রক্তে SGPT বেড়ে গেলে কি হয়?
রক্তে যখন ALT বৃদ্ধি পায়, তখন এটি প্রায়ই লিভার এনজাইমের অনিয়মিত কার্যক্রম এবং বিপাকীয় ক্ষতির পূর্বসূচনা বহন করে। পুরুষদের জন্য রক্তের SGPT/ALT মাত্রার স্বাভাবিক পরিসীমা প্রতি লিটারে 29 থেকে 33 ইউনিট বলে ধরা হয় এবং নারীদের ক্ষেত্রে এই সীমা হল 19 থেকে 25 ইউনিট। এর অধিক হওয়া মানে হল হেপাটোসেল্যুলার ক্ষতির ইঙ্গিত, যা বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হতে পারে।
উচ্চ মাত্রার SGPT অর্থ হতে পারে যে, লিভারে গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা বিদ্যমান রয়েছে। SGPT পরীক্ষা প্রায়শই লিভারের স্বাস্থ্য মনিটরিং এবং পর্যবেক্ষণের কাজে লাগে, এবং প্রতি লিটারে 56 ইউনিটের বেশি হলে এটি প্রদাহ, সংক্রমণ, অথবা টক্সিক হস্তক্ষেপের সাক্ষী দেয়। স্বাভাবিক মাত্রা থেকে উচ্চতর SGPT মানে হতে পারে দূর্বলতা, বমি ভাব, হালকা রংয়ের মল, পা ফুলে যাওয়া, বিভিন্ন ধরনের ব্যথা, এবং ক্লান্তির মত উপসর্গের উপস্থিতি।
SGPT বা ALT কি?
একটি গুরুত্বপূর্ণ লিভার এনজাইম, SGPT বা এলিন্যাইন অ্যামিনোট্রান্সফেরেজ (ALT), লিভারের স্বাস্থ্য ও কার্যক্ষমতা পরিমাপ করতে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। ALT কার্যাবলী এবং তার এনজাইমের পরিচয় চিহ্নিত করা হয় যা প্রোটিন সংশ্লেষণ এবং আমিনো অ্যাসিডের বিপাকে সাহায্য করে।
SGPT এর সংজ্ঞা
SGPT, যা বর্তমানে ALT নামে পরিচিত, মূলত লিভারের সালামি এবং ক্ষতি নির্ণয়ে ব্যবহার হয়। এটি এক ধরনের অ্যামিনোট্রান্সফেরেজ এনজাইম যা লিভার কোষে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এবং লিভারের ক্ষতির ইঙ্গিত দিতে পারে।
SGPT এর ভূমিকা
SGPT এর মাত্রা লিভারের ক্ষতি এবং সম্ভাব্য রোগ অবস্থা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। এর মাত্রা বাড়লে তা লিভারে সমস্যা সূচিত করে, যেমন হেপাটাইটিস, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, অত্যধিক মদ্যপান, বা অন্যান্য লিভারের রোগ। SGPT স্তরের সাথে সম্পর্কিত নিয়মিত পরীক্ষা লিভারের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য নির্ণয়ে অত্যন্ত জরুরি।
SGPT বৃদ্ধির কারণগুলি
SGPT বা সিরাম গ্লুটামেট পাইরুভেট ট্রান্সামিনেজ লিভারের একটি এনজাইম যা লিভারের স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতার একটি মূল নির্দেশক। SGPT এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া বিভিন্ন লিভার রোগের লক্ষণ হতে পারে, যেমন হেপাটাইটিস এবং ফ্যাটি লিভার। এছাড়াও, অতিরিক্ত মদ্যপান ও কিছু বিশেষ ধরনের ঔষধের কারণে এই এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে যা লিভারে প্রদাহ বা ক্ষতি সৃষ্টি করে।
লিভার রোগ
লিভারের বিভিন্ন ধরনের রোগ, যেমন হেপাটাইটিস এবং ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, SGPT এর মাত্রা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। হেপাটাইটিস, একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে, এবং ফ্যাটি লিভার, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি সঞ্চয়ের ফলে হয়।
বেশি অ্যালকোহল পান
অতিরিক্ত মদ্যপান থেকে লিভার অ্যালকোহলের প্রভাবে বারবার আক্রান্ত হয়, যা লিভার ক্ষয় এবং পরিবর্তিত লিভার কাজকর্মের কারণ হতে পারে। এটি শুধু মদ্যপানের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে না, বরং দীর্ঘমেয়াদী অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাসের ওপরও নির্ভর করে।
চিকিৎসা বা ওষুধের প্রভাব
কিছু ওষুধ বা চিকিৎসা, যেমন টাইলেনোল ও অন্যান্য নন-স্টেরয়েড এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) লিভারের ক্ষতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই ঔষধ প্রতিক্রিয়া গুলি লিভারের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে এবং SGPT এর মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
SGPT বৃদ্ধি কীবার্তা দেয়?
SGPT এর বাড়বাড়ন্ত সাধারণত শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সম্পর্কে সচেতন করে, বিশেষত লিভারের স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে। এই বৃদ্ধি অনেক ক্ষেত্রেই লিভারের রোগ সনাক্তকরণ এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে পরিগণিত হয়।
শরীরে ক্ষতির সংকেত
যখন SGPT এর মাত্রা সাধারণ পরিসীমার উপরে উঠে যায়, তখন এটি শরীরের ভিতরে, বিশেষ করে লিভারে ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়। উচ্চ SGPT মাত্রা লিভার সম্পর্কিত অবস্থা যেমন ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস বা লিভার সিরোসিস উল্লেখ করতে পারে।
লিভারের স্বাস্থ্য
স্বাস্থ্য মানদণ্ড অনুযায়ী, নিয়মিত লিভার পরীক্ষা এবং SGPT পরীক্ষার ