রক্তের সুগার বাড়ানোর উপায় – সহজ টিপস

রক্তে সুগারের মাত্রা কমে গেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকে, যা বিশেষত ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে দেখা দেয়। এই অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা না করলে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।

রক্তের সুগার বাড়ানো এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া সমাধান করতে কিছু সহজ টিপস অনুসরণ করা যায়। প্রথমত, নিয়মিত খাবার গ্রহণ এবং খাবারে ফাইবার যুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত, কারণ ফাইবার রক্তে সুগারের স্তর কম রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত যা শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং রক্তে সুগারের লেভেল বৃদ্ধি এড়াতে সহায়তা করে।

সুগার লেভেল বৃদ্ধি প্রতিরোধে পুরোদস্তুর খাবার খাওয়ার চেয়ে অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া ভালো, যার মাধ্যমে রক্তে হঠাৎ করেই সুগার বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া, পরিকল্পিত খাবার গ্রহণ এবং অতিরিক্ত মদপান এড়ানোও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

Contents show

হাইপোগ্লাইসেমিয়া কি?

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হল রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কমে যাওয়ার অবস্থা। সাধারণত ইনসুলিন নিতে হয় এমন ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। হাইপোগ্লাইসেমিয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী, যখন রক্তে সুগারের লেভেল কমা অর্থাৎ ৪ মিলিমোল পার লিটার (mmol/L) বা তার নিচে নেমে যায়, তখন এটি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচিত হয়।

এই অবস্থার কারণে ক্ষুধা, তন্দ্রাভাব, ক্লান্তি, অবসাদ, কাঁপুনি, বিভ্রান্তি সহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তীব্র হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ক্ষেত্রে খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়া বা কোমা পর্যন্ত হতে পারে। মস্তিষ্কের সচল থাকা জরুরী, কেননা মস্তিষ্ক বান্ধব গ্লুকোজ অনবরত প্রয়োজন। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়ায় মাথা ঘোরা ও বিভ্রান্তি সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অন্যান্য উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে শরীরে কাঁপুনি, গোলমাল করা, এবং বিব্রত হওয়া। নবজাতকদের মধ্যে, বিশেষ করে যাদের জন্মের সময় কোন স্ট্রেস থাকে, তাদের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে কারণ তাদের মেটাবলিক চাহিদা বেশি থাকে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সংজ্ঞা বুঝতে পারা এবং উপসর্গগুলি চিনতে পারা, কেননা দীর্ঘ সময় সুগার লেভেল কমা থাকলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে।

হাইপো এবং হাইপারগ্লাইসেমিয়া

রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে আমাদের জানতে হবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া এবং হাইপারগ্লাইসেমিয়ার পার্থক্য। দুই ধরনের অবস্থাই গুরুতর হতে পারে, তবে তাদের লক্ষণ এবং প্রভাব সম্পূর্ণ ভিন্ন।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যদি আপনি ডায়াবেটিস রোগী হন। রক্তে সুগার মাত্রা খুব কমে গেলে হাইপো লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন:

  • মাথা ঘোরা এবং দুর্বলতার অনুভূতি
  • বুক ধড়ফড় এবং দ্রুত হৃদস্পন্দন
  • অতিরিক্ত ক্ষুধা এবং ক্লান্তি
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • স্নায়ুর অস্বস্তি এবং ঘামে ভেজা
আরও পড়ুনঃ  দ্রুত ফুলে যাওয়া গোড়ালি কমানোর উপায়

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যাদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস আছে তাদের ৮০% এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস আছে এমন প্রায় ৫০% মানুষ অন্তত মাসে একবার হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় ভোগেন। তাই কোনো লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ১৫-২০ গ্রাম চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত এবং ১৫ মিনিট পর রক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। রক্তে সুগার ৪ পয়েন্টের নিচে নামলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

