শাহরুখ খান: বলিউডের কিং খান এর জীবন কাহিনী

শাহরুখ খান, বলিউড অভিনেতা শাহরুখ নামে পরিচিত, হলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক অন্যতম মহানায়ক। তিনি অভিনেতা, প্রযোজক এবং টেলিভিশন হোস্ট হিসেবে একটি বৈচিত্র্যময় ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন। কিং খানের জীবনীতে এমন কিছু অসাধারণ এবং উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনা রয়েছে, যা তাকে আজকের বিশ্বব্যাপী সুপারস্টারে পরিণত করেছে। শাহরুখ খান বায়োগ্রাফি জানাতে গিয়ে আমরা তার পরিবার, শিক্ষা জীবন এবং শুরুতেই যে সংগ্রামগুলি তিনি মোকাবেলা করেছেন সেগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

শাহরুখ খানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর, ভারতের নয়াদিল্লিতে। তাঁর পিতা তাজ মোহাম্মদ খান ছিলেন একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী। ছোটবেলা থেকেই শাহরুখ খানের জীবনে নানা চ্যালেঞ্জ এসেছে, তবে তিনি সেগুলোকে কাটিয়ে উঠেছেন নিজের মেধা এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, শাহরুখ খান বলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃত। কিং খানের জীবনী জানার এই যাত্রায় আমরা তার শিক্ষাগ্রহণ, বলিউডে প্রবেশ এবং তার সম্মাননা ও অর্জন সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করব।

Contents show

শাহরুখ খানের জন্ম ও পরিবারের ইতিহাস

বলিউডের কিং খান শাহরুখ খানের জন্ম ২ নভেম্বর ১৯৬৫ সালে। শাহরুখ জন্মস্থান হল নিউ দিল্লি। তার পরিবারে মির তাজ মোহাম্মদ খান এবং লতিফ ফতিমা খান এর বিশিষ্ট ভূমিকা রয়েছে। শাহরুখ খানের পরিবারে প্রধানত কথা বলা হতো হিন্দকো ভাষায়, যা পাকিস্তানের পাঞ্জাব এলাকায় ব্যবহৃত হয়।

প্রাথমিক জীবন

শাহরুখ খানের শৈশবটি ছিলো সংস্কৃতিবিস্তৃত এবং উচ্চাচারের মধ্যে বেড়ে ওঠা। তার বাবা মির তাজ মোহাম্মদ খান ছিলেন পেশোয়ার, পাকিস্তানের বাসিন্দা এবং তার মা লতিফ ফতিমা খান হলেন হায়দারাবাদের। তার দিদি ছিলেন কাশ্মীরী। এই সাংস্কৃতিক বহুমুখিতা শাহরুখের ব্যক্তিত্ব এবং জীবনযাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। তার জীবনের প্রথম আয় ছিল ৫০ টাকা, যা একটি কনসার্টে কাজ করে উপার্জিত হয়েছিল এবং যা দিয়ে তিনি আগ্রা ভ্রমণ করেছিলেন।

পিতা-মাতা সম্পর্কে তথ্য

শাহরুখ খানের পিতা-মাতা, মির তাজ মোহাম্মদ খান এবং লতিফ ফতিমা খান, তাকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন এবং তাঁর ক্যারিয়ারের ভিত্তি গঠন করেছেন। মির তাজ মোহাম্মদ খান ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং লতিফ ফতিমা খান ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রহিতৈষী। শাহরুখ খানের পরিবারে শিক্ষা এবং সংস্কৃতির মিশ্রণ তাকে বলিউডের কিং খান এ পরিণত করেছে।

শাহরুখের শিক্ষা জীবন

শাহরুখ খানের শিক্ষা জীবন তার পরবর্তী জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তার স্কুল এবং কলেজের সময়কালের অভিজ্ঞতার কথা জানা আমাদের তার ব্যাক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের রূপরেখা বুঝতে সাহায্য করবে।

