মেরামত করতে পারেন।
DISM স্ক্যান ও ব্যবহার
DISM (Deployment Imaging Service and Management) টুল ব্যবহার করে আপনি উইন্ডোজ ইমেজ ফাইল স্ক্যান করতে এবং মেরামত করতে পারেন। DISM টুল ব্যবহার করে সিস্টেম ফাইল পুনরুদ্ধার ও আপডেট করা যায়। এটির মাধ্যমে আপনি নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে পারবেন:
- ইমেজ ফাইল মাউন্ট
- ইমেজ ফাইলের স্টেটাস চেক করা
- ইমেজ ফাইল মেরামত
DISM টুল চালানোর জন্য কমান্ড প্রম্পটে DISM /Online /Cleanup-Image /RestoreHealth
কমান্ড ব্যবহার করতে হবে। এটি সিস্টেম ফাইলের সমূহ সমস্যা চিহ্নিত করে মেরামতের চেষ্টা করে।
SFC কমান্ড ব্যবহার
সিস্টেম ফাইল চেকার (SFC) কমান্ড উইন্ডোজে নির্মিত টুল, যা সিস্টেম ফাইলগুলো স্ক্যান করে এবং ত্রুটি পেলে তা মেরামত করে। SFC টুল ব্যবহার করতে হলে কমান্ড প্রম্পট চালু করে sfc /scannow
লিখতে হবে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিস্টেম ফাইল চেক করে এবং প্রয়োজনীয় মেরামত করে।
উইন্ডোজ রিপেয়ার কমান্ড যেমন SFC এবং DISM টুলগুলি ব্যবহারে আপনার সিস্টেমের কার্যক্ষমতা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে। উইন্ডোজ DISM টুল এবং সিস্টেম ফাইল চেকার-এর সহযোগিতায় আপনি সহজেই যেকোনো সিস্টেম ত্রুটি সারাতে সক্ষম হবেন।
ব্যাকগ্রাউন্ড প্রোগ্রাম বন
ব্যাকগ্রাউন্ড প্রোগ্রামগুলি উইন্ডোজ সিস্টেমে অতিরিক্ত লোড সৃষ্টি করতে পারে এবং আপনার সিস্টেমের পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি এড়ানোর জন্য কিছু সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করা যেতে পারে।
টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার করে আপনি দেখতে পারেন কোন প্রোগ্রামগুলি ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান এবং প্রয়োজনীয় হলে সেগুলি বন্ধ করতে পারেন। তবে সমস্ত প্রোগ্রাম বন্ধ করার আগে নিশ্চিত করুন যে সেগুলি জরুরী নয়।
- কার্যপ্রণালীর পরিবেশের মধ্যে গিয়ে দেখুন কোন প্রোগ্রামগুলো সিষ্টেমের বেশী রিসোর্স ব্যবহার করছে।
- স্টার্টআপ ট্যাবে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলিকে নিষ্ক্রিয় করুন।
বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, আপনাকে নিয়মিতভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড প্রোগ্রামের অবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় আপডেট বা আদান প্রদান করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
সঠিক উইন্ডোজ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে আপনি আপনার কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা প্রসারিত করতে পারবেন।
অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আনইন্সটল করা
উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আনইন্সটল করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যা সমগ্র ব্যবস্থার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামগুলি সিস্টেমের মেমরি এবং প্রসেসিং পাওয়ার ব্যবহার করে, যা কম্পিউটারকে ধীরগতির করে তোলে। এমনকি ম্যালফাংশনিং সফটওয়্যারগুলির ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও এর সমাধান প্রয়োজন হতে পারে।
আনইন্সটল করার উপায়
প্রথমে, আপনার সিস্টেম থেকে অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার অপসারণের জন্য উইন্ডোজ আনইন্সটলার ব্যবহার করুন। এটি করার জন্য, “Control Panel” থেকে “Programs and Features” এ যান। তারপর আপনার অপসারণ করতে চাওয়া প্রোগ্রামটি সিলেক্ট করে “Uninstall” বাটনে ক্লিক করুন। এর ফলে যাচাই করার জন্য কিছু ইনস্ট্রাকশন আসতে পারে, যা অনুসরণ করুন।
এছাড়াও, বিভিন্ন তৃতীয় পক্ষের আনইন্সটল প্রোগ্রাম রয়েছে যা আরও ভালোভাবে সফটওয়্যার অপসারণ করতে পারে। যেমন, Revo Uninstaller বা IObit Uninstaller। এই প্রোগ্রামগুলি শুধু সফটওয়্যার অপসারণেই নয়, এগুলির সাথে সংযুক্ত সমস্ত ফাইল ও রেজিস্ট্রি এন্ট্রিগুলিও মুছে দেয়, যা সামগ্রিক কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সরানোর ফলে আপনার কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা হালকা ও দ্রুতগতির হবে। এটি প্রধান সন্তোষজনক কারণগুলির মধ্যে অন্যতম, যা ৭০% স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের স্লো পারফর্মেন্সের জন্য দায়ী। সুতরাং, নিয়মিতভাবে সফটওয়্যার অপসারণ প্রয়োজনীয় এবং কার্যকরী উপায়ে সম্পন্ন করুন এবং আপনার সিস্টেমকে সবসময় দ্রুত ও সুষ্ঠ রাখা সম্ভব করুন।