স্টার সিনেপ্লেক্স
বিনোদন স্থান হিসেবে স্টার সিনেপ্লেক্স এ তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় মুভি থিয়েটার। ২০০৪ সালের ৯ অক্টোবরে ঢাকার বসুন্ধরা সিটিতে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ধারায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে শুরু করে। স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রধান এবং উদ্যোক্তা মাহবুব রহমান রুহেল এর অধীনে পরিচালিত শো মোশন লিমিটেডের এই উদ্যোগটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে।
প্রথম শাখা হিসেবে ঢাকা শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত স্টার সিনেপ্লেক্স গর্বিতভাবে দেখায় ছয়টি সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রেক্ষাগৃহের বিপুল পরিসর, যেখানে প্রায় ১৬০০ লোকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এর পর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সীমান্ত সম্ভারে দ্বিতীয় শাখা এবং মিরপুরের সনি স্কোয়ারে ২০২১ সালের আগস্টে চতুর্থ শাখার উদ্বোধন হয়। এছাড়াও চট্টগ্রামের বালি আর্কেডে ২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর প্রথম শাখা ও রাজশাহীর হাইটেক পার্কে ২০২৩ সালের ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় শাখার সূচনা করা হয়।
স্টার সিনেপ্লেক্সের ইতিহাস
বাংলাদেশের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলগুলোর মধ্যে স্টার সিনেপ্লেক্স অন্যতম। মাল্টিপ্লেক্স ইতিহাস তৈরিতে স্টার সিনেপ্লেক্সের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। যাত্রার শুরু থেকেই, তারা বাংলাদেশে চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠা এবং শুরু
স্টার সিনেপ্লেক্সের সিনেপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা হয় ৯ অক্টোবর, ২০০৪ সালে। শুরু থেকেই, তারা আধুনিক প্রযুক্তি এবং উন্নতমানের সেবা প্রদানের মাধ্যমে সিনেমা দেখতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিলো দর্শকদের আরামদায়ক এবং মনোরম পরিবেশে সিনেমা প্রদর্শন করা।
প্রথম শাখা
২০১৬ সালে কক্সবাজারে স্টার সিনেপ্লেক্স তাদের প্রথম শাখা খোলে। এটি ছিল মাল্টিপ্লেক্স ইতিহাস এ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দৃষ্টিনন্দন এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ এই শাখা দর্শকদের মধ্যে খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
অগ্রগতির পথ
২০১৯ সালে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে নতুন শাখা খোলে স্টার সিনেপ্লেক্স। বর্তমানে ঢাকায় তাদের মোট পাঁচটি শাখা রয়েছে। এ বছরগুলোতে, প্রতিষ্ঠানটি ক্রমাগত তাদের সেবা এবং প্রযুক্তি উন্নত করেছে। বিশেষ করে চলচ্চিত্র হল এর মান উন্নয়ন এবং নতুন শাখা চালু করার মাধ্যমে তারা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
বর্তমান শাখাগুলোর তালিকা
স্টার সিনেপ্লেক্স বাংলাদেশে মুভি থিয়েটার লোকেশনস-এর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয়। স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রধান শাখাগুলো রয়েছে ঢাকায়, চট্টগ্রামে এবং রাজশাহীতে, প্রতিটি শাখায় আধুনিক সুবিধা সহযোগে উন্নত মানের মুভি দেখানো হয়। বাংলাদেশের সিনেপ্লেক্স শাখাগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার তালিকায় এগুলো অন্যতম।
ঢাকা শাখা
ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্সের বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বসুন্ধরা শপিং মল, সীমান্ত সম্ভার ধানমন্ডি, এস কে এস টাওয়ার এবং সনি স্কোয়ার। প্রতিটি সিনেপ্লেক্সে টিকিটের দাম সিনেমার ধরনের উপর নির্ভর করে ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। আপনার স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের মাধ্যমে সহজেই অনলাইনে টিকিট কিনতে পারেন।
চট্টগ্রাম শাখা
চট্টগ্রামে স্টার সিনেপ্লেক্সের শাখা বলি আর্কেড-এর আরেকটি অন্যতম আকর্ষণ। এই মুভি থিয়েটার লোকেশনস-এ উচ্চমানের ২ডি এবং ৩ডি মুভি দেখানোর সুব্যবস্থা রয়েছে। টিকিটের দাম ৪০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে থাকে এবং অনলাইনে টিকিট কেনার প্রক্রিয়া খুবই সহজ। দর্শকদের সুবিধার্থে নিয়মিত কাস্টমার সাপোর্টও পাওয়া যায়।
রাজশাহী শাখা
রাজশাহীতে স্টার সিনেপ্লেক্সের শাখা হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক। এই শাখাটি খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এখানে সম্ভবত সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো সিনেপ্লেক্স শাখায় প্রদর্শিত মুভিগুলোর বৈচিত্র্য। স্থানীয় এবং বিদেশী মুভির প্রদর্শনের জন্য এটি দর্শকদের প্রিয় মুভি থিয়েটার লোকেশনস গুলোর মধ্যে একটি। এর একটি অন্যতম আকর্ষণ হলো উন্নত মানের সাউন্ড সিস্টেম এবং বসার ব্যবস্থা।টিকিটের দাম ৬০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ১৫০০ টাকার মধ্যে থাকে।
প্রযুক্তিগত সুবিধা এবং সেবা
স্টার সিনেপ্লেক্স তাদের দর্শকদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সর্বোত্তম প্রযুক্তিগত সুবিধা এবং পরিষেবা প্রদানের জন্য একাধিক উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাদের অনন্য সুবিধাগুলি সিনেমা দেখার আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
ত্রিমাত্রিক প্রক্ষেপণ প্রযুক্তি
স্টার সিনেপ্লেক্সে ৩ডি প্রযুক্তির মাধ্যমে সিনেমা দেখার অনন্য অভিজ্ঞতা উপভোগ করা যায়। আধুনিক 3D প্রযুক্তি ব্যবহার করে দর্শকরা একটি ভিন্ন ধরনের ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা উপভোগ করে। এর ফলে সিনেমার চরিত্রগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে এবং দর্শকরা মনে করেন যেন সিনেমার ভেতরে ঢুকে গেছেন। পাশাপাশি এখানে শুক্রবার-শনিবার প্রিমিয়াম সিটের জন্য ৫০০ টাকা এবং রবিবার-বৃহস্পতিবার ৪৫০ টাকা মূল্যে 3D সিনেমার টিকিট পাওয়া যায়।
ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড
সাউন্ড ব্যবস্থা উন্নত করতে স্টার সিনেপ্লেক্স ডলবি সাউন্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এই ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম সিনেমার প্রতিটি শব্দের নিখুঁত স্পষ্টতা এবং গভীরতা নিয়ে আসে, যা দর্শকদের সম্পূর্ণ বিনোদনের একটি ব্যতিক্রমী স্তরে পৌঁছে দেয়। ডলবি সাউন্ড এর মাধ্যমে আপনি সিনেমার সাউন্ড ট্র্যাকের প্রতিটি নিউট্রাল খুলতে পারবেন।
স্টেডিয়ামের মত বসার ব্যবস্থা
স্টার সিনেপ্লেক্সে স্টেডিয়াম সিটিং সেটআপের মাধ্যমে দর্শকদের জন্য সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা আরামদায়ক এবং উন্নত হয়েছে। এই বসার ব্যবস্থা দর্শকদের আরও আরামদায়কভাবে বসার সুযোগ দেয়, যা সিনেমা দেখার সময়ে তাদের মুভির প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে সহায়ক হয়। স্টেডিয়াম সিটিং ছাড়াও শ্রেণীবিন্যাস করা সিট এবং টিকিটের মূল্যে বিভিন্ন অপশন রয়েছে, যা দর্শকদের পছন্দ অনুসারে নির্বাচন করতে দেয়।
Star Cineplex এর জনপ্রিয়তা
Star Cineplex, একটি আধুনিক সিনেমা হল যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মান এবং দর্শক-অভিজ্ঞতার মোড়কে রূপান্তর করেছে। প্রায় ১৯ বছর ধরে জনপ্রিয় মুভি প্রদর্শনের মাধ্যমে দর্শক পছন্দের শীর্ষে থেকে এগিয়ে চলেছে।
