রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একটি প্রধান স্টেশন। রাজশাহী শহরের শিরোইল বাস টার্মিনালের বিপরীতে অবস্থিত, এই স্টেশনটি আব্দুলপুর থেকে পুরোনো মালদহ লাইনের উপর প্রতিষ্ঠিত। রাজশাহী রেল স্টেশনটি ১৯৩০ সালে শুরু হয় এবং ২০০৩ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয়। এটি বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় শহর, যেমন ঢাকা ও চট্টগ্রাম, সহ অন্যান্য শহরগুলির সাথে যুক্ত।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের অবস্থান ২৪°২২′২৯″ উত্তর এবং ৮৮°৩৬′১৭″ পূর্ব। স্টেশনটিতে মোট ৬টি প্ল্যাটফর্ম এবং ৮টি ট্র্যাক রয়েছে। বিস্তৃত গেজের ওপর নির্মিত এই স্টেশনে বিভিন্ন মেইল ট্রেন এবং এক্সপ্রেস ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করে, যেমন “সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস”, “পদ্মা এক্সপ্রেস”, এবং “ধূমকেতু এক্সপ্রেস”। “বনলতা এক্সপ্রেস” ঢাকা-রাজশাহী রুটে প্রথম নন-স্টপ ট্রেন পরিষেবা প্রদান করে।

Contents show

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ইতিহাস

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন বাংলার প্রথমসারির স্টেশনগুলির একটি। এর গুরুত্ব শুধু বর্তমানেই নয়, ঐতিহাসিকভাবেও বেশ উল্লেখযোগ্য। রাজশাহীতে প্রথম রেল স্টেশন স্থাপিত হয় ১৯৩০ সালে। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের অংশ হিসেবে, তখন থেকে এটি ছিল একটি প্রধান সংযোগস্থল।

১৯৩০-এর দশকে স্টেশনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৯৩০ সালে যখন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্রাথমিক স্থাপনা সম্পন্ন হয়, তা ছিল স্থানীয়দের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। রাজশাহী স্টেশন ইতিহাস অনুযায়ী, এটি তখন কলকাতার সাথে উত্তরবঙ্গের সংযোগ স্থাপনে প্রধান ভূমিকা পালন করত। স্টেশনটি যেমন ছিল তেমনি কৃষি এবং বাণিজ্যিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বিস্তর প্রভাব ফেলে।

স্টেশনের পুনর্নির্মাণ

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা ছিল অপরিসীম। ২০০৩ সালে স্টেশনের পুনর্নির্মাণ করা হয়, যা আধুনিক যাত্রী পরিবহন এবং অন্যান্য সেবার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। এই স্টেশন পুনর্নির্মাণের সময় টার্মিনাল ভবন, প্ল্যাটফর্ম এবং ইয়ার্ডগুলিকে পুনরায় গড়ে তোলা হয়। কোচিং শপ সুবিধাগুলি স্থাপন করে, যাত্রীদের জন্য আরও আরামপ্রদ পরিবেশ তৈরি করা হয়।

অবস্থান এবং সংযোগ

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হিসেবে পরিচিত। রাজশাহী অবস্থান ভৌগোলিকভাবে ২৪.৩৭৪৭১৯° উত্তর ও ৮৮.৬০৪৭৮০° পূর্বে অবস্থিত। এই রেলওয়ে স্টেশনের পাশাপাশি রাজশাহী বিভাগ অন্যান্য প্রধান শহরের সাথে সংযুক্ত রয়েছে, যা পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অধীনে পরিচালিত হয়।

ভৌগোলিক অবস্থান

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনটি মহানগরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, যা সহজেই অ্যাক্সেস করা যায়। রাজশাহী অবস্থান এর ফাঁসিয়ে পাশের শহরগুলির সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ অত্যন্ত উন্নত। বগুড়া, নওগাঁ, নাটোর ও অন্যান্য জেলা হতে রাজশাহীতে যাতায়াত সহজ এবং সুগম।

রাজশাহী বিভাগের সংযোগ

রাজশাহী রেলওয়ে সংযোগ রেলপথের মাধ্যমে অন্যান্য মহানগরের সাথে অবস্থান করে রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকার সাথে সরাসরি যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্মাণের পরে। রেল সুবিধার পাশাপাশি সড়ক পথে উন্নত সংযোগ রয়েছে যেগুলি অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  পদ্মা সেতু সম্পর্কে

স্টেশনের অবকাঠামো

রাজশাহী রেলওয়ে অবকাঠামো দেশের অন্যান্য স্টেশনের তুলনায় অত্যাধুনিক এবং সুসজ্জিত। এখানে সমস্ত যাত্রী এবং ট্রেন চলাচলের সুবিধার জন্য আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো সমৃদ্ধ।

