উইন্ডোজ ১০-এ মাই কম্পিউটার দেখার উপায়
উইন্ডোজ ১০ একটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম যা ডিজাইন করা হয়েছে ১৯০টি দেশের ১৫০ কোটি ব্যবহারকারীর জন্য। মাইক্রোসফটের ভাইস প্রেসিডেন্ট টেরি মেয়ারসন জানিয়েছেন, জুন ২৯, ২০২৩ থেকে উইন্ডোজ ১০ ফাইনাল ভার্সন বাজারে আসবে। এটি উইন্ডোজ ৭ এবং ৮.১ ব্যবহারকারীদের জন্য বিনামূল্যে ডাউনলোড করার সুবিধা দেবে।
উইন্ডোজ ১০ ব্যাবহারকারীদের জন্য “মাই কম্পিউটার” আইকন দেখার টিউটোরিয়াল অনুসরণ করে সহজেই ডেস্কটপ কনফিগারেশন করতে পারেন। “মাই কম্পিউটার” বা ‘This PC’ আইকনটি আপনাকে আপনার ডিভাইসের স্টোরেজ ড্রাইভ এবং অন্যান্য সংযুক্ত আইটেমগুলি সহজেই অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করে। এই আইকনটি ডেস্কটপে স্থাপন করতে, আপনাকে কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
প্রথমে আপনাকে ডেস্কটপে ডান-ক্লিক করে “Personalize” অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। এরপর “Themes” ট্যাবে ক্লিক করে, “Desktop icon settings” খুঁজে নিতে হবে। এই সেটিংসে প্রবেশ করার পরে, আপনি “Computer” বা “This PC” অপশনটি চেকমার্ক দিয়ে অ্যাপ্লাই এবং ওকে বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার ডিসেকটপে “মাই কম্পিউটার” আইকনটি দেখতে পাবেন।
উইন্ডোজ ১০ টিউটোরিয়াল অনুসরন করে, বিভিন্ন কনফিগারেশন ডিফল্ট ভাবে সেট করুন এবং নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করুন। এর ফলে আপনার ডেস্কটপ বেড়ে যাবে এবং অপারেটিং সিস্টেমটি আরও কার্যকর হবে।
উইন্ডোজ ১০ পরিচিতি
২০১৫ সালে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১০ প্রবর্তন করে, যা দ্রুত বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমগুলির একটি হয়ে ওঠে। উইন্ডোজ ১০ এর বৈশিষ্ট্যগুলি মূলত ব্যবহারকারীর সুবিধার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। এর সামঞ্জস্যপ্রবণ ডিজাইন এবং উন্নত প্রযুক্তি সেটআপগুলো নতুন পর্যায়ের কম্পিউটিং অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। ডিসেম্বর ২০২০ সালের শেষ নাগাদ, উইন্ডোজ ১০ এর বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে এবং এটি প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে।
উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার সময়োপযোগী এবং সহজলভ্য। মাইক্রোসফটের লক্ষ্য ছিল এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করা আরও সুবিধাজনক হয়। এটি দেখে মনে হয় সেই লক্ষ্য অনেকাংশে পূর্ণ হয়েছে।
উইন্ডোজ ১০-এর সফলতার একটি বড় কারণ হলো এর বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ও ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যতা। এটি পিসি, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, এবং হাইব্রিড ডিভাইসগুলোর সাথে সমানভাবে কাজ করতে পারে। অ্যাকশান সেন্টার, ভার্চুয়াল ডেস্কটপ, এবং কোর্টানা ব্যক্তিগত অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সাথে সাথে উইন্ডোজ ১০ বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
সর্বোপরি, উইন্ডোজ ১০ বৈশিষ্ট্য সমূহের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হলো প্রতিনিয়ত সিকিউরিটি আপডেট যা ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার এর ফলে নিরাপত্তার বিষয়ে তেমন দুশ্চিন্তা করতে হয় না। এই সিস্টেমটি ব্যবহারকারীর ব্যাক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে সমান গুরুত্ব রাখে।
উইন্ডোজ ১০ এর ইনস্টলেশন পদ্ধতি
উইন্ডোজ ১০ ইনস্টলেশন সমাপ্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ধাপ সমূহ সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার নতুন উইন্ডোজ এক্সপেরিয়েন্স আরও মসৃণ হবে। এই ধাপগুলো কম্পিউটার সেটআপ সহজ করে এবং নিশ্চিত করে যে আপনি যাবতীয় ফিচার এবং আপডেটগুলোর সুবিধা পাচ্ছেন।
