জাতীয় সংসদ ভবন

ঢাকায় অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের আধুনিক স্থাপত্যের এক চমকপ্রদ নিদর্শন। প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুই আই কান এবং বাংলাদেশি স্থপতি মুজারুল ইসলাম দ্বারানকশা করা এই ভবনটি ভৌগোলিক অবস্থানে ২৩°৪৫′৪৪″উত্তর ৯০°২২′৪৩″পূর্বে অবস্থিত। ১৯৬১ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে ১৯৮২ সালে এটি সম্পন্ন হয়।

জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মোট ২০৮ একর জমির উপর বিস্তৃত। ১৯৮৯ সালে ভবনটি আর্কিটেকচার এর জন্য আগা খান পুরস্কার লাভ করে। এর আলো, পরিসর এবং নকশার জন্য এটি বিশ্বখ্যাত, যা ঢাকার আধুনিক স্থাপত্যকে আরও সুদৃঢ় করেছে। এই ভবনটি আধুনিকায়ন এবং পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলেছে যাতে প্রধানত বঙ্গবন্ধু আর্কাইভ, সঙ্গীত স্টুডিও ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

Contents show

জাতীয় সংসদ ভবনের ইতিহাস

জাতীয় সংসদ ভবন ইতিহাস সম্পর্কে জানতে গেলে, এর নির্মাণ প্রক্রিয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব বিশদভাবে আলোচনা করা প্রয়োজন।

নির্মাণের সূচনা

জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৬১ সালে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর, ভবনটির নির্মাণ প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হয় এবং ১৯৮২ সালে সম্পন্ন হয়। এই প্রকল্পের মোট খরচ ছিল ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২ শত একর (৮০,০০,০০০ বর্গমিটার) জমিতে বিস্তৃত এই কমপ্লেক্সের মূল প্রাঙ্গণ ৮২৩,০০০ বর্গফুট (৭৬,০০০ বর্গমিটার)। আর অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর এই ভবনের স্থাপত্যশৈলীসমূহ সম্পাদনায় প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন মার্কিন স্থপতি লুই কান এবং হেনরি এন. উইলকটস, আর হ্যারি এম. পেম্বলটন ছিলেন কাঠামো ডিজাইনার।

মুক্তিযুদ্ধ এবং এরপরে

মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণ প্রক্রিয়া থামিয়ে দিয়েছিল। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণে দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং সেই সময়ে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকে। মুক্তিযুদ্ধের পর, সংসদ ভবনের নির্মাণকাজ আবার শুরু হয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন অধ্যায় শুরু হয়। এটি মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রতিফলিত করে এবং ভবনটি একটি প্রতীকী স্থাপনা হয়ে ওঠে।

সম্পূর্ণতা এবং উদ্বোধনের সময়কাল

১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি, জাতীয় সংসদ ভবন উদ্বোধিত হয়, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চার এক নতুন যুগের সূচনা করে। ৭টি প্রাথমিক সভাকক্ষ এবং অন্যান্য নানা সুবিধাদি নিয়ে, এই ভবনটি অনেকগুলি মাইলফলক অর্জন করেছে এবং দেশ ও জাতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

স্থাপত্যশৈলী ও নকশা

জাতীয় সংসদ ভবনের স্থাপত্যশৈলী ও নকশার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ লুই কানের নকশায় সমৃদ্ধ, আধুনিক নকশা, এবং সুবিন্যস্ত প্লাজার বিন্যাসের সাথে মিলিত। ১৯৫৯ সালে ঢাকাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাজধানী ঘোষণার পর ভবনের নির্মাণ পরিকল্পনা শুরু হয়। পরবর্তীতে, ১৯৬২ সালে, বিখ্যাত আমেরিকান স্থপতি লুই কান দ্বারা ভবনের প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলওয়ে স্টেশন

লুই কানের অবদান

লুই কানের অবদান অবিস্মরণীয়। তার ডিজাইনে আধুনিক নকশা এবং বিশ্ব ধারণীয় নির্মাণ শৈলীর মিশেল ঘটে। ১৯৬৪ সালে ১৫ মিলিয়ন ডলার অনুমোদিত বাজেট নিয়ে কাজ শুরু হয়, কিন্তু ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৪ সালে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু হলে ১৯৮২ সালে অবশেষে সমাপ্ত হয়। মোট ৩২ মিলিয়ন ডলারের ব্যয়ে এই স্থাপত্য শৈলী বাস্তবায়িত হয়।

