পাওলো দিবালা: আর্জেন্টিনার ফুটবল তারকা

পাওলো দিবালা আর্জেন্টিনার ফুটবল জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত। তার উচ্চতা ১.৭৭ মিটার (৫ ফুট ৯ ইঞ্চি) এবং তার খেলার দক্ষতা তাকে ফুটবল বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। আর্জেন্টিনার ফুটবলার পাওলো দিবালা ২০১১ সালে তার পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা দলে যোগ দিয়ে।

ফুটবল তারকা পাওলো দিবালার খেলার স্টাইল এবং সৃজনশীলতা তাকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। ২০১৫ সালে জুভেন্তাসে যোগ দেয়ার পূর্বে ২০১২ সালে তিনি পার্লেমোতে যোগ দেন এবং সেখানে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেন। দিবালার খেলায় সৃজনশীলতার পাশাপাশি তার নির্ভুল লক্ষ্যবস্তু করার ক্ষমতা তাকে “লা জোগা” (দ্য জুয়েল) উপাধি এনে দিয়েছে এবং এ কারণে তিনি প্রায়শই লিওনেল মেসির সাথে তুলনীয় হয়ে উঠেছেন।

Contents show

পাওলো দিবালার জীবনের সূচনা

পাওলো দিবালা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৯৩ সালের ১৫ নভেম্বর আর্জেন্টিনার ল্যাঙ্গুনা লার্গা, কর্ডোবায়। এই ফুটবল তারকার প্রাথমিক জীবনে ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহ এবং পরিবারের ডিএনএ থেকে আসা প্রতিভার গুরুত্ব অপরিসীম।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

পাওলো দিবালা জন্মের পর থেকে আর্জেন্টিনার কর্ডোবা শহরে বেড়ে ওঠেন। ছোট থেকে ফুটবলের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা ছিল যা তাঁকে একটি উজ্জ্বল ফুটবলার হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। পাওলো দিবালা জন্মস্থান আর্জেন্টিনা হলেও, তাঁর ফুটবলের প্রতি প্যাশন ও কর্মক্ষমতা তাঁকে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম করেছে।

পরিবারের ইতিহাস ও শিকড়

পাওলো দিবালা পরিবার সংক্রান্ত তথ্য হতে জানা যায় যে, তাঁর পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য ফুটবলের সাথে সংযুক্ত। তাঁর দাদা একজন ফুটবলার ছিলেন এবং পাওলো দিবালার বাবা অসাধারণ একজন প্রেরণা ছিলেন। ফুটবলের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং আগ্রহ এসেছে পরিবারের ঐতিহ্য থেকে। প্রাথমিক জীবনে ফুটবল খেলার প্রতি আস্থা ও আগ্রহ তাঁকে তাঁর পরিবারের প্রচেষ্টার মাধ্যমে ফুটবলের জগতে সফল হতে সহায়ক হয়েছে।

শৈশব ও ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা

পাওলো দিবালা শৈশব থেকেই ফুটবলের প্রতি আলাদা একটা ভালোবাসা ও আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁর ছোটবেলার প্রতিটি মুহূর্তে ফুটবল খেলার প্রতি তাঁর সম্পর্ক ছিল অসাধারণ।

প্রথম ফুটবল দলে যোগদান

পাওলো দিবালা যখন খুব ছোট ছিলেন, তখন তিনি প্রথমবারের মতো একটি ফুটবল দলে যোগদান করেন। তাঁর প্রতিভা আর ফুটবল ভালোবাসা তাঁকে দ্রুতই সেই দলে পরিচিতি এনে দেয়।

তারুণ্যে ফুটবলের প্রতি আগ্রহ

তারুণ্যে পাওলো দিবালা শৈশবের ফুটবল ভালোবাসা আরও গভীরতর হয়েছিল। বাড়ির আশপাশের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ফুটবল খেলার মাধ্যমে তাঁর দক্ষতা আরও উন্নত হতে থাকে। এই সময়ে তিনি তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারের মূল ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

ক্লাব ক্যারিয়ারের সূচনা: ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা

পাওলো দিবালা ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু করেন ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা’র হয়ে। আর্জেন্টিনার এই ক্লাবে প্রথম পেশাদার ম্যাচ খেলেন ২০১১ সালে। এই ক্লাবে খেলে পাওলো দিবালা খুব দ্রুত তার ফুটবল দক্ষতা প্রমাণ করেন। ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা তার প্রথম ম্যাচ থেকে শুরু করে ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন এবং সবার নজরে আসেন।

আরও পড়ুনঃ  ক্রিকেট বিশ্বকাপের মজাদার মুহূর্ত ও ইতিহাস

প্রথম পেশাদার ম্যাচ

ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা’র হয়ে পাওলো দিবালা তার প্রথম পেশাদার ম্যাচ খেলেন মাত্র ১৭ বছর বয়সে। সেই ম্যাচে তরুণ দিবালা দেখিয়ে দিলেন তার প্রতিভার প্রাথমিক ঝলক। তার দ্রুত গতি, প্রভাবশালী সৃজনশীলতা এবং কৌশলগত দক্ষতা সবার মন জয় করে নেয়।

প্রথম সিজনের সাফল্য

দিবালা’র প্রথম সিজন ছিল অনবদ্য। ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা’র হয়ে তিনি ১৭ গোল করেন, যা তাকে ক্লাবের সেরা গোলদাতার সম্মান এনে দেয়। পাওলো দিবালা ক্লাব ক্যারিয়ার তার প্রথম সিজন থেকেই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এবং প্রতিপক্ষ দলগুলোকে হতবাক করে দেয়। তার এই অসাধারণ পারফরম্যান্স তাকে পরবর্তী ক্লাব পারলেমো’তে স্থানান্তরের পথ সুগম করে।

পাওলো দিবালা ক্লাব ক্যারিয়ার, ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা’র পর্যায়টি তার ভবিষ্যৎ সাফল্যের ভিত্তি স্থাপন করে, যা পরবর্তীতে তাকে ইউরোপীয় ফুটবলের অন্যতম তারকা করে তোলে।

ইটালিতে পথচলা: পার্লেমো

পাওলো দিবালা ইটালিতে আসার পর তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারে এক নতুন ধারা সৃষ্টি হয়। আর্জেন্টিনার ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা ক্লাবে প্রশংসিত সাফল্যের পর, ২০১২ সালে দিবালা পার্লেমো ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সময় সিরিয়া বিয় লিগে তাঁর যাত্রা শুরু হয়।

সিরিয়া বিয় থেকে সিরিয়া আ যাত্রা

পার্লেমো ক্লাবের হয়ে পাওলো দিবালা প্রথমত সিরিয়া বি লীগে খেলেন। সেখানে তিনি তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের দ্বারা সবার নজর কাড়েন। ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পার্লেমোর হয়ে ৮৯টি ম্যাচে খেলেন এবং ২১টি গোল করেন। তাঁর অনবদ্য ফুটবল খেলার দক্ষতা পার্লেমোকে সিরিয়া আ লিগে উত্তরণের সহায়ক হয়। ২০১৩-১৪ মৌসুমে তিনি ক্লাবের পক্ষে বড় ভূমিকা পালন করেন, যা তাঁদের সিরিয়া আ লিগে প্রমোশন পেতে সহায়তা করে। পার্লেমো ক্লাবের হয়ে দিবালার পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসনীয় ছিল।

পারফরম্যান্স ও প্রভাব

পাওলো দিবালা ইটালিতে তাঁর অনবদ্য খেলার ক্ষিপ্রগতি এবং সৃজনশীলতার জন্য পরিচিতি লাভ করেন। পার্লেমো ক্লাবের হয়ে সিরিয়া আ লিগে খেলার সময় তিনি ২০১৪-১৫ মৌসুমে ১৩টি গোল এবং ১০টি অ্যাসিস্ট করে ক্লাবের শক্তি বৃদ্ধি করেন। দিবালার এই সাফল্য তাঁকে ইটালির ফুটবল বিশ্বে বড় মাপের নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। দিবালার এই উন্নতি এবং পার্লেমো ক্লাবের প্রতি তাঁর প্রভাব অবশেষে তাঁকে জুভেন্তাস ক্লাবে স্থানান্তর করার পথ সুগম করে।

এইভাবে, পাওলো দিবালা ইটালি এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁর সৃজনশীল খেলা এবং গোল করার দক্ষতার জন্য একজন বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