প্রধান ভবন এবং প্ল্যাটফর্ম

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে প্রধান ভবনটি পর্যাপ্ত সুবিধা দিয়ে সজ্জিত এবং এটিতে যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই উপলব্ধ। স্টেশনে মোট ৮টি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যা ব্রডগেজ রেলপথে পরিচালিত হয়। প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম সুসজ্জিত এবং পরিচ্ছন্ন রাখা হয়।

প্রবেশ এবং বাহির ব্যবস্থা

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ এবং বাহিরের ব্যবস্থা এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে যাত্রীরা সহজেই স্টেশন থেকে ঢুকতে এবং বের হতে পারেন। এখানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিদ্যমান এবং প্রতিটি প্রবেশপথ এবং বাহিরের পথ আলাদা করা আছে।

বিশ্রামাগার এবং অন্যান্য সুবিধা

যাত্রীদের বিশ্রাম এবং সুস্থিরতার জন্য রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে মানসম্মত বিশ্রামাগার রয়েছে। এখানে যাত্রীরা আরাম করে বিশ্রাম নিতে পারেন এবং দীর্ঘ যাত্রার আগে স্বস্তি পেতে পারেন। এছাড়াও, স্টেশনে বিভিন্ন ধরনের জনসুবিধা সহ নানা সুবিধা উপলব্ধ রয়েছে যেমন পানীয় জল, শৌচাগার এবং বসার স্থান।

Rajshahi Railway Station এর গুরুত্ব

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সদর দফতর হিসেবে কাজ করে, যা এই স্টেশনের বিশেষ গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়।

বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যস্ততম স্টেশন

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যস্ততম স্টেশন হিসেবে চিহ্নিত। দেশের অনেকগুলি প্রধান রুট এখানে সংযুক্ত হওয়ার কারণে এটি প্রচুর যাত্রীর চাপ বহন করে। রাজশাহী রেলওয়ে গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়াতে, এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে, যা এই স্টেশনটির ব্যস্ততাকে প্রমাণ করে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রায় ৬৩.৯৯ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহনের দায়িত্ব পালন করেছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সদর দফতর

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সদর দফতর হিসেবে কাজ করার কারণে এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই সদর দফতর থেকে পশ্চিমাঞ্চলের সকল রেলওয়ে অপারেশন পরিচালিত হয়, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সময়ে, বাংলাদেশ রেলওয়ে ৪১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে যার মোট ব্যয় ১৪১,৮৮৩.৭০ কোটি টাকা। এছাড়া, ৩০ বছরের পুনর্বিন্যাসিত মাস্টার প্ল্যানের আওতায় (২০১৬-২০৪৫) ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে যার মোট ব্যয় ৫৫৩,৬৬২ কোটি টাকা। এই পরিকল্পনার মধ্যে নতুন ৭৯৮.০৯ কিমি রেলপথ নির্মাণ এবং বিদ্যমান লাইনগুলির সাথে সমান্তরাল ৮৯৭ কিমি রেলপথ যোগ করা হবে।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের এই ভূমিকা পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং এটি আরও অনেক বড় উন্নয়ন কার্যক্রমের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

টিকেট কিনতে সহায়তা

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে টিকেট কেনা এবং করা অত্যন্ত সহজ। যাত্রীদের সেবা প্রদানে স্টেশনে অনলাইন ও স্টেশন কাউন্টারের মাধ্যমে টিকেট প্রদান করা হয়। যাত্রীরা eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে নিবন্ধন করে টিকেট কিনতে পারেন। অনলাইনে টিকেট কিনতে বিশদ তথ্য দেয়ার প্রয়োজন থাকে যেমন, ব্যক্তিগত তথ্য, যাত্রীদের ধরনের নির্বাচন, শ্রেণি নির্ধারণ এবং bKash বা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে প্রদান।

  • জয়েন্ট ভেঞ্চার Shohoz-Synesis-Vincen পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের রেলওয়ের টিকেট বেচার চুক্তি করেছে।
  • যাত্রীদের সতর্ক করা হয় ৪-৫ দিন আগে জন্য যাতে কোনো জটিলতা না ঘটে।
  • (“রাজশাহী ট্রেন টিকেট) কাউন্টারে টিকেট বাতিল বা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে সুনির্দিষ্ট চার্জ প্রযোজ্য হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ  বঙ্গবন্ধু সেতু