মুভি প্রদর্শনের মান
স্টার সিনেপ্লেক্স তাদের শ্রেষ্ঠ মানের মুভি প্রদর্শনের জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত। আধুনিক প্রযুক্তি এবং উন্নত সাউন্ড সিস্টেমের সংমিশ্রণে প্রতিষ্ঠানটি দর্শকদের চমৎকার অভিজ্ঞতা প্রদান করছে। যেকোনো জনপ্রিয় মুভি দেখতে এখানে দর্শকদের ধাবিত হন। ডিজিটাল সিনেমা স্ক্রিন এবং উন্নত প্রজেকশন প্রযুক্তির কল্যাণে মুভির প্রতিটি মুহূর্ত আরও বাস্তবসম্মত হয়ে ওঠে, যা দর্শক পছন্দকে পূর্ণতা দেয়।
দর্শকদের প্রিয় স্থান
স্টার সিনেপ্লেক্সের সুন্দর এবং আরামদায়ক পরিবেশ, আধুনিক আসন ব্যবস্থা এবং উচ্চমানের সেবার কারণে এটি দর্শকদের বিশেষভাবে প্রিয়। সর্বপ্রথম বাশুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন শাখায় দর্শকদের ভিড় বাড়ান কর্মী। স্টার সিনেপ্লেক্সের শাখাগুলি দর্শকের প্রিয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, যেখানে সারা বছরই জনপ্রিয় মুভি প্রদর্শিত হয়।
জনপ্রিয় মুভি প্রদর্শন
স্টার সিনেপ্লেক্স সর্বদাই শব্দ সিস্টেম এবং উন্নত প্রজেকশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন জনপ্রিয় মুভি প্রদর্শন করে থাকে। দর্শক পছন্দের হিট মুভিগুলি তাত্ক্ষণিকভাবে প্রদর্শিত হয়, যা সিনেমা প্রেমীদের এক বিশাল অভিজ্ঞতা প্রদান করে। প্রতি বছরের নতুন মুভি রিভিউতে স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যা দর্শকের মধ্যে একটি বিশেষ স্থানের সৃষ্টিও করে।
প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যত লক্ষ্য
স্টার সিনেপ্লেক্সের ভবিষ্যত পরিকল্পনা এবং লক্ষ্যস্থির করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বর্পূণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আগে, বাংলাদেশের সিনেমা জগতটা যেমন ছিল, বর্তমানের স্টার সিনেপ্লেক্স সেই সমস্ত ধারণাকে আবার নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করছে। এদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার মধ্যে অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো শাখা বৃদ্ধি এবং সিনেমাপ্রেমীদের জন্য আরও উন্নতমানের প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করা।
শাখা বৃদ্ধির পরিকল্পনা
বর্তমানে স্টার সিনেপ্লেক্স ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী সহ বিভিন্ন স্থানে দশটি শাখা পরিচালনা করছে। ভবিষ্যতে, তারা বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে কমপক্ষে একটি শাখা প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এ কারণে, সিওও সৌম্যদীপ বসু এবং পরিচালক অভিষেক রায় বর্মণের নেতৃত্বে বিশেষ দল কাজ করে যাচ্ছে। তাদের লক্ষ্য শাখা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় সিনেমার প্রচার এবং দর্শকদের আরো কাছে নিয়ে আসা।
২০৪০ সালের লক্ষ্যমাত্রা
স্টার সিনেপ্লেক্স ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রজন্মের সিনেমা অভিজ্ঞতা নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে। এর বেশি উন্নতমানের ত্রিমাত্রিক প্রক্ষেপণ প্রযুক্তি এবং ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম প্রবর্তন করার লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়াও, প্ল্যাটিনাম স্ট্যান্ডার্ডের সিটিং ব্যবস্থা এবং অটোমেটেড সেবা প্রদান করে, তারা দর্শকদের জন্য এক অভাবনীয় সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে চায়। এই লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে স্টার সিনেপ্লেক্স খুবই আত্মবিশ্বাসী এবং তার ওপর কর্মরত অসংখ্য প্রতিনিধিরা একসাথে কাজ করছে।