শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত। এটি চট্টগ্রাম শহরের মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। চট্টগ্রামের বিমানবন্দরটি ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক নির্মিত হয় এবং ১৯৯০ সালে এটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে।
বাংলাদেশের এই চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে বর্তমানে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ফ্লাইটের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এখানে প্রায় ১৫ লক্ষ যাত্রী প্রতি বছর যাতায়াত করে। এ বিমানবন্দর ৬,০০০ টন পণ্য পরিবহনের ক্ষমতা রাখে, যা বাংলাদেশে অন্যান্য বিমানবন্দরের চেয়ে অন্যতম।
বিমানবন্দরের ইতিহাস ও উদ্বোধন
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন হাব হিসেবে বিবর্তিত হয়েছে। চট্টগ্রামের অবস্থান এবং ব্যবসায়িক গুরুত্ব বিমানবন্দরটির বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বিমানবন্দরের প্রতিষ্ঠাকাল
১৯৪০ সালে এই বিমানবন্দরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং তখন থেকেই এটি চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিগন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বিমানবন্দর ইতিহাস সময়কালে এখানে অনেক পরিবর্তন এবং উন্নয়ন হয়েছিল, যা এটিকে আজকের আধুনিক পরিবহন হাবে পরিণত করেছে।
প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হয়েছিল ১৯৭২ সালে। এই মুহূর্তটি বিমানবন্দরের ইতিহাসে একটি বিশেষ পরিবর্তন এনে দেয়, যখন এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে যায়।
উন্নয়নের ধারা
বিমানবন্দর উন্নয়ন ক্রমাগতভাবে অব্যাহত রয়েছে। প্লেনের রানওয়ে সম্প্রসারণ, টার্মিনাল উন্নয়ন এবং আরও প্রচুর সুবিধা যুক্ত করার মাধ্যমে এটি যাত্রী এবং কার্গো পরিষেবার মান উন্নত করেছে। এর ফলে বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিমানবন্দরের অবস্থান এবং ব্যবস্থা
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চট্টগ্রাম শহরের অত্যন্ত নিকটে অবস্থিত, যা এটিকে দর্শনার্থীদের জন্য সহজলভ্য করে তোলে। এই বিমানবন্দর থেকে শহরের কেন্দ্রে যেতে মাত্র ২০-৩০ মিনিট সময় লাগে, যা এটি আরও সুবিধাজনক করে তুলেছে।
চট্টগ্রাম শহরের নিকটবর্তী
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চট্টগ্রাম শহরের অত্যন্ত নিকটবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। এ কারণে চট্টগ্রামবাসীরা খুব সহজে এবং অল্প সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারে। শহর থেকে বিমানবন্দরের অবস্থান একেবারেই সুবিধাজনক, যা অনেক যাত্রীর ভ্রমণের সহজলভ্যতাকে নিশ্চিত করে।
পরিবহন সহজলভ্যতা
এই বিমানবন্দরটিতে যাত্রীদের জন্য বাহন ব্যবস্থা অনেক সহজলভ্য। বিমানবন্দরের ঠিক বাইরে থেকে যাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন যেমন বাস, ট্যাক্সি এবং রাইড-শেয়ারিং সুবিধা পেতে পারেন। পরিবহন সুবিধা থাকার কারণে, যাত্রীরা যেকোনো সময় এই বিমানবন্দরে যাতায়াত করতে পারেন।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংযোগ
প্রতিদিন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের মাধ্যমে যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারেন। এটি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম নয়, দেশের অন্যান্য জেলার মানুষদেরও আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংযোগের সুবিধা প্রদান করে।
যাত্রী সেবা এবং সুবিধাসমূহ
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাত্রীদের জন্য উন্নত সেবা এবং বিশিষ্ট সুবিধার ব্যবস্থা করে রেখেছে, যা যাত্রীদের যাত্রাকে আরামদায়ক ও নির্বিঘ্ন করে তোলে। যাত্রীদের চেক-ইন সুবিধার মাধ্যমে সহজে এবং দ্রুত চেক-ইন সম্পন্ন করতে পারেন।
চেক-ইন প্রক্রিয়া