ইনস্টলেশন সম্পন্ন করার পদ্ধতি
উইন্ডোজ ১০ ইনস্টলেশন প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হল আইএসও ফাইল ডাউনলোড করা। আপনি মাইক্রোসফটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আইএসও ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারবেন।
- প্রথমেই একটি বুটেবল USB তৈরি করতে হবে। এজন্য Rufus বা Microsoft’s Media Creation Tool ব্যবহার করতে পারেন।
- কম্পিউটারে USB ইনসার্ট করে BIOS বা UEFI সেটিংসে প্রবেশ করুন। BIOS-এ প্রবেশ করতে সাধারণত Delete, F2, বা Esc কী চাপতে হয়।
- BIOS সেটিংসে গিয়ে প্রথম বুট ডিভাইস হিসেবে USB নির্বাচন করুন।
- পিসি রিস্টার্ট করুন এবং USB থেকে বুট হবে। উইন্ডোজ সেটআপ স্ক্রিন আসার পর Install Now ক্লিক করুন।
- আপনার লাইসেন্স কী প্রদান করুন, পরবর্তী ধাপে ইন্সটলেশন ড্রাইভ নির্বাচন করুন। যদি প্রয়োজন থাকে, পার্টিশন পরিবর্তন বা ফরম্যাট করতে পারেন।
- ইন্সটলেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে সময় নেয় প্রায় ২০-৩০ মিনিট। ইনস্টলেশন সম্পন্ন হলে আপনার পিসি কয়েকবার রিস্টার্ট হতে পারে।
ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর আপনার কম্পিউটারটি উইন্ডোজ ১০ এর সাথে পুরোপুরি প্রস্তুত। উইন্ডোজ ১০ ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া শেষে প্রথমবার কম্পিউটার সেটআপ করার পর আপনি অধিক মসৃণ এবং নিরাপদ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় আপডেট এবং ড্রাইভার ইনস্টল করতে হবে।
Customizing Windows 10 for Better Performance
উইন্ডোজ ১০ কে আরও কার্যকরী করতে প্রয়োজনীয় কিছু আপগ্রেড ও কনফিগারেশনের মাধ্যমে কম্পিউটার পারফরমেন্স উন্নত করা যেতে পারে। দ্রুতগতির কম্পিউটারের জন্য উইন্ডোজ ১০ অপ্টিমাইজেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। নীচে উইন্ডোজ ১০ অপ্টিমাইজেশনের জন্য কিছু পরামর্শ দেয়া হলো।
মিনিমাম হার্ডওয়্যার রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ ১০ ভালভাবে চালানোর জন্য কম্পিউটারের মিনিমাম হার্ডওয়্যার রিকোয়ারমেন্ট আছে। এখানে ৪ গিগাবাইট র্যাম আবশ্যক। র্যামের পরিমাণ বাড়ানো হলে উইন্ডোজ ১০ অপ্টিমাইজেশন আরও কার্যকর হবে। SSD (সলিড স্টেট ড্রাইভ) ব্যবহার করলে বুট টাইম এবং প্রোগ্রাম লোডিং টাইম দ্রুত হয়। HDD এর বদলে SSD ব্যবহার করাটা কম্পিউটার পারফরমেন্স এর জন্য ভালো।
- ৪ গিগাবাইট র্যাম উইন্ডোজ ১০ চালানোর জন্য মিনিমাম
- SSD বৃহত্তর বুট টাইম ও প্রোগ্রাম লোডিং টাইম দেয়
- র্যামের পরিমাণ বৃদ্ধি করা একটি বড় পারফরমেন্স পরিবর্তন আনতে পারে
উন্নত হার্ডওয়্যার ব্যবহার
উন্নত হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে উইন্ডোজ ১০ অপ্টিমাইজেশন করা যায়। র্যামের পরিমাণ ১৬ গিগাবাইট করা হলে স্বল্প খরচে ভাল পারফরমেন্স পাওয়া যায়। এক্সটার্নাল SSD ব্যবহার করেও অ্যাপ্লিকেশনের গতিবৃদ্ধি করা সম্ভব। আরও একটি পদক্ষেপ হলো পাওয়ার সেটিংস পরিবর্তন করা। ব্যাটারির আইকনে ক্লিক করে বা ট্রে থেকে পাওয়ার প্ল্যান পরিবর্তন করে কম্পিউটারকে “High Performance” মুডে চালানো যেতে পারে।
- ১৬ গিগাবাইট DDR4 RAM সিস্টেমের গতি বাড়াতে সস্তায় পাওয়া যায়
- এক্সটার্নাল SSD দ্রুতগতির জন্য উপযোগী
- আপনার পাওয়ার সেটিংস “High Performance” মোডে পরিবর্তন করুন
এছাড়াও, উইন্ডোজ ১০ এ রুটিন সিস্টেম মেইনটেনেন্স এর মধ্যমে কম্পিউটার পারফরমেন্স উন্নত করা যায়। ডিস্ক ক্লিনআপ ও স্টোরেজ সেন্স উইন্ডোজ ১০ এর সিস্টেম স্টোরেজ পরিচ্ছন্ন রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে ফেলে। সেটিংস-এর উইন্ডোজ ডিফেন্ডার সিকিউরিটি সেন্টারে আপনি অ্যাপ্লিকেশন বা স্টোরেজ সংক্রান্ত পারফরমেন্স সমস্যা নিয়ে সতর্কতা পাবেন। এগুলি নিয়মিত নিরীক্ষণ দ্বারা উইন্ডোজ ১০ অপ্টিমাইজেশন করা সম্ভব।
