কোলেস্টেরল বাড়লে কি হয়?

আমাদের শরীরের জন্য কোলেস্টেরল অত্যন্ত জরুরি একটি উপাদান, তবে এর বৃদ্ধি প্রায়শই স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির প্রধান কারণ হতে পারে। বিশেষ করে মহিলারা গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির শিকার হতে পারেন, যা অকাল প্রসব বা শিশুদের জেনেটিক ডিজঅর্ডারের মতো জটিলতার আশঙ্কা বাড়ায়। এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকি শনাক্ত করতে এর উপসর্গগুলি অনেক সময় লক্ষণীয় হয় না, যার ফলে নীরবে বাড়তে থাকে মারাত্মক ঝুঁকি।

উচ্চ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি হলে বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাস কষ্টের মতো নানা ধরণের লক্ষণ দেখা দিতে পারে যা অনেক ক্ষেত্রে জটিল রোগের ইঙ্গিত করে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় মাতৃ ও শিশু দুজনের জন্যই অধিক কোলেস্টেরলের মাত্রা বিপজ্জনক। সুস্থ থাকতে ও এর ঝুঁকিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে, সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Contents show

কোলেস্টেরল পরিচিতি

কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের চর্বি যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপে অপরিহার্য। এটি হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য, হরমোন উৎপাদন, এবং স্নায়ুতন্ত্রীয় কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সব ধরনের কোলেস্টেরল উপকারী নয়, এবং এর ভালো এবং খারাপ দিক উভয়ই রয়েছে।

কোলেস্টেরল কী?

লিপিডের এক প্রকার হিসেবে কোলেস্টেরল, বিশেষ করে লিভারে উৎপন্ন হয় এবং এটি খাবার থেকেও প্রাপ্ত হতে পারে। এর মৌলিক কাজ হলো কোষের মেমব্রেন তৈরি করা, ভিটামিন ডি এবং কিছু হরমোন তৈরি করা। কিন্তু এর অতিরিক্ত উপস্থিতি হৃদ্রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

কোলেস্টেরলের প্রকারভেদ

আমাদের শরীরে মূলত দুই প্রকারের কোলেস্টেরল রয়েছে: এলডিএল (LDL) এবং এইচডিএল (HDL)এলডিএল কে ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ বলা হয়, কারণ এটি রক্তনালীর দেয়ালে জমা হয়ে রক্তপ্রবাহে বাধা দেয় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে, এইচডিএল হল ‘ভালো কোলেস্টেরল’, যা অতিরিক্ত কোলেস্টেরলকে লিভারে ফিরিয়ে আনে এবং এটি শরীর থেকে নিষ্কাশনে সহায়তা করে।

এছাড়াও, ট্রাইগ্লিসারাইড, যা শরীরে অধিকাংশ চর্বি হিসাবে সঞ্চিত হয়, এটি খুব বেশি পরিমাণে থাকলে হার্ট এটাক এবং স্ট্রোকের মতো সমস্যাগুলোর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণ

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির বেশ কিছু প্রধান কারণ রয়েছে, যা সাধারণত জিনগত, খাবারের প্রভাব, এবং জীবনযাপনের অভ্যাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অনিয়মিত আহার, ধুমপান (ধুমপান), জর্দা সেবন, এবং মদ্যপান এর প্রভাব অসুখ বাড়ানোর এক বড় কারণ। এছাড়াও, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে কোলেস্টেরল ব্যবস্থাপনা আরো জটিল হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  বাচ্চাদের পেটে গ্যাস হলে কি খাওয়া উচিত?

খাবারের প্রভাব

  • উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবারের মতো স্টেক এবং অর্গান মিটগুলি, যেমন লিভার ও কিডনি, আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
  • আহারে মৎস্য ও সার্ডিন যোগ করলে যেমন হৃদরোগ ঝুঁকি কমায়, তেমনি এগুলির মধ্যে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটগুলি এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল) কমাতে সহায়ক।

জিনগত কারণ

কিছু ব্যক্তির জেনেটিক গঠন তাদের শরীরে কোলেস্টেরল তৈরি এবং নির্গমনের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে, যা এলডিএল কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা সৃষ্টি করতে পারে।

জীবনযাপনের অভ্যাস

নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপের অভাব, অতিরিক্ত ধুমপান বা অ্যালকোহল সেবন, এবং উচ্চ-চর্বি ও চিনি যুক্ত আহার সেবন কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। এই অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করা সম্ভব।

উচ্চ কোলেস্টেরল এর লক্ষণ

সাধারণত, উচ্চ কোলেস্টেরলের কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ থাকে না, যা এর স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ অধ্যয়ন ও স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে ধরা পড়ে।

সাধারণ লক্ষণ

  • চোখের চারপাশে সাদা বা ধূসর বৃত্ত যা কর্নিয়াল আর্কাস হিসেবে পরিচিত।
  • শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই বুকে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
  • শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তি।

পরিচিত শারীরিক সমস্যা

অনেক সময় উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীর বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করে যা অপরিচিত থাকলে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হতে পারে। এই ধরণের জটিলতা অন্তর্ভুক্ত করে:

  • হৃদপিণ্ডের রোগ যেমন হৃদযন্ত্রের অসুখ বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্যার্কশন।
  • ধমনীতে প্লাক জমা, যা ধমনীস্থলীকরণ বা এথেরোস্ক্লেরোসিস হিসাবে পরিচিত।

এরকম লক্ষণ ও জটিলতার নির্ণয় ও চিকিৎসা এর জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হৃদরোগের ঝুঁকি

উচ্চ কোলেস্টেরলের প্রভাব যে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, সে বিষয়ে আমাদের মধ্যে অনেকেরই সামান্য জ্ঞান রয়েছে। তবে, এর আসল প্রভাব কি মাত্রায় ব্যাপক তা বুঝতে পেরে আমরা অবাক হতে পারি। উচ্চ কোলেস্টেরল দ্বারা সৃষ্ট রোগজনিত ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে আমরা আমাদের হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকের ক্ষতিকর প্রভাবও এড়াতে পারি।

হৃদরোগের ধরণের পরিবর্তন

হৃদরোগের বিভিন্ন ধরণের মধ্যে ইস্কেমিক হৃদরোগ অন্যতম। উচ্চ কোলেস্টেরল রক্তের নালিগুলির মধ্যে প্লাক তৈরি করে, যা রক্তপ্রবাহের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। এটি অবধারিতভাবে হৃদযন্ত্রের কাজে ঘাতক প্রভাব ফেলে, যা চিকিৎসা জগতে কার্ডিওভাসকুলার রোগ নামে পরিচিত।

হৃদক্রিয়া ও রক্তনালীর স্বাস্থ্য

সুস্থ হৃদযন্ত্র ও রক্তনালী নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, সুষম খাবার এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়। শারীরিক অবস্থা এবং জীবনযাপনের ধরন ভালো রাখতে পারলে, আমাদের হৃদযন্ত্র দীর্ঘকাল সচল এবং কার্যকর থাকতে পারে।

স্ট্রোকের সম্ভাবনা

উচ্চ কোলেস্টেরলের সাথে স্ট্রোক একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে গণ্য করা হয়। স্ট্রোক ঘটে যখন মস্তিষ্কের কোনো একটি অংশে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়, যা মস্তিষ্কের কোষগুলির ক্ষতি ঘটাতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি প্রায়শই পারিপথিক ধমনীরোগ এবং রক্ত চলাচল প্রতিবন্ধকতা দ্বারা উদ্ভূত হয়, যা ধমনীগুলিতে প্লাকের জমা থেকে সৃষ্টি হয়। এর ফলে ব্লকেজ সৃষ্টি হয়ে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ স্তর পর্যন্ত পৌঁছতে পারে, যা স্ট্রোকের জন্য দায়ী।

আরও পড়ুনঃ  মেয়েদের ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ?

