ঘাড়ের ব্যথা কমানোর উপায় – সহজ টিপস

ঘাড়ের ব্যথা আজকাল খুব সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীতকালে এ ধরনের ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা আরো বেশি থাকে। সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস এবং অন্যান্য অনেক কারণ ঘাড়ের নিচের কশেরুকায় ব্যথা সৃষ্টি করে যা কাঁধ এবং হাতেও পৌঁছাতে পারে। যারা ঘাড়ের ব্যথা প্রতিকার খুঁজছেন, তাদের জন্য এই প্রবন্ধে সাধারণ ম্যাসেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঘরোয়া চিকিৎসা এবং ব্যায়াম টিপস দেওয়া হয়েছে।

ঘাড়ের ব্যথা কমানোর জন্য নিয়মিত সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা ও বিশেষ ধরনের ব্যায়ামের অভ্যাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘরোয়া চিকিৎসার মধ্যে আপেল সিডার ভিনেগার, হালকা স্ট্রেচিং এবং আর্নিকা তেল ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। সাধারণ ম্যাসেজের মাধ্যমেও ঘাড়ের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

এগুলো ছাড়াও, আইস প্যাক ব্যবহার এবং ম্যাসেজ থেরাপির মাধ্যমে ঘাড়ের ব্যথা কমানো যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাড়ের মাংসপেশি শক্তিশালী করতে নির্দিষ্ট ব্যায়ামগুলি পরামর্শ দেওয়া হয় যা পেশীর শক্তি এবং নমনীয়তা বৃদ্ধি করে। ফলে, সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস সহ অন্যান্য ঘাড়ের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

Contents show

ঘাড় ব্যথার কারণ

ঘাড় ব্যথা হল একটি অতি সাধারণ সমস্যা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে পারে। ঘাড় ব্যথার বিভিন্ন কারণের মধ্যে রয়েছে শরীরিক চাপ, খারাপ দেহভঙ্গি, বয়সজনিত সমস্যা, এবং মানসিক চাপ। এছাড়াও মেরুদণ্ড ব্যাধি এবং পেশীর টান সহ অন্যান্য কারণেও ঘাড় ব্যথা হয়।

শারীরিক চাপ

অনেক সময় অতিরিক্ত শারীরিক চাপ, যেমন ভারি ওজন তোলার কারণে ঘাড়ের পেশীতে টান লাগে যা ব্যথার সৃষ্টি করে।

বয়স

বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হাড় এবং পেশীর দুর্বলতা বৃদ্ধি পায়, যা মেরুদণ্ড ব্যাধিতে রূপ নেয় এবং ঘাড় ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

দেহভঙ্গি বা পশ্চার

অতিরিক্ত সময়ের জন্য খারাপ দেহভঙ্গি ধরে রাখলে বা কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে ঝুঁকে বসলে, ঘাড়ের ব্যথা বৃদ্ধি পায়। সঠিক দেহভঙ্গি বজায় রাখতে হবে আঘাত হ্রাস করতে।

মানসিক চাপ

মানসিক চাপও ঘাড়ের পেশীতে টান সৃষ্টি করতে সক্ষম, যা ঘাড় ব্যথার কারণ হতে পারে।

খেলাধুলা এবং ব্যায়ামজনিত আঘাত

অনিয়মিত এবং অনুপযুক্ত ব্যায়াম বা খেলাধুলার সময় আঘাত পাওয়া ঘাড় ব্যথার অন্যতম কারণ।

পেশীর খিঁচুনি

মাংসপেশীর অতিরিক্ত ব্যবহার বা অস্বাভাবিক কার্যক্রম পেশীর খিঁচুনি এবং টান সৃষ্টি করে, যা ঘাড় ব্যথার কারণ হতে পারে।

বিভিন্ন রোগ

ঘাড় ব্যথার পেছনে বিভিন্ন রোগ যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস, ডিস্ক হের্নিয়েশন এবং অন্যান্য মেরুদণ্ড ব্যাধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ব্যায়ামের মাধ্যমে ঘাড়ের ব্যথা কমানো

ঘাড়ের ব্যথা দূর করার জন্য নিয়মিত ঘাড়ের ব্যথার জন্য ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি পেশীর স্ট্রেন কমাতে এবং মেরুদণ্ডকে সুস্থ রাখতে সহায়ক। বর্তমান সময়ে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা কিছু মৃদু কিন্তু কার্যকর ব্যায়ামের পরামর্শ দেন।

আরও পড়ুনঃ  ওষুধের সঠিক ব্যবহার ও সতর্কতা জানুন

ঘাড়ের ব্যথার জন্য ব্যায়ামনিঃসন্দেহে ঘাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করার অন্যতম উপায়। এখানে একটি সাধারণ ব্যায়ামের তালিকা দেওয়া হলো:

  • মাথা সামনে-পশ্চাতে নোয়ানো: এই ব্যায়ামটি করেলে ঘাড়ের পেশীগুলির স্ট্রেন কমে যায় এবং পেশীর কার্যকারিতা বাড়ে। এটি প্রতিদিন ৫ বার করা উচিত।
  • মাথা ঘোরানো: ঘাড়ের পেশীগুলিকে সক্রিয় করতে এবং পেশীগুলোর শক্তি বাড়াতে এই ব্যায়ামটি খুব উপকারী।
  • পেশী প্রসারিত করা: ঘাড়ের পেশীগুলিকে প্রসারিত করার জন্য স্কন্ধ থেকে ঘাড় পর্যন্ত পেশীগুলিকে আলতো করে টেনে ধরা জরুরি।

এই ব্যায়ামগুলি করার সময়, প্রতিবার ব্যায়ামের পরামর্শ অনুযায়ী পুনরাবৃত্তি করে ধীরে ধীরে বাড়ানো উচিত। যদি ব্যথা বাড়ে বা অসুবিধা হয় তবে যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

শারীরিক স্বাস্থ্য সাধনে এটি অত্যন্ত জরুরি যে, আপনার যোগাযোগ এমন পেশাদার ব্যক্তির সাথে থাক যে আপনাকে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারে। সামগ্রিকভাবে, কিছু ব্যায়াম যেমন মাথা ঘোরানো এবং মাথা সামনে-পশ্চাতে নোয়ানো এবং কিছু মৃদু স্ট্রেচিং কার্যকরী হয়ে দেখা দিয়েছে।

সবশেষে, ঘাড় ব্যথার জন্য ব্যায়াম আপনাকে সহজে দৈনন্দিন জীবনে ব্যথা মুক্ত জীবন যাপন করতে সাহায্য করবে। অতএব, প্রতিদিনের ব্যায়ামের সময়সূচি মেনে চলুন এবং ঘাড়ের যত্ন নিন।

ম্যাসেজ থেরাপির উপকারিতা

ম্যাসেজ থেরাপি একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি যা পেশীর শিথিলতা ও ব্যথা হ্রাস করে এবং রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ম্যাসেজ আপনার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে পারে।

ম্যাসেজের প্রস্তুতি

কোনো ম্যাসেজ থেরাপি শুরু করার আগে সঠিক প্রস্তুতি পদ্ধতি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাসেজের প্রস্তুতির জন্য প্রথমে একটি স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার স্থান নির্বাচন করুন।
ম্যাসেজ থেরাপি বললেও বিভিন্ন থেরাপির পূর্ব প্রস্তুতি আলাদা হতে পারে। প্রয়োজনীয় সব উপকরণ যেমন তেল, তোয়ালে এবং ম্যাসেজ টুলস প্রস্ত্তত রাখুন।

প্রত্যেকদিন ম্যাসেজ প্রয়োগ

রোজকার জীবনে নিয়মিত ম্যাসেজ অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা আপনাকে সর্বোচ্চ উপকার দেয়। নিয়মিত ম্যাসেজ পেশীর শিথিলতা বজায় রাখে এবং শরীরের ব্যথা কমাতে সহায়ক হয়। নিয়মিত ম্যাসেজ গ্রহণের জন্য দৈনিক ১৫-২০ মিনিট সময় বরাদ্দ করা উচিত। এটি আপনার দৈনিক রুটিনের অংশ করে নিলে আপনি আরো বেশি উপকৃত হবেন।

ঘাড় ব্যথার জন্য প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্রতিকার

ঘাড়ের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। এখানে কয়েকটি হোম রেমিডিজ উল্লেখ করা হলো যা নিয়মিত ব্যবহারে ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগার ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেশীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। একটি পরিষ্কার কাপড়ে আপেল সিডার ভিনেগার ভিজিয়ে ঘাড়ে চাপা দিন এবং কিছুক্ষণ রেখে দিন।

হালকা স্ট্রেচিং

নিয়মিত হালকা স্ট্রেচিং করলে ঘাড়ের পেশীর খাঁটুনি দূর হয় এবং ব্যথা প্রশমিত হয়। প্রথমে মাথা সামনের দিকে, তারপর পিছনের দিকে এবং পরে দিকে আলতোভাবে নাড়ান। এই ব্যায়াম প্রতিদিন করলে ঘাড়ের ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।

আর্নিকা তেল

আর্নিকা তেল একটি পরিচিত প্রাকৃতিক প্রতিকার যা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর্নিকা তেল ম্যাসাজ করলে ত্বকের উপর প্রশান্তি আসে এবং ঘাড়ের পেশীর শক্তভাব ধীরে ধীরে দূর হয়। ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে এটি অত্যন্ত কার্যকর।

আরও পড়ুনঃ  ঘন ঘন স্বপ্নদোষ হলে কি ক্ষতি হয়?

আবেদন করণীয় টিপস

প্রতিদিনের জীবনযাত্রার ছোট ছোট পরিবর্তন করে কিভাবে ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধ সম্ভব, তা নিয়ে নিচে কিছু টিপস আলোচনা করা হলো।

  • পোশ্চার মেনে চলুন: দৈনন্দিন কাজের সময় সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা জরুরি। দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার সময় প্রতিটি ২০-৩০ মিনিটে অবশ্যই উঠে দাঁড়ান এবং ঘাড় মেলান।
  • আরামদায়ক চেয়ার ব্যবহার: কাঠের চেয়ার বদলে একটি আরামদায়ক চেয়ার ব্যবহার করুন যা চালণ গতিশীল।
  • বালিশের ব্যবস্থাপনা: রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে মাথার নিচে সঠিক উচ্চতার বালিশ ব্যবহার করুন। আর ঘাড়ের সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি বালিশের ব্যবস্থা করা উচিত।
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ করুন: মাইগ্রেনের উপসর্গ কমানোর জন্য ধূমপান এবং অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পরিহার করা দরকার।
  • পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো মাইগ্রেন এবং ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধে খুবই উপকারী।
  • সঠিক চিকিৎসার অনুসরণ: সাইনাসের প্রদাহে উষ্ণেত্রে বা এন্টিহিস্টামিন ব্যবহার করুন, এবং বেনাইন প্যারোক্সিসমাল পজিশনাল ভার্টিগোর জন্য চিকিৎসা নিন।
  • স্পন্ডিলাইটিসের সচেতনতা: যেনে রাখুন, মেয়েদের স্পন্ডিলাইটিস থাকা স্বাভাবিক এবং জোড় ব্যথা বা হাতে ব্যথা দেখা যেতে পারে।

উপরোক্ত এই টিপসগুলো প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় অভ্যাসে পরিণত করলে ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারবেন। নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম এবং সঠিক অঙ্গভঙ্গি আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।

আইস প্যাক ব্যবহার

ঘাড়ের ব্যথা হ্রাস করতে আইস প্যাক ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রয়োগ কৌশল। ঠান্ডাযুক্ত থেরাপি আপনার ঘাড়ের প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা হ্রাসে সাহায্য করে।