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য চেক-ইন সুবিধা অত্যন্ত সুবিধাজনকভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এখানে স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কিয়স্ক রয়েছে যা দ্রুত এবং সহজে যাত্রীদের বোর্ডিং পাস ইস্যু করে। এছাড়াও প্রথাগত চেক-ইন কাউন্টারও রয়েছে যেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে চেক-ইন সম্পন্ন করা যায়। যাত্রীদের জন্য ব্যাগেজ ড্রপ সুবিধাও রয়েছে যা তাদের লাগেজ দ্রুত এবং নিরাপদে প্রক্রিয়াকরণ করতে সাহায্য করে।
বিনোদন এবং যৌক্তিক সুবিধা
বিমানবন্দরে যাত্রীদের বিনোদনের জন্য নানা ধরণের সুবিধা রয়েছে। ডিউটি-ফ্রি দোকান থেকে কেনাকাটা করার সুযোগ, বিভিন্ন রেস্তোরাঁ এবং কাফেতে খাবারের ব্যবস্থা, এবং বিনামূল্যে Wi-Fi ব্যবস্থা যা যাত্রীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। যাত্রী সেবা আরও উন্নত করতে বিমানবন্দর পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে নতুন সুবিধার সংযোজন করছে।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাত্রী সুরক্ষার জন্য কঠোর বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। সর্বত্র সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নজরদারি রয়েছে যা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা সর্বদা প্রস্তুত থাকেন যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে এবং বিমানবন্দরের নির্দিষ্ট নিরাপত্তা চেক পয়েন্টে সব যাত্রীর সঠিক যাচাই-বাছাই করা হয়।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের গন্তব্য
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বহু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়, যা যাত্রীদের বিভিন্ন আকর্ষণীয় এবং জনপ্রিয় গন্তব্য পৌঁছানোর সুযোগ প্রদান করে। এই বিমানবন্দরটি এর উন্নত সুবিধা ও মানসম্পন্ন সেবা প্রদানের জন্য প্রশংসিত।
জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক গন্তব্য
বিমানবন্দরটি থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের মাধ্যমে যাত্রীগণ লন্ডন, দুবাই, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর সহ নানা জনপ্রিয় গন্তব্য ভ্রমণ করতে পারেন। এই সকল গন্তব্যগুলি ব্যবসা এবং পর্যটন উভয় ক্ষেত্রেই জরুরি ভূমিকা পালন করে।
বিশেষ ফ্লাইট সার্ভিস
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিশেষ ফ্লাইট সার্ভিসগুলি যাত্রীদের নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে বিশেষভাবে সক্ষম। প্রিমিয়াম ক্লাস, ব্যাগেজ হেল্প ডেস্ক, দ্রুত চেক-ইন প্রক্রিয়া, এবং উন্নত লাউঞ্জ সুবিধা সমূহ প্রদান করা হয় এই ফ্লাইট সার্ভিসগুলিতে।
বিমানবন্দर কর্তৃপক্ষ
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় শহর চট্টগ্রাম-এ অবস্থিত, যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে, যেগুলি তাদের দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
এগ্রিমেন্ট ও সহযোগিতা
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ উভয় স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে বিপুল সংখ্যক এগ্রিমেন্ট ও সহযোগিতার ব্যবস্থা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং কাতার এয়ারওয়েজ এর মতো প্রধান এয়ারলাইন্সগুলি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের সহযোগিতা উদ্যম বাড়িয়েছে এবং চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ব্যবস্থাপনার ভূমিকা
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা উচ্চমানের সেবা ও নিরাপত্তা প্রদানে অপূর্ব দক্ষতা দেখিয়েছে। বিমানবন্দরটি প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ যাত্রী এবং ৬,০০০ টন কার্গো হ্যান্ডল করতে সক্ষম, যা তাদের শক্তিশালী ব্যবস্থাপনার প্রমাণ। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চৌকস পরিচালনার কারণেই চট্টগ্রাম বিমানবন্দর এত দ্রুততার সাথে বিমানযাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি ও সেবার মান উন্নয়নে সফল হয়েছে।
বিমানবন্দরের যাত্রী সংখ্যা
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী সংখ্যা প্রতি বছর উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা যাত্রী বৃদ্ধি এবং নিত্য নতুন পরিষেবার উন্নয়নে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যকলাপের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।
