সিলেট জেলা: বাংলাদেশের সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

সিলেট জেলা বাংলাদেশের একটি অন্যতম সুন্দর ও সম্পদশালী অঞ্চল। এই জেলাটি প্রকৃতির নানা রূপে বিরাজমান, যার মধ্যে চা-বাগান, পাহাড়, ঝরনা এবং বনাঞ্চলের সৌন্দর্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে তাই অতি প্রিয় ও আকর্ষণীয়। সিলেট পর্যটনের এই সবুজ ল্যান্ডস্কেপ এক নজর দেখতে ও প্রকৃতির অপরূপ রূপে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পর্যটকরা এখানকার প্রতিটি ঋতুতেই আসেন।

সিলেট শহর থেকে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যা সিলেট থেকে অ্যাডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ডের মহাসড়কের উপর অবস্থিত। পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে জাফলং প্রায় ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এবং বিছনাকান্দি, যেখানে রয়েছে প্রাকৃতিক রত্নভাণ্ডার ও পাথর কোয়ারি, রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে লোকজন সাধারণত স্থানীয় নৌকায় বা বিশেষ নৌযানে যাতায়াত করতে পছন্দ করেন, যা তাদের ভ্রমণে এক নতুন ধাঁচ যোগ করে।

Contents show

সিলেট জেলার ভূমিকা ও ইতিহাস

সিলেট জেলা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এখানকার প্রাচীন ইতিহাস ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন সিলেটের ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। সিলেটকে “৩৬০ আউলিয়ার দেশ” হিসেবে মনে করা হয় কারণ এখানে হযরত শাহ জালালের আগমন ঘটেছিল তার ৩৬০ অনুসারী সহ। এছাড়াও, সিলেটে অবস্থিত পবিত্র পুকুর ও দারগাহ মসজিদ সহ নানা সিলেট ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস

সিলেটের ইতিহাস প্রাচীনকালে বিভিন্ন পর্যায়ে আদিবাসী সংস্কৃতির সাথে জড়িত ছিল। শাসনকালে সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে সিলেটকে রাজস্ব মুক্ত শহরে পরিণত করা হয়। এখানে হযরত শাহ জালালের পবিত্র পুকুর, যেখানে একসময় ৭০০ দৈত্যাকার শিং মাছ ছিল, তাও ইতিহাসের অংশ। তার মাজার এলাকা যেমন জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তেমনই ঐতিহাসিক গবেষণার ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।

সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য

সিলেটের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিদারুণ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। মনিপুরী নৃত্য এবং বিভিন্ন আদিবাসীর ভাষার মধ্যে এই সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। সিলেটের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যাভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং উৎসব এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে। এছাড়াও, এখানে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি সিলেটের ঐতিহ্য এবং সিলেটের সংস্কৃতি কে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

সিলেট জেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্যময় ভূখণ্ডের জন্য বিশেষভাবে সুপরিচিত। এই জেলার সিলেটের পাহাড়, নদী, এবং ঝরনাগুলোর অনন্য মেলবন্ধন পর্যটকদের মনোমুগ্ধ করে তোলে।

পাহাড় ও বনাঞ্চল

সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চল যেমন জাফলং এবং সিলেটের গোয়াইনঘাট পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় স্থান। এই অঞ্চলগুলি বিশেষত সবুজসাম্রাজ্য এবং খাসিয়া উপজাতির সহাবস্থান নিয়ে গর্বিত। জাফলং বিখ্যাত তার পাহাড়ি প্রকৃতি ও সেগুন বনাঞ্চলের জন্য। স্থানীয় পরিবেশ এবং সেখানকার জনগোষ্ঠীর জীবনধারা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় মনে হয়।

আরও পড়ুনঃ  আগরতলা: ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী রাজধানী শহর

নদী, জলপ্রপাত ও হ্রদ

সিলেটের নদী, সিলেটের ঝরনা এবং হ্রদগুলোও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বর্ধন করে। এখানে উল্লেখযোগ্য হাকালুকি হাওর, যার আয়তন ১৮১.১৫ বর্গ কিমি এবং এতে প্রায় ২৩৮টি বিল রয়েছে। এই জলাশয় প্রতিদিন হাজারো পর্যটকদের মনোরঞ্জন করে।

বিছনাকান্দি একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যেখানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে খাসিয়া পাহাড়ের অনেক ধাপ মিলে একটি চিত্রশিল্পের মতো দৃশ্যপট তৈরি করেছে। আরো রয়েছে ভোলাগঞ্জ, যেখানে দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারীর অবস্থান। এইসব স্থান সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে।

সিলেটের নদী যেমন লোভাছড়া তার আনন্দ-দায়ক দৃশ্য এবং স্বচ্ছ পানির জন্য পর্যটকদের কাছে খুব আকর্ষণীয়। লোভাছড়া নদীতে গিয়ে পর্যটকেরা green hills এবং বালুসমৃদ্ধ পানির প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

সিলেট জেলা পরিচিতি

সিলেট জেলা বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও সমৃদ্ধ জেলা। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জনশ্রুতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সকলেই অবগত। তবে এই জেলার পরিচিতি শুধু এর সৌন্দর্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সিলেট জেলা জনসংখ্যা ও প্রধান শহরগুলির বৈশিষ্ট্যও অত্যন্ত লোভনীয়।

আয়তন ও জনসংখ্যা

সিলেট জেলার মোট আয়তন ৩,৪৯০.৪০ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে জনসংখ্যার পরিমাণ ৩,৮৫৩,৫৭০ জন (২০২২ এর আদমশুমারী অনুযায়ী)। সিলেটের জনসংখ্যা বিবর্তন নির্ণয়ে দেখা গেছে যে এই অঞ্চলে বিভিন্ন উপ-জাতির মানুষ বাস করে, যেমন মণিপুরী, পাহাড়িয়া, খাসিয়া, চাকমা, ত্রিপুরা এবং সান্তাল সম্প্রদায়। সিলের জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১,১১৬ জন। জেলার সাক্ষরতার হার ৭১.৯২% এবং স্যানিটেশন পরিসেবা ৯৭.৩৫%।

প্রধান শহরগুলি

সিলেট জেলার প্রধান শহরগুলো হলো সিলেট শহর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ। সিলেট একাধারে ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিকতার সংমিশ্রণ। মৌলভীবাজার চা শিল্পের জন্য পরিচিত এবং হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলো পর্যটকদের মন যৌনানিতে সক্ষম হয়েছে। সুনামগঞ্জ শহর তার অনন্য প্রাকৃতিক জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত। সিলেটের শহরসমূহ তাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য অন্যদের থেকে আলাদা।

কৃষি ও অর্থনীতি

সিলেট জেলার অর্থনৈতিক ভিত্তি মূলত চা উৎপাদনে নির্ভরশীল। ফলে সিলেটের অর্থনীতি চা শিল্পের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত। এছাড়াও অন্যান্য কৃষি উপাদান যেমন পান, সুপারি এবং রবারের উৎপাদনও সিলেটের কৃষি উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

চা শিল্পের গুরুত্ব

সিলেটের চা শিল্প সিলেট জেলার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। সিলেট অঞ্চলে ১৫০টিরও বেশি বাণিজ্যিক চা বাগান আছে, যা বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ। চা শিল্পটি প্রায় ৩,০০,০০০ লোকের চাকরি সৃষ্টিতে সহায়তা করেছে, যেখানে ৭৫% নারী। সিলেটের চা খাত সারা বিশ্বে চা উৎপাদনের প্রায় ৩% অবদান রাখে। বাংলাদেশ চা বোর্ড এই এলাকার চা শিল্প পরিচালনা করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে। সিলেটের চা উৎপাদন বাংলাদেশের মোট চা উৎপাদনের ১% এর সমান।

অন্যান্য কৃষি উৎপাদন

চা ছাড়াও সিলেটের কৃষি উৎপাদন অন্যান্য ফসলেও সমৃদ্ধ। পান, সুপারি, রবার ইত্যাদি এখানে প্রচুর উৎপাদিত হয়। সিলেটের কৃষি উৎপাদনের এ সাফল্য এখানকার কৃষকদের নিরলস পরিশ্রমের ফল। সিলেটের কৃষি উৎপাদন এখানকার অর্থনৈতিক শক্তি বাড়িয়ে তুলেছে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

আরও পড়ুনঃ  কক্সবাজার - বাংলাদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত

সিলেটের অর্থনীতি তেল এবং গ্যাসের মতো প্রাকৃতিক সম্পদের মাধ্যমেও সমৃদ্ধ। এখানে প্রায় ১৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। জালালাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড প্রতিবছর $৫৬৬ মিলিয়ন আয় করে। এছাড়া বৈদেশিক রেমিট্যান্স হিসেবে প্রতি বছরে প্রায় $১০ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হয়।

