পূর্ণিমা (অভিনেত্রী)

পূর্ণিমা, যার প্রকৃত নাম দিলারা হানিফ রিতা, ১৯৮৪ সালের ১১ জুলাই বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সিনেমার তারকা পূর্ণিমা তার অভিনয় দক্ষতা ও চমৎকার ব্যক্তিত্বের জন্য দর্শকদের মধ্যে অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। অভিনয় জগতে তার পা রাখেন ১৯৯৩ সালে “এই জীবন তোমার আমার” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, যা তাকে বিনোদন জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিণত করে।

পূর্ণিমা জীবনীতে উল্লেখযোগ্য দিক হলো তার প্রথম বাণিজ্যিক সাফল্য ২০০৩ সালে “মনের মাঝে তুমি” চলচ্চিত্রে রিয়াজের বিপরীতে অভিনয়। বাংলা সিনেমার তারকা পূর্ণিমা ২০১০ সালে “ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তার ফিল্ম ক্যারিয়ারে পূর্ণিমা বহু সমাদৃত চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন এবং নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার সূচনায় ভূমিকা রেখেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষাগত পটভূমি

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূর্ণিমা, যার পারিবারিক নাম দিলারা হানিফ রিতা। তাঁর শৈশবকাল এক প্রাণবন্ত ও সুখময় সময় ছিল, যার অধিকাংশ সময় কাটে ঢাকায়। পূর্ণিমা শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।

জন্মস্থান ও শৈশব

পূর্ণিমার জন্ম হয় ঢাকায়, কিন্তু তাঁর পরিবারের মূল নিবাস চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। চট্টগ্রামের যুবকে একটি পরিচিত নাম তিনি হয়ে উঠেছেন। তাঁর শৈশব কেটেছে ঢাকার এক আনন্দময় পরিবেশে, যা তাঁর শিল্পী জীবনের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

শিক্ষা ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট

পূর্ণিমা স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং নিজের শিক্ষাগত দিকগুলি উন্নত করেন। একটি সাধারন পরিবারের মেয়ে পূর্ণিমার পারিবারিক প্রেক্ষাপট ছিল অত্যন্ত সহায়ক ও উৎসাহ প্রদানকারী। তাঁর পরিবার, বিশেষ করে তার মা-বাবা, পূর্ণিমার প্রতিভা বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর শিক্ষাগত দিকগুলি ঢাকার ভাল মানের স্কুল ও কলেজের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশি অভিনেত্রী হিসেবে পূর্ণিমার ভিন্নধর্মী পরিচয় ও জনপ্রিয়তা আজ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, এবং তাঁর শিক্ষা ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট এই সফলতার ভিত্তি স্থাপন করেছে।

কর্মজীবনের শুরু

পূর্ণিমার চলচ্চিত্র অভিষেক হয় ১৯৯৮ সালে, জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমার মাধ্যমে। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম মাইলফলক ছিল এবং ঢাকাই সিনেমায় তার প্রবেশের দরজা খোলে। পূর্ণিমা তার শৈশবকাল কাটান চট্টগ্রামে এবং তরুণ বয়স থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জাগে।

শুরুর সংগ্রাম ও প্রথম ছবি

পূর্ণিমার যাত্রার শুরুটা সহজ ছিল না। ঢাকার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য পূর্ণিমাকে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। কিন্তু তার প্রতিভা ও ধৈর্য তাকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে আসে। ১৯৯৮ সালে, জাকির হোসেন রাজুর ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমার মাধ্যমে পূর্ণিমার চলচ্চিত্র অভিষেক ঘটে। ছবিটি দর্শকদের মধ্যে বেশ সাড়া জাগায় এবং তাকে ঢাকাই সিনেমায় স্থায়ী কুড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুনঃ  তাবু (অভিনেত্রী)

প্রথম বাণিজ্যিক সাফল্য

পূর্ণিমার প্রথম বাণিজ্যিক সাফল্য আসে ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মনের মাঝে তুমি’ ছবিতে, যেখানে তার বিপরীতে অভিনয় করেন রিয়াজ। ছবিটি বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয় এবং এটি সেই সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। রিয়াজ ও পূর্ণিমা জুটির কেমিস্ট্রি দর্শকদের মন জয় করেছিল এবং এই ছবির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বক্স অফিস সাফল্য পূর্ণিমার ক্যারিয়ারকে আরও মজবুত করে তোলে। পূর্ণিমা চলচ্চিত্র অভিষেক এবং তার পরবর্তী সাফল্য তাকে ঢাকাই সিনেমার একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রীতে পরিণত করে।

পূর্ণিমার জনপ্রিয় চলচ্চিত্র

পূর্ণিমা, বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম প্রধান মুখ, যখন জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের কথা আসে, তখন তার কিছু স্মরণীয় কাজ রয়েছে যেগুলি চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছে।

মনের মাঝে তুমি

২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মনের মাঝে তুমি’ পূর্ণিমার অন্যতম সফল চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এই বাংলাদেশি সিনেমা মুক্তির পর বিপুল জনপ্রিয়তা পায় এবং বাণিজ্যিকভাবে অসাধারণ সাফল্য লাভ করে। ছবিটির ছোট-বড় সমস্ত মুহূর্ত দর্শকদের কাছে এখনো স্মরণীয়।

মেঘের পরে মেঘ

২০০৪ সালে মুক্তি পায় ‘মেঘের পরে মেঘ’, যা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। এই ছবিটির মাধ্যমে পূর্ণিমা তার অভিনয় দক্ষতা নতুনভাবে প্রমাণ করেন এবং দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেন। চলচ্চিত্রটি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত এবং ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে।

হৃদয়ের কথা

২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হৃদয়ের কথা’ একটি পূর্ণিমা হিট মুভি যা দর্শক এবং সমালোচকদের সমাদৃত হয়েছিল। ছবিটির গল্প এবং পূর্ণিমার অনবদ্য অভিনয় একে বাণিজ্যিকভাবে সফল করে তোলে। ছবিটি তারকা জরিপে পুরস্কারও অর্জন করে, যা পূর্ণিমার ক্যারিয়ারের অন্যতম মাইলফলক হয়ে রয়েছে।

পুরস্কার ও সম্মাননা

পূর্ণিমা তার অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আছেন। তার কর্মজীবনে তিনি অনেক সম্মাননা ও পুরষ্কার লাভ করেছেন।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

পূর্ণিমা ৩৫তম বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তার অসাধারণ অভিনয়ের জন্য বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিল না’ (২০১০) চলচ্চিত্রের জন্য তিনি পূর্ণিমা পুরস্কার পান এবং এটি ছিল তার জন্য একটি অত্যন্ত স্মরণীয় মুহূর্ত। এছাড়া, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অনেকে পূর্ণিমার কাজের প্রশংসা করেন এবং তাকে অভিনন্দন জানান।

মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার

পূর্ণিমা মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন ‘হৃদয়ের কথা’ (২০০৬) সিনেমায় তার অসাধারণ অভিনয়ের জন্য। এই চলচ্চিত্রে তার অভিনয় দক্ষতা এবং চরিত্রের গভীরতা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই পুরস্কার পেয়ে পূর্ণিমা আরও অনুপ্রাণিত হন এবং তার কর্মজীবনে আরও সাফল্যের পথে এগিয়ে যান।

তার এই সম্মাননা এবং পূর্ণিমা পুরস্কার প্রাপ্তি প্রমাণ করে যে তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তার অভিনয় দক্ষতা সর্বদা প্রাসঙ্গিক।

ব্যক্তিগত জীবন ও বিবাহ

পূর্ণিমা, একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি তারকা, তার ব্যক্তিগত জীবন ও বিবাহ নিয়ে ব্যাপক আলোচিত হয়ে থাকেন। অভিনেত্রীর পূর্ণিমা বিবাহ এবং তার পারিবারিক জীবন নিয়ে আমরা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আরও পড়ুনঃ  শ্রুতি হাসান

প্রথম বিবাহ ও বিচ্ছেদ

পূর্ণিমা ২০০৫ সালে মোস্তাক কিবরিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই পূর্ণিমা বিবাহ তখন ব্যাপক আলোচিত হয়। কিন্তু পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন সমস্যার কারনে, তাদের বিচ্ছেদ ঘটে ২০০৭ সালে।

দ্বিতীয় বিবাহ ও পরিবার

২০২২ সালে, পুনরায় পূর্ণিমা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আশফাকুর রহমান রবিনের সাথে। তাদের বিবাহের পর, পূর্ণিমা এবং তার পারিবারিক জীবন নতুনভাবে শুরু হয়। বাংলাদেশি তারকা হিসাবে, পূর্ণিমার পারিবারিক জীবনের ঘটনাগুলো সবসময়েই মিডিয়ার আলোকপাতের বিষয় হয়ে ওঠে।

Poornima (Actress) এর অবদান

বাংলাদেশি সিনেমার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র পূর্ণিমা। তিনি নিজেকে চলচ্চিত্র জগতে একজন খ্যাতিমান অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তার অভিনয় দক্ষতা ও সিনেমায় উপস্থিতি তাকে দেশের অন্যতম প্রধান অভিনয়শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। পূর্ণিমা সমাজসেবা ক্ষেত্রেও তার অবদান রেখেছেন, যা তাকে একটি পরিপূর্ণ মানবিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।

চলচ্চিত্র জগতে অবদান

পূর্ণিমা তার ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে বিভিন্ন সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন যেমন “মনের মাঝে তুমি”, “মেঘের পরে মেঘ”, এবং “হৃদয়ের কথা”। তার অভিনয় দক্ষতা এবং অসাধারণ প্রতিভার কারণে পূর্ণিমা বাংলাদেশি সিনেমার জগতে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ বেশ কিছু মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করেছেন, যা তার অবদানকে আরও প্রশংসনীয় করে তুলেছে।

সমাজসেবামূলক কার্যকলাপ

পূর্ণিমা সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তার অবদান উল্লেখযোগ্য। পূর্ণিমা সমাজসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের দুর্বল ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, যা সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তার এই মানবিক কার্যক্রম তাকে শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রী হিসাবে নয়, বরং একজন নিবেদিত সমাজসেবক হিসেবেও সমাদৃত করেছে।

টিভি ও নাটক

পূর্ণিমা টিভি ক্যারিয়ারও অত্যন্ত উজ্জ্বল। তার অভিনয় গুণাবলী শুধুমাত্র চলচ্চিত্রে সীমাবদ্ধ নয়; বাংলাদেশি টিভি শো এবং জনপ্রিয় নাটকেও তার বিশাল অবদান রয়েছে। পূর্ণিমা বাংলাদেশের টিভি নাটক এবং সিরিয়ালে তার পারদর্শিতা প্রকাশ করেছেন, যা দর্শকের মন জয় করেছে।

টিভি নাটক ও সিরিয়াল

পূর্ণিমা প্রথম টিভি নাটক ‘ল্যাবরেটরি’তে অভিনয় করেন ২০০১ সালে। তার অভিনীত নাটকগুলি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলা টিভি নাটকে তার অভিনীত কিছু উল্লেখযোগ্য নাটক হল:

  • ল্যাবরেটরি
  • শক্তি
  • স্বপ্ন পূরণ

এই নাটকগুলি বাংলাদেশের টিভি দর্শকদের মধ্যে পূর্ণিমাকে খুব জনপ্রিয় করে তুলেছে। পূর্ণিমা টিভি ক্যারিয়ারের অংশ হিসেবে, তিনি নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যা তাকে আয়োজন করেছেন।

বিশেষ টিভি প্রজেক্ট

পূর্ণিমা কয়েকটি বিশেষ টিভি প্রজেক্টে কাজ করেছেন যা তাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য দুটি প্রজেক্ট হল:

  • ঝরোকালী: এই নাটকে পূর্ণিমার অভিনয় দর্শকের মনের গহীনে বিবেকান্নার দোলা তুলেছিল।
  • স্মৃতিপাত: এই সিরিজটি পূর্ণিমাকে আরও একটি মাইলফলকে পৌঁছে দিয়েছে, যেখানে তিনি তার অভিনয় দক্ষতা প্রকাশ করেছেন অসাধারণভাবে।

এই প্রকল্পগুলি পূর্ণিমা টিভি ক্যারিয়ারকে আরও প্রামাণিক করে তোলে এবং তাকে একজন বহুমাত্রিক অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশি টিভি শো এবং জনপ্রিয় নাটকের জগতে পূর্ণিমার অবদান সত্যিই অবিস্মরণীয়।

