শ্রুতি হাসান

শ্রুতি হাসান একজন প্রখ্যাত ভারতীয় অভিনেত্রী, গায়িকা, মডেল ও সুরকার, যিনি বিশেষত তামিল এবং হিন্দি চলচ্চিত্রে তার বিশেষ কর্মজীবনের জন্য পরিচিত। শ্রুতি হাসানের জন্ম ১৯৮৬ সালের ২৮ জানুয়ারি। তিনি বংশ পরম্পরায় প্রখ্যাত ভারতীয় শিল্পী কামাল হাসান ও সারিকা ঠাকুরের কন্যা। শ্রুতি হাসান জীবনী এবং ক্যারিয়ারের শুরুতে গানের জগতেও সাফল্য অর্জন করেন।

২০০৯ সালে ‘লাক’ চলচ্চিত্র দিয়ে শ্রুতি হাসান সিনেমায় অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। প্রথম সিনেমায় সফল না হলেও, ভারতীয় অভিনেত্রী শ্রুতি তামিল ও তেলুগু চলচ্চিত্রে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২০১২ সালে তিনি ‘গব্বার সিং’ সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক সাফল্য পান এবং এটি বক্স অফিসে ভালো ফল করে। শ্রুতি হাসান গান এবং অভিনয়ে তার দক্ষতার মাধ্যমে দক্ষ শিল্পী হিসেবে নিজের স্থান সংহত করেছেন।

শ্রুতি হাসানের প্রাথমিক জীবন

শ্রুতি হাসান, জন্ম গত ১৯৮৬ সালের ২৮ জানুয়ারি, ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাইতে। ছোট থেকেই তিনি বিশেষ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তার বাবা, কামাল হাসান, দক্ষিণ ভারতের প্রখ্যাত অভিনেতা এবং তার মা সারিকা ঠাকুর, একজন পরিচিত অভিনেত্রী। তেমনি বিশেষ পরিবারের সন্তান হিসেবে শ্রুতি হাসান পরিবার তার জীবনে বিশাল প্রভাব ফেলে।

জন্ম এবং পরিবার

শ্রুতি হাসানের জন্ম তার পরিবারে বিশাল উচ্ছ্বাস ও আনন্দ নিয়ে আসে। তার শৈশব কাটে তার বাবা-মা এর কোলেই, যাদের কাছ থেকে তিনি শিল্প ও সংস্কৃতির সূক্ষ্ম পাঠ পান। শ্রুতি হাসান জন্ম সাথে ছিল তার পরিবারের প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন, যা তাকে জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

আরও পড়ুনঃ  নয়নতারা (অভিনেত্রী)

শৈশব এবং শিক্ষা

শ্রুতি হাসানের শৈশব ছিলো প্রাধান্যে ভরা। তার প্রাথমিক পড়াশোনা সম্পন্ন হয় চেন্নাইতেই। এরপর তিনি মুম্বাইয়ের সেন্ট অ্যান্ড্রু’স কলেজে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। শ্রুতি হাসান শিক্ষা জীবন ছিলো তার শৈল্পিক অর্জনের প্রথম ধাপ, যা তাকে বুদ্ধিদীপ্ত, সাহসী ও সৃজনশীল করে তোলে। শ্রুতি হাসান পরিবারও তার শিক্ষা অর্জনে সর্বদা সমর্থন যুগিয়েছে।

শ্রুতি হাসানের পরিবার এবং বংশগতি

শ্রুতি হাসানের পরিবার ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে একটি সুপরিচিত নাম। তিনি একটি প্রতিভাবান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন, যা তাকে সৃজনশীলতায় উজ্জ্বল হতে সাহায্য করেছে। তার পিতামাতা এবং বোন সকলেই বহুপ্রতিভাবান এবং চলচ্চিত্রে মহান কর্ম করেছেন।

কামাল হাসান ও সারিকা ঠাকুর

শ্রুতির পিতা কামাল হাসান এবং মাতা সারিকা ঠাকুর, দুজনেই ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে বিখ্যাত। কামাল হাসান একজন প্রখ্যাত অভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজক হিসেবে পরিচিত। বহু প্রশংসিত তাঁর অভিনয় প্রতিভা এবং চলচ্চিত্র পরিচালনার দক্ষতা তাকে চলচ্চিত্র জগতে অনন্য স্থান দিয়েছে। আর সারিকা ঠাকুর একজন সফল অভিনেত্রী, যার বহুমুখী অভিনয় দক্ষতা তাকে বিশেষ করে তুলেছে।

বোন অক্ষরা হাসান

শ্রুতির ছোট বোন অক্ষরা হাসানও একটি প্রতিভাময়ী। তিনি অভিনেত্রী এবং পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে কাজ করছেন। অক্ষরা হাসানের বহুমুখী প্রতিভা এবং চলচ্চিত্র পরিচালনার সক্ষমতা তাকে অনেকের মধ্যে আলাদা করে তুলেছে। এই পরিবারে সৃজনশীলতার উৎস কখনো শেষ হয় না, এবং শ্রুতি হাসানও এরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

অভিনয়ে সূচনা এবং প্রথম অভিজ্ঞতা

শ্রুতি হাসানের অভিনয় জীবনের সূচনা হয়েছিল ২০০৯ সালে, যখন তিনি হিন্দি অ্যাকশনধর্মী সিনেমা “লাক”-এ প্রাপ্তবয়স্ক অভিনেত্রী হিসেবে অভিষেক করেন। এ সিনেমায় তার অভিনয়ের প্রশংসা হলেও তা বাণিজ্যিকভাবে অতটা সফল ছিল না। তবে এটি ছিল শ্রুতি হাসান অভিনয় ক্যারিয়ার এর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

