মহেশ ভট্ট: বলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক
মহেশ ভট্ট, ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের এক প্রতিষ্ঠিত নাম, যিনি ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ সালে মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেছেন। চলচ্চিত্র পরিচালনা, সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনায় তাঁর অবদান বলিউডের ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। বলিউড পরিচালক মহেশ ভট্ট তাঁর সাহসী ও বিচক্ষণ চিত্রনাট্যের জন্য সর্বদাই সুনাম অর্জন করেছেন, বিশেষ করে ১৯৭০ ও ১৯৮০ দশকে। তাঁর পিতা নানাভাই ভট্ট ও মা শিরিন মোহাম্মদ আলি, যাঁরা তাঁকে সৃষ্টিশীলতার পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
মহেশ ভট্ট শুধুমাত্র একজন বলিউড পরিচালক নন, বরং হিন্দি সিনেমার পরিমণ্ডলে একটি মাইলফলক স্থাপন করেছেন। তাঁর পরিচালিত বিভিন্ন সিনেমা যেমন আর্থ (১৯৮২) এবং সারাংশ (১৯৮৪), বাণিজ্যিক সফলতার শিখরে পৌঁছেছিল এবং এখনও সিনেমা প্রেমীদের মনে অমর হয়ে রয়েছে। সৃজনশীল ও সাহসী চিন্তাভাবনার জন্য তাঁকে সবসময় প্রশংসিত করা হয়। মহেশ ভট্টের সন্তানরাও, বিশেষ করে আলিয়া ভট্ট এবং পূজা ভট্ট, বলিউডের প্রধান চরিত্র হয়ে উঠেছেন।
প্রারম্ভিক জীবন ও পরিবার
বিখ্যাত পরিচালক মহেশ ভট্টের জীবনের সূচনা থেকেই এক অবিস্মরণীয় যাত্রা শুরু হয়েছিল। তাঁর প্রারম্ভিক জীবন এবং পারিবারিক ইতিহাস তাঁকে বলিউডের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
মহেশ ভট্টের শৈশব
মহেশ ভট্ট শৈশব কাটিয়েছেন ভারতের মুম্বাই শহরে। তাঁর পিতা নানাভাই ভট্ট ছিলেন একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং মাতা শিরিন মোহাম্মদ আলী ছিলেন গৃহিণী। মহেশের ছোটবেলার এই পরিবেশই তাঁকে চলচ্চিত্রের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে।
পরিবারের বিবরণ
মহেশ ভট্টের পারিবারিক ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। তাঁর ভাই মুকেশ ভট্টও বলিউডের প্রখ্যাত প্রযোজক। মুকেশ ভট্ট ১৯৫২ সালের ৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন এবং বর্তমানে বিশিষ্ট প্রযোজক হিসেবে পরিচিত। তাঁরা একসাথে বিশেষ ফিল্মস নামে একটি প্রযোজনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা অনেক সফল চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছে। এই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে মহেশ ভট্টের প্রথম স্ত্রী কিরণ, যার সঙ্গে তিনি পরে বিচ্ছেদ করেন, এবং বর্তমান স্ত্রী সোনি রাজদান রয়েছেন। মহেশের সন্তানরাও বলিউডে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন; পুত্র রাহুল ভট্ট এবং কন্যা পূজা ভট্ট ও আলিয়া ভট্ট তাঁর প্রিয়।
প্রথম চলচ্চিত্র ও কর্মজীবনের শুরু
মহেশ ভট্টের বলিউডে অনবদ্য কর্মজীবনের শুরু হয় ১৯৭৪ সালে, যখন মুক্তি পায় তার প্রথম চলচ্চিত্র মঞ্জিলেঁ অউর ভি হ্যাঁয়। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মহেশ ভট্ট তার প্রতিভার প্রাথমিক প্রদর্শন করেন, যা পরবর্তীতে তাকে বলিউডের অন্যতম প্রধান পরিচালকের মর্যাদা করে তোলে।
মঞ্জিলেঁ অউর ভি হ্যাঁয় (১৯৭৪)
মহেশ ভট্টের প্রথম চলচ্চিত্র মঞ্জিলেঁ অউর ভি হ্যাঁয় দিয়ে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। এটি তার পরিচালনা জীবনের মাইলস্টোন হিসেবে বিবেচিত হয়। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি তাঁর সৃজনশীলতা এবং দক্ষতা প্রকাশ করেন। মঞ্জিলেঁ অউর ভি হ্যাঁয় একটি বিশেষ পৃথকত্ব ছিল যার মাধ্যমে মহেশ ভট্ট তার কল্পনাশক্তি এবং পরিচালনার দক্ষতা প্রমাণ করেন।
নির্ধারিত সময়ে মহেশ ভট্ট বিভিন্ন সফল সিনেমা পরিচালনা করেছেন, যেমন “আর্থ” (১৯৮২) এবং “সারাংশ” (১৯৮৪)। তিনি তার কর্মজীবনে অনেক গৌরব অর্জন করেছেন এবং মঞ্জিলেঁ অউর ভি হ্যাঁয় তার পরিচালক জীবনের প্রথম ভিত্তি স্থাপন করে।
বাণিজ্যিক সফল চলচ্চিত্রসমূহ
মহেশ ভট্ট বলিউডে একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবে পরিচিত, যার পরিচালিত বহু ছবিই বাণিজ্যিকভাবে সফলতা অর্জন করেছে। তার মধ্যে দুইটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল আর্থ (১৯৮২) এবং সারাংশ (১৯৮৪)। এই দুটি সিনেমা তখনকার সময়ে সমাজে গভীর প্রভাব তৈরি করেছিল এবং অর্থনৈতিক দিক থেকেও সফলতা লাভ করেছিল।
আর্থ (১৯৮২)
আর্থ এক অসাধারণ সৃজনশীল কাজ, যা মহেশ ভট্টের ব্যক্তিগত জীবনের অনুপ্রেরণায় নির্মিত। ছবিটি একটি ভাল বিক্রি হওয়া চলচ্চিত্র ছিল, যা বক্স অফিসে প্রশংসিত হয়ে ওঠে। আর্থ দর্শকদের মধ্যে একটি আন্তরিক বার্তা পৌছেছিল এবং সেই সময়কার সামাজিক সমস্যা তুলে ধরেছিল, যা তাকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করে
সারাংশ (১৯৮৪)
মহেশ ভট্টের আরেকটি বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র হল সারাংশ। সারাংশ যখন মুক্তি পায়, তখন এটি দর্শকদের মনোজগতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। সারাংশ এর কাহিনি এবং অভিনয়শৈলী বারের পর বার প্রশংসিত হয়েছে। এটির মাধ্যমে মহেশ ভট্ট আবার তার দক্ষতা দেখিয়েছিলেন এবং চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিক সফলতা অর্জন করেছিল।
Mahesh Bhatt এর সেরা মুহূর্তগুলি
মহেশ ভট্ট, বলিউডের এক অবিস্মরণীয় নির্মাতা, তাঁর দক্ষতা এবং বিশেষত্বের জন্য বহু সম্মাননা এবং পুরস্কার অর্জন করেছেন। চলুন, এবার তাঁর জীবনের সেরা কিছু মুহূর্তগুলির দিকে একটু নজর দেওয়া যাক।
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার
মহেশ ভট্টের কর্মজীবনে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এক বিশেষ স্থান অধিকার করে। ‘আর্থ’ (১৯৮২) এবং ‘সারাংশ’ (১৯৮৪) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি শ্রেষ্ঠ সংলাপ এবং শ্রেষ্ঠ কাহিনি বিভাগের পুরস্কার জিতেন। এছাড়া, অনেকবারই তাঁর ফিল্মে অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে, যা তাঁর প্রতিভার দক্ষতা এবং বিশেষত্বের স্বীকৃতি দেয়।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
ভারতের অন্যতম সম্মানজনক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও মহেশ ভট্টের জীবন এবং কর্মজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁর চলচ্চিত্র ‘ড্যাডি’, ‘জখম’ ইত্যাদি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে। ‘জখম’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন, যা তাঁর অনন্য কাহিনিবিন্যাস এবং পরিচালনার নৈপুণ্যকে স্বীকৃতি দেয়।
মহেশ ভট্ট তাঁর কর্মজীবনের মাধ্যমে যে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন, তা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এক উদাহরণ হিসেবে থেকে যাবে। তাঁর কাজগুলি মহেশ ভট্ট অ্যাওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত হয়েছে এবং সমালোচনা থেকে প্রশংসা পর্যন্ত সবকিছু দিয়েই ভরপুর।
প্রযোজক হিসেবে মহেশ ভট্ট
প্রযোজক মহেশ ভট্ট তাঁর চলচ্চিত্র নির্মাণে একটি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। বলিউড দুনিয়ায় তাঁর বিভিন্ন পরিচিতি থাকলেও, প্রযোজনা ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা বিশেষভাবে প্রশংসাযোগ্য।
বিশেষ ফিল্মস
মহেশ ভট্ট এবং তাঁর ভাই মুকেশ ভট্ট মিলে ‘বিশেষ ফিল্মস’ নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা শুরু করেন। বিশেষ ফিল্মস বেশ কিছু স্মরণীয় চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছে যা দর্শকদের মন জয় করেছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে মুক্তি পাওয়া কিছু বিখ্যাত চলচ্চিত্র হল “আশিকী”, “হাম হ্যায় রাহি প্যার কে”, এবং “রাজ”।
মুকেশ ভট্টের সাথে সহকর্মিতা
মুকেশ ভট্টের সাথে মহেশ ভট্টের সাফল্যপ্রাপ্ত সহকর্মিতার উদাহরণ বিশেষ ফিল্মসের প্রতিটি চলচ্চিত্রে দেখা যায়। মুকেশ ভট্টের প্রযোজনা দক্ষতার সাথে মহেশ ভট্টের পরিচালনা মিলে অনেক সফল প্রজেক্ট সম্পন্ন হয়েছে। এই জুটি বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী প্রযোজক-পরিচালক জুটি হিসেবে গণ্য করা হয়।
প্রযোজক মহেশ ভট্ট এবং মুকেশ ভট্ট একত্রে এমন ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন যা দর্শকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। তাদের প্রযোজনার বিষয়বস্তু যেমন বাস্তব জীবনের ইভেন্টগুলির প্রভাব দেখানো, তেমনি তাদের গল্প বলার শৈলীতে ছিল এক নয়া মাত্রা। বিশেষ ফিল্মসের সাফল্যের মূল রহস্য তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং নিত্যনতুন কাহিনীকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা।
আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্র
মহেশ ভট্টের জীবনের বিশেষ ঘটনাবলি এবং অভিজ্ঞতা বলিউডে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। এই আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্রগুলি একদিকে মানুষকে বিনোদিত করে, অন্যদিকে জীবনের প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা দেয়।
জখম (১৯৯৮)
১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জখম হল মহেশ ভট্টের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত একটি বিখ্যাত আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রে তাঁর বাস্তব জীবনের অনেক কঠিন ও সংবেদনশীল মুহূর্ত চিত্রায়িত হয়েছে। মহেশ ভট্টের মা ও তাঁদের সামাজিক অবস্থান চলচ্চিত্রটির প্রধান উপাদান গুলির মধ্যে একটি।
মহেশ ভট্ট ও পূজা ভাটের সহযোগিতায় নির্মিত এই ছবিটি দর্শকদের মর্মস্পর্শী ও চিন্তালোভনীয় করে তুলেছে। জখম একটি উদাহরণ হতে পারে যে কীভাবে ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা এবং জটিলতাগুলি সফলভাবে পর্দায় তুলে ধরা যায়।
এই আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্রটি মহেশ ভট্টের জীবনের সেই পর্যায়কে তুলে ধরেছে, যেখানে তিনি সত্তরের দশকের শেষ ও আশির দশকের প্রথমভাগে সমস্ত সামাজিক বাধা কাটিয়ে উঠতে সংগ্রাম করেছিলেন। এতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে তিনি নিজের পরিবার ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টে দিয়েছেন এবং নিজের স্বকীয়তা প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ভাট পরিবারের নেতৃত্বে
ভাট পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বলিউডের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। মহেশ ভট্ট এবং তাঁর ভাই মুকেশ ভট্ট একসঙ্গে ভাট পরিবারের নাম উজ্জ্বল করেছেন।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ভূমিকাভান
মহেশ ভট্ট তাঁর চলচ্চিত্র নির্মাণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সর্জনাত্মকতাকে নিয়ে এসেছেন, যা তাঁকে ভাট পরিবারের একজন দক্ষ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তার পরিচালিত বেশ কিছু সফল সিনেমা যেমন আর্থ (১৯৮২), সারাংশ (১৯৮৪), এবং জিসম (২০০৩) ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বিশেষ অবদান রেখেছে। বিশেষত, সারাংশ ছিল প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র, যা একাডেমি পুরস্কারের ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে জমা পড়েছিল।
নতুন প্রজন্মের পরিচালকদের জন্য উদাহরণ
মহেশ ভট্টের যাত্রা নতুন প্রজন্মের পরিচালকদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর চলচ্চিত্রগুলি বিভিন্ন বিতর্কিত ও অপ্রচলিত থিমগুলির উপর ভিত্তি করে ছিল, যা নতুন পরিচালকদের নিজেদের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছে। ভাট পরিবারের কর্ণধার হিসেবে, মহেশ ভট্ট সব সময়েই তরুণ প্রতিভাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন এবং তাঁদের মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তার প্রসার ঘটিয়েছেন। ভাট পরিবারের পাশে থেকে, বলিউডের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ভাট পরিবারের অবদান অসামান্য।
মহেশ ভট্টের ব্যক্তিজীবন এবং সম্পর্ক
মহেশ ভট্ট ব্যক্তিজীবন সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও খুবই ঘটনাবহুল এবং গল্পের মতোই আকর্ষণীয়।
প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক
মহেশ ভট্টের প্রথম বিবাহ হয় কিরণ (লরেন ব্রাইট) এর সাথে ১৯৭০ সালে। কিরণের সাথে মহেশের সম্পর্ক থেকে তাঁদের দুই সন্তান পূজা ভট্ট ও রাহুল ভট্ট জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ব্যক্তিজীবনের নানা টানাপোড়েনের কারণে তাঁদের বিবাহ মধুর ছিল না এবং শেষ পর্যন্ত তাঁরা বিবাহ বিচ্ছেদ করেন।
সোনি রাজদানের সাথে বিবাহিত জীবন
১৯৮৬ সালে মহেশ ভট্ট সোনি রাজদানকে বিবাহ করেন। সোনি রাজদান নিজেও একজন সুপরিচিত অভিনেত্রী এবং দুজনেই বলিউডে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। মহেশ ভট্ট ব্যক্তিজীবন এবং সোনি রাজদানের সাথে তাঁর বিবাহিত জীবন এই দুই ব্যক্তিত্বের হাত ধরে আরও পরিণতি পায়। তাঁদের দুই মেয়ে আলিয়া ভট্ট ও শাহিন ভট্ট, বলিউডের জগতে প্রতিভাশালী শিল্পী হিসেবে পরিচিত। মহেশ ভট্ট এবং সোনি রাজদানের সমর্থন ও ভালোবাসা তাঁদের সন্তানদের জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে প্রতিফলিত হয়।
বিতর্ক এবং সমালোচনা
মহেশ ভট্টের জীবনের পথচলায় যেমন বাণিজ্যিক সাফল্য এসেছে, তেমনি বিতর্ক এবং সমালোচনা থেকেও বাদ পড়েননি। তাঁর কয়েকটি সিনেমার বিষয়বস্তু নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যেমন, জনপ্রিয় চলচ্চিত্র “আর্থ” (১৯৮২) প্রভাবিত হয়েছিল তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা পারভিন বাবির জীবনের উপর। তাঁর ব্যক্তিজীবনও সমালোচনার মুখে পড়েছে, যেমন তাঁর মেয়ে পূজা ভট্টের সাথে কিছু মুহূর্ত ভিডিওতে ভাইরাল হওয়ার পর। এসব পরিস্থিতি মহেশ ভট্ট বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছেন।
ব্যক্তিজীবনে মহেশ ভট্ট বহুবার সমালোচিত হয়েছেন। তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী লুভিনা লোধও তাঁকে এক ভিডিও বার্তায় অভিযুক্ত করেন। লুভিনার অভিযোগ ছিল যে ভট্ট ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক মানুষের জীবনে ক্ষতি করেছেন ও কিছু প্রভাবশালী মানুষকে ব্যবহার করে তাদের অবস্থানকে ভুলভাবে ব্যবহার করেছেন। এই অভিযোগগুলি মহেশ ভট্টের অস্তিত্বে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং তাকে সমালোঁচনার মুখে দাঁড় করিয়েছে।
মহেশ ভট্ট বিতর্কের অন্যতম একটি কারণ হলো তাঁর পেশাদারিত্ব এবং শিল্প সৃষ্টির ধরন। তাঁর পরিচালিত কিছু সাহসী ও বিতর্কিত প্রকল্প বলিউডে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে “রোজ” (২০২২), যা মাহেশ ভট্ট পরিচালিত অন্যতম বিতর্কিত সিনেমা। তাঁর ব্যক্তিজীবনের অসমর্থনীয় সিদ্ধান্ত এবং সম্পর্কের কারণে সমালোচনা সামাল দিয়েই আজও তিনি বলিউডে সক্রিয় রয়েছেন।