আরও পড়ুনঃ  সানা খান

বর্তমান কার্যকলাপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

পূর্ণিমা বর্তমানে নতুন চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন প্রজেক্টে সম্পূর্ণভাবে নিবিষ্ট আছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ছায়াছবি “আহারে জীবন” ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে এবং এরই মধ্যে ১৫ লক্ষেরও বেশি ভিউ পেয়েছে, যা নতুন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে বিশেষ সাফল্য ধারণ করেছে। পূর্ণিমা আসন্ন প্রজেক্ট এবং তার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তার শিল্পীর ভবিষ্যত নিশ্চিতভাবে উজ্জ্বল হতে চলেছে।

পূর্ণিমা অস্ট্রেলিয়ায় একটি কাজের প্রয়োজনে দুই মাস কাটিয়েছিলেন। এই সময়ে তিনি বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পেয়েছেন, কিন্তু এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার পছন্দমতো এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপর বিশ্বাস রাখেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে তড়িৎ পরিবর্তন সত্ত্বেও পূর্ণিমা তার ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনকে ব্যালেন্স করে চলেছেন।

তাছাড়া, পূর্ণিমা তার সামাজিক কার্যকলাপ এবং পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্যও সদা প্রস্তুত থাকেন। পূর্ণিমা আসন্ন প্রজেক্ট গুলোতে দর্শকদের নতুন কিছু প্রদর্শন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যা বাংলাদেশি চলচ্চিত্র জগতেও নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পারে। যায় হোক, পূর্ণিমা শিল্পীর ভবিষ্যত নিয়ে দারুণ আশাবাদী।

সমাপ্তি

পূর্ণিমা, যিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও টিভি জগতের অন্যতম উজ্জ্বল তারকা, তার অভিনয় জীবনে বহু সাফল্য এবং সম্মান অর্জন করেছেন। চট্টগ্রামে ১৯৮১ সালের ১১ই জুলাই জন্ম নেওয়া পূর্ণিমা ১৯৯৭ সালে “জীবন তোমার আমার” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। তার পর তার অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা এবং অবদান তাকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন আইকন হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। “লাল দড়িয়া” (২০০২), “মনের মাঝে তুমি” (২০০৩), এবং “মেঘের পরে মেঘ” (২০০৪) এর মত সফল চলচ্চিত্রগুলো তার ক্যারিয়ারে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

পূর্ণিমা ক্যারিয়ার সমাপ্তি নিকটবর্তী হয়েও, তার অবদান গুলো দৃঢ়প্রতিজ্ঞার সাথে স্মরণীয়। ২০১০ সালে “ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না” চলচ্চিত্রে তার চরিত্রের জন্য পূর্ণিমা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। পাশাপাশি, “ভালোবাসা আজ কাল” চলচ্চিত্রের জন্য ২০০৮ সালে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারও তার কৃতিত্বের তালিকায় যুক্ত হয়। রিয়াজের বিপরীতে ২৫টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তাদের জুটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নতুন জমি ফলিয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবনেও পূর্ণিমার যাত্রা ছিল চ্যালেঞ্জিং। ২০০৭ ও ২০২২ সালে তার বিবাহ এবং মাঝে বিচ্ছেদ, এখনও তার জীবন গল্পটিকে সুরম্য করেছে। বর্তমানে তিনি তার কন্যা আরশিয়া উমাইজার সাথে সময় কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশি অভিনেত্রী জীবনী বললে পূর্ণিমার নাম আসবেই, কারণ তার কর্মজীবনের প্রতিটি ধাপে থাকে দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। পূর্ণিমার বর্তমান কার্যকলাপে “হলদা ৯১১ ইমার্জেন্সি” এবং “রোদ্দুর পেয়েছি তোমার নাম” এর মত টিভি নাটকগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকায় তিনি গৌরবান্বিত হয়েছেন।

পূর্ণিমার চলচ্চিত্র তারকা হিসেবে অবদান নতুন প্রজন্মের অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের জন্য এক অনুপ্রেরণা দেয়। তার অসাধারণ প্রতিভা এবং আন্তরিক সেবা অনেকেরই হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তার কাজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হবে। পূর্ণিমা ক্যারিয়ার সমাপ্তি মানে একটি অধ্যায়ের শেষ নয়, বরং একটি কিংবদন্তী উপস্থাপন। তার জীবনী এবং কর্মজীবন প্রমাণ করে, তিনি বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রকৃত রত্ন।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button