জুভেন্তাসে সাফল্য ও সংগ্রাম

পাওলো দিবালা জুভেন্তাসে তাঁর ক্যারিয়ারে অনেকগুলি সাফল্য এবং কিছু সংগ্রাম সম্মুখীন হন। তাঁর লক্ষ্য ও নেতৃত্বে জুভেন্তাস একাধিক লিগ টাইটেল জিতেছে এবং ইউরোপীয় মঞ্চেও তাদের প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে, তাঁর যাত্রা ছিল চিরকালই সহজ নয়, কিছুটা বাধা পেয়েছেন পাওলো দিবালা চোট এর কারণে।

লিগ টাইটেল এবং অন্যান্য জয়

জুভেন্তাসে যোগদান করার পর, পাওলো দিবালা দ্রুতই ক্লাবের অন্যতম প্রধান প্লেয়ার হয়ে উঠেছিলেন। তিনি জুভেন্তাসকে কমপক্ষে পাঁচটি লিগ টাইটেল এবং কপ্পা ইতালিয়া জিততে সাহায্য করেছেন। তাঁর অসাধারণ স্কিল এবং নৈপুণ্য মাঠে ভক্তদের মন জয় করেছেন। দিবালার নেতৃত্বে, ক্লাব একাধিকবার সুপারকপ্পা ইতালিয়ানা জিতেছে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও কয়েকবার সফলভাবে প্রতিযোগিতা করেছে।

চোট এবং সংগ্রাম

যদিও তার সাফল্য অসংখ্য, তবে পাওলো দিবালা বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু গুরুতর চোট পেয়েছেন, যা তার পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করেছে। একাধিকবার মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে তাঁকে চোটের কারণে। তারমধ্যে প্রধান ছিল হ্যামস্ট্রিং চোট এবং গোঁড়ালির সমস্যা। চোটের কারণে তার মাঠে না থাকতে পারাটা জুভেন্তাসের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিল। তবে, দিবালার অদম্য মানসিকতা এবং পরিশ্রম তাঁকে বার বার ফিরে আসতে সাহায্য করেছে এবং তিনি মাঠে ফিরে এসে তার সেরা ফর্ম প্রদর্শন করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  ফুটবল: সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলার ইতিহাস, বিবর্তন ও নিয়মাবলী

বর্তমান ক্লাব এ.এস. রোমা

পাওলো দিবালা বর্তমানে ইতালির ক্লাব এ.এস. রোমার হয়ে খেলছেন, যেখানে তাঁকে নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ.এস. রোমাতে তাঁর স্থানান্তরের মাধ্যমে তিনি নতুনভাবে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছেন।

রোমাতে স্থানান্তর এবং নতুন শুরু

দিবালার নতুন যাত্রা শুরু হয় যখন তিনি জুভেন্তাস থেকে এ.এস. রোমাতে স্থানান্তরিত হন। তার সাথে আরও অনেক পরিকল্পনা ও সম্ভাবনার দরজা খুলেছে। দিবালার এই স্থানান্তর তাঁর জন্য এবং সমর্থকদের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা।

এখনকার পারফরম্যান্স

এ.এস. রোমায় দিবালা নতুন উদ্যমে খেলা শুরু করেন। বর্তমানে তার পারফরম্যান্স খুবই প্রশংসনীয়। রোমা পারফরম্যান্স বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে নিজেদের শক্তি ও কৌশল উন্নত করছে। তাঁর খেলার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা এ.এস. রোমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিবালার স্থিরতা ও তারুণ্যের শক্তি রোমা পারফরম্যান্সকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে।

আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ার

পাওলো দিবালার আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে। তার খেলা তারকাখ্যাতি এনে দিয়েছে আর্জেন্টিনার ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে। দিবালা তার জাতীয় দলের খেলা শুরু করেন এবং দ্রুতই একটি বিশেষ অবস্থানে চলে আসেন।

আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে অভিষেক

দিবালা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুতে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে সারা বিশ্বে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তার প্রতিভা এবং দক্ষতা প্রদর্শিত হয় যখন তিনি প্রথমবারের মতো আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মাঠে নামেন। এই অভিষেক তাকে আরও বড় পরিসরে ফুটবলার হিসেবে গড়তে সাহায্য করে।