আইস প্যাক প্রস্তুতি

একটি আইস প্যাক তৈরি করা সহজ। প্রথমে, একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে কিছু বরফ টুকরো নিন অথবা আপনি প্রস্তুত আইস প্যাক কিনেও ব্যবহার করতে পারেন। বরফ টুকরোগুলিকে একটি পাতলা তোয়ালে বা কাপড়ের মধ্যে মুড়িয়ে নিন যাতে সরাসরি ত্বকের সাথে সংস্পর্শে না আসে।

প্রয়োগের সঠিক পদ্ধতি

আইস প্যাক প্রয়োগের সময় বেশ কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। আইস প্যাক ত্বকের উপর ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখুন, দিনে কয়েকবার প্রয়োগ করুন। প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এটি সবচেয়ে কার্যকরী। এরপরে, যদি প্রয়োজন হয়, হিট থেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে।

আইস প্যাক প্রয়োগ কৌশল হিসেবে, ব্যথা হ্রাস করতে এবং প্রদাহ কমাতে এটি দিন ২-৩ বার ঘাড়ের ব্যথাযুক্ত অংশে প্রয়োগ করুন। সরাসরি বরফ ত্বকের সঙ্গে লাগাবেন না, তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে মুড়ে ব্যবহার করুন।

সঠিকভাবে আইস প্যাক ব্যবহারের মাধ্যমে, আপনি ঘাড়ের ব্যথা থেকে অনেকখানি রক্ষা পেতে পারেন এবং দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি রোধ করতে পারেন। এই প্রয়োগ কৌশলটি ত্বকের ক্ষতি না করেই ব্যথা হ্রাসে সহায়তা করে।

ঘাড় ব্যথার প্রতিরোধে করনীয়

ঘাড় ব্যথা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের মধ্যে দেখা যায়। ঘাড় ব্যথার কারণে মাংশপেশীর টান থেকে শুরু করে সার্ভাইকাল স্পন্ডাইলোসিসের মতো জটিল সমস্যা হতে পারে। ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধের মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা

সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখার মাধ্যমে ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বসার সময় বা কম্পিউটারে কাজ করার সময় সঠিক অঙ্গভঙ্গি রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। মেরুদণ্ড সোজা রেখে, কাঁধ নিচে রাখা এবং মাথা সোজা রেখে কাজ করা উচিত।

নিয়মিত ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধের অন্যতম কৌশল। প্রতিদিন মৃদু স্ট্রেচিং এবং ঘাড়ের জন্য বিশেষ ব্যায়ামের মাধ্যমে মাংশপেশীর দৃঢ়তা বৃদ্ধি করা যায়। নিয়মিত ব্যায়াম ঘাড়ের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায় এবং প্রতিরোধ কর্মসূচি সফলভাবে পালন করা যায়।

আরও পড়ুনঃ  অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয়?

পর্যাপ্ত বিশ্রাম

শরীরের পুনর্জীবন ও পুনঃস্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রয়োজন। ঘুমানোর সময় ঘাড়ের সঠিক অবস্থানে থাকলে তীব্র ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রামের মাধ্যমে ঘাড়ের মাংশপেশি পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করতে পারে।

How to Relieve Neck Pain: সহজ কৌশল

ঘাড়ের ব্যথা হ্রাসের কৌশল অনুসরণ করলে আপনি দ্রুত আরাম অনুভব করতে পারেন। ব্যথার তীব্রতা কমাতে এবং পেশীগুলি শিথিল করতে হিটিং প্যাড বা উষ্ণ সঙ্কোচনের ব্যবহার কার্যকর হতে পারে। ২০১৪ সালের একটি গবেষণা রিপোর্ট অনুসারে, হিটিং প্যাড রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি এবং পেশী আঘাতের ক্ষেত্রে ব্যথা হ্রাসে সহায়ক হতে পারে।

