ডায়াবেটিস আছে কিনা জানবেন কীভাবে
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা ডায়াবেটিসকে অগ্রাহ্য করে চলেন, কারণ তারা ডায়াবেটিসের লক্ষণ সঠিকভাবে সনাক্ত করতে পারেন না। বাংলাদেশের ডায়াবেটিক সমিতির মতে, প্রায় ৫০% রোগী ডায়াবেটিস নির্ণয় করতে পারেন না। দেশের মোট ১ কোটি ডায়বেটিক রোগীর মধ্যে ৩৫ বছরের ওপরে প্রায় ৮৪ লাখ এবং ২৬ লাখ আছেন ১৮ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে।
গুরুত্বপূর্ণ হলো, আপনার যদি ডায়াবেটিসের লক্ষণ পাওয়া যায় যেমন: অতিরিক্ত তৃষ্ণা, ক্লান্তি, ঘন ঘন প্রস্রাব, ওজন কমা বা বেড়ে যাওয়া, ক্ষুধা বৃদ্ধি, শুষ্ক ত্বক, ক্ষত সেরে উঠতে সময় লাগা, দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন, অবসাদ বা মেজাজ পরিবর্তন, তবে দ্রুত আপনাকে ডায়াবেটিস নির্ণয় করানো উচিত।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের সহজ মাধ্যম হলো গ্লুকোজ মাত্রা পরীক্ষা এবং নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ। দ্রুত ও স্বল্প খরচে ডায়াবেটিস পরীক্ষা স্থানীয় ফার্মেসিগুলোতেও সম্ভব। তাই আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে, যেমন: পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস, সীমিত শারীরিক কার্যকলাপ বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, তাহলে নিয়মিত পরীক্ষা করিয়ে ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস কী?
ডায়াবেটিস হল একটি গুরুতর স্বাস্থ্য অবস্থা যেখানে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে কারণ শরীর ইনসুলিন যথাযথভাবে উৎপাদন বা ব্যবহার করতে সক্ষম নয়। ইনসুলিন হল এক ধরনের হরমোন যা শরীরে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাঁদের ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ না করায় রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যায় এবং এটি শরীরের উপর নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।
ডায়াবেটিস সংজ্ঞা অনুযায়ী, এটি মূলত দুই ধরনের হয়: টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস। টাইপ ১ ডায়াবেটিস সাধারণত শিশু বা কিশোরদের মধ্যে দেখা যায়, যেখানে ইনসুলিন উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। আর টাইপ ২ ডায়াবেটিস সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায় এবং এটি শরীরের ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে হয়।
ডায়াবেটিসের মূল লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বারবার প্রস্রাব হওয়া, অতিরিক্ত পিপাসা লাগা, অকারণে ওজন কমে যাওয়া এবং বাহ্যিক আঘাত ফেলে দ্রুত সুস্থ না হওয়া। নির্ধারিত রক্ত পরীক্ষা ও মেডিকেল চেকআপের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নির্ণয় করা হয়ে থাকে।
জীবনধারা পরিবর্তন, পরীক্ষামূলক প্রয়োজনীয়তা, এবং নিয়মিত গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা সম্ভব। এছাড়া, ডায়াবেটিস নির্ণয় ও ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে এবং নিয়মিত ইনসুলিন গ্রহণ করলে ডায়াবেটিস রোগীরা সুস্থতার জীবনযাপন করতে পারেন।
ডায়াবেটিসের ধরণ
ডায়াবেটিসের তিনটি প্রধান ধরণ আছে। টাইপ 1 ডায়াবেটিস, টাইপ 2 ডায়াবেটিস এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। প্রতিটি ধরণের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। তাই চলুন বিস্তারিত আলোচনায় যাই।
টাইপ 1 ডায়াবেটিস
টাইপ 1 ডায়াবেটিস এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীর ইনসুলিন উৎপাদনে অক্ষম। এটি সাধারণত কিশোর ও যুবকদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। টাইপ 1 ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত ইনসুলিন ইনজেকশনের প্রয়োজন হয় এবং তাদের রক্তে গ্লুকোজ স্তরের উপর নজর রাখতে হবে।
- স্বাভাবিক রক্তে গ্লুকোজ স্তর: খাবার আগে ৩.৫ থেকে ৫.৫ mmol/l
- খাবারের ২ ঘণ্টা পরে প্রায় ৮ mmol/l
- রক্তে গ্লুকোজ স্তরের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ খুব জরুরি