পর্যটন কেন্দ্রগুলো

সিলেট জেলা তার মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, চা-বাগান এবং ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহের জন্য প্রসিদ্ধ। সিলেটের পর্যটন এর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো জাফলং, যা পাহাড়ি সৌন্দর্য এবং নদীর মিলনে সৃষ্টি হয়। একইভাবে, মৌলভীবাজার এবং শ্রীমঙ্গল পর্যটনের জন্য যা অন্যতম শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হিসেবে পরিচিত।

জাফলং ও মৌলভীবাজার

জাফলং, সিলেটের পর্যটনে একটি জনপ্রিয় স্থান, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন। এখানে বিশুদ্ধ জলধারা এবং সুবিশাল পাথরের মোহময় দৃশ্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। মৌলভীবাজার এলাকাটি তার প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং চা-বাগানের জন্য বিখ্যাত। মৌলভীবাজার পর্যটনে গিয়ে পর্যটকরা স্থানীয় চা-বাগান পরিদর্শন করতে পারেন, যা সৌন্দর্যের এক অভিনব রূপ প্রকাশ করে।

শ্রীমঙ্গল ও সিকন্দরগঞ্জ

শ্রীমঙ্গল, চা রাজধানী হিসেবে পরিচিত, তার চা-বাগানগুলির জন্য বিখ্যাত। শ্রীমঙ্গল পর্যটনে গেলে চা বাগানে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি বনের মধ্য দিয়ে হাঁটার মজাও উপভোগ করতে পারেন। সিকন্দরগঞ্জ তার ঐতিহ্যময় পরিবেশ এবং মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য পরিচিত।

স্থানীয় খাবার ও রেস্টুরেন্ট

সিলেট জেলার স্থানীয় খাবার ও রেস্টুরেন্টগুলির খ্যাতি বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সিলেটি খাবার যেমন শুঁটকি, বাটা, ভর্তা ইত্যাদির ভিন্নতা এবং স্বাদের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও সিলেটের প্রধান রেস্টুরেন্টগুলি অতিথি পরায়ণতা এবং মৌলিক খাবারের স্বাদে পর্যটকদের মন জয় করে নিয়ে থাকে।

সিলেটি খাবারের বৈশিষ্ট্য

সিলেটি রান্না ভিন্নধর্মী ও স্বাদে সমৃদ্ধ। এখানে সাতকরা দিয়ে গরুর মাংস খুবই জনপ্রিয়, যা বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের একটি অনন্য স্বাদ। বিস্তর ধরনের ভর্তা, বোয়াল মাছ, ডাল, এবং সাদা ভাত এই অঞ্চলে বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। এমনকি ফেসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই খাবারের প্রচুর সুনাম রয়েছে।

জনপ্রিয় রেস্তোরাঁগুলোর তালিকাঃ

  • পাঁচ ভাই রেস্তোরাঁ: জিন্দা বাজারে অবস্থিত এই রেস্তোরাঁটি সিলেটি খাবার পরিবেশনের জন্য বিখ্যাত। ফেসবুকে এই রেস্তোরাঁর পোস্টে ১ লাখ ১৪ হাজারের বেশি লাইক পাওয়া গিয়েছে।
  • জিন্দা বাজারের অন্য রেস্টুরেন্ট: সিলেটের জিন্দা বাজার এলাকার অন্যান্য রেস্টুরেন্টগুলোও অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মানসম্মত খাবার সরবরাহ করে থাকে।
  • ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাঁসমূহ: সিলেটের শ্রীমংগল এলাকায় সিলেটি রান্না জানতে পারবেন। সেখানে মোট ২৬ জন ব্যক্তি ঘুরতে গিয়ে স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিয়েছেন।

সিলেটের রেস্টুরেন্টগুলি শুধু স্বাদে নয়, অতিথি পরায়ণতাতেও বৈশ্বিক পর্যটকদের প্রশংসা অর্জন করেছে। সিলেটি রান্নার বৈচিত্র্য এবং স্বাদ সিলেটি খাবার হিসেবে বছরের পর বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এবং মূল বিষয় হিসেবে উল্লেখযোগ্য।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসব

সিলেটের সাংস্কৃতিক জীবন সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ। এখানকার বাসিন্দারা সারা বছর ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসবে অংশগ্রহণ করে। এই অনুষ্ঠানগুলোতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক সংস্কৃতির সমন্বয় দেখা যায়। উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর নিজস্ব সাংস্কৃতিক ধারাতো রয়েছেই, তার পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা তাদের প্রতিভার প্রকাশ ঘটাচ্ছেন।

