পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ মঠ। ৮ম শতাব্দিতে প্রতিষ্ঠিত এই বিহারটি পাল শাসনের অধীনে মহাস্থবীর ধম্মপাল কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। এটি একবার দুর্যোগগ্রস্ত হয়ে পুনরায় ১৮৭৯ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক স্যার আলেকজান্ডার ক্যানিংহ্যাম দ্বারা খনন কাজ শুরু করা হয়। ১৯১৯ সালে এটি প্রাচীন স্থানগুলির সংরক্ষণ আইনের অধীনে সংরক্ষিত স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্মান অর্জন করে ১৯৮৫ সালে। এর এলাকা প্রায় ০.১০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এই স্থাপনায় ১৭৭টি সন্ন্যাসীদের কক্ষ, প্রাকৃতিক স্তূপ এবং মঠসহ বিভিন্ন অঙ্গন রয়েছে। এখানে ২৫°০১′৫২″ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৮′৩৭″ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে প্রশান্তিময় পরিবেশে যুক্ত হয়েছে বিহারের স্থাপত্যিক গ্থারিত্ব যা পর্যটকদের বিমোহিত করে। বাংলাদেশের পুরাকীর্তির এই অনন্য নিদর্শন আজও ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক ক্ষেত্রে তাৎপর্য বহন করে যাচ্ছে।

Contents show

পাহাড়পুরের ইতিহাস ও এর গুরুত্ব

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে পরিচিত। পাল রাজাদের অধীনে প্রাচীন যুগে নির্মিত এই বিহারটি এক বিশাল ঐতিহাসিক গৌরব বহন করে। ১৮৭৯ সালে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিহারের খনন কাজ শুরু করেন, যা পাহাড়পুরের ইতিহাস উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রাচীন অবস্থান শনাক্তকরণ

পাহাড়পুরের সঠিক অবস্থান সনাক্ত করতে বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এই বিহারটি মহাযান বৌদ্ধধর্মের একটি প্রাচীন কেন্দ্র ছিল, যা ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্ম ও শিক্ষার বিস্তারে অবদান রেখেছে। মূল ভবনে উপস্থিত ১৭৭টি কক্ষে প্রায় ৮০০ জন ভিক্ষু বসবাস করতেন, যা তখনকার শিক্ষা ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় বহন করে।

প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা

প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে এখান থেকে নানা মূল্যবান ঐতিহাসিক বস্তু আবিষ্কৃত হয়েছে। সোমপুর বিহারে ১২৫নং কক্ষে মাটির পাত্রে খলিফা হারুন-অর-রশিদের শাসনামলের রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যায়। এই ধরনের আবিষ্কার শুধুমাত্র পাহাড়পুরের ইতিহাস বুঝতে সহায়তা করে না, বরং এটি বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মূল্য শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুনঃ  সালাহুদ্দিন আইয়ুবি: ইতিহাসের মহান নেতা

বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব

বৌদ্ধ ধর্ম বাংলাদেশে গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে, এবং পাহাড়পুরের এই বিহার তার একটি প্রধান নিদর্শন। ৭ম শতাব্দীতে মহাযান বৌদ্ধধর্মের উত্থান এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রম এখানে পরিচালিত হত। বিহারের স্থাপত্য বিন্যাস বৌদ্ধ দর্শন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রকাশ করে, যা দেশব্যাপী ধর্মীয় ও সামাজিক প্রগতির প্রতিনিধিত্ব করে।

পুজো ও উৎসবের সময়সূচী

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে প্রতি বছর বিভিন্ন সময়ে বৌদ্ধ ধর্মীয় উৎসব ও পূজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবগুলোতে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নামে, এবং পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার উৎসব বিশেষ জনপ্রিয়। বিভিন্ন ধরণের পূজা ও অনুষ্ঠানাদি সারা বছর ধরে পালন করা হয়, যা ঐতিহ্য ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আবদ্ধ।

বছর জুড়ে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠান

বছরের বেশিরভাগ সময়ই পাহাড়পুরে বিভিন্ন বৌদ্ধ পূজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। *ওয়েসাক* হলো অন্যতম বৃহত্তম উৎসব, যা বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব প্রাপ্তি এবং মহাপরিনির্বাণ স্মরণে পালিত হয়:

  • মাঘ পূর্ণিমা: বুদ্ধের শিক্ষা অনুসরণ করে ধর্মীয় আরাধনা ও উপবাসের দিন।
  • বোধি দিবস: বুদ্ধের বোধিগাছ নীচে শ্রেষ্ঠ সত্য উপলব্ধির দিন।
  • আষাঢ়ী পূর্ণিমা: বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষা যাপন শুরু উপলক্ষে পালিত উৎসব।

বিশেষ উৎসবের বৈশিষ্ট্য

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার উৎসবের সময় বিহারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে বৌদ্ধ পূজা অনুষ্ঠান, যাদের মধ্যে ওয়েসাক উৎসব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই উৎসবগুলো ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য ধ্যান, প্রার্থনা, দানধ্যান ইত্যাদির সুযোগ প্রদান করে।

  • ওয়েসাক দিনের বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বুদ্ধের জীবন ও শিক্ষা উপস্থাপন করা হয়।
  • অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ জনগণ এই সময় বিভিন্ন ধ্যান, মন্ত্রপাঠ এবং প্রার্থনা করে থাকে।
  • উৎসবকালে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার উৎসব ও পূজা অনুষ্ঠানগুলি ইতিহাসের সাথে ধর্মীয় অনুশীলনের মিশ্রণে এই স্থানটিকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

পাহাড়পুরের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য

পাহাড়পুরের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য অসাধারণ এবং ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ। মূলত বৌদ্ধ বিহার ও এর আশেপাশের এলাকা বিভিন্ন শৈল্পিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। পাহাড়পুর সংস্কৃতি বিভিন্ন লোক শিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী নৃত্য সহ বহু-প্রজন্ম ধরে প্রচলিত।

স্থানীয় শিল্প ও হস্তশিল্প

পাহাড়পুর অঞ্চলে স্থানীয় শিল্প এবং হস্তশিল্প বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এই এলাকায় তৈরি হওয়া বিভিন্ন হস্তশিল্প যেমন বস্ত্র, মাটির জিনিসপত্র এবং বেতের কাজ প্রশংসিত হয়। পাহাড়পুর সংস্কৃতি নেওয়া স্থানীয় কারিগররা তাদের দক্ষতায় অনন্য এবং প্রাচীন পদ্ধতিকে বর্তমানের সঙ্গে মিশিয়ে নতুন শিল্পকর্ম তৈরি করে চলেছেন। বিশেষ করে মৃৎশিল্প এবং কাঠের কাজের তুলনা হয় না।

  • চিত্রকলা
  • বস্ত্রশিল্প
  • কাঠ ও বেতের হস্তশিল্প

সঙ্গীত ও নৃত্য

পাহাড়পুরের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য এবং সঙ্গীতের প্রভাব অত্যন্ত গভীর এবং প্রাচীন। স্থানীয় সঙ্গীত এবং নৃত্য এই এলাকার মানুষের জীবনধারার অঙ্গ। বিভিন্ন উৎসব এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে লোক শিল্প পাহাড়পুর খুবই জনপ্রিয়।

  1. বাউল গান
  2. পালাগান
  3. নৃত্যানুষ্ঠান

এছাড়া, স্থানীয় বাউল শিল্পীদের সংগীত ও জনসংস্কৃতির অংশ হিসেবে লালন করা হয়। এই অঞ্চলের সঙ্গীত ও নৃত্যপূর্ণ অনুষ্ঠানসমূহ অংশগ্রহণকারীদের মনোরঞ্জনের পাশাপাশি, দর্শকদেরও মনোমুগ্ধ করে। পাহাড়পুরের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য শুধুমাত্র বিনোদনের নয়, বরং সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতায় ভরপুর।

আরও পড়ুনঃ  আবদুল হামিদ খান ভাসানী: একটি পরিচিতি

পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার তার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের জন্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। পাহাড়পুর পর্যটন আজকের দিনে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে, যেখানে আপনি প্রাচীন ইতিহাসের ছোঁয়া পাবেন। এখানে বিভিন্ন প্রণিধানযোগ্য দৃষ্টভঙ্গি রয়েছে যা প্রতিটি দর্শনার্থীর মন কাড়ে। বৌদ্ধ বিহার দর্শন এবং পিকনিক স্পট পাহাড়পুর তাই অনেকের জন্য একটি আদর্শ ভ্রমণ গন্তব্য হয়ে উঠেছে।

