কিডনি ইনফেকশন চিকিৎসার উপায়

কিডনির ইনফেকশন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা প্রায়শই ব্যাকটেরিয়ার কারণে সৃষ্টি হয়। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত মূত্রনালীর মাধ্যমে কিডনিতে প্রবেশ করে। প্রতি ৩০টি ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) ভোগা ব্যক্তির মধ্যে একটি কিডনি সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। মহিলারা সাধারণত পুরুষদের চেয়ে বেশি কিডনি সংক্রমণে ভুগে থাকেন। কিডনি ইনফেকশন চিকিৎসা দ্রুত শুরু না হলে কিডনির স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে, যা আরও জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।

কিডনি রোগ নিরাময় এবং কিডনি সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি সংক্রমণের লক্ষণ দেখালে তা প্রায়ই পাঁচ দিনের মধ্যে উন্নতি করে এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স ২ সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণ হয়। সুতরাং, কিডনি সংক্রমণ প্রশমিত ও প্রতিরোধ করতে সময়মতো চিকিৎসা এবং সচেতনতা খুব জরুরি।

Contents show

কিডনি ইনফেকশন কি?

কিডনি ইনফেকশন, যাকে পাইলোনেফ্রাইটিসও বলা হয়, হল যখন ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালী হয়ে এক বা উভয় কিডনিতে পৌঁছে একটি ইনফেকশন সৃষ্টি করে। এই সংক্রমণের প্রধান কারণ প্রায় ৮০% ক্ষেত্রে Escherichia coli (E. coli) ব্যাকটেরিয়া। সাধারণত, কিডনি ইনফেকশনটি মূত্রনালীর নীচের অংশে শুরু হয় এবং পরে কিডনিতে ছড়িয়ে যেতে পারে।

পুর্বমেনোপজাল নারীদের ক্ষেত্রে, যৌন সম্পর্ক, পূর্বের মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং স্পার্মিসাইডের ব্যবহার কিডনি ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ায়। পূর্বমেনোপজাল নারীদের প্রস্রাবের সময় শুষ্কতা এবং পুরুষদের প্রস্টেট বৃদ্ধি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়ক। এছাড়াও প্যারালাইজড বা বিছানা নিন শয্যাশায়িত লোকেদের জন্য মূত্রনালীর ক্যাথেটারের ব্যবহারে কিডনি ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে।

কিডনির কিছু গঠনগত অসঙ্গতি বা কিডনি পাথর, মূত্র নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং এর ফলে কিডনি ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে, নারী লিঙ্গ, পুরুষ শিশুদের অপরিচ্ছন্ন খৎনা এবং ককেশীয় জাতির মানুষদের মধ্যে কিডনির সংক্রমণ বেশি ঘটে।

কিডনি সংক্রমণ লক্ষণের মধ্যে জ্বর, বমি বমি ভাব, পেটের ব্যথা, যন্ত্রণাদায়ক প্রস্রাব, প্রস্রাবের তাড়না এবং পিঠ বা পার্শ্বের ব্যথা থাকতে পারে। কিডনি ইনফেকশন চিহ্নিতকরণের জন্য শারীরিক পরীক্ষা, রোগী ইতিহাস পর্যালোচনা, ভিটাল সাইন মূল্যায়ন এবং প্রস্রাব পরীক্ষা প্রয়োজন। সমস্ত এই লক্ষণগুলি সংক্রামক এবং জন্য পর্যবেক্ষণ করা প্রায় অনিবার্য।

কিডনি সংক্রমণের লক্ষণ

কিডনি সংক্রমণের প্রধান উপসর্গগুলি দ্রুত ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে স্বাস্থ্যসেবা নেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। কিডনির সংক্রমণ উপসর্গ সমূহ অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হিসাবে মনে করা হয়, যা চিকিৎসা না করালে বড় সমস্যায় রূপান্তরিত হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  থাইরয়েড এর লক্ষণ

জ্বর

কিডনি সংক্রমণের প্রধান কিডনি সংক্রমণ উপসর্গগুলির মধ্যে একটি হলো জ্বর। এই রোগের প্রভাবিত ব্যক্তিরা তীব্র জ্বরের সম্মুখীন হতে পারেন যা শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করে। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে কম্পন এবং ঠান্ডা অনুভূতি হতে পারে।

পেটে ব্যথা

কিডনির সংক্রমণে পেটে বা কোমরের এক পাশের কিডনির ব্যথা অন্যতম সাধারণ উপসর্গ। এই ব্যথা অস্বস্তিকর হতে পারে এবং অনেক সময় প্রচণ্ড তীব্র হয় যা রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করতে সক্ষম।

শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া

শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়াও এটি কিডনি সংক্রমণের অন্যতম লক্ষণ। অস্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা অনুভূতি বা শীতলতা কিডনি সংক্রমণ উপসর্গ হিসাবে ধরা পড়তে পারে, বিশেষ করে যখন এটি জ্বরের সঙ্গে যুক্ত।

প্রস্রাবে পুঁজ বা রক্ত (হেমাটুরিয়া)

কিডনি সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রস্রাবে পুঁজ বা প্রস্রাবে রক্ত (হেমাটুরিয়া) দেখা যেতে পারে। এটি সংক্রমণের একটি সাধারণ লক্ষণ এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন পড়তে পারে। প্রস্রাবে রক্ত থাকার অর্থ হতে পারে সংক্রমণ মারাত্মক হয়ে যাচ্ছে এবং দ্রুত প্রতিকারমূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন।

কিডনি সংক্রমণের কারণ

কিডনি সংক্রমণ সাধারণত মূত্রনালীর সংক্রমণ থেকে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ঘটে, যা কিডনিতে পৌঁছে ইনফেকশন সৃষ্টি করে। রয়েছে একাধিক কারণ যা কিডনি সংক্রমণকে প্রভাবিত করতে পারে। এই সংক্রমণ ঘটার প্রধান কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস: উচ্চ রক্ত শর্করা এবং দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের ফলে কিডনি সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • স্থানান্তরিত অঙ্গ: কিডনি প্রতিস্থাপন বা অন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
  • মূত্রনালী পথে বাধা: প্রস্রাবের জরিপ কিডনিতে বাধাগ্রস্থ হলে হাইড্রোনেফ্রোসিস সৃষ্টি করে, যা কিডনি সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
  • құрылাইয়ের অস্বাভাবিকতা: জন্মগত সমস্যা বা অন্যান্য কাঠামোগত অস্বাভাবিকতা কিডনি সংক্রমণকে প্রবল করে তোলে।
  • মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালী থেকে কিডনিতে পৌঁছে কিডনি ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া, হাইড্রোনেফ্রোসিসের ফলে কিডনি ফুলে যেতে পারে, যা প্রস্রাব জমার কারণে ঘটে। বাধার ফলে প্রস্রাব জমানে এবং কিডনি ফুলে যায়, যা মূলত একটি কিডনিকে প্রভাবিত করলেও অন্য কিডনি উভয়ের জন্যই কাজ করতে পারে। কিডনি স্টোন, ক্যান্সার বা টিউমার, রক্ত জমাট বাঁধার বিকাশ, জন্মগত সমস্যা এবং ব্লকেজ হাইড্রোনেফ্রোসিসের কারণে হতে পারে, যা কিডনি ইনফেকশনের কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

How to Treat Kidney Infection

কিডনি ইনফেকশনের চিকিৎসার মূল ভিত্তি হলো অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা। প্রাথমিকভাবে, ডাক্তাররা ব্যক্তির স্বাস্থ্য অবস্থা বিবেচনায় এনে নির্ধারিত অ্যান্টিবায়োটিক নির্বাচন করেন। সাধারণত, ৭ থেকে ১৪ দিনের একটি অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল কোর্স প্রেসক্রাইব করা হয়।

সঠিকভাবে চিকিৎসা শুরু করলে কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যেতে শুরু করে। কিডনি ইনফেকশন চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করে লক্ষণ উন্নতি লাভ করলেও পুরো প্রিসক্রিপশন শেষ করতে হবে। অধিকাংশ রোগীকে ঘরে বসেই অ্যান্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামলের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর কিডনি ইনফেকশনজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হতে পারে।

হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রোগীদের প্রায়শই হাইড্রেশন এবং অ্যান্টিবায়োটিক ইনট্রাভেনাস দেওয়া হয়। এই ধরনের অবস্থায় চিকিৎসার সময়সীমা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন হতে পারে। এরপর, রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলে পরিবর্তিত চিকিৎসা প্রটোকল অনুসরণ করতে হয়।

আরও পড়ুনঃ  রক্তে এলার্জি বেশি হলে কি হয়?

পুনরাবৃত্ত কিডনি ইনফেকশনের ক্ষেত্রে, অব্যাহত কিডনি সংক্রমণের অন্তর্নিহিত কারণ নির্ধারণের জন্য আরও পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ইউরিনারি ট্র্যাক্টের কাঠামোগত সমস্যা এমন একটি কারণ হতে পারে যা ঘন ঘন সংক্রমণ সৃষ্টি করে।

গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা এড়াতে কিডনি ইনফেকশন চিকিৎসা পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করা জরুরি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা রোগীদের দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে, যা রোগ প্রতিরোধ এবং পুনরাবৃত্ত সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক।

কিডনি ইনফেকশনের চিকিৎসায় ঘরোয়া উপায়

কিডনি ইনফেকশন থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া চিকিৎসাপ্রাকৃতিক চিকিৎসা বেশ কার্যকরী হতে পারে। নিয়মিত ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করে আপনি সহজেই এই সমস্যার সুরাহা করতে পারেন।

রসুন

রসুন একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা কিডনি ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়ক। এতে থাকে অ্যালিসিন, যা সংক্রমণ সৃষ্টি করা ব্যাকটেরিয়াগুলির বিরুদ্ধে কার্যকরী। এটি ঘরোয়া চিকিৎসার অংশ হিসেবে প্রতিদিন কাঁচা রসুন সেবন করা উপকারী।

হলুদ

হলুদে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রভাব যা সংক্রমণের প্রদাহ কমায়। হলুদের প্রাকৃতিক চিকিৎসা গুণাবলী কিডনি সুরক্ষা বৃদ্ধিতে সহায়ক। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় হলুদ মিশ্রিত দুধ বা চা সেবনে উপকার পাবেন।

আদা

আদা তার ব্যথা নিরাময় ক্ষমতার জন্য পরিচিত। এটি কিডনি ইনফেকশনের কারণে সৃষ্ট ঊক্ত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে। চা বা কাঁচা আদা সেবন ঘরোয়া চিকিসায় কার্যকর হতে পারে।

আপেল

আপেলের ভিটামিন ও মিনারেলস কিডনি সুরক্ষায় এবং সুস্থতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আপেল যুক্ত করলে প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে কিডনি ইনফেকশন প্রতিরোধে শরীর সুস্থ থাকবে।

কিডনি সংক্রমণ প্রতিরোধ

কিডনি সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে এবং কিডনির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে, যা প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের বর্জ্য দূর করতে সহায়ক।

নিয়মিত প্রস্রাবের অভ্যাস বজায় রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কখনোই প্রস্রাব আটকে রাখা উচিত নয়, কারণ এটি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বাড়াতে পারে, যা কিডনি সংক্রমণের কারণ হতে পারে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা স্বাস্থ্য সচেতনতা এর একটি অপরিহার্য অংশ। প্রতিটি প্রস্রাবের পরে ঠিকমতো পরিষ্কার হওয়া এবং যৌনসম্পর্কের পরে প্রস্রাব করা শ্রেষ্ঠ উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা কিডনির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলমূল ও শবজি রাখা উচিত এবং অধিক প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

উপরন্তু, কিডনি সংক্রমণের লক্ষণ এবং জটিলতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো সবচেয়ে জরুরি। মাত্রাতিরিক্ত জ্বর (১০১°F বা ৩৮.৫°C এর উপরে তাপমাত্রা) হলে বা প্রস্রাবে পুঁজ বা রক্ত দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।

সতর্কতা

কিডনি ইনফেকশন প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্য সচেতনতা বজায় রাখতে ও কিডনির যত্ন নিশ্চিত করতে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় মনোযোগে রাখা উচিত।

অ্যালকোহল ও কফি পান থেকে বিরত থাকুন

কিডনি ইনফেকশনের সময় অ্যালকোহল ও কফির মতো ডিহাইড্রেটিং পানীয় থেকে বিরত থাকা উচিত। এই ধরনের পানীয় শরীর থেকে পানির মাত্রা কমিয়ে দেয়, যা কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কিডনির যত্ন বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং ডিহাইড্রেটিং পানীয় পরিহার করা সর্বোত্তম।