হাইপারগ্লাইসেমিয়ার বিপদ

হাইপারগ্লাইসেমিয়া হলো এমন অবস্থা যেখানে রক্তে সুগার মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। হাইপারগ্লাইসেমিয়া হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং হৃদরোগসহ কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। নিম্নোক্ত হাইপার বিপদ সম্পর্কে সচেতন থাকা আবশ্যক:

  • হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়
  • কিডনি এবং লিভারের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে
  • দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
  • পায়ের সংক্রমণ এবং আলসার
  • অতিরিক্ত তৃষ্ণা এবং প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি

রক্তে সুগার মাত্রা ৩ পয়েন্টের নিচে নেমে গেলে অবিলম্বে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি, নয়তো অচেতনতা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। সুগার মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শই একমাত্র উপায় যা থেকে আপনি নিরাপদে থাকতে পারেন।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে করণীয়

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা খুব বেশি কমে গেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় এবং এর দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে। তাই হাইপো চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য, প্রথমত হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলো ভালোভাবে বুঝতে হবে। যেমন, ঘাম হওয়া, বুক ধরফর করা, খিদে পাওয়া, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি।

এমন অবস্থায় বিভিন্ন সুগার বাড়ানোর উপায় রয়েছে যা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। নিচে উল্লেখিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে:

  • চিনি বা গ্লুকোজ সমৃদ্ধ খাবার যেমন, চিনি, গ্লুকোজ ট্যাবলেট বা ফলের রস শীঘ্রই গ্রহণ করুন।
  • প্রাণিজাত প্রোটিন এবং ভালো মানের ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খান। এটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
  • প্রতিদিনের খাবার সময়মত গ্রহণ করুন এবং ইচ্ছেমত কোন খাবার বাদ দেবেন না।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। প্রতিদিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল হতে পারবেন।

রক্তের সুгার কমে যাওয়ার কারণ

রক্তে সুগার কমে যাওয়ার বিভিন্ন কারণ বিদ্যমান। প্রধানত ঔষধ, খাবারের অভ্যাস, এবং অতিরিক্ত ব্যায়াম এই কারণগুলির অন্তর্ভুক্ত। সঠিক ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্টের জন্য এই কারণগুলি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঔষধের প্রভাব

রক্তে সুগার কমে যাওয়ার কারণে কেন্দ্রীয়ভাবে ঔষধের প্রভাব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ইনসুলিন এবং অন্যান্য ডায়াবেটিস ঔষধ সুগার মাত্রা দ্রুত কমিয়ে দেয়, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়। সংবিধান অনুযায়ী ইনসুলিন প্রভাব হতে পারে অতিরিক্ত ডোজ বা ভুলভাবে ইনজেক্ট করার কারণে।

খাবার খাওয়া বিষয়ক কারণ

অনিয়মিত খাবার খাওয়া, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা, অথবা এমন খাবার খাওয়া যা রক্তে সুগার দ্রুত কমিয়ে দেয়, এসব সুগার কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে। ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে নিয়মিত খাবার খাওয়া সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অতিরিক্ত ব্যায়াম

অতিরিক্ত ব্যায়াম রক্তে সুগারের মাত্রা হ্রাস করতে পারে। ব্যায়ামের সময় শরীর অনেক গ্লুকোজ ব্যবহার করে, যা রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য ইনসুলিন প্রভাব এবং ব্যায়ামের সমন্বয় নিশ্চিত করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। সুগার কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত ব্যায়ামও বোঝা প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ  চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়

ব্যক্তিগত অভ্যাস পরিবর্তন

রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যক্তিগত অভ্যাস পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ অভ্যাস গড়ে তোলা এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তন করার মধ্য দিয়ে এ সমস্যা কমানো সম্ভব। নিচে কিছু কার্যকরী টিপস দেওয়া হল যা আপনাকে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

নিয়মিত খাবার গ্রহণ

নিয়মিত খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে আপনি রক্তের সুগার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে পারেন। এতে শরীরের শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে কমে যাওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করা সুস্থ অভ্যাস গড়ে তোলার অন্যতম উপায়।

অতিরিক্ত মদপান এড়ানো

অতিরিক্ত মদপান রক্তের সুগার মাত্রা অস্থিতিশীল করতে পারে। এটি শুধুমাত্র রক্তের সুগারকেই নয়, বরং শরীরের অন্যান্য অংশকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই, লাইফস্টাইল পরিবর্তন করার অংশ হিসেবে অতিরিক্ত মদপান এড়ানো উচিত।

প্রতিদিনের ব্যায়াম

প্রতিদিনের ব্যায়াম রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণের একটি কার্যকর উপায়। ব্যায়াম করলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। সুস্থ অভ্যাস গড়ে তুলতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া নির্ণয়

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত রক্তের সুগার পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে, হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে, যেখানে প্রতিনিয়ত সুগারের মাত্রা পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস।

বাড়িতে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য অনেকেই গ্লুকোমিটার ব্যবহার করে থাকেন। এই কিটগুলো রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে নির্ণয় করে। একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য, হাইপো নির্ণায়নে এই যন্ত্রগুলি খুব কার্যকর। নিয়মিত রক্তের সুগার পরীক্ষা করে আমরা সহজেই হাইপোগ্লাইসেমিয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে পারি।

ভাইপলের ত্রয়ীর লেভেলগুলোর মধ্যে স্তর ১ হাইপোগ্লাইসিমিয়া (সতর্ক মান), স্তর ২ হাইপোগ্লাইসিমিয়া (নিদানিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ), এবং স্তর ৩ হাইপোগ্লাইসিমিয়া (তীব্র) লক্ষণ সবসময় মনোযোগের দাবি রাখে। স্তর ১ হাইপোগ্লাইসেমিয়াতে রক্তের শর্করা মাত্রা

অষ্টম স্তরের হাসপাতাল এবং ডায়াবেটিস কেয়ার ক্লিনিকগুলোতে ব্যবহার করা যায় এমন অত্যাধুনিক যন্ত্রও পাওয়া যায়, যা সুগার পরীক্ষা করতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

আশা করি এই তথ্যগুলো হাইপো নির্ণায়নে আপনাকে আরও সচেতন করবে ও রক্তের সুগার পরীক্ষা নিত্যকর্মে অন্তর্ভুক্ত করতে উৎসাহিত করবে।

তাত্ক্ষণিক করণীয়

হাইপোগ্লাইসেমিয়া যখন ঘটে, তাৎক্ষণিকভাবে করণীয় বিষয়গুলো জানা অত্যন্ত জরুরি। নিম্নোক্ত উপায়গুলো অনুসরণ করে আপনি তাত্ক্ষণিক উপশম পেতে পারেন।

চিনিযুক্ত খাবার

সুগার বৃদ্ধির খাবার যেমন ফলের রস, ক্যান্ডি বা গ্লুকোজ ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন। একটি মাধ্যমিক কলা যা প্রায় ১৪ গ্রাম চিনি ধারণ করে, তা গ্রহণ করতে পারেন। কলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৪২ থেকে ৬২ পর্যন্ত হতে পারে যা তার পাকার ওপর নির্ভর করে। ফলে তাত্ক্ষণিক উপশম পাওয়া যায়।

প্রোটিন ও ফ্যাট

চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণের পরে কিছুটা প্রোটিন ও ফ্যাট গ্রহণ করুন, যেন রক্তের সুগার স্তর বজায় থাকে। উদাহরণস্বরূপ, চিনিযুক্ত খাবারের সাথে বাদাম বা একটি ছোট পিস চিজ গ্রহণ করতে পারেন। এটি সুগার শোষণের গতি কমিয়ে দেয় এবং সুগারের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক।

আরও পড়ুনঃ  শরীরে রক্ত কম হলে কি কি সমস্যা হয়?