বিহারের প্রধান দর্শনীয় স্থান

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার প্রায় ১০ কিমি উত্তর নওগাঁ সদর উপজেলায় অবস্থিত। এটি পাল রাজবংশের শ্রী ধর্মপাল দেব দ্বারা অষ্টম শতকের শেষ বা নবম শতকের শুরুর দিকে নির্মিত হয়েছিল। বিহারের মূল মন্দিরের দৈর্ঘ্য ৪০০ ফুট ও প্রস্থ ৩৫০ ফুট এবং উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট ছিল। বৌদ্ধভিখুদের থাকার জন্য মোট ১৭৭টি কক্ষ রয়েছে। প্রধান মন্দিরসহ বিহার এলাকা এবং তার কেন্দ্রীয় প্রাঙ্গণের স্তূপ ঐতিহাসিক সংরক্ষণে আবৃত। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো পাহাড়পুরকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের স্বীকৃতি দেয়।

পিকনিক ও ব্যবহারের সুযোগ

পিকনিক স্পট পাহাড়পুরে পর্যটকদের জন্য নানা সুবিধা রয়েছে। পর্যটকরা সহজেই এখানে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে অবসর সময় কাটাতে পারেন। বিহার অঙ্গনের আয়তন ২৭ একর এবং বৃক্ষশোভিত জায়গাগুলোর মাধ্যমে একটি আরামদায়ক এবং প্রশান্তিপূর্ণ প্রেক্ষাপট উপভোগ করা যায়। এখানে অনেকেই পিকনিক করার জন্য আসেন এবং প্রাচীন মন্দির এবং স্থাপত্য নিদর্শনগুলো ঘুরে দেখেন, যার মধ্যে প্রায় ২ হাজারেরও বেশি পোড়ামাটির ফলকচিত্র রয়েছে। এছাড়াও, সন্ধ্যাবতীর ঘাট এবং গন্ধেশ্বরী মন্দিরের মতো আকর্ষণীয় স্থানগুলোও দর্শকদের মনকে মুগ্ধ করে।

পাহাড়পুরের ভ্রমণ সত্যিই একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা এনে দিতে পারে, যেখানে ইতিহাস এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য একসাথে দেখা যায়। পাহাড়পুর পর্যটন এর বিশাল পরিসর এবং গভীর ঐতিহাসিক বিষয়বস্তু বিবেচিত হয়ে সব বয়সের পর্যটকদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয়।

পাহাড়পুরের স্থাপত্য শৈলী

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের স্থাপত্য শৈলী সমৃদ্ধ এবং ঐতিহাসিক নির্মাণ কৌশলে আলোকিত। পাহাড়পুরের যে বিস্ময়কর স্থাপত্য এবং এর অন্যান্য নির্মাণ নিদর্শন আমাদের কাছে এই সমৃদ্ধ স্থাপত্যের অনন্যতা তুলে ধরে।

স্তূপ এবং ভিক্ষু আবাস

পাহাড়পুরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো এর বৌদ্ধ স্তূপ। এম্পারার অশোক নিজের সাম্রাজ্য জুড়ে হাজার হাজার স্তূপ নির্মাণ করেছিলেন এবং অনুমান করা হয় যে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় মৌর্য যুগেও এমন স্তূপ নির্মিত হয়েছিল। পাহাড়পুর স্থাপত্যে স্তূপের নির্মাণ চমকপ্রদ। সমপুর বিহার একমাত্র বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার হিসেবে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নির্মাণ।

শিখা ও নির্মাণের নিদর্শন

পাহাড়পুরের শিখা এবং অন্যান্য নির্মাণে অবিশ্বাস্য নিপুণতা রয়েছে। প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো মধ্যে রয়েছে প্রাচীন মঠ, খোদাই করা পাথর, শিলালিপি, সোনা মুদ্রা, এবং বুদ্ধ মূর্তি। পাহাড়পুরের মঠ এবং ভিক্ষু আবাসে এই ধরনের চমকপ্রদ নির্মাণের অনন্য নকশা পরিলক্ষিত হয়। ১৬০০ বছরের পুরনো এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানটি পাল রাজবংশের দ্বিতীয় শাসক ধর্মপাল নির্মাণ করেছিলেন যা এখনো আমাদের কাছে ঐতিহাসিক নির্মাণের অনন্য নিদর্শন।