স্কুল জীবনের চিত্র

শাহরুখ খানের শিক্ষা শুরু হয়েছিল ‘Tiny Tots’ নামক একটি প্লে স্কুল থেকে। এরপর তিনি ভর্তি হন St. Columba’s School-এ, যেখানে তিনি তার মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এটি ছিল তার শৈশবের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কারণ এখানেই তিনি সাহিত্যিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। শাহরুখ স্কুল জীবন-এর সময় ইংরেজি সাহিত্যে তার গভীর আগ্রহ ছিল।

আরও পড়ুনঃ  কারিনা কাপুর

St. Columba’s School-এ পড়াশোনার সময় শাহরুখ কেবল পড়শুনায় নয়, খেলাধুলাতেও বেশ কৃতিত্ব অর্জন করেন। তিনি ফুটবল এবং হকি দলেও অংশ নেন। শাহরুখ খানের শিক্ষা জীবন নিয়ে আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল যে তিনি ‘Sword of Honour’ পুরষ্কার লাভ করেন, যা স্কুলের সেরা ছাত্রকে দেওয়া হয়। এই পুরষ্কারটি প্রমাণ করে তার সৃজনশীল এবং শৃঙ্খলাবোধের মিলিত প্রতিফলন।

কলেজ জীবনের প্রভাব

তার স্কুলের পরবর্তী অধ্যায় ছিল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের Hansraj College-এ ভর্তি হওয়া। এখানে শাহরুখ খান অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার কলেজ জীবনের এই সময়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এখান থেকে তিনি তার পেশাগত জীবনের মূল ভিত্তিগুলো স্থাপন করেন।

শাহরুখ কলেজ জীবন-এর অভিজ্ঞতা তাকে শুধুমাত্র শিক্ষার ক্ষেত্রেই নয়, তার ব্যক্তিত্বও বিকাশ ঘটাতে অনেক সাহায্য করেছিল। অভিনয়ের প্রতি তার আগ্রহ বৃদ্ধি পায় এবং তিনি নাটক ও থিয়েটারে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে শুরু করেন। কলেজের এই সময়কালেই শাহরুখ খান ‘ফৌজি’ নামক একটি টেলিভিশন সিরিজে অভিনয়ের সুযোগ পান, যা তার পেশাগত জীবনের শুরু বলে সমাদৃত।

সংক্ষেপে, শাহরুখ খানের শিক্ষা জীবন ছিল তার পরবর্তী জীবনের সফলতার মূল চালিকা শক্তি, যা তাকে বলিউডের কিং খান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছে। স্কুল জীবন থেকে শুরু করে কলেজ জীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি নতুন নতুন শিক্ষা এবং দক্ষতা অর্জন করেন, যা তাকে আরও গভীর এবং বহুমুখী ব্যক্তিত্বে রূপান্তর করেছে।

বলিউডে প্রবেশের যাত্রা

শাহরুখ খানের বলিউড অভিষেকের যাত্রা ছিলো চমকপ্রদ এবং চ্যালেঞ্জিং। ভারতীয় সিনেমার জগতে তাঁর প্রবেশ এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিলো। শাহরুখের প্রথম সিনেমা ছিলো ‘দিওয়ানা’, যা মুক্তি পেয়েছিলো ১৯৯২ সালে। এই ছবির মাধ্যমে শাহরুখ খান তাঁর মেধা এবং প্রতিভার প্রথম স্বাক্ষর রাখেন বলিউডের পর্দায়। এখানে তাঁর প্রথম সিনেমা ও অভিষেক এবং কাস্টিং ও অডিশনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে আমরা তাঁর বলিউডে প্রবেশের যাত্রা সম্পর্কে জানবো।

প্রথম সিনেমা ও অভিষেক

‘দিওয়ানা’ সিনেমাই ছিলো শাহরুখ খানের বলিউড অভিষেক। এই সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথমবারের মতো নিজেকে প্রমাণ করেন। প্রচুর পরিশ্রম এবং আহরণে তিনি এই ভূমিকার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন। সিনেমাটি মুক্তির পর, শাহরুখ খান তৎকালীন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এই সিনেমার মাধ্যমে তিনি বলিউডের নতুন সেনসেশনে পরিণত হন।

কাস্টিং ও অডিশনের অভিজ্ঞতা

বলিউডে প্রবেশের আগে, শাহরুখ খান বেশ কিছু কাস্টিং কলে অংশগ্রহণ করেন। শাহরুখ অডিশন করার সময় তাঁর মেধা, আত্মবিশ্বাস এবং পরিশ্রম তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিলো। ‘দিওয়ানা’ সিনেমার জন্য কাস্টিং প্রক্রিয়াতে শাহরুখের প্রতিভা নজর কেড়েছিলো প্রযোজক এবং পরিচালকদের। শাহরুখের প্রথম সিনেমা থেকে শুরু করে প্রতিটি অডিশনে তাঁর মনিষ্যত্ব এবং অভিনয়ের দক্ষতা তাঁকে বলিউডের মঞ্চে দীর্ঘস্থায়ী করেছে।

ইতিহাস সাক্ষী, শাহরুখ খানের বলিউড অভিষেক তাঁকে আজকের দিনে কিং খান হিসেবে পরিচিত করেছে, যা তাঁর প্রথম সিনেমা এবং কাস্টিং ও অডিশনের অভিজ্ঞতার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। বলিউড জগতে তাঁর এই যাত্রা সত্যিই প্রেরণাদায়ক।

কিং খানের পতনের সময়

বহু সফলতার পরেও, শাহরুখের ক্যারিয়ারে কিছু ব্যর্থ চলচ্চিত্র এসেছে, যা কিং খানের সফলতা অর্জনকে প্রভাবিত করেছে। এটি তার ফিল্ম ক্যারিয়ারের একটি সম্পর্কিত অংশ, যেখানে তিনি কিছু সিনেমার ফ্লপ এর পাশাপাশি কিছু ব্যবসাসফল সিনেমাও উপহার দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  প্রভাস

ব্যবসাসফল সিনেমা

শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারের কিছু ব্যবসাসফল সিনেমা উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ‘দিলওয়ালে’ ও ‘রা.ওয়ান’ উল্লেখযোগ্য। ‘দিলওয়ালে’ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং ‘রা.ওয়ান’ তেমন সাফল্য না পেলেও তার বিশেষ প্রভাব ছিল। এই সিনেমাগুলো কিং খানের সফলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে এবং তার ক্যারিয়ারে নতুন উচ্চতা এনে দিয়েছে।

ব্যর্থতার মুখোমুখি

তবে, কিং খানের পথচলায় ব্যর্থতাও ছিল অবশ্যম্ভাবী। ‘জিরো’ ও ‘ফ্যান’ যেমন সিনেমাগুলো শাহরুখের ব্যর্থ চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ‘রইস’ ও ‘হ্য্যারি মেট সেজাল’ চলচ্চিত্রগুলোও বক্স অফিসে প্রত্যাশিত সফলতা আনতে পারেনি। এই ব্যর্থ চলচ্চিত্রগুলো শাহরুখকে নতুনভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চ্যালেঞ্জ দিয়েছে। আবারো তার সফলতা ও ব্যর্থতার মিশ্রণে নির্মিত ক্যারিয়ার বলিউডে তার অভূতপূর্ব ভূমিকা প্রমাণ করে।

শাহরুখের জীবনসঙ্গী

শাহরুখ খান এবং গৌরী খান বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় দম্পতি। তাদের প্রেমের কাহিনী ও দাম্পত্য জীবন নিয়ে ভক্তদের মাঝে সর্বদাই কৌতূহল বিরাজমান। শাহরুখ ও গৌরীর সম্পর্কের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তাদের যাত্রা, বহু চ্যালেঞ্জ ও সাফল্যের মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত হয়েছে।

গৌরী খানের সঙ্গে পরিচয়

শাহরুখ ও গৌরীর প্রথম দেখা হয় ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে। সেই সময় তারা দিল্লিতে থাকতেন। শাহরুখের প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণের আগে গৌরী দ্বিধান্বিত ছিলেন, কারণ তাদের ধর্মীয় পার্থক্য ছিল। তবে ওদের প্রেমের টান এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, এই সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৯১ সালে। এই আন্তঃধর্মীয় বিবাহ তাদের জন্য অনেকটা চ্যালেঞ্জিং ছিল, কিন্তু তারা একে অপরের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করেছেন।

দাম্পত্য জীবনের চ্যালেঞ্জ

শাহরুখের দাম্পত্য জীবন সহজ ছিল না। বলিউডে তার কাজের চাপ ও জনপ্রিয়তার কারণে পারিবারিক জীবনে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু গৌরীর অনুপ্রেরণা ও সমর্থন সবসময়ই তার সঙ্গে ছিল, যা তাদের সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করেছে। তাদের সন্তান সুহানা ও আব্রামের সাথে পরিবারের সুন্দর মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেওয়ার প্রচেষ্টা তাদের আরও ঘনিষ্ঠ করেছে। বিভিন্ন সময়ে তাদের জীবন সত‍্যিই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে, তবে শাহরুখ ও গৌরী একে অপরের পাশে থেকে সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেছেন। শাহরুখের দাম্পত্য জীবনে গৌরী সবসময়ই একটি মজবুত পিলারের মতো ভূমিকা পালন করেছেন। বলিউডের বাইরে তাদের জীবন ও সন্তানদের নিয়ে চিন্তা-ভাবনা তাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করেছে।

শাহরুখের সন্তানদের পরিচয়

শাহরুখ খানের তিন সন্তান, আরিয়ান, সুহানা, এবং আব্রাম, তাঁদের জীবনে বিশেষ ভাবে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁদের নামকরণের ইতিহাস, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক, এবং শাহরুখের প্রভাব সবই উল্লেখযোগ্য।

ছেলে ও মেয়ের নামকরণ

শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ানের নামকরণ নিয়ে একটি মজার গল্প আছে। শাহরুখের মতে, নামটি তাঁর জীবনে বিশেষভাবে প্রভাব ফেলেছে কারণ তিনি চান যে আরিয়ান নামটি মেয়েদের মধ্যে জনপ্রিয় হবে।

মেয়ে সুহানার নামকরণও পরিবারের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত ছিল। অপরদিকে, ছোট ছেলে আব্রামের নামটি প্রাচীন ও ধর্মীয় অর্থ বহন করে, যা শাহরুখ ও গৌরীর কাছে খুব মূল্যবান।

সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক

শাহরুখ খানের সন্তানদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অত্যন্ত আন্তরিক এবং সহানুভূতিশীল। আরিয়ান খানের মুম্বাই ড্রাগ কেস এর সময় শাহরুখ এবং গৌরী আদালতে উপস্থিত না থেকেও নিজের ছেলের জন্য সমস্ত চেষ্টা করেছেন। অবশেষে আরিয়ান বেল পেয়েছিলেন এবং শাহরুখ খানের সমর্থন তাঁকে এই কঠিন সময়ে সান্ত্বনা দিয়েছিল।

সুহানা খানের সঙ্গে শাহরুখের সম্পর্কও অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী। ২০১৯ সালে একবার ছবি তোলার পর থেকে সুহানা সবার মধ্যে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। আরিয়ান, সুহানা, এবং আব্রাম তিনেরই বলিউডের সাথে একটি অন্তর্ভুক্ত সম্পর্ক আছে এবং তারা নিজেদের ভবিষ্যতেও দেখতে পাচ্ছে বলিউডে।

আরও পড়ুনঃ  সাই পল্লবী

শাহরুখ খানের জনপ্রিয় সিনেমা

শাহরুখ খান বলিউডে তার অপার জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ তার অসাধারণ অভিনয় এবং সফল সিনেমাগুলি। তার অভিনীত সিনেমাগুলির মধ্যে দুটি সিনেমা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য: “দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যেঙ্গে” এবং “মোহাব্বাতিন”। এই দুটি চলচ্চিত্র শুধুমাত্র বক্স অফিসে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেনি, বরং সমালোচকদের কাছ থেকেও প্রচুর প্রসংশা কুড়িয়েছে।

“দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যেঙ্গে”