প্রতিবছরের বৃদ্ধি
2022 সালে বিমানবাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রায় ২৫টি সক্রিয় রুট পরিচালনা করেছে। চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট যাত্রীর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। বিমানবন্দর যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক সংযোগের উন্নয়ন ও আধুনিক চেক-ইন প্রক্রিয়া।
আদালতের কার্যক্রম
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে বিভিন্ন আদালত কার্যক্রমের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। আলোচিত মামলা-মোকদ্দমা ও আদালতে দায়েরকৃত বিভিন্ন মামলার মাধ্যমে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ২০২২ সালে কিছু মামলা আদালতে গড়ায় যা যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। আদালত কার্যক্রমের মাধ্যমে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সেবা মান উন্নত করার প্রচেষ্টা সবসময় চলমান।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন
বিগত কয়েক বছরে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চট্টগ্রামে বিমানবন্দর উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই উন্নয়ন কার্যক্রম গুলি মূলত সম্প্রসারণ প্রকল্প ও আধুনিকায়ন উদ্যোগকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হচ্ছে।
সম্প্রসারণ প্রকল্প
ঐতিহাসিক বিমানবন্দরটির সম্প্রসারণ প্রকল্পটি চট্টগ্রামের মানুষ ও বাণিজ্যের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সম্প্রসারণ প্রকল্পের ফলে বিমানবন্দরের সেবার মান ও ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে নতুন রুটে ফ্লাইট চালু করার পাশাপাশি চট্টগ্রামের রপ্তানী বাণিজ্যে আরও সহজতর হবে।
আধুনিকায়ন উদ্যোগ
একাধারে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে বিমানবন্দরের কার্যকারিতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য উন্নত প্রযুক্তি ও সেবার স্তরের উন্নতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বর্তমানে ৭০ জন কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এই ব্যাপক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়াও, এয়ারপোর্টে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন আধুনিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পরিবহন সুবিধা ও ট্যাক্সি সার্ভিস
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, আইএটিএ কোড CGP এবং আইসিএও কোড VGEG, চট্টগ্রামে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ডমেস্টিক এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিস্তৃত পরিবহন সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
ট্যাক্সি ভাড়া প্রণালী
বিমানবন্দরের নিকট ট্যাক্সি সার্ভিসের উন্নত ব্যবস্থা উপলব্ধ রয়েছে, যা যাত্রীদের সহজেই তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে। প্রতিটি ট্যাক্সির একটি নির্ধারিত ভাড়া প্রণালী আছে, যা যাত্রীদের একটি নির্ভরযোগ্য এবং স্বচ্ছ পরিসেবা প্রদান করে। এখানে প্রতিটি ট্যাক্সি ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এলাকার নির্দিষ্ট মাপকাঠির উপর ভিত্তি করে এবং নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়।
বাস এবং রাইড শেয়ারিং
বাস সার্ভিসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা সহজেই যাতায়াত করতে পারেন। এই বাস সার্ভিস যাত্রীদের একটি সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক যাত্রার অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এছাড়াও, বিমানবন্দরের নিকট রাইড শেয়ারিং সার্ভিস উপলব্ধ রয়েছে, যা যাত্রীদের ভ্রমণ আরও আরামদায়ক এবং সহজ করে তোলে। মোটকথা, বিমানবন্দরের পরিবহন ব্যবস্থা যাত্রীদের জন্য একটি নিরাপদ এবং সুবিধাজনক যাত্রার নিশ্চয়তা দেয়।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্ভাব্য যে কোনও বিপদ এড়ানোর জন্য বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রটোকল প্রয়োগ করা হচ্ছে।