শ্রুতি হাসান প্রথমে একটি শিশুশিল্পী হিসেবে তার বাবার সিনেমায় গান গেয়ে এবং অভিনয় করে বিনোদন জগতে প্রবেশ করেছিলেন। ২০০০-এর মাঝামাঝি সময়ে তিনি ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রাপ্তবয়স্ক চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। শ্রুতি হাসান অভিষেক চলচ্চিত্র “লাক”-এর প্রিমেয়ারে, গান ও অভিনয় উভয় ক্ষেত্রেই তার সৃজনশীল দক্ষতা প্রদর্শন করতে সক্ষম হন।

আরও পড়ুনঃ  উর্ফি জাবেদ

তারপর থেকে শ্রুতি হাসান অভিনয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে থাকেন এবং তার অভিনয় ক্যারিয়ার আরও বিস্তৃত ও সাফল্যমণ্ডিত হয়। প্রথম সিনেমার অভিজ্ঞতা তার জন্য শিক্ষণীয় ছিল এবং তা পরবর্তী চলচ্চিত্রে আরও ভালো ভূমিকা পালনে সহায়ক হয়। এই প্রথম অভিজ্ঞতা তাকে দক্ষিণ ভারতীয় সীমানাতেও জনপ্রিয়তা এনে দেয় এবং তাঁর পক্ষে “গব্বার সিং” এর মতো সফল চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করে। সত্যি বলতে, শ্রুতি হাসান অভিনয় ক্যারিয়ার এর সাফল্য ও প্রসারে এই শুরু ঔষধী ভূমিকা পালন করেছে।

প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে কাজ ও চ্যালেঞ্জগুলি

শ্রুতি হাসান একজন প্রতিভাবান ভারতীয় অভিনেত্রী এবং সঙ্গীত শিল্পী, যিনি হিন্দি ও তেলুগু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার কর্মজীবনের শুরুতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, বিশেষ করে তার প্রথম সিনেমা “লাক”-এ অভিনয় করার সময়।

“লাক” সিনেমায় অভিষেক

শ্রুতি হাসান ২০০৯ সালে অ্যাকশনধর্মী সিনেমা “লাক”-এ অভিনয় করেন। এই সিনেমাটিতে কাজ করার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে তার পথচলার সূচনা করেন। “লাক” সিনেমাটি বড় বাজেটের অ্যাকশনধর্মী একটি প্রজেক্ট ছিল, যেখানে শ্রুতি তার দক্ষতা প্রদর্শন করতে সক্ষম হন। এই সিনেমার মাধ্যমে শ্রুতি হাসান লাক সিনেমা দর্শকদের নজর কাড়তে সক্ষম হন।

সমালোচকদের মতামত

“লাক” সিনেমায় অভিনয়ের পর শ্রুতি হাসানের অভিনয় সমালোচনা মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল। কিছু সমালোচক তার অভিনয়ের প্রশংসা করেছিলেন, আবার কেউ কেউ তার অভিনয়ে খুঁত খুঁজে পেয়েছিলেন। তবে এই মিশ্র প্রতিক্রিয়া তাকে তার অভিনয় দক্ষতা উন্নত করতে অনুপ্রাণিত করেছে। শ্রুতি হাসানের অভিনয় সমালোচনা তাকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে এবং পরবর্তী প্রজেক্টগুলিতে আরও ভাল ফলাফল আনতে সাহায্য করেছে।

প্রথম সিনেমার অভিজ্ঞতা ও সমালোচনাগুলি তার ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই চ্যালেঞ্জগুলি তাকে তার যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও মহৎ ভূমিকা পালনে তাকে প্রস্তুত করেছে।

আরও পড়ুনঃ  সানা খান

দক্ষিণ ভারতীয় सভ

শ্রুতি হাসানের অভিনয় দক্ষতা দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্রে প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর অসামান্য অভিনয় দক্ষিণে অনন্য অভিনয় হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। তিনি তেলুগু সিনেমাতেও নিজের স্থান তৈরি করেছেন। দক্ষিণ ভারতের জনসাধারণের কাছে শ্রুতি হাসান একটি প্রিয় মুখ হয়ে উঠেছেন।

আনাগঙ্গা ও ধীরুদু

শ্রুতি হাসানের অভিষেক তেলুগু সিনেমা “আনাগঙ্গা ও ধীরুদু” ছিল। এই সিনেমায় তার অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। “আনাগঙ্গা ও ধীরুদু” ছবির জন্য শ্রুতি শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক পুরস্কার লাভ করেন ৫৯তম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস সাউথে। তার অভিনয় দক্ষতা এবং পরিশ্রমের জন্য শ্রুতি হাসান ধীরে ধীরে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

গব্বার সিং

“গব্বার সিং” সিনেমা ছিল দক্ষিণে শ্রুতি হাসানের বিশেষ সাফল্যের একটি মাইলফলক। ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমা বক্স অফিসে বিশাল সাফল্য অর্জন করে। শ্রুতি হাসানের তেলুগু সিনেমা “গব্বার সিং” তে তার চরিত্রটির জন্য অনেক প্রশংসা পান। সতীর্থ অভিনেতা পাওয়ান কল্যাণের সাথে তার রসায়ন দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই সিনেমা তার ক্যারিয়ারে আরও শক্তিশালী মাত্রা যোগ করে, এবং তিনি দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেন।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button