মুক্তিযুদ্ধের গানের ঐতিহ্য

মুক্তিযুদ্ধের গান সিলেটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ মর্যাদা পায়। এসব গানের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামের আবেগময় এবং সাহসিকতার গল্প গুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে। একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো, “বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উৎসব” যেখানে সিলেট জেলা প্রশাসন এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমী ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশনার ব্যবস্থায় নিয়োজিত ছিল। এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং নতুন প্রজন্মকে আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হয়।

আরও পড়ুনঃ  বায়েজিদ লিংক রোড - ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক

পুরাণের উৎসব

সিলেটে প্রচলিত পুরাণের উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বৈশাখী উৎসব, মাঘী পূর্ণিমা, এবং মহালয়া। এসব উৎসব সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অভিন্ন অংশ এবং জনগণের মাঝে দারুণ জনপ্রিয়। এসব উৎসবের সময় সিলেটে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়, যার মধ্যে আছে লোকগান, নাচ, কীর্তন এবং নাটক। উদাহরণস্বরূপ, চার দশক ধরে উদযাপিত হয়ে আসা “বাংলাদেশ আঞ্চলিক নাট্য উৎসব” গত মার্চ মাসে সিলেট division-এ আয়োজিত হয় ও তিন দিনব্যাপী চলে। এটি সিলেটের সংস্কৃতির মূলে থাকা ঐতিহ্যকে লালন ও সংরক্ষণ করতে ভুমিকা রাখে।

এভাবে সিলেটে স্থানীয় উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র বিনোদনেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি সিলেটের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে গভীর অভিঘাত সৃষ্টি করে চলেছে। এই অনুষ্ঠানগুলো সিলেট বাসীর মধ্যে ঐক্য ও সংস্কৃতির বুনিয়াদি বিষয়গুলোকে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

FAQ

সিলেটে মূল আকর্ষণগুলো কি কি?

সিলেটে চা-বাগান, পাহাড়, ঝরনা, বনাঞ্চল, নদী এবং হ্রদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। বিশেষ করে, জাফলং, সিলেটের গোয়াইনঘাট, হাকালুকি হাওর, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি এবং পাহাড়ি ঢল নির্ঝরিণী পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্থান।

সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন?

সিলেট বিভিন্ন কালপর্বে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের সাথে ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এখানে প্রাচীন মন্দির এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান পাওয়া যায় যা অঞ্চলের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পরিচয় দেয়।

সিলেট অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভিত্তি কি?

সিলেট জেলার অর্থনীতি মূলত চা উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া পান, সুপারি এবং রবারের উৎপাদনেও এই জেলা বেশ সমৃদ্ধ। চা শিল্প সিলেটের প্রধান অর্থনৈতিক কার্যক্রমের একটি।

সিলেটে কোন কোন খাবার বিখ্যাত?

সিলেটি খাবারের মধ্যে শুঁটকি, বাটা, ভর্তা ইত্যাদি ভিন্নতা এবং স্বাদের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলো অতিথি পরায়ণতা এবং মৌলিক খাবারের স্বাদে পর্যটকদের মন জয় করে থাকে।

সিলেট জেলার প্রধান শহরগুলো কি কি?

সিলেট জেলার প্রধান শহর হিসেবে সিলেট শহর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ পরিচিত। প্রতিটি শহরেই বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

সিলেটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসব সম্পর্কে কিছু বলুন।

সিলেটে অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং উৎসব পালিত হয়, যার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের গান এবং পুরাণের বিভিন্ন উৎসব বিশেষভাবে পালন করা হয়। সিলেটের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য স্থানীয় ও পর্যটকদের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব পায়।

সিলেটে কোন স্থানটি অবসর যাপনের জন্য সবচেয়ে ভালো?

জাফলং ও মৌলভীবাজার তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক বৈচিত্র্যের জন্য অবসর যাপনের জন্য জনপ্রিয় স্থান। শ্রীমঙ্গল চা-বাগান এবং সিকন্দরগঞ্জের ঐতিহ্যময় পরিবেশে বিশেষভাবে পছন্দ করা হয়।

সিলেটের প্রাকৃতিক ভূমিকা সম্পর্কে কিছু বলুন।

সিলেট জেলাতে চা-বাগান, পাহাড়, ঝরনা ও বনাঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ণিল রূপে ছড়িয়ে আছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে নদী, জলপ্রপাত ও হ্রদের অপরূপ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button