বিশ্বকাপ এবং কপা আমেরিকাতে অংশগ্রহণ

পাওলো দিবালা আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ এবং কপা আমেরিকা প্রতিযোগিতাতে অংশ নিয়েছেন। তিনি এই দুটি বড় প্রতিযোগিতায় নিজের মেধা এবং শৈল্পিক দক্ষতা প্রদর্শন করেন। বিশ্বকাপে তার প্রতিটি মুহূর্ত ছিল দর্শনার্থীদের জন্য অবিস্মরণীয়। একইভাবে কপা আমেরিকাতেও তার পারফরম্যান্স আর্জেন্টিনার জন্য গর্বের সূচনা করে।

দিবালা একাধিক ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং তার খেলার মানসিকতা আর্জেন্টিনার ফুটবলের উন্নতিতে সহায়ক ছিল। এইভাবে দিবালা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে আর্জেন্টিনার জন্য নিজেকে প্রমাণিত করেছেন।

অবশেষে, পাওলো দিবালা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করে আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসে অনন্য একটি স্থান করে নিয়েছেন।

Paulo Dybala: আর্জেন্টিনার ফুটবল তারকা

পাওলো দিবালা, তাঁর অসামান্য প্রতিভা এবং নেতৃত্বের গুণাবলীর মাধ্যমে ফুটবল বিশ্বে গভীর প্রভাব ফেলেছেন। দিবালা তারকা হিসেবে ফুটবল বিশ্বকে আলোড়িত করেছেন এবং তাঁর অবদান অমূল্য।

তার প্রভাব এবং অবদান

দিবালার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে আর্জেন্টিনার ইনস্টিটুটো দে কর্ডোবা দলের মাধ্যমে, যেখানে তিনি ৩৮ ম্যাচে ১৭ গোল করেছিলেন। তাঁর চিত্তাকর্ষক প্রদর্শনের ফলে খুব দ্রুতই তাঁর পথচলা ইতালিয় ক্লাবগুলোতে শুরু হয়, যার মধ্যে পার্লেমোর ৮৯ ম্যাচে ২১ গোল এবং এরপর জুভেন্তাসের ২১০ ম্যাচে ৮২ গোলের অবদান অন্যতম। দিবালা বর্তমানে এ. এস. রোমার হয়ে খেলে, যেখানে তিনি এখন পর্যন্ত ৩১ ম্যাচে ১৪ গোল করেছেন। তাঁর এই সফলতার মূল কারণ তাঁর অসামান্য কৌশল এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞা

ফুটবল বিশ্বের প্রতি তার প্রভাব

আন্তর্জাতিক স্তরে, পাওলো দিবালা আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের পক্ষে ৪০ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ৭ গোল করেছেন। তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ২০২২ সালে ফিফা বিশ্বকাপ এবং কনমেবল-উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স কাপ জয় করেছেন। দিবালা তাঁর দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য অনেক প্রশংসিত হয়েছেন, বিশেষ করে ২০১৯-২০২০ সিজনে সিরি এ-এর মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার পুরস্কার অর্জন করে। দিবালা তারকা হিসেবে ফুটবল বিশ্বের প্রতি যে অবদান রেখেছেন, তা অনস্বীকার্য। তাঁর কৌশল, সৃজনশীলতা এবং দৃঢ় আত্মপ্রত্যয় ফুটবল প্রেমীদের কাছে এক অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

আরও পড়ুনঃ  সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিংবদন্তি

খেলার শৈলী এবং বিশেষ দক্ষতা

পাওলো দিবালা তাঁর গতি, সৃজনশীলতা এবং কৌশলের মাধ্যমে ফুটবল মাঠে তার বিপক্ষের প্রতিরোধী দলটির উপর গভীর প্রভাব ফেলেন। এক অনন্য খেলোয়াড় হিসেবে দিবালা খেলার শৈলী তাঁকে বিশেষভাবে আলাদা করেছে। এছাড়াও, দিবালা দক্ষতা ফুটবলপ্রেমীদের মুগ্ধ করে রাখার জন্য যথেষ্ট।

গতি এবং প্রভাবশালী সৃজনশীলতা

দিবালার গতি এবং প্রভাবশালী সৃজনশীলতা তাকে একটি শক্তিশালী খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে। তার অনবদ্য গতি ও ধৈর্যশক্তি তাকে প্রতিপক্ষের রক্ষণের মধ্য দিয়ে বোলানোর সুযোগ দেয়। দিবালা খেলার শৈলী এক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়।

