স্পার্ম কাউন্ট বাড়ানোর উপায় – জেনে নিন
অধিকাংশ পুরুষের জন্য, প্রজনন স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে তাদের স্পার্ম কাউন্টের উপর। প্রায় ১:২০ পুরুষ কম স্পার্ম কাউন্টের সমস্যায় ভুগছেন, যা তাদের উর্বরতায় প্রভাব ফেলে। প্রাকৃতিক এবং জীবনযাপনের উপায়ে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করা সম্ভব। এই নিবন্ধে, আমরা কিভাবে প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করা যায় সেই সমস্ত উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
আপনি হয়তো জানেন না, কিন্তু গোজি বেরি প্রতিদিন ৪২ গ্রাম খেলে এক মাসের মধ্যে স্পার্ম কাউন্ট প্রায় ৫০% বৃদ্ধি পেতে পারে। আবার, সালমন, ম্যাকারেল, কোড, হ্যাডক, আনচোভিস, হেরিংস, এবং সার্ডিনসের মতো মাছে প্রায় ৯০% উপাদান পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক।
ডার্ক চকলেট খেলে কতকগুলো দিনের মধ্যেই স্পার্ম কাউন্ট ও গুণমান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। কুমড়ার বীজে থাকা ফাইটোস্টেরলস এবং জিঙ্ক টেস্টোস্টেরনের স্তর বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
পাতাওয়ালা সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, বাঁধাকপি, ধনেপাতা এবং লেটুস ফোলিক এসিডের গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যা স্বাস্থ্যকর স্পার্ম উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি টেস্টোস্টেরন স্তর বাড়াতে এবং স্পার্ম উৎপাদন ও গুণমান উন্নত করতে সহায়ক।
টমেটো জুস এবং তরমুজ স্পার্মের গতিশীলতা এবং কাউন্ট উন্নত করতে কার্যকর সম্প্রতি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোঁয়া যেমন নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ নি:সন্দেহে আপনাকে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করবে।
স্পার্ম কাউন্ট বোঝা
উর্বরতার অন্যতম মূল উপাদান হলো স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্ট, যা গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করে। একটি স্বাস্থ্যকর স্পার্ম কাউন্ট গর্ভাবস্থার জন্য অত্যাবশ্যকীয়, তাই স্পার্ম কাউন্টের পরীক্ষা করে তার বিশেষত্ব নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্ট কত হওয়া উচিত
স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্টের হার প্রতি মিলিলিটারে ১৫ থেকে ২০০ মিলিয়ন শুক্রাণু হওয়া উচিত। গবেষণা অনুযায়ী গর্ভাবস্থার জন্য স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্ট প্রায় ১৫ মিলিয়ন প্রতি মিলিলিটার প্রয়োজনীয়।
কম স্পার্ম কাউন্টের লক্ষণ
কম স্পার্ম কাউন্টের কারণে প্রায়শই কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না, তবে কিছু ক্ষেত্রে যৌন ডিসফাংশন অথবা গোপনাঙ্গে অস্বাভাবিকতা দেখা যেতে পারে। স্পার্ম কাউন্টের পরীক্ষা করিয়ে কেন এই সমস্যা হচ্ছে, তা সহজে বোঝা যায়। প্রায়শই দেখা যায়, পুরুষরা কম স্পার্ম কাউন্টের সমস্যা নিয়ে সমাধান খুঁজছেন, যা তাদের উর্বরতার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা হতে পারে।
গর্ভাবস্থার জন্য স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্ট
গর্ভাবস্থার জন্য পুরুষের স্পার্ম কাউন্ট স্বাভাবিক মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা দেখিয়েছে যে মিলিলিটারে কমপক্ষে ১৫ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকার প্রয়োজন, যখন প্রতি মিলিলিটারে ৪০ মিলিয়নের বেশি শুক্রাণু থাকলে তা ভালো হিসাবে বিবেচিত হয়। এই সংখ্যা গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
প্রতি মিলিলিটারে ৬০ মিলিয়নের উপরে শুক্রাণু থাকলে সেটাকে চমৎকার মনে করা হয়। যদিও শুক্রাণুর সংখ্যা প্রতি মিলিলিটারে ১৫ মিলিয়নের নিচে থাকলে তা সাধারনত কম বলে গণ্য হয়। নিয়মিত ধূমপান, অত্যধিক মদ্যপান, এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণের ফলে স্পার্ম কাউন্ট স্বাভাবিক মান থেকে কম হতে পারে।
- গড় স্পার্ম কাউন্ট: ১৫ মিলিয়ন থেকে ২০০ মিলিয়নের মধ্যে পরিবর্তিত হয়।
- ভালো স্পার্ম কাউন্ট: প্রতি মিলিলিটারে ৪০ মিলিয়নের বেশি শুক্রাণু।
- চমৎকার স্পার্ম কাউন্ট: প্রতি মিলিলিটারে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি শুক্রাণুর সংখ্যা উন্নত দুর্দান্ত মনে করা হয়।
- খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন: কলা, ডার্ক চকলেট, ডালিম, ঝিনুক শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গুণমান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
গর্ভধারণের জন্য পুরুষদের মধ্যে স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্ট স্বাভাবিক মান বজায় রাখা নিশ্চিত করা জরুরি। শুক্রাণুর সংখ্যা এবং মান বৃদ্ধির জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনশৈলীর গুরুত্ব অপরিসীম।
কম স্পার্ম কাউন্টের কারণ
আজকের ব্যস্ত এবং স্ট্রেসময় জীবনে কম স্পার্ম কাউন্ট একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। এটি বিভিন্ন কারণ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে যা আমরা নিচে আলোচনা করেছি।
হরমোন ভারসাম্যহীনতা
হরমোনাল ইস্যু কম স্পার্ম কাউন্টের একটি প্রধান কারণ। শরীরের হরমোনগুলির যে কোনও ইমব্যালেন্স স্পার্ম উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা হ্রাস পেলে স্পার্ম কাউন্ট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
জেনেটিক কারন
অনেক ক্ষেত্রে, জেনেটিক সমস্যা স্পার্ম কাউন্ট কমানোর মূল কারণ হতে পারে। Z ফ্যাক্টর সিন্ড্রোম, ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোম ইত্যাদি জিনগত অবস্থা পুরুষদের মধ্যে স্পার্ম উৎপাদনের সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে।
চিকিৎসাবিদ্যা শর্ত
নানা চিকিত্সাগত সমস্যা, যেমন ভেরিকোসেল, যা টেস্টিসের মধ্যে শিরাগুলি ফুলে যাওয়া, প্রোস্টেট বা অণ্ডকোষের বিভিন্ন ইনফেকশন, এবং অন্যান্য দীর্ঘ সময় ধরে চলা অসুস্থতা স্পার্ম কাউন্ট হ্রাস করার জন্য দায়ী হতে পারে।
পরিবেশগত বিষয়গুলির
পরিবেশগত প্রভাবও কম স্পার্ম কাউন্টের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। ধূমপান, অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন, মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবহার, কীটনাশক, রাসায়নিক এবং বিকিরণের মতো পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থের এক্সপোজার স্পার্ম মারাত্মকভাবে ক্ষতি করতে পারে।
লাইফস্টাইল পছন্দ
লাইফস্টাইল পছন্দ বা অভ্যাস স্পার্ম কাউন্টের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ধূমপান, মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গ্রহণ, এবং প্রয়োজনের তুলনায় কম শারীরিক পরিশ্রম করা স্পার্ম উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উদ্বেগও স্পার্ম কাউন্টের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
How to Increase Sperm Count
শুক্রাণু সংখ্যা বাড়ানো এবং উর্বরতা উন্নত করার জন্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। এখানে কিছু প্রধান উপায় দেওয়া হলো যা আপনাকে প্রাকৃতিক উপায়ে স্পার্ম বাড়ানো সাহায্য করবে।
খাদ্যাভাস পরিবর্তন
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গ্রহণ স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করতে পারে। পুষ্টিকর খাবার যেমন ফল, শাকসবজি, বাদাম, এবং বীজ খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার, যেমন মাংস, ডিম, এবং দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়া অত্যন্ত জরুরি কারণ জিঙ্কের অভাব নিম্ন মানের স্পার্মের সাথে সম্পর্কিত।
পরিপূরক গ্রহণ
কিছু পুষ্টির পরিপূরক যেমন ডি-আসপার্টিক অ্যাসিড, ম্যাকা রুট, এবং অ্যাশওয়াগান্ধা গ্রহণ প্রাকৃতিক উপায়ে স্পার্ম বাড়ানোর প্রমাণিত হয়েছে। একটি ২০১২ সালের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ২.৬৬ গ্রাম ডি-আসপার্টিক অ্যাসিড গ্রহণ করলে টেস্টোস্টেরন স্তর এবং শুক্রাণু চলাচল বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম করলে টেস্টোস্টেরনের স্তর বাড়ে এবং শুক্রাণুর গুণমান উন্নত হয়। শারীরিক ক্রিয়াকলাপ আমাদের লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে সহায়ক, যা উর্বরতা উন্নত করে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
মানসিক চাপ স্পার্ম কাউন্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ২০২০ সালের গবেষণায় দেখা গেছে যে মানসিক চাপ ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এবং কম স্পার্ম গুণমানের সাথে সম্পর্কিত। তাই যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।