সিসিটিভি ও নজরদারি
শাহ আমানত বিমানবন্দরে সর্বাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা ও নজরদারি সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি প্রবেশ এবং প্রস্থানের পয়েন্ট গুলিতে সিসিটিভি ইনস্টল করা হয়েছে, যা সার্বক্ষণিক মনিটরিং নিশ্চিত করে। এতে, বিমানবন্দরের তার্কিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার পাশাপাশি যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
নিরাপত্তা চেক পয়েন্ট
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পয়েন্ট ও চেক পয়েন্টগুলিতে প্রত্যেক যাত্রীর কঠোরভাবে সুরক্ষা পরীক্ষা করা হয়। সব ধরনের ব্যক্তিগত মালামাল স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়, যা যাত্রী চেক ইন এবং প্রস্থানের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নিরাপত্তা রক্ষার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক মানের এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে যে যাত্রীরা সব সময় নিরাপদ থাকবেন এবং নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারবেন।
পরিবেশবন্ধু উদ্যোগ
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তার পরিবেশবন্ধু উদ্যোগের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সবুজ প্রোজেক্ট এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সবুজ প্রোজেক্ট
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সবুজ প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিমানবন্দরের আশেপাশের এলাকায় বৃক্ষরোপণ এবং সবুজায়নের কাজ চালানো হচ্ছে। এই উদ্যোগটি স্থানীয় পরিবেশের জন্য সুস্থ এবং সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
কেবলমাত্র পুনর্ব্যবহারের পদক্ষেপ
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুনর্ব্যবহার-এর উপর জোর দিয়ে থাকে। বিমাবন্দর হতে আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ যথাযথভাবে পুনর্ব্যবহার করে পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। এই উদ্যোগগুলি পরিবেশের উপর প্রভাব কমাতে এবং টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সহায়ক।
স্থানীয় ব
চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশ সরকারের গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা ৫,২৮২.৯২ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জেলাটির মোট জনসংখ্যা ৫,৬২৩,৯১৩ জন, যার মধ্যে প্রতি বর্গকিলোমিটারে আবাসনের সংখ্যার গড় ১,৪৯৭ জন। এই জেলায় মোট ১৪টি উপজেলা এবং ১৫টি থানা রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর আওতায় ৮১টি ওয়ার্ড এবং প্রতিটি ওয়ার্ডের অধীনে কয়েকটি ইউনিয়ন অবস্থিত।
প্রকৃতির দিক থেকে চট্টগ্রাম একটি অনন্য জেলা। এখানে তিনটি প্রধান নদী রয়েছে: কর্ণফুলী, হালদা এবং সাঙ্গু। জেলার মোট ৪৫,৫৬৪ হেক্টর বনভূমি এবং ৭২,২৩৮.৭০ একর পাহাড়ি বনভূমি রয়েছে, যা জেলার সবুজায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জেলার কৃষিজমি ১,১২,৩১৪.৫৭৫ একর এবং কৃষি বহির্ভূত জমি ৯১,২০৮.৯৪৬ একর।
জেলার প্রাকৃতিক পরিবেশ অত্যন্ত উর্বর, বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ৩,১৯৪ মিলিমিটার। তাপমাত্রার দিক থেকে, গ্রীষ্মকালে সাধারণত ৩৩.৮৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠে এবং শীতকালে ন্যূনতম তাপমাত্রা প্রায় ১৪.৫৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে আসে।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শুধুমাত্র স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য নয়, বরং দেশের বাইরের সাধারণ যাত্রী এবং বাণিজ্যের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এই বিমানবন্দর থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মতো এয়ারলাইন্সগুলি ব্যাংকক, কলকাতা এবং চেন্নাই সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যের নতুন ফ্লাইট শুরু করেছে, যা এই এলাকার যাত্রীদের জন্য সহজ এবং আরামদায়ক চলাচলের সুবিধা বৃদ্ধি করেছে।