আহারের পরে চেকআপ

খাওয়া শেষ করার পর, রক্তের সুগার চেক করুন। এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সকলের দেহ একইভাবে প্রতিক্রিয়া করে না। তাত্ক্ষণিক উপশমের জন্য সুগার বৃদ্ধির খাবারের প্রভাব মনিটর করা প্রচুর সহায়ক।

রাতে রক্তের সুগার কমার সমস্যা

রাত্রিকালীন হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলো এক ধরনের অবস্থা যেখানে রাতের বেলায় রক্তের সুগার ড্রপ করার প্রবণতা দেখা যায়। এটি বিশেষত ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে বেশ প্রচলিত। গবেষণা অনুযায়ী, টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায় ৮০% এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায় ৫০% যারা ইনসুলিন ব্যবহার করেন, তাদের প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার রাত্রিকালীন হাইপোগ্লাইসেমিয়া অভিজ্ঞতা হয়।

রাতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে আপনি হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে যেতে পারেন, মাথাব্যথা এবং প্রচন্ড ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। ঘাম দিয়ে গায়ের চাদর বা বিছানা ভিজে যাওয়াও এর অন্যতম লক্ষণ। এমন অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তা জীবন-হুমকি হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। যখন রক্তের সুগার ৪ পয়েন্টের নিচে আসে, তখন তা চিকিত্সা প্রধান বলে বিবেচিত হয়।

রাতের সুগার ড্রপ কমাতে, নিয়মিত রক্তের সুগার পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার নির্বাচন এবং ঔষধের ডোজ নিয়ন্ত্রণ করে এটি প্রতিরোধ করা যায়। যাদের রাতের বেলার রক্তের সুগার ড্রপ প্রতিনিয়ত হচ্ছে, তারা অবশ্যই একজন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। এতে করে রাতের বেলায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া এড়ানো সম্ভব হবে।

রাত্রিকালীন হাইপোগ্লাইসেমিয়া নিয়ন্ত্রণে নিশ্চিত করতে পারে যে, আপনার দেহের সুগার লেভেল সুষম থাকবে এবং আপনি স্বাস্থ্যকর রাত সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞানলাভ করবেন।

FAQ

হাইপোগ্লাইসেমিয়া কি?

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হল রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কমে যাওয়ার অবস্থা। এটি মূলত ইনসুলিন নিতে হয় এমন ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে দেখা দেয়। রক্তে সুগার ৪ পয়েন্টের নিচে নেমে গেলে এটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ কি কি?

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ হিসেবে মাথা ঘুরা, বুক ধড়ফড়, ক্ষুধা, ক্লান্তি ইত্যাদি দেখা দেয়।

হাইপারগ্লাইসেমিয়ার বিপদ কি?

হাইপারগ্লাইসেমিয়ায় রক্তে সুগারের মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়, যা হৃদরোগ এবং কিডনির সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করতে পারে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে করণীয় কি?

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা উচিত, যার অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে চিনি বা গ্লুকোজ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।

রক্তের সুগার কমে যাওয়ার কারণ কি কি?

রক্তে সুগার কমে যেতে পারে ঔষধের প্রভাবে, অনিয়মিত খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত ব্যায়ামের ফলে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া নির্ণয়ের জন্য কি করা উচিত?

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত রক্তের সুগার পরীক্ষা করা উচিত। বাড়িতে ডায়াবেটিস পরিমাণ মেশিন ব্যবহার করে এটি সহজেই মাপতে পারেন।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া সময় কি খাবার গ্রহণ করা উচিত?

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সময় চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ফ্যাট গ্রহণ এবং খাওয়ার পর রক্তের সুগারের মাত্রা চেকআপ করা প্রয়োজন।

রাতের বেলায় রক্তের সুগার কমে গেলে কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে?

রাতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে গেলে ঘুম ভেঙে যাওয়া, মাথাব্যথা, ক্লান্তি এবং গায়ের চাদর ঘামে ভেজা উল্লেখযোগ্য লক্ষণ।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button