ব্লক এবং প্লাজার বিন্যাস

জাতীয় সংসদ ভবনের প্রধান ভবনটি তিনটি অংশে বিভক্ত – মূল প্লাজা, দক্ষিণ প্লাজা, এবং প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা। এই তিনটি অংশ আবার নয়টি ভিন্ন ব্লকে বিভক্ত, এবং প্রতিটি ব্লকে বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দকৃত স্থান রয়েছে। মূল প্লাজা ৮,২৩,০০০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এবং ৩৫৪ জন সদস্যের জন্য পার্লামেন্ট সভা কক্ষের ব্যবস্থা রয়েছে।

আলোকের ব্যবহার

জাতীয় সংসদ ভবনের আলোক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত দক্ষভাবে পরিকল্পিত। ভবনের অভ্যন্তরে প্রাকৃতিক আলোর উৎকৃষ্ট ব্যবস্থাপনা দেখা যায়, যা লুই কানের স্থাপত্যশৈলীর অনন্য বৈশিষ্ট্য। প্রধান ভবনের উচ্চতা ৪৭.২৪ মিটার এবং ভিন্ন ব্লকগুলির উচ্চতা ৩৩.৫৩ মিটার থেকে ১১০ ফুট পর্যন্ত বিভক্ত। আলোর প্রতিফলন ও প্রবেশ ব্যবস্থা ভবনের অভ্যন্তরীন পরিবেশকে আরো মনোরম করেছে।

National Parliament Building

জাতীয় সংসদ ভবন, যা আন্তর্জাতিক প্রশংসা অর্জন করেছে, বিশ্বের অন্যতম বিশ্বখ্যাত স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ভবনটি তার স্থাপত্যকলার জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত।

বিশ্বখ্যাতিত্ব

জাতীয় সংসদ ভবনের বিশ্বখ্যাত স্থাপনা হয়ে ওঠার পেছনে স্থপতি লুই কানের অবদান অনস্বীকার্য। তার নকশার প্রতিটি কোণায় দেশীয় সংস্কৃতি ও আধুনিকতার অপূর্ব মিশ্রণ প্রতিফলিত হয়েছে। এই ভবনটি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত স্থাপনাগুলির একটি এবং এটি স্থাপত্য প্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

আন্তর্জাতিক প্রশংসা

আন্তর্জাতিক প্রশংসা হিসেবে, জাতীয় সংসদ ভবনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্কিটেক্ট এবং স্থাপত্যপ্রেমীদের কাছে একটি আদর্শ হিসেবে বিবেচিত। এই ভবনের নির্মাণ শৈলী ও নকশা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে এবং এটি আর্কিটেকচারে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে।

জাতীয় সংসদ ভবনের বিশেষত্ব

জাতীয় সংসদ ভবনটি শুধু একটি গৌরবময় স্থাপত্যকর্ম নয়, এটি বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির একটি নির্দশন। ২১৫ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে এই বৃহত্তম বিধানিক কমপ্লেক্স।

বৃহত্তম বিধানিক কমপ্লেক্স

এই বৃহত্তম বিধানিক কমপ্লেক্সটি প্রথম পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১৯৫৯ সালে ঢাকায়। লুই আই কান ১৯৬২ সালে এই স্থাপত্য কলার ডিজাইনের দায়িত্ব নেন এবং ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে এর উদ্বোধন হয়। এই কমপ্লেক্সে ন’টি ব্লক রয়েছে, যা ১১০ ফুট উঁচু, আর মূল ভবনের উচ্চতা ১১৫ ফুট। দক্ষিণ প্লাজায় একটি ২০ তলা কাঠামো রয়েছে, যা ভবনের মহিমায় বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।

ভূপৃষ্ঠের পরিকল্পনা

ভূমির অনন্য ব্যবহার এবং পরিকল্পনা এখানে স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে। জমির ব্যবহার সুষম ও নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা এটিকে একটি বিস্ময়কর স্থাপত্য কলার উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করায়। লুই কানের তত্ত্বাবধানে, এখানকার ডিজাইন পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যাতে প্রতিটি ব্লক ও প্লাজার বিন্যাস সুপরিকল্পিত হয়।স্থাপত্য কলা এবং জমির ব্যবহার এখানে চমৎকারভাবে মিশে গেছে।