আরও পড়ুনঃ  জ্বলুনি গলা শান্ত করার উপায়

সিনথেটিক আন্ডারওয়্যার ও আঁটসাঁট কাপড় পরবেন না

কিডনি ইনফেকশন প্রতিরোধে সিনথেটিক আন্ডারওয়্যার ও আঁটসাঁট কাপড় পরা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে ত্বকের উত্তাপ ও আর্দ্রতা বাড়ে, যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রাকৃতিক ফ্যাব্রিকের আরামদায়ক পোশাক পরিধান করা উচিত যা ত্বক শুষ্ক ও শ্বাসযোগ্য রাখে।

ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার কম খান

কিডনি রোগীদের জন্য ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফসফরাসের উচ্চ পরিমাণ কিডনির কার্যকারিতার উপরে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফসফরাসের গ্রহণ সীমিত রাখা উচিত। স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে এবং কিডনির যত্ন নিশ্চিত করতে একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা উচিত।

FAQ

কিডনি ইনফেকশন কী?

কিডনি ইনফেকশন বা পাইলোনেফ্রাইটিস হল যখন ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালী হয়ে এক বা উভয় কিডনিতে পৌঁছে একটি ইনফেকশন সৃষ্টি করে। এই ইনফেকশনের চিকিৎসা ছাড়া গুরুতর জটিলতা যেমন কিডনি ব্যর্থতা ঘটতে পারে।

কিডনি ইনফেকশনের প্রধান লক্ষণ কী কী?

কিডনি সংক্রমণের প্রধান লক্ষণগুলি হল জ্বর, কোমর ও পেটে তীব্র ব্যথা, অস্বাভাবিক ঠান্ডা অনুভূতি, এবং প্রস্রাবে রক্ত বা পুঁজ দেখা। এই লক্ষণগুলি যদি ঘটে, তবে দ্রুত মেডিকেল সাহায্যের প্রয়োজন।

কিডনি সংক্রমণের কারণ কী হতে পারে?

কিডনি ইনফেকশন সাধারণত মূত্রনালী থেকে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ঘটে, যা কিডনিতে পৌঁছে ইনফেকশন সৃষ্টি করে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, স্থানান্তরিত অঙ্গ, অবাধ্য মূত্রনালী পথের বাধা, অথবা অন্যান্য কাঠামোগত অস্বাভাবিকতা এই সংক্রমণের কারণ হতে পারে।

কিডনি ইনফেকশনের চিকিৎসা কিভাবে করে?

কিডনি ইনফেকশনের চিকিৎসা প্রথমিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক মাধ্যমে করা হয়। ডাক্তাররা প্রায়শই ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা বিবেচনায় নির্ধারিত অ্যান্টিবায়োটিকের ধরন ও মাত্রা নির্ধারণ করেন। পুরো প্রিসক্রিপশন শেষ করা প্রয়োজন, এমনকি লক্ষণ উন্নতি লাভের পরেও।

কিডনি ইনফেকশনের ঘরোয়া চিকিৎসা কী কী?

ঘরোয়া উপায়ে কিডনি ইনফেকশন চিকিৎসায় রসুন, হলুদ, আদা, এবং আপেল বেশ কার্যকর। রসুনের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী, হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রভাব, আদার ব্যথা নিরাময় ক্ষমতা, এবং আপেলের ভিটামিন ও মিনারেলস কিডনি সুরক্ষা ও সুস্থতা বৃদ্ধি করে।

কিডনি ইনফেকশন প্রতিরোধে কি কি করা প্রয়োজন?

কিডনি সংক্রমণ প্রতিরোধে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান, নিয়মিত প্রস্রাবের অভ্যাস, পরিষ্কার পার্সোনাল হাইজিন মেনে চলা, এবং নির্দিষ্ট খাদ্য দস্তুর অনুসরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া অ্যালকোহল ও কফির মত ডিহাইড্রেটিং পানীয় পরিহার করা, সিনথেটিক আন্ডারওয়্যার ও আঁটসাঁট কাপড় বর্জন, এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার কম গ্রহণ করা প্রয়োজন।

কিডনি সংক্রমণের সময় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

কিডনি সংক্রমণের সময় অ্যালকোহল ও কফি পান থেকে বিরত থাকা, সিনথেটিক আন্ডারওয়্যার ও আঁটসাঁট কাপড় পরিহার করা, এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া জরুরী। এগুলি কিডনির স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সহায়ক।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button