যদি আপনি ব্যথার থেকে রেহাই পেতে চান, তাহলে প্রতিদিন দু’বার উষ্ণ সঙ্কোচনের ব্যবহার করুন। একটি মাইক্রোওয়েভ হিটিং প্যাড প্রায় ২০ মিনিট পর্যন্ত তাপ ধরে রাখতে পারে। তবে, ইলেকট্রিক হিটিং প্যাড ব্যবহারের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং নির্দেশ অনুসরণ করুন, কারণ এতে ত্বকের পোড়া, বৈদ্যুতিক শক বা আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা ঘাড়ের ব্যথার প্রতিকার ও প্রতিরোধে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। ঘাড়ের ব্যথা হ্রাসের আরেকটি সহজ পদ্ধতি হল, প্রেসার পয়েন্ট ম্যাসাজ। পেশীগুলিতে চাপ প্রয়োগ করে ম্যাসাজ করা ঘাড় ব্যথা দূর করতে এবং পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে।

শেষে, মানসিক চাপ কমানোর জন্য যোগব্যায়াম এবং ডিপ ব্রেথিং প্র্যাকটিসের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। এসব কৌশলগুলি ঘাড়ের ব্যথা কমাতে এবং আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সত্যিই সহায়ক। সুতরাং, ঘাড়ের ব্যথা দূর করতে উপরে উল্লেখিত বিভিন্ন সহজ পদ্ধতি প্রয়োগ করুন এবং আরাম পান।

FAQ

ঘাড়ের ব্যথা প্রতিকার কীভাবে সম্ভব?

ঘাড়ের ব্যথা প্রতিকার করার জন্য সাধারণ ম্যাসেজ, ঘরোয়া চিকিৎসা, এবং নির্দিষ্ট ব্যায়াম টিপস অত্যন্ত কার্যকর।

ঘাড় ব্যথা কেন হয়?

শারীরিক চাপ, বয়স, খারাপ দেহভঙ্গি, মানসিক চাপ, খেলাধুলা এবং ব্যায়ামজনিত আঘাত, পেশীর খিঁচুনি, এবং বিভিন্ন রোগ ঘাড় ব্যথার মূল কারণ।

কোন ব্যায়ামগুলো ঘাড়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে?

মাথা ঘোরানো, মাথা সামনে-পশ্চাতে নোয়ানো, এবং পেশী সক্রিয় করার জন্য নির্দিষ্ট ব্যায়ামগুলো ঘাড়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

ম্যাসেজ থেরাপির উপকারিতা কী?

ম্যাসেজ থেরাপি পেশীর শিথিলতা এনে দেয়, ব্যথা হ্রাস করে, এবং রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। ম্যাসেজের প্রস্তুতি ও পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে সর্বোচ্চ উপকারিতা পাওয়া যায়।

ঘাড় ব্যথার জন্য প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্রতিকার কী কী?

আপেল সিডার ভিনেগার, হালকা স্ট্রেচিং, এবং আর্নিকা তেল ঘাড় ব্যথার জন্য কার্যকর প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্রতিকার।

প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় কীভাবে ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধ করা যায়?

সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আইস প্যাক তৈরি ও প্রয়োগের সঠিক পদ্ধতি কী?

আইস প্যাক প্রস্তুতি খুব সহজ এবং প্রয়োগের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে, এটি ব্যথা ও প্রদাহ হ্রাস করে। প্রয়োগের সময় সঠিক নিয়ম মেনে চলার বিষয় বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধের জন্য কী কী করনীয়?

সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করে যাওয়া, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, নিয়মিত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অভ্যাস রক্ষাও জরুরি।

ঘাড়ের ব্যথা হ্রাসের সহজ কৌশল কী?

ব্যথা হ্রাসের সহজ কৌশলের মধ্যে নিয়মিত ব্যায়াম, আইস প্যাক, সাধারণ ম্যাসেজ, এবং প্রাকৃতিক প্রতিকার ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button