আরও পড়ুনঃ  চন্দ্রনাথ মন্দির

মুল ব্যবহারের কেন্দ্রে সত্যিকারের ভূমিকা

জাতীয় সংসদ ভবনটি বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে। এ ভবনের ভিতরে আমাদের দেশের আইনগত ক্রিয়াকলাপ পরিচালিত হয়, যা জনগণের কল্যাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সংসদ অধিবেশনের আয়োজন

সংসদ অধিবেশনগুলি জাতীয় সংসদ ভবনে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জনপ্রতিনিধিরা মিলিত হয়ে দেশের প্রধান আইন প্রণয়ন করেন। এই অধিবেশনগুলিতে বিতর্ক, আলোচনা এবং নীতি নির্ধারণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। সংসদ অধিবেশনের সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া

বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভবনের অন্দরেই তা সম্পন্ন হয়। আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন আইন তৈরি, পুরনো আইন সংশোধন এবং বাতিল করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সংসদ সদস্যদের মতামত সংগ্রহ এবং আলোচনা করে আইনগত ক্রিয়াকলাপ পরিচালিত হয়।

স্থাপত্য দর্শন

স্থাপত্যে বিশেষ যত্নের সঙ্গে প্রাচ্যের সাংস্কৃতিক প্রতিফলন ধরে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন স্থাপত্যকর্মের মাধ্যমে যেভাবে স্থানীয় ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিফলনের প্রচেষ্টা করা হয়েছে, তা সত্যিই দৃষ্টিনন্দন। বিশেষ করে প্রাকৃতিক উপাদান এবং সংবেদনশীলতা সম্মিলিত থাকার মধ্যে বাংলা সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সুনিপুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিফলন

বাংলার স্থায়ী ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির একটি জীবন্ত উদাহরণ এখানে স্থাপত্যে দৃশ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিশেষ স্থানীয় উপাদান যেমন ওপেন ডিজাইন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর স্থাপনাগুলির মাধ্যমে নকশা সম্পন্ন হয়েছে। লুই কান নির্মিত জাতীয় সংসদ ভবনের স্থাপত্যে মর্যাদাপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। অঞ্চলটিকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সাংস্কৃতিক প্রতিফলন অনেক ক্ষেত্রে বাংলার অন্যান্য স্থাপনাগুলি থেকেও আলাদা।

জনপ্রতিনিধিদের সুবিধাদি

একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধার কথা বিবেচনার সময়, অনেকগুলো উঁচু মানের সুযোগ-সুবিধা হিসেবেই গণ্য হয়। তাই সাংস্কৃতিক প্রতিফলনকে ধরে রাখার পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সুবিধাও এখানে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। গ্রন্থাগার এবং গবেষণা কেন্দ্র সহ আভ্যন্তরীণ সুবিধাসমূহ আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় উন্নত করা হয়েছে। এ ধরনের সুবিধাগুলির অন্যতম উদাহরণ হল বসুন্ধরা গ্রুপের পরিবেশ বান্ধব ও উন্নত সুযোগসহ স্থাপনা।

জাতীয় সংসদ ভবনের বর্তমান উন্নয়ন

জাতীয় সংসদ ভবন উন্নয়নের সম্প্রতি অন্যতম লক্ষ হচ্ছে এর আশেপাশের আবাসিক ও প্রশাসনিক স্থাপনার উন্নয়ন। সংসদ ভবনের বর্তমান সংস্কারের আওতায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে নতুন আবাসিক ভবন, উন্নত পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, এবং অন্যান্য আধুনিক সুবিধা সমূহ।

আবাসিক স্থাপনাগুলি

সংসদ সদস্যদের জন্য নির্মাণাধীন নতুন আবাসিক স্থাপনাগুলি আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সমৃদ্ধ হবে। এদের মধ্যে বিশ্রামাগার, বিনোদন কক্ষ, এবং নিম্নআয়ের কর্মীদের জন্য উপযোগী আবাসিক ইউনিট অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই সংসদ ভবন উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে সংসদের আশেপাশের স্থাপনা ও পরিবেশও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল

আশেপাশের স্থাপনা এবং সুবিধাদি

সংসদের আশেপাশের স্থাপনা ও সুবিধাদির উন্নয়নে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জলাশয় সংরক্ষণ, সবুজায়ন পরিকল্পনা, এবং ইকো-ফ্রেন্ডলি স্থাপত্য এসবের মধ্যে অন্যতম। তাছাড়াও, নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে পার্কিং লট এবং সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত উদ্যান। এই উন্নয়ন কর্মসূচির পরবর্তীতে সংসদ ভবন এবং তার আশেপাশের স্থাপনা আরো আকর্ষণীয় এবং কার্যকরী হবে।

পর্যটকদের জন্য গাইডলাইন

জাতীয় সংসদ ভবন ভ্রমণ করার জন্য আপনার অবশ্যই সঠিক পর্যটক গাইড থাকা উচিত। এটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থান এবং ঢাকায় অবস্থিত। বিভিন্ন পরিবহন মাধ্যম ব্যবহার করে সেখানে পৌঁছানো যায়। আগ্রহী পর্যটকদের কিভাবে যাতায়াত করতে হবে এবং কোথায় অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে কিছু নির্দেশিকা নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

কীভাবে যাবেন

জাতীয় সংসদ ভবন যাতায়াত বেশ সুবিধাজনক। আপনি বাস, ট্যাক্সি, রিকশা অথবা নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে জাতীয় সংসদ ভবন যাতায়াত করতে মাত্র ৩০-৪৫ মিনিট সময় লাগে। ভ্রমণকারী হিসেবে, জাতীয় সংসদ ভবনে যাওয়ার জন্য সঠিক মানচিত্র এবং নির্দেশিকা পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আবাসিক ব্যবস্থা

ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের কাছাকাছি বিভিন্ন আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। মানসম্মত হোটেল, গেস্ট হাউস এবং রিসোর্ট এই এলাকায় সহজেই পাওয়া যায়। পর্যটক গাইড অনুসরণ করে, আপনি আপনার বাজেট এবং সুবিধার উপযুক্ত আবাসিক ব্যবস্থা খুঁজে পেতে পারেন। নিকটবর্তী কিছু জনপ্রিয় আবাসিক এলাকার মধ্যে গুলশান, বনানী এবং বারিধারা উল্লেখযোগ্য।

আশা করছি এই পর্যটক গাইড আপনাকে জাতীয় সংসদ ভবন যাতায়াত এবং আবাসিক ব্যবস্থার বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে, যা আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে করে তুলবে অন্যতম।

সমাপ্তি

জাতীয় সংসদ ভবন বা বাংলাদেশের সংসদ ভবন শুধুমাত্র একটি আইন নির্ধারণের কেন্দ্র নয় বরং এটি বাংলাদেশের স্থাপত্যশৈলী, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। এর নির্মাণের ইতিহাস থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে এর ভূমিকাটি স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়, যা অন্য যেকোনো স্মৃতি সৌধ বা পরিদর্শন স্থানের থেকে আলাদা

লুই কানের নকশায় নির্মিত এই স্থাপনা বিশ্বের স্থাপত্যিক মহলে বিশেষ স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এর প্রতিটি কোণ, এর প্রতিটি স্থাপত্য এলিমেন্ট বাঙালি সংস্কৃতির স্বকীয়তাকে সমাজের সামনে উপস্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধের পরে এই ভবনের নির্মাণ কার্য শেষ হওয়ায় এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা হয়।

বর্তমান সময়ে জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ হিসাবে পরিচিত। সরকারি অধিবেশন বা আইন প্রণয়নের সেশনসহ বিভিন্ন পর্যটকেরা এখানে এসে এর স্থাপত্য, নকশা এবং ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন। এটি পর্যটকদের জন্য বাংলাদেশের স্মৃতি সৌধ হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ন স্থান।

জাতীয় সংসদ ভবন পরিদর্শন করার সময় পর্যটকরা যেন এখানকার ইতিহাস, স্থাপত্য এবং বর্তমান উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পান এটাই আমাদের আকাঙ্খা। এছাড়া পর্যটকরা আসে পাশের বিভিন্ন হয়েজিং প্লাজা এবং আবাসিক স্থাপনাগুলিও ঘুরে দেখতে পারেন। শেষ পর্যন্ত, এটি বাংলাদেশের গৌরব এবং বিশ্ববাসীর জন্য একটি আমন্ত্রণ।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button