টাইপ 2 ডায়াবেটিস
টাইপ 2 ডায়াবেটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীর ইনসুলিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। এটি সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, কিন্তু বর্তমানে এটি তরুণদের মধ্যেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ওষুধ এবং ইনসুলিন থেরাপি অনেক সময় প্রয়োজন হতে পারে।
- স্বাভাবিক রক্তে গ্লুকোজ স্তর: খাবার আগে ৩.৫ থেকে ৫.৫ mmol/l
- খাবারের ২ ঘণ্টা পরে প্রায় ৮ mmol/l
- রক্তে গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস গর্ভধারণের সময় ঘটে এবং সাধারণত প্রসবের পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তবে এটি নতুন মায়েদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে কারণ এর ফলে ভবিষ্যতে টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই ধরণের ডায়াবেটিসে রক্তে গ্লুকোজ স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- স্বাভাবিক রক্তে গ্লুকোজ স্তর: খাবার আগে ৩.৫ থেকে ৫.৫ mmol/l
- খাবারের ২ ঘণ্টা পরে প্রায় ৮ mmol/l
- গর্ভকালীন সময় নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজ স্তর পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন
সব ধরনের ডায়াবেটিসেই রক্তে গ্লুকোজ স্তর নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার গুরুত্ব খুবই বেশি। প্রতিদিনের খাদ্য গ্রহণ, ওষুধ প্রয়োগ এবং শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখাই হল প্রধান লক্ষ।
ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণসমূহ
ডায়াবেটিস শনাক্ত করার সবচেয়ে সাধারণ উপায় হলো কিছু শারীরিক পরিবর্তনের ভিত্তিতে। এরা সময়মত শনাক্ত হলে শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা কমে।
শরীরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন
ডায়াবেটিস লক্ষণ হিসেবে শরীরে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। যেমন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা এবং বারবার প্রস্রাব যাওয়া। এইসব লক্ষণগুলোকে অগ্রাহ্য করা ঠিক নয়।
উচ্চ রক্ত শর্করা ডায়াবেটিস লক্ষণ হতে পারে। এর পাশাপাশি অব্যাখ্যাত ওজন হ্রাস, ক্ষুধা বৃদ্ধি এবং অব্যাখ্যাত অস্বাভাবিক পেশী ক্লান্তি ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
গ্লুকোজ স্তরের বৃদ্ধি
ডায়াবেটিসের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো রক্তের গ্লুকোজ স্তরের অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি। উচ্চ রক্ত শর্করা প্রায়ই টাইপ 2 ডায়াবেটিসের সাথে যুক্ত। টাইপ 2 ডায়াবেটিস সাধারণত স্থূলকায় ব্যাক্তি এবং ব্যায়াম-রহিত জীবনধারার অভ্যস্ত ব্যাক্তিদের হয়ে থাকে। টাইপ 1 ডায়াবেটিস হলে, ইনসুলিন ইনজেকশনসহ নির্দিষ্ট চিকিৎসা প্রয়োজন।
প্রায় 90% লোকের টাইপ 2 ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তাই উচ্চ রক্ত শর্করার দেখলে একদম ধর্তব্যে আনুন। এছাড়াও, অব্যাখ্যাত অস্বাভাবিক পেশী ক্লান্তি ডায়াবেটিস লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
How to Know if You Have Diabetes
ডায়াবেটিস আছে কিনা তা জানা অত্যন্ত জরুরি। শুধুমাত্র শরীরের সাধারণ লক্ষণ দেখেই এটি নির্ণয় করা সম্ভব নয়। স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা ব্যক্তিগত ডাক্তারের কাছে গিয়ে ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করতে হবে। বর্তমানে প্রচলিত রক্তে শর্করার পরীক্ষা, যেমন ফাস্টিং গ্লুকোজ টেস্ট ও HbA1c, আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারে।
নিয়মিত আত্ম-পরীক্ষা করা এবং লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশু থেকে বৃদ্ধ যেকোনো বয়সে টাইপ 1 ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে, তবে টাইপ 2 ডায়াবেটিস সাধারণত 40 বছরের পর শুরু হয়, যদিও বর্তমানে বাচ্চাদের মধ্যেও এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- হঠাৎ ঝাপসা দেখা
- অতিরিক্ত তৃষ্ণা বা ঘন ঘন প্রস্রাব
- অস্বাভাবিক ক্লান্তি এবং ওজন কমা