ক্ষতিকারক পদার্থ এড়িয়ে চলুন
তামাক, মদ্যপান, এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য শুক্রাণুর গুণমান কমিয়ে দেয়। সিগারেট ধূমপান ছাড়াও, ভারী মদ্যপান টেস্টোস্টেরনের উত্পাদন কমিয়ে দেয় এবং স্পার্ম উৎপাদনে প্রভাব ফেলে। এ ছাড়াও, প্রসাধনী এবং পেস্টিসাইডের মতো পরিবেশগত টক্সিনগুলিও প্রভাব ফেলতে পারে। এই কারণে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে।
সাম্প্রতিক গবেষণা ও আবিষ্কার
সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য গবেষণা দেখিয়েছে যে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ এবং প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার উর্বরতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবনের প্রতিদিনের কিছু সাধারণ পরিবর্তন এবং প্রকৃতির উপাদানগুলোর সঠিক ব্যবহার উর্বরতা বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে অনেকাংশে বৃদ্ধি করতে পারে।
সুস্থ জীবনধারার প্রভাব
স্বাস্থ্য গবেষণা অনুসারে, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস উর্বরতা বাড়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাবার গ্রহণ এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ আমাদের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উর্বরতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক।
প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার
বিভিন্ন প্রাকৃতিক সমাধান যেমন জিঙ্ক, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি ও ই-এর সঠিক ব্যবহার উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে। এই উপাদানগুলো দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং প্রাকৃতিকভাবে উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
শারীরিক ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
শুক্রাণুর গুণমান ও সংখ্যা বাড়ানোর জন্য শারীরিক ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি, যোগাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব এই ক্ষেত্রে অপরিহার্য।
যোগ ও ধ্যান
যোগাভ্যাস এবং ধ্যান শরীর ও মনকে শিথিল করতে সহায়ক। মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে এটি শুক্রাণুর মানের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। নিয়মিত যোগাভ্যাস শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভাস্কুলার ব্যায়াম এবং কয়েল কার্যক্রম একান্তই প্রয়োজনীয়, যেগুলি শুক্রাণুর গুণমান এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক।
পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা
ঘুমের গুরুত্ব অবহেলা করা যায় না কারণ পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া মানসিক চাপের কারণ হতে পারে, যা শুক্রাণুর উৎপাদন ও মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা ও শারীরিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নেওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী।
পরিপূরক এবং স্পার্ম কাউন্ট
স্বাস্থ্য পরিপূরক গ্রহণ করলে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভাল ফল পাওয়া যায়। বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদানসমূহ শুক্রাণুর গুণগত মান উন্নত করতে কার্যকর। তবে কোন কোন পরিপূরক এবং ভিটামিন সর্বাধিক উপযোগী তা চিন্তা-ভাবনা করে নির্বাচন করা উচিত।
পুষ্টি এবং ভিটামিন
স্বাস্থ্য পরিপূরকের মধ্যে ভিটামিন সি, ই, এবং বি১২ সূক্ষ্মভাবে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ভিটামিন সি একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা উত্তেজনামুক্ত এবং স্থিতিশীল স্পার্ম বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই শুক্রাণুর মেমব্রেন স্থিতিশীল করতে সহায়ক। এছাড়াও, বি১২ ভিটারমিন শুক্রাণুর মেরুদণ্ড শক্তিশালী করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
জিঙ্ক ও কোএনজাইম Q10