উপরের পরামর্শগুলি অনুসরণ করলে আপনি সহজেই উইন্ডোজ ১০ অপ্টিমাইজেশন করে আপনার কম্পিউটার পারফরমেন্স বাড়াতে পারেন। সঠিক হার্ডওয়ার এবং কার্যকরী অপ্টিমাইজেশন কৌশল অনুসরণ করে আপনার উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উন্নত হবে।
প্রথমবার উইন্ডোজ ১০ সেটআপ করার পর করণীয়
প্রথমবার উইন্ডোজ ১০ ইনস্টলেশনের পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয় রয়েছে যা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। বিশেষ করে, ড্রাইভার ইনস্টলেশনের প্রযুক্তিগত দিকগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধাপে ড্রাইভার ইনস্টলেশন পর্বের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
ড্রাইভার ইনস্টলেশন
উইন্ডোজ ১০ প্রথমবার সেটআপ করার পর, প্রয়োজনীয় সব ড্রাইভার ইনস্টল করা অপরিহার্য। ড্রাইভার ইনস্টলেশনের মাধ্যমে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার উপাদানগুলো যেমন গ্রাফিক কার্ড, সাউন্ড কার্ড, নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করবে।
ড্রাইভার ইনস্টলেশনের জন্য আপনি নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
- প্রথমে, আপনার কম্পিউটারের নির্মাতা ও মডেল অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে সঠিক ড্রাইভার ডাউনলোড করুন।
- এরপর, একে একে ডাউনলোড করা ফাইলগুলো খুলে ইনস্টল করুন। ইনস্টলেশন প্রক্রিয়ার সময় ইন্টারনেট সংযোগ সক্রিয় রাখুন।
- Device Manager থেকে চেক করে নিশ্চিত করুন সব ড্রাইভার সঠিকভাবে ইনস্টল হয়েছে কিনা।
প্রার্থনীয় ড্রাইভার ইনস্টলেশন ব্যর্থ হলে, এককভাবে আপডেট বা পুনরায় ইনস্টল করার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। সঠিক ড্রাইভার ইনস্টলেশনের মাধ্যমে আপনার উইন্ডোজ ১০ সেটআপের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে ও কম্পিউটার সঠিকভাবে কাজ করবে।
আপনার ডেস্কটপে ‘This PC’ আইকন যু�
অনেক ব্যবহারকারীই তাদের উইন্ডোজ ১০ ডেস্কটপে ‘This PC’ আইকনটি দেখতে পান না, যেটি প্রায় ৬০% ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে ঘটে। এটি সাধারণত ইনস্টলেশনের পর বা কোনও কারণে আইকনটি মুছে গেলে ঘটে। আপনার ডেস্কটপে ‘This PC’ আইকন যুক্ত করতে খুব সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন, যা পরে আপনার ব্যবহার আরও সহজ ও সুবিধাজনক করবে।
প্রথমে ডেস্কটপে ডান ক্লিক করুন এবং “Personalize” অপশনটি সিলেক্ট করুন। এরপর ‘Themes’ সেকশনে যান এবং ‘Desktop icon settings’ এ ক্লিক করুন। এখানে আপনি ‘Computer,’ ‘User’s Files,’ ‘Network,’ এবং ‘Recycle Bin’ এর মত বিভিন্ন আইকন দেখতে পাবেন, এগুলোতে টিক চিহ্ন দিয়ে দেওয়া যেতে পারে। ‘Computer’ আইকনটিতে টিক দিন এবং অ্যাপ্লাই করুন। এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে আপনার ডেস্কটপে ‘This PC’ আইকনটি প্রদর্শিত হবে।
আপনার ডেস্কটপকে আরও সুন্দর ও কাস্টমাইজড করতে, ‘Desktop icon settings’ ডায়লগ বক্স থেকে বিভিন্ন আইকনও সিলেক্ট করতে পারেন। এটির পাশাপাশি, উইন্ডোজ ১০ এ ব্যবহারকারীদের ডিফল্ট সেটআপ থাকার পরে তারা সাধারণত আরও কিছু কাস্টমাইজেশন করেন যেমন স্ক্রীন সেভার সেটআপ, ডেস্কটপ ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন, সাউন্ড সেটআপ, উইন্ডো কালার চেঞ্জ, টাস্কবার এবং স্টার্ট মেনু সেটআপ।
তাছাড়া, যদি কোনও কারণে আপনাদের ডেস্কটপের আইকন গুলি অদৃশ্য হয়ে যায় তবে সমস্যাটি সমাধানের জন্য সহজতম উপায় হলো সিস্টেমটি রিবুট করা অথবা একটি নতুন ক্যাশ ফাইল তৈরি করা। উইন্ডোজ ১০-এর মতো প্ল্যাটফর্ম প্রতিদিন প্রচুর ব্যবহারকারী কর্তৃক ব্যবহৃত হয়, যেমন প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডিভাইস, তাই এই সার্ভিসগুলি সহজেই এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম।