মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন ঢাকা মেট্রোরেলের অন্যতম প্রধান স্টেশন হিসেবে পরিচিত। এটি মিরপুর এলাকায় অবস্থিত, যা ঢাকার একটি বৃহত্তম আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা। মেট্রো স্টেশন তথ্য অনুযায়ী, এই স্টেশনটি নাগরিকদের দৈনন্দিন যাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং তাদেরকে দ্রুত এবং আরামদায়ক পরিবহন সুবিধা প্রদান করছে।

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন নির্মাণের কাজটি শুরু হয় ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে, এবং ১ মার্চ ২০২৩ থেকে এখানে মেট্রোরেল পরিষেবা শুরু হয়েছে। স্টেশনের স্থানাঙ্ক ২৩.৮০৮৩৪° উত্তর এবং ৯০.৩৬৮২০° পূর্বে অবস্থিত। মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের মাধ্যমে নাগরিকরা আরও দ্রুত এবং সহজে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, যা ঢাকার যানজট কমাতে সহায়ক হবে।

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের অবস্থান

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন ঢাকার মিরপুর এলাকায় অবস্থিত, যা একটি জনবহুল ও ব্যস্ত স্থান।
এই স্থানটি এমআরটি লাইন ৬ এবং এমআরটি লাইন ৫-এর অন্তর্ভুক্ত।
মিরপুর ১০ অবস্থান ঢাকার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সাথে অনায়াসে যুক্ত করতে অন্যতম সেরা।

স্থানাঙ্ক এবং ঠিকানা

মেট্রো স্টেশন স্থানাঙ্ক হল ২৩.৮০৮৩৪° উত্তর ৯০.৩৬৮২০° পূর্ব।
এটি সরকারের “ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড” দ্বারা পরিচালিত।
ঠিকানা অনুযায়ী, মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনটি মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ এ অবস্থিত।

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন স্থানাঙ্ক অত্যন্ত নিখুঁত এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে সহজেই উপলব্ধ।
এটা বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ১,৫০০ ভোল্ট ডিসি ওভারহেড লাইনের অধীনে পরিচালিত হয়।

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের ইতিহাস

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় ২০১৫ সালে, যখন এই মেট্রো স্টেশনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। রাজধানী ঢাকার অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে, এটিই অন্যতম বৃহত্তম প্রকল্প ছিল।

আরও পড়ুনঃ  বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ

নির্মাণ ও উদ্বোধন

২০১৫ সালে শুরু হওয়া মেট্রো স্টেশনের নির্মাণ সম্পন্ন হয় ২০২৩ সালের শুরুতে। মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধন হয় ২০২৩ সালের ১ মার্চ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে। নির্মাণ ও উদ্বোধন প্রক্রিয়ার ধাপগুলো ব্যাপক পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সহযোগিতার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

প্রকল্পের চুক্তি এবং কাজের অগ্রগতি

মেট্রো স্টেশনের নির্মাণ চুক্তি দেয়া হয়েছিল ইতালীয়-থাই কোম্পানিকে, যা ‘প্যাকেজ সিপি-০৪’ এর অধীনে প্রকল্পটি সম্পন্ন করে। নির্মাণ কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে চললেও নির্ধারিত সময়ের একটু পরেই প্রকল্পটি শেষ করা হয়। আশেপাশের এলাকায় উন্নয়নের বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

স্টেশনের চেহারা ও বিন্যাস

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের চেহারা আধুনিক এবং অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন। পুরো স্টেশনটি নির্মাণ করা হয়েছে উন্নত স্থাপত্যশৈলীতে, যা যাত্রীদের আরামদায়ক যাতায়াত নিশ্চিত করে।

ভূমিকা এবং উন্নয়ন

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন একটি অত্যাধুনিক ডিজাইনে বিন্যস্ত, যা ঢাকার প্রথম র‍্যাপিড ট্রানজিট লাইনের অংশ। স্টেশনটি আর্কিটেকচারাল সৌন্দর্য এবং প্রযুক্তিগত সুবিধার সম্মিলন ঘটিয়েছে। এটিতে দুইটি পার্শ্ব প্ল্যাটফর্ম এবং তিনটি প্ল্যাটফর্মের স্তর রয়েছে, যা প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক যাত্রী পরিষেবা দেয়।

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন কোনো পার্কিং সুবিধা প্রদান করে না, তবে প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদান করা হয়। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে অবাধ চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত স্থান রয়েছে এবং নিম্নবিত্ত যাত্রীদের জন্য উন্নত টিকিটিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

মেট্রোরেল পরিচালন প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএল উল্লিখিত দুইটি স্টেশনে ছয়টি স্বয়ংক্রিয় টিকিট কাটার মেশিন এবং ১৬টি স্বয়ংক্রিয় গেট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন পূর্ণ দক্ষতায় রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। নির্মাণ কাজের সময় কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে;

তবে উন্নয়ন কার্যক্রম পূর্ণতায় পৌঁছেছে এবং এখন এটি যাত্রীদের একটি মসৃণ যাতায়াতের অভিজ্ঞতা প্রদান করছে।

  1. চেহারাতে ডিজাইন এবং স্থাপত্যের আধুনিকতা
  2. প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা
  3. প্রয়োজনীয় সুবিধাসমূহের উপলভ্যতা

অবশেষে, মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন, মেট্রোরেলের আধুনিক চেহারা এবং সুবিধাদি সমৃদ্ধ স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম। ভবিষ্যতে এই ধরনের আধুনিক স্টেশনগুলো ঢাকার যাতায়াতের পরিবেশগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

আরও পড়ুনঃ  রংপুর রেলওয়ে স্টেশন

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের সুবিধাসমূহ

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনটি যাত্রীদের বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে সমৃদ্ধ। এই স্টেশনটি ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত মেট্রো স্টেশনগুলোর মধ্যে একটি এবং প্রতিদিন প্রায় ৩,৬০,০০০ যাত্রী সেবা প্রদান করে থাকে। এখানে সহজে যাতায়াতের জন্য বিভিন্ন ধরণের মেট্রো স্টেশন সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রতিবন্ধী প্রবেশাধিকার

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি ধাপেই প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য বিশেষ প্রবেশাধিকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে রয়েছে আধুনিক লিফট এবং র‌্যাম্প যা নিশ্চিত করে যে সকল যাত্রী, বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতে কোনো অসুবিধা হবে না। এভাবে স্টেশনটি সবাইকে সমানভাবে যাত্রী সেবা প্রদান করে থাকে।

টিকেট ব্যবস্থা এবং যাত্রী সুবিধা

মেট্রো স্টেশনটিতে আছে আধুনিক টিকেটিং সিস্টেম, যা যাত্রীদের দ্রুত ও সহজে টিকেট সংগ্রহ করতে সহায়তা করে। এখানে রয়েছে টিকেট কাউন্টার এবং অটোমেটেড টিকেট মেশিন যা যাত্রীদের সময় এবং প্রচেষ্টা বাঁচায়, সেই সাথে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার প্রয়োজন থাকে না। আরও রয়েছে স্বয়ংক্রিয় যাত্রা পরিকল্পনা ব্যবস্থা, যা যাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য সাহায্য করে।

মেট্রো স্টেশনের সকল সুবিধা যাত্রীদের যাতায়াতকে সহজ, সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক করে তুলেছে।

মেট্রো লাইন এবং স্টেশন সংযোগ

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র যা এমআরটি লাইন ৫ এবং এমআরটি লাইন ৬ এর সাথে সংযুক্ত। এই লাইন দুটি ঢাকার প্রধান প্রধান অঞ্চলে যাতায়াতকারী যাত্রীদের জন্য আরও সহজ ও কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রদান করে।

এমআরটি লাইন ৫ এবং এমআরটি লাইন ৬

এমআরটি লাইন ৫ এবং এমআরটি লাইন ৬ একত্রে ঢাকার রেল নেটওয়ার্ককে আরও বিস্তৃত করেছে। এমআরটি লাইন ৬ এর নির্মাণকাজ ২৯ ডিসেম্বর ২০২২-এ শুরু হয় এবং এই লাইনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ২০২৩ সালে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। তৃতীয় পর্যায়, যার মধ্যে লাইন ১, লাইন ২ এবং লাইন ৪ এর কিছু পরিবর্তন রয়েছে, ২০২৬ সালে শেষ হবে। লাইন ৬ রেল নেটওয়ার্কের একটি প্রধান অংশ, যা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিকে সংযুক্ত করে।

পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী স্টেশন

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের পূর্ববর্তী স্টেশন হলো মিরপুর ১১ (এমআরটি লাইন ৫ এর ক্ষেত্রে) এবং কাজীপাড়া (এমআরটি লাইন ৬ এর ক্ষেত্রে)। এই স্টেশন দুটি থেকে যাত্রা শুরু করে যাত্রীরা মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনে পৌঁছাতে পারবেন। পরবর্তী স্টেশন হলো মিরপুর ১৪ (এমআরটি লাইন ৫ এর ক্ষেত্রে) এবং উত্তরা উত্তর (এমআরটি লাইন ৬ এর ক্ষেত্রে) যা যাত্রীদের সহজেই গন্তব্যে পৌঁছাতে সহযোগিতা করে।

আরও পড়ুনঃ  তাজহাট জমিদার বাড়ি

স্টেশন সংযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এমআরটি লাইনগুলি ঢাকার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী স্টেশনের মাধ্যমে সকলকে সহজেই সংযুক্ত করে।

স্টেশনের বর্তমান অবস্থা

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থল হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সময়ে স্টেশনের অবস্থার উন্নতি লক্ষণীয়। পুনর্ণির্মাণ ও সংস্কারের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮.৮৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে শুধূ স্টেশন পুনরায় চালুর জন্য খরচ হয়েছে ১.২৫ কোটি টাকা। সরকারি বাজেটে মেট্রোরেল ব্যবস্থার সার্বিক মেরামত ও পুনরায় উদ্বোধনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ৩৫০ কোটি টাকা এবং সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল এক বছর।

যোগাযোগ ও সেবা

মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২২ কিলোমিটার এবং সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। প্রতিদিন সকাল ৮.০০ টা থেকে বেলা ১১.০০ টা পর্যন্ত এবং দুপুর ৩.০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ টা পর্যন্ত প্রতি ১০ মিনিট পর পর মেট্রো ছাড়বে। অন্যান্য স্টেশনগুলির মতো মিরপুর ১০ স্টেশনেও আধুনিক সেবা নিশ্চিত করতে যোগাযোগ নির্ভর ট্রেন (CTBT) ব্যবহার করা হচ্ছে।

আপডেট ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা

সম্প্রতি মিরপুর ১০ স্টেশন ৮৭ দিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু হয়েছে। স্টেশনটি পুনরায় চালুর পর কাজীপাড়া স্টেশনও প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকার পর ২০ সেপ্টেম্বর পরিশেষে চালু হয়েছে। এই সমস্ত চ্যালেঞ্জ এবং কার্যক্রম ব্যয় ও প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিককে স্পষ্ট করেছে। আগামী বছর দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি হার ৬% থেকে কমে ৪% এ আসবে, যেই খাতে সরকার জনকল্যাণমূলক উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

মেট্রোরেল ব্যবস্থার উত্তরোত্তর উন্নতির জন্য বিশেষজ্ঞ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে পরবর্তীতে আরও অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। বর্তমানে ১৭টি স্টেশন এবং প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতা রয়েছে মেট্রোরেল ব্যবস্থায়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button