১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যেঙ্গে” শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারে একটি মাইলফলক। এই সিনেমাটি বলিউডের ইতিহাসে এক অন্যতম হিট এবং আজও এটি বিশেষ প্রাসঙ্গিক। শাহরুখ এবং কাজলের রোমান্সে ভরা এই ছবিটি সিনেমাপ্রেমীদের মনের প্রিয় সিনেমা হয়ে উঠেছে। এই সিনেমার প্রতিটি গান, দৃশ্য এবং সংলাপ সংজ্ঞায়িত করেছে শাহরুখের হিট সিনেমার সংজ্ঞা।

“মোহাব্বাতিন”

এরপর ২০০০ সালে মুক্তি পায় “মোহাব্বাতিন”। এখানে শাহরুখ খানের চরিত্র শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে, যা ভিন্ন ধরনের এবং চ্যালেঞ্জিং। এখানে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বপূর্ণ অভিনয় নতুন মাত্রা প্রদান করে। “মোহাব্বাতিন” সিনেমাটি শুধু বক্স অফিসে হিট নয়, বরং শাহরুখের ভক্তদের হৃদয়ে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। এই ছবিও শাহরুখের হিট সিনেমার তালিকায় অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

দুশ্চিন্তা আর কষ্টের মুহূর্তেও শাহরুখের অনবদ্য অভিনয় প্রতিভা তার সিনেমাগুলিকে অনন্য করে তুলেছে। দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যেঙ্গে এবং মোহাব্বাতিন এর মতো চলচ্চিত্রগুলো বাংলা দর্শকের মনে গভীর রেখাপাত করেছে এবং আজও শাহরুখ খানের হিট সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হয়।

আন্তর্জাতিক চাহিদা ও সফলতা

শাহরুখ খান শুধু বলিউডেই নয়, বিশ্বব্যাপী তারকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার আন্তর্জাতিক চাহিদা ও জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ‘প্যারট’ সংস্থার একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, শাহরুখ খান গ্লোবালিতে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন অভিনেতাদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন। এই সমীক্ষা চলেছিল জুলাই ২০ থেকে আগস্ট ১৮ পর্যন্ত, যেখানে বিভিন্ন মাপকাঠিতে অভিনেতাদের চাহিদা মূল্যায়ন করা হয়েছিল।

হলিউডে কাজের অভিজ্ঞতা

শাহরুখ খানের হলিউডে কাজের অভিজ্ঞতা তাকে আরও বেশি খ্যাতি এনে দিয়েছে। যদিও তিনি এখনও হলিউডে পুরোদমে কাজ শুরু করেননি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকল্প এবং পুরস্কারের মঞ্চে তার উপস্থিতি তার বহুমুখী প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে। তার সম্পৃক্ততা কেবল অভিনয়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং প্রযোজনা ও ভিন্নধর্মী প্রজেক্টগুলিতেও সামিল হচ্ছে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস এবং অন্যান্য বলিউড তারকাদের মতো, শাহরুখও হলিউডে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, যা তার প্রশংসনীয় সফলতার পথ প্রশস্ত করেছে।

বিদেশে শাহরুখের জনপ্রিয়তা

বিদেশে শাহরুখ খানের জনপ্রিয়তা অসাধারণ। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা এবং মধ্য প্রাচ্যে তার বহু অনুরাগী রয়েছে। ‘প্যারট’ সংস্থার সমীক্ষায় দেখা গেছে, শাহরুখের বিশ্বমানের জনপ্রিয়তা তাকে অন্যান্য আন্তর্জাতিক তারকাদের মধ্যেও আলাদা করে তুলেছে। উল্লেখযোগ্য যে, তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ মেলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এবং পুরস্কার অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতিতে।

শাহরুখ খানের ছবি যেমন “দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যেঙ্গে” এর IMDB রেটিং ৮.১/১০, এবং “বীর-জারা” এর IMDB রেটিং ৭.৮/১০, যা তার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার মূল উৎস। এছাড়াও, তার আন্তর্জাতিক প্রকল্পগুলির মাধ্যমে তিনি আরও বৃহত্তর দর্শক শ্রেণীর কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হচ্ছেন। শীঘ্রই ‘কোলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল’-এ তার ছবি প্রদর্শন ও উপস্থিতি, তার আন্তর্জাতিক সফলতার একটি বড় উদাহরণ।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button