স্ট্রোকের কারণে

স্ট্রোকের প্রধান কারণ হলো পারিপথিক ধমনীরোগ, যা ধমনীগুলিতে চর্বিযুক্ত প্লাকের সঞ্চয় ঘটায়। এই প্লাকগুলি ধমনীগুলির ভিতরের পথ সংকীর্ণ করে দেয়, এবং এতে করে রক্ত চলাচল প্রতিবন্ধকতা ঘটে যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

স্ট্রোকের লক্ষণ

  • হঠাৎ করে শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া।
  • কথা বলতে গেলে জড়তা অনুভূত হওয়া।
  • মুখের একপাশ ঝুলে যাওয়া।
  • আচমকা চোখের সমস্যা, যেমন দৃষ্টি হারানো বা অস্পষ্ট দেখা।
  • হঠাৎ করে মাথাব্যথা বা চক্কর আসা।

এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিৎ। স্ট্রোকের অগ্রগতি রোধ করতে এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি কমাতে অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজন।

কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস

হাই কোলেস্টেরল স্তর আপনার শরীরের উচ্চতর ট্রাইগ্লিসারাইড স্তরের সাথে যুক্ত হতে পারে, যা ডায়াবেটিস এবং উচ্চরক্তচাপ সংক্রান্ত অসুখ রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতিগুলি আপনার হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে পারে।

কি করে ডায়াবেটিস প্রভাবিত করে

উচ্চ কোলেস্টেরলের স্তরগুলি কি করে আপনার ডায়াবেটিস ঝুঁকিকে প্রভাবিত করে তা বুঝতে হলে, আপনাকে চর্বির বিপাকের প্রক্রিয়াটি বুঝতে হবে। উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড স্তরগুলি ইনসুলিন প্রতিরোধকে বৃদ্ধি করে এবং প্যানক্রিয়াসে চাপ দেয়, যা ডায়াবেটিসের বিকাশকে প্রশ্রয় দেয়।

স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • হৃদরোগ: হাই ট্রাইগ্লিসারাইড বা উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদযন্ত্রের অসুখ রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • স্ট্রোক: এই চর্বির স্তরের অবস্থান উচ্চ থাকলে মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলিতে ব্লক তৈরি হতে পারে।
  • প্যানক্রিয়াটাইটিস: বেশি মাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইড থাকলে প্যানক্রিয়াসের প্রদাহ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

সুতরাং, যদি আপনি ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে চান এবং সুস্থ থাকতে চান, তাহলে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করে আপনার ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

উচ্চ কোলেস্টেরল দূর করার উপায়

উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো গুরুতর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তবে, সচেতন জীবনযাত্রা এবং নিয়মিত পরিচর্যা এর মাধ্যমে উচ্চ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব। অধ্যায়ন অনুসারে, ফাইবার সমৃদ্ধ ফলমূল যেমন নাশপাতি, আপেল, এবং পেয়ারা কোলেস্টেরল স্তর উন্নত করতে পারে। এছাড়াও, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, মাছ, এবং বীজ খাওয়া স্বাস্থ্যকর।

  • লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন যা সম্পৃক্ত ফ্যাটের উৎস।
  • অ্যালকোহলের মাত্রা সীমিত রাখুন অথবা পরিহার করুন, যা হানিকারক কোলেস্টেরল হ্রাস করতে পারে।
  • ধূমপান ছাড়লে কোলেস্টেরল স্তরের উন্নতি ঘটে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো হয়।

নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম

নিয়মিত ব্যায়াম হলো আরেকটি প্রভাবশালী উপায় যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়, সাঁতার, অথবা অন্যান্য ব্যায়াম করা উচিত।

  1. সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন ব্যায়াম করুন, যা ভালো কোলেস্টেরল মাত্রা বৃদ্ধি করে।
  2. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। একটি আদর্শ শরীরের ভরসূচক (BMI) ১৮ থেকে ২৫-এর মধ্যে রাখুন।
আরও পড়ুনঃ  পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ

যদি এই সহজ ক্রিয়াকলাপগুলি নিয়মিতভাবে অনুসরণ করা হয়, তাহলে উচ্চ কোলেস্টেরলকে দক্ষতার সাথে পরিচালনা করা সম্ভব হতে পারে।