কৌশল এবং লক্ষ্য করার ক্ষমতা

দিবালার কৌশল এবং লক্ষ্য করার ক্ষমতা সত্যিই অসাধারণ। টপ-টায়ার ফিনিশিং এবং দক্ষতার মাধ্যমে তিনি যে কোনও মুহূর্তে গোল করতে সক্ষম। এই দুর্দান্ত দিবালা দক্ষতা তাঁকে সারা বিশ্বে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় করেছে।

ফুটবল মাঠে ডাকনাম: “লা জোগা”

পাওলো দিবালা তার অসাধারণ খেলার শৈলী এবং প্রতিভার জন্য ফুটবল মাঠে “লা জোগা” নামে পরিচিত। এই নামটি স্প্যানিশ ভাষার ‘দ্য জুয়েল’ এর ইংরেজি অনুবাদ। “। দিবালা ডাকনাম তার অসাধারণ সৃজনশীল এবং কৌশলী খেলার জন্য উপযুক্ত।

ডাকনামের পেছনের গল্প

দিবালা যখন ২০১৫ সালে ইতালির জুভেন্টাস ক্লাবে যোগদান করেন, তখন থেকেই তার খেলার শৈলী তাকে “লা জোগা” ডাকনাম এনে দেয়। ক্লাব ক্রিয়ার অন্যান্য সময়েও তার চমৎকার পারফরম্যান্স এই ডাকনামটির ব্যবহার বাড়িয়েছে। আর্জেন্টিনীয় প্রিমিয়ার ডিভিশনে ইনস্টিটুটোর হয়ে ৩৮ ম্যাচে গোল করার পর থেকেই এই ডাকনামের মূল শিকড় প্রোতিষ্ঠিত হয়।

তাৎপর্য এবং কার্যকারিতা

দিবালার ডাকনাম “লা জোগা” তার খেলার গতি, প্রতিভা এবং শক্তি কে তাৎপর্য পূর্ণভাবে প্রকাশ করে। দিবালা ডাকনাম অর্জন করা অনেক ফুটবলারের জন্য এক ধরনের সম্মান। আমরা তাকে ফুটবল মাঠে দেখলে মনে করি যেন একটি শৈল্পিক প্রদর্শনী চলছে। দিবালা তার সৃজনশীলতায় মাঠের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম এবং লক্ষ্য অর্জনে অপ্রতিরোধ্য।

ফুটবলের বাইরের জীবনের তথ্য

পাওলো দিবালা শুধুমাত্র তার ফুটবল দক্ষতা এবং গোল করার ক্ষমতার জন্য বিখ্যাত নন বরং তার ব্যক্তিগত জীবন এবং সমাজসেবা কার্যক্রমের জন্যও বেশ পরিচিত। মাঠের বাইরেও তার জীবন সমৃদ্ধ এবং উদ্যমী। দিবালা ব্যক্তিগত জীবনে সামাজিক এবং দানশীল কাজের জন্য সবসময় প্রশংসিত হয়েছেন।

ব্যক্তিগত জীবন এবং শখ

পাওলো দিবালা’র ব্যক্তিগত জীবন প্রকৃত অর্থেই মনোমুগ্ধকর। তিনি লেগুনা লার্গা, আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করেন এবং তার জীবনের প্রথম চার হাজার পেসো সমান ন্যূনতম মজুরির জন্য পেশাদার ফুটবল খেলা শুরু করে। দিবালা শখ হিসেবে বই পড়তে ভালোবাসেন এবং শৈল্পিক কাজের মধ্যে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। ফুটবল থেকে সময় পেলেই তিনি তার পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান।

সমাজসেবা এবং দানশীলতা

দিবালার সমাজসেবা এবং দানশীল কার্যক্রমের ওপর তার গভীর বিশ্বাস রয়েছে। তিনি নানা দানমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত যেখানে তিনি তার উপার্জনের একটি বড় অংশ দান করেন। আর্জেন্টিনার দরিদ্র শিশুদের জন্য তিনি বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রকল্পে অর্থায়ন করেছেন এবং নানান সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। পাওলো দিবালা অনেক সময় নিজের সামাজিক প্রতিপত্তি এবং ফুটবল তারকাখ্যাতি ব্যবহার করে সমাজে সত্যিকারের পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button