অনলাইন টিকেট কেনার সময় ব্যাংক চার্জ সহ পূর্ণ মূল্য প্রদর্শিত হয় এবং চূড়ান্ত ক্রয়ের আগে তা যাত্রীরা দেখতে পান। ই-টিকেট হিসেবে টিকেট পাওয়া যায় যা ব্রাউজার থেকে ডাউনলোড করা যায় বা Purchase History বিভাগ থেকে এক্সেস করা যায়।

ট্রেন পরিষেবা

রাজশাহী কোর্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়। এই স্টেশন থেকে মহানন্দা এক্সপ্রেস, রাজশাহী এক্সপ্রেস, রাজশাহী কমিউটার এবং লোকাল ট্রেন পরিচালিত হয়, যা যাত্রীদের সহজ এবং আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করে। রাজশাহী ট্রেন পরিষেবা বাংলাদেশের রেলভবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মত বড় শহরগুলির সাথে সংযোগ স্থাপন করে থাকে।

ঢাকা এবং চট্টগ্রাম রুট

রাজশাহী থেকে ঢাকা ট্রেন এবং চট্টগ্রাম ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে। ঢাকা রুটে মহানন্দা এক্সপ্রেস এবং রাজশাহী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলি যাত্রীদের দ্রুত এবং সুবিধাজনক যাত্রা সরবরাহ করে। চট্টগ্রামের সাথে সংযোগ স্থাপনে রাজশাহী ট্রেন পরিষেবার একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ রুট

রাজশাহী কোর্ট রেলওয়ে স্টেশন উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন শহরের সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। স্টেশনটি নাটোর, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ এবং জয়পুরহাটের মতো শহরগুলির সাথে ভালো ট্রেন সংযোগ রাখে। রাজশাহী ট্রেন পরিষেবা যাত্রীদের নিরাপদ এবং আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করে।

স্টেশন কোড এবং শ্রেণী

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের রেলওয়ের একটি প্রধান স্টেশন। রাজশাহী স্টেশন কোড হল “RAJ” যা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের বিভিন্ন স্থানে এই স্টেশনকে চিহ্নিত করে। এই স্টেশনটি একটি প্রথম শ্রেণীর স্টেশন হিসেবে চিহ্নিত, যা এর গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং পরিষেবার মানের পরিচয় দেয়।

প্রতিদিন রাজশাহী স্টেশনে থেকে বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করে, যেমন রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ রুটে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেন। সপ্তাহে ৬ দিন এই ট্রেনটি চলাচল করে এবং রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জের রুটে মঙ্গলবার বন্ধ থাকে। এছাড়া, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস প্রায় 15টি স্টেশনে বিরতি নেয়, যার মধ্যে গোবরা, চন্দ্রদিঘলিয়া, মধুখালী, ইশ্বরদী, ইত্যাদি রয়েছে।

তাছাড়া, কঠোর পরিশ্রম এবং উন্নত সুবিধার কারণে রাজশাহী স্টেশনটি বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যস্ততম স্টেশন হিসেবে পরিচিত। স্টেশনটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ট্রেন ওয়াশ পিট এবং ক্যরেজ শপ সুবিধার মাধ্যমে উন্নত করা হয়েছে। রাজশাহী স্টেশন কোড “RAJ” ব্যবহার করে যাত্রীরা সহজেই টিকেট কিনতে এবং তাদের ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারে।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের শোভন চেয়ার টিকিটের মূল্য ৩০০ টাকা এবং এসি সিটের টিকিট মূল্য ৫০০ টাকা। স্টেশন শ্রেণী অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করা হয়।

এমনি একটি প্রথম শ্রেণীর স্টেশন হিসেবে রাজশাহী স্টেশন তার যাত্রীদের আরও উন্নত এবং সুলভ পরিষেবা প্রদান করে আসছে, যা বাংলাদেশের রেলওয়ে পরিষেবার মানকে উঁচু স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়ক হচ্ছে।

অত্যাধুনিক সুবিধা

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এখন অত্যাধুনিক সুবিধা নিয়ে সজ্জিত হয়েছে। সংস্কারের ফলে স্টেশনটিতে যে সমস্ত আধুনিক সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ট্রেন ওয়াশ পিট ও ক্যরেজ শপ।

সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ট্রেন ওয়াশ পিট

রাজশাহীতে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ট্রেন ওয়াশ পিট। এই ট্রেন ওয়াশ পিট ব্যবস্থার মাধ্যমে ট্রেনগুলি দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব হয়। এই স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রেনের পরিচ্ছন্নতা এবং সুরক্ষা উভয়ই বজায় রাখা হচ্ছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ যাত্রী সেবা লাভ করে এই সুবিধা থেকে। রাজশাহী আধুনিক সুবিধা দিয়ে সজ্জিত এই স্টেশনটি তাই আরও উন্নত হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন

ক্যরেজ শপ সুবিধা

রাজশাহী স্টেশনে যুক্ত হয়েছে নতুন ক্যরেজ শপ সুবিধা। যাত্রীরা এই ক্যরেজ শপ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ খুচরা পণ্য খুব সহজে কিনতে পারেন। এই ক্যরেজ শপগুলি যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করছে এবং ট্রেন যাত্রা পরবর্তী সময়ে কেনাকাটার সহজ সংস্থান হিসেবে কাজ করছে। ফলে রাজশাহী আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ হয়েছে এবং যাত্রী সেবার মান উন্নত হয়েছে।

প্রতিদিনের যাত্রী সার্ভিস

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন যাত্রী সার্ভিস পরিচালিত হয়। এখান থেকে আন্তঃনগর ট্রেন এবং লোকাল ট্রেন যাত্রীদের পরিষেবা প্রদান করে, যা সাধারণ যাত্রীদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।

আন্তঃনগর ট্রেনসমূহ

রাজশাহী যাত্রী সার্ভিস এর মধ্যে আছে ঢাকা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রা। এই রুটটি বাংলাদেশের প্রধান রেলওয়ে পথগুলির মধ্যে অন্যতম। ২০২৪ সালে, ঢাকা থেকে রাজশাহী রুটে নিয়মিত চলাচল করে: ধুমকেতু এক্সপ্রেস (৭৬৯), বনলতা এক্সপ্রেস (৭৯১), পদ্মা এক্সপ্রেস (৭৫৯), এবং সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস (৭৫৩)। এই ট্রেনগুলি প্রায় ৩৪৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ৬ থেকে ৭ ঘন্টার যাত্রা সময়ে পৌঁছে যায়। আন্তঃনগর ট্রেনের বিভিন্ন ক্যাটাগরির কোচ ও সেবা যেমন শোভন চেয়ার, শোভন (নন-এসি), শোভন স্নিগ্ধা (এসি চেয়ার), এসি সেল, এসি কেবিন, স্লীপার এবং পাওয়ার কার/ডাইনিং কার সেবার ব্যবস্থা রয়েছে।

লোকাল ট্রেনসমূহ

লোকাল ট্রেনসমূহ রাজশাহী যাত্রী সার্ভিস এর অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। প্রতিদিন প্রচুর স্থানীয় যাত্রী রাজশাহী থেকে লোকাল ট্রেন ব্যবহার করে উত্তর-বাংলা ও দক্ষিণ-বাংলার বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ট্রেন হল রাজশাহী এক্সপ্রেস/ঢাকা কমিউটার, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, সাগরদিঘি এক্সপ্রেস, সিল্ক সিটি/পদ্মা এক্সপ্রেস, এবং বনলতা এক্সপ্রেস। এছাড়া, মেল ট্রেন যেমন রাজশাহী এক্সপ্রেস, মহানন্দা এক্সপ্রেস, উত্তরা এক্সপ্রেস, এবং রাজশাহী কমিউটার প্রতিদিন চলাচল করে।

প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য সুবিধা

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন সব ধরনের যাত্রীদের সুবিধার্থে বিশেষ প্রতিবন্ধী সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। স্টেশনের বিভিন্ন এলাকায় র‍্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে যা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাক্সেসিবিলিটি নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও, প্রতিটি স্টেশনে পৃথক এলাকা জুড়ে হুইলচেয়ারের জন্য উপযুক্ত টয়লেট বসানো হয়েছে।

চোখের সমস্যাযুক্ত যাত্রীদের জন্য ভ্রেল নির্দেশক ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে হলুদ স্পর্শযোগ্য পথ তৈরি করা হয়েছে, যা চোখে কম দেখা যাত্রীদের নেভিগেশনে সাহায্য করে। এছাড়া, স্টেশনে এবং ট্রেনেও উচ্চস্বরে ঘোষণা করার সিস্টেম এবং ডিজিটাল ডিসপ্লে রয়েছে, যা বিশেষ করে কর্ণ দোষাযুক্ত যাত্রীদের জন্য সহায়ক।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে পাশ্চাত্য বেঞ্চের স্থানের পাশাপাশি সেলফ-সার্ভিস টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (TVM) এবং টিকিট অফিস মেশিন (TOM) এর মাধ্যমে টিকিট কেনাকাটা করা যায়, যা প্রতিবন্ধী যাত্রীদের টিকিট কিনতে সহায়ক হয়। স্টেশনে সর্বমোট ১৫০ জন রোভার স্কাউট বিশেষ যাত্রীদের সেবা প্রদান করে থাকেন, যা তাদের যাতায়াতকে আরও সহজ করে তোলে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button