আরও পড়ুনঃ  মহাস্থানগড়: একটি ঐতিহাসিক স্থান

বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শনের প্রভাব

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়; এটি বৌদ্ধ ধর্ম পাহাড়পুরের মহত্ত্ব এবং দর্শনের গুরুত্ব তুলে ধরার একটি প্রধান কেন্দ্র। প্রাচীন বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব সুস্পষ্টভাবে ছিল, এবং এই বিহার সেই ঐতিহ্যকে সুন্দরভাবে প্রতিনিধিত্ব করে। ভারত ভূখণ্ডে বৌদ্ধ ধর্মের সংস্কৃতি ও দর্শনের কথা উঠলেই পাহাড়পুরের উল্লেখ অবশ্যম্ভাবী।

ধর্মীয় তত্ত্ব ও বিশ্বাস

পাহাড়পুরের সোমপুর মহাবিহারের মঠগুলোর মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতি ও দর্শনের বিভিন্ন দিকগুলি পরিলক্ষিত হয়। সেখানে প্রায় ৩,০০০ বৌদ্ধ শ্রমণ পাঠরত ছিলেন এবং তাদের মধ্য থেকে অনেকেই এই অঞ্চলে বিভিন্ন শৈল্পিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। দুর্গা ও নির্জলা মনোবৃত্তি এই ভিক্ষুদের ধর্মীয় তত্বে উৎসাহিত করতে সহায়তা করেছে। বৌদ্ধ ধর্ম পাহাড়পুরের দর্শনের প্রতি গভীর আস্থা দেখা যায় তাদের কর্মকাণ্ড এবং ধর্মীয় সাধনায়।

ঐতিহ্যবাহী শিক্ষার কেন্দ্র

বিহাসু বিহার বা নারাপতীর ধাপ, যা মহাস্থানগড় থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত, পাহাড়পুর বিহারের অন্যান্য নির্দশনগুলোর মতোই শিক্ষার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। খননের সময় ৩৭টি ছোট ছোট কক্ষ এবং দুটি বড় বৌদ্ধ মঠের সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে বড় মঠে কেন্দ্রীয় স্থানটি খোলা ছিল এবং চারপাশে ছিল ভিক্ষুদের জন্য কক্ষ। এগুলি ভারতীয় ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যের দিকে একটা গভীর দৃষ্টিপাত প্রদান করে।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার প্রাচীন কলকাতা শহরের গুপ্ত যুগের শিক্ষাগতি এবং বৌদ্ধ ধর্মের উত্তরাধিকারের প্রতিনিধিত্ব করে। এ ধরনের স্থানগুলি ধর্মীয় দর্শন বাংলাদেশ অঞ্চলের ভূমিকা এবং প্রাচীন বাংলার ধর্মীয় শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

FAQ

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার কোথায় অবস্থিত?

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশে, নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলায় অবস্থিত।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার কীভাবে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করা হলো?

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার তার ঐতিহাসিক এবং স্থাপত্যিক গুরুত্বের জন্য ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ইতিহাস কী?

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পাল রাজাদের অধীনে প্রাচীন যুগে গড়ে উঠেছিল এবং ১৮৭৯ সালে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিহারের খনন কাজ আবিষ্কার করেন।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে কোন বৌদ্ধ ধর্মীয় উৎসব খুব জনপ্রিয়?

ওয়েসাক উৎসব পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে খুব জনপ্রিয় ধর্মীয় উৎসব।

পাহাড়পুর এলাকায় কোন ধরনের সাংস্কৃতিক চর্চা প্রচলিত?

পাহাড়পুর এলাকায় হস্তশিল্প, চিত্রকলা, এবং ঐতিহ্যবাহী বাংলা গান ও নাচের চর্চা প্রচলিত।

পর্যটকদের জন্য পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে কি কি সুবিধা রয়েছে?

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে পিকনিক ও বিনোদনের জন্য উন্নত সুবিধা রয়েছে এবং এটি একটি প্রধান দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের স্থাপত্য শৈলী কেমন?

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের স্থাপত্য শৈলী সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়। এখানকার স্তূপগুলি এবং ভিক্ষুদের আবাসস্থল প্রাচীন নির্মাণ কৌশলের নিদর্শন।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বৌদ্ধ ধর্ম এবং দর্শনের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করেছে?

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষা এবং বৌদ্ধ দর্শনের প্রচারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button