জিঙ্ক আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিপূরক যা শুক্রাণুর বৃদ্ধি বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জিঙ্ক এর অভাব স্পার্ম কাউন্ট কমার একটি প্রধান কারণ। একইভাবে কোএনজাইম Q10 শুক্রাণুর শক্তি বাড়াতে সহায়ক। এটি স্পার্মের মোটিলিটি উন্নত করে এবং শুক্রাণুর সর্বোত্তম কার্যকারিতা নিশ্চিত করে।
শুক্রাণু উৎপাদনে জীবনধারার ভূমিকা
শুক্রাণু উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় গুণ বজায় রাখতে স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা যেমন খাদ্যাভাস, শরীরচর্চা, স্ট্রেস ব্যবস্থাপনা, এবং পর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এছাড়াও কোকেন, তামাকজাত দ্রব্য, এবং এলকোহল ব্যবহারে শুক্রাণুর মান কমে যেতে পারে।
নিয়মিত শরীরচর্চা করা শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। শরীরচর্চা করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে, যা শুক্রাণু উৎপাদনে সহায়ক। বিশেষ করে Omega-3 এবং Omega-6 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণমান উন্নত করে। অন্যদিকে, অতিরিক্ত চিনি ও trans fats যুক্ত খাবার শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্ট্রেস কমানোর জন্য যোগ এবং ধ্যান করা অত্যন্ত উপকারী। স্থায়ী স্ট্রেস হরমোন সিক্রেশন প্রভাবিত করে, যা শুক্রাণুর পরিমাণ এবং গুণমান হ্রাস করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে যোগব্যায়াম এবং গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে স্ট্রেস কমানো সম্ভব হলে, শুক্রাণু উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও, খাদ্যাভ্যাস যেমন কলা, রসুন, ডার্ক চকলেট, এবং দুধের সঙ্গে মধু শুক্রাণুর পুষ্টি সরবরাহ করে। এদের গ্রহণ শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল সরবরাহ করে যা শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গতিশীলতা বাড়ায়। ফলস্বরূপ, শুক্রাণুর গুণগত মানও অনেকটাই উন্নত হয়।
FAQ
স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্ট কত হওয়া উচিত?
স্বাভাবিক স্পার্ম কাউন্ট প্রতি মিলিলিটারে 15 থেকে 200 মিলিয়ন শুক্রাণু হওয়া উচিত।
কম স্পার্ম কাউন্টের লক্ষণ কী?
কম স্পার্ম কাউন্ট প্রায়শই কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না, তবে যৌন ডিসফাংশন অথবা গোপনাঙ্গে অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে।
গর্ভধারণের জন্য স্পার্ম কাউন্ট কত হওয়া উচিত?
গর্ভধারণের জন্য স্পার্ম কাউন্ট যথেষ্ট উচ্চ মাত্রায় থাকা উচিত।
কম স্পার্ম কাউন্টের প্রধান কারণগুলি কী?
কম স্পার্ম কাউন্টের প্রধান কারণগুলি হল হরমোন সমস্যা, জেনেটিক ব্যাধি, চিকিৎসা অবস্থা (যেমন ভেরিকোসেল), বিষাক্ত পরিবেশের প্রভাব, এবং প্রতিকূল লাইফস্টাইল যেমন ধূমপান ও মাদক সেবন।
হরমোন ভারসাম্যহীনতা কীভাবে স্পার্ম কাউন্টকে প্রভাবিত করে?
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা শুক্রাণু উৎপাদনকে বিঘ্নিত করতে পারে, যার ফলে স্পার্ম কাউন্ট কম হতে পারে।
কোন খাদ্যাভাস স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে?
যথাযথ পুষ্টিযুক্ত খাদ্যাভাস গ্রহণ, যেমন ফলমূল, শাকসব্জি এবং বাদাম, স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে স্পার্ম কাউন্টকে প্রভাবিত করে?
মানসিক চাপ কমালে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি পেতে পারে। যোগ, ধ্যান, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম সাহায্য করতে পারে।
কোন ভিটামিন এবং পরিপূরকগুলি স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করতে সহায়ক?
ভিটামিন সি, ই এবং বি12, জিঙ্ক, ফোলেট, সেলেনিয়াম, এবং কোএনজাইম Q10 স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতে সহায়ক।
সুস্থ জীবনধারা কীভাবে স্পার্ম কাউন্টে প্রভাব ফেলে?
স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, যেমন নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস এবং ক্ষতিকারক পদার্থ éviter, স্পার্ম কাউন্ট এবং শুক্রাণুর গুণগত মান উন্নত করতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রামের গুরুত্ব কী?
পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম শুক্রাণু উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং মানসিক চাপ কমায়, যা স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতে সহায়তা করে।