চিকিৎসা বা ঔষধ ব্যবহার

উচ্চ কোলেস্টেরলের চিকিৎসায় ঔষধ প্রয়োগের গুরুত্ব অপরিসীম। যদিও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেক সময়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ঔষধের প্রয়োজনীয়তা এড়ানো যায় না। এমন ক্ষেত্রে, নিয়মিত রক্তপরীক্ষা এবং চিকিৎসক পরামর্শ অত্যাবশ্যক।

কোলেস্টেরল কমানোর ঔষধ

উচ্চ কোলেস্টেরল রোগীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ঔষধ রয়েছে। স্ট্যাটিন, নিয়াসিন, ফাইব্রেট, এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সাপ্লিমেন্টস হল কোলেস্টেরল কমানোর কিছু প্রচলিত ঔষধ। এগুলি কোলেস্টেরল উৎপাদন কমাতে এবং রক্তের মধ্যে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

চিকিৎসকের পরামর্শ

উচ্চ কোলেস্টেরলের শারীরিক জটিলতা এবং অতিরিক্ত ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় নিয়ে, এটি অত্যন্ত জরুরি যে রোগীরা চিকিৎসক পরামর্শ ঠিকমতো অনুসরণ করেন। চিকিৎসক নির্ধারিত ঔষধ, ডায়েট পরিকল্পনা, এবং শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। নিয়মিত রক্তপরীক্ষা এবং ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে চিকিৎসকরা চিকিৎসার প্রভাব লক্ষ্য করতে পারেন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা প্ল্যান পরিবর্তন করতে পারেন।

সাধারণ ভুল বোঝাবুঝি

কোলেস্টেরল নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য মিথ ও ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে যা মাঝে মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করে। জনসাধারণের মধ্যে এই ধারণাগুলি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানানো এবং সত্যিকারের তথ্যের সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

কোলেস্টেরল সম্পর্কে মিথ

কোলেস্টেরল মিথ অনেকাংশে এমন ধারণার উপর নির্ভর করে যে সকল ধরনের কোলেস্টেরল ক্ষতিকর। যদিও এটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। শরীরে HDL, যা উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন বলা হয়, ভালো কোলেস্টেরলের অন্তর্ভুক্ত এবং এটি হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

তথ্যের সঠিকতা

স্বাস্থ্যঝুঁকি বুঝতে সত্য এবং সঠিক তথ্য জানা অত্যন্ত জরুরি। বিভ্রান্তিকর তথ্য থেকে বিরত থাকতে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ এবং নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য সংস্থানগুলি থেকে পরামর্শ গ্রহণীয়।

ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য রক্ষা

আমাদের দৈহিক সুস্থতা সুনিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিয়মিত পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শুধু একটি সুস্থ জীবনযাপনই নয়, বরং আমাদের হৃদয়ের কর্মক্ষমতা, রক্তচাপ, রক্তের শর্করার মাত্রা, এবং চর্বির পর্যায়ক্রম নিয়মিত পরীক্ষা করিয়ে সুস্থতার পূর্বাভাস নেওয়া অপরিহার্য।

নিয়মিত পরীক্ষা

মেটাবলিক সিন্ড্রোমের রোগীরা যাদের অ্যাথেরোস্ক্লেরোটিক কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (ASCVD) এর আপেক্ষিক ঝুঁকি ১.৫ থেকে ৩.০ পর্যন্ত হতে পারে, তাদের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা জীবন রক্ষাকারী হতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণের চিকিত্সা মাদ্ধমে প্রথম বছরে শরীরের ওজন ৭% থেকে ১০% কমানো এবং নিয়মিত শারীরিক অনুশীলনের মাধ্যমে এক সহজ জীবনযাপন সম্ভব।

সচেতনতার গুরুত্ব

স্বাস্থ্য সচেতনতায় লিপিড পরিচালনা, এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ানো, ট্রাইগ্লিসারাইড কমানো, এবং প্রদাহ নিরোধক পদ্ধতি যেমন অ্যাসপিরিন থেরাপির মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা এবং ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ব্লাড প্রেশারের লক্ষ্য নির্ধারণে গভীর ভাবে ধারণা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সবশেষে, নিরোগ জীবনাচরণে লিপোপ্রোটিন (a) এর আচরণ এবং চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপর সঠিক ব্যবস্থাপনা হৃদয়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখার এক অপরিহার্য অংশ।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button