- আঘাতের পরে ক্ষত সহজে শুকায় না
- শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রদাহ বা ইনফেকশন
যদি এই লক্ষণগুলি আপনি অনুভব করেন, তবে ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করানো জরুরি। সতর্কতা ও নিয়মিত চিকিৎসা পরীক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের প্রাথমিক সময়েই নির্ণয় করা সম্ভব।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের উপায়
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য বেশ কয়েকটি পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। প্রথম এবং উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হল রক্ত পরীক্ষা, যা ডায়াবেটিস সমস্যার ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকর। এ ছাড়া মেডিকেল চেকআপের মাধ্যমে চিকিৎসকরা উপসর্গ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই রোগের সনাক্ত বহাল করতে পারেন।
রক্ত পরীক্ষা
ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রধানত গ্লুকোজ টেস্ট এবং এইচবিএ1সি পরীক্ষা বিশেষভাবে কার্যকর। গ্লুকোজ টেস্টের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ফাস্টিং ব্লাড সুগার টেস্ট এবং ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট। ফাস্টিং ব্লাড সুগার টেস্টে রোগীকে ৮ ঘন্টা খালি পেটে থাকতে হয় এবং এরপর রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা হয়। ইছছারস সাথে, ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্টে রোগীকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্লুকোজ গ্রহণ করতে হয় এবং কয়েক ঘণ্টা পর রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরের গ্লুকোজ প্রতিক্রিয়া নির্ণয় করা হয়। এছাড়া, এইচবিএ1সি পরীক্ষা, যা সহ দেবদেবী সামগ্রিক ঘোলাইকার পাণীয়ের তিন মাসের গ্লুকোজ স্তরের গড় বুঝাতে সহায়তা করে এবং ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয়ে আরও নির্ধারণ দিতে পারে।
মেডিকেল চেকআপ
ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের মেডিকেল চেকআপ অপরিহার্য। চিকিৎসক সাধারণ উপসর্গ যেমন অতিরিক্ত তৃষ্ণার অনুভূতি, ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া, ক্লান্তি, ঝাপসা চোখের দৃষ্টি ইত্যাদি লক্ষ করে সঠিক মেডিকেল চেকআপ করতে পারেন। এই চেকআপের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পরামর্শ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। নিয়মিত চেকআপ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেমনটি প্রাথমিক নির্ণয়ের ফলে তাদের চিকিৎসা सम्भাব্য হিসাবে রাখা যায়।
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা সঠিক নিয়ন্ত্রণ ও জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিচালনা করা যায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস সবচেয়ে সাধারণ, এবং এটি অতিরিক্ত ওজন বা স্থূল ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। টাইপ ১ ডায়াবেটিস সাধারণত শিশু এবং তরুণ বয়সে নির্ণয় করা হয়, তবে যে কোনও বয়সে হতে পারে এবং এর জন্য প্রতিদিন ইনসুলিন গ্রহণের প্রয়োজন।
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ক্ষুধা, ক্লান্তি, ঘন ঘন মূত্রত্যাগ, তৃষ্ণা, শুষ্ক মুখ, চুলকানি এবং শুষ্ক ত্বক, ঝাপসা দৃষ্টি, অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস এবং মাথা ব্যথা। অন্যদিকে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলির মধ্যে থাকতে পারে অতিরিক্ত ক্ষুধা বা তৃষ্ণা, ঘন ঘন মূত্রত্যাগ, ক্লান্তি, ঝাপসা দৃষ্টি, চামড়ার অন্ধকার, অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস, পুনরাবৃত্ত ঋণান্বিত সংক্রমণ এবং উচ্চ রক্তে শর্করা।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সাধারণত গর্ভাবস্থার ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে স্ক্রীন করা হয়। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জটিলতাগুলির মধ্যে ধীরগতির ক্ষত নিরাময়, চুলকানি ত্বক, ঘন ঘন খামির সংক্রমণ, সাম্প্রতিক ওজন বৃদ্ধি, অন্ধ ত্বকের পরিবর্তন, হাত এবং পায়ে ঝিনচানি, দৃষ্টি হ্রাস, এবং ইরেকটাইল ডিসফাংশন অন্তর্ভুক্ত।
সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC) এর মতে, প্রতি পাঁচ জনের একজন ডায়াবেটিস রোগী জানেন না যে তাদের এই রোগটি রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগী নারীদের মধ্যে যোনির খামির সংক্রমণ এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ বেশি হতে পারে। যা পুরুষের ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ফলে পেশী ক্ষয় হতে পারে। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে এমন ব্যক্তিরা হলেন বয়স্ক, উচ্চ রক্তচাপযুক্ত, অতিরিক্ত ওজনযুক্ত, পরিবারের সদস্যের ডায়াবেটিস ইতিহাসযুক্ত, গর্ভকালীন ডায়াবেটিসযুক্ত, এবং উচ্চ ঝুঁকির জাতিগত গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিরা (আমেরিকান ইন্ডিয়ান/আলাস্কা নেটিভ, এশিয়ান, হিস্পানিক/লাতিনো, এবং অ-হিস্পানিক কালো)।
রোগ নির্ণয়ের পর্যায়ে প্রিডায়াবেটিস সাধারণ সন্দেহজনক হতে পারে, যা যদি এই পর্যায়ে ধরা যায় তাহলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করা সহজ। সপ্তাহে ১৫০ মিনিট শারীরিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক হতে পারে। যাদের আদর্শ ওজনের উপরে ওজন থাকে তাদের জন্য শরীরের ওজন ৫-৭% হ্রাস করা ডায়াবেটিস পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
FAQ
ডায়াবেটিস কি?
ডায়াবেটিস হল একটি গুরুতর স্বাস্থ্য অবস্থা যেখানে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে কারণ শরীর ইনসুলিন যথাযথভাবে উৎপাদন বা ব্যবহার করতে সক্ষম নয়। ইনসুলিন হল এক ধরনের হরমোন যা শরীরে গ্লুকোজ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ডায়াবেটিসের প্রধান ধরণগুলি কি কি?
ডায়াবেটিসের তিনটি প্রধান ধরণ হল: টাইপ 1 ডায়াবেটিস, যেখানে শরীর ইনসুলিন তৈরি করে না; টাইপ 2 ডায়াবেটিস, যেখানে শরীর ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না; এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, যা সাধারণত গর্ভাবস্থায় ঘটে এবং ডেলিভারির পরে উপসংহার হয়ে যায়।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ কি কি?
ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণগুলি হলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা, বারবার প্রস্রাব যাওয়া, দ্রুত ওজন হ্রাস, অব্যাখ্যাত ক্লান্তি, এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি। এছাড়াও, রক্তের গ্লুকোজের বেশি পারমাণবিক মাত্রা ডায়াবেটিসের নির্দেশক হতে পারে।
কীভাবে জানব আমার ডায়াবেটিস আছে কিনা?
ডায়াবেটিস জানার জন্য, শরীরের লক্ষণগুলির পাশাপাশি, নিয়মিত চিকিৎসা পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা, এইচবিএ1সি পরীক্ষা হল এই অবস্থার নির্ণয়ের মূল পদ্ধতি।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য কী পরীক্ষা করা হয়?
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য মূলত তিনটি পরীক্ষা প্রধান। ফাস্টিং ব্লাড সুগার টেস্ট, ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট, এবং এইচবিএ1সি টেস্ট। একজন চিকিৎসকের মেডিকেল চেকআপও এই রোগের সাধারণ উপসর্গগুলির উপরে ভিত্তি করে হতে পারে।
টাইপ 1 ডায়াবেটিস কী?
টাইপ 1 ডায়াবেটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। এটি সাধারণত শিশু বা কিশোর বয়সে ধরা পড়ে এবং আজীবন এর চিকিৎসা প্রয়োজন।
টাইপ 2 ডায়াবেটিস কী?
টাইপ 2 ডায়াবেটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা উপযুক্তভাবে ব্যবহার করতে পারে না। এ ধরনের ডায়াবেটিস বেশিরভাগ সময় বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়, তবে অল্প বয়সেও হতে পারে।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কী?
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে গর্ভাবস্থায় মহিলাদের রক্তে গ্লুকোজের উচ্চমাত্রা দেখা দেয়। সাধারণত ডেলিভারির পর এটি শেষ হয়ে যায়, তবে এটি মা ও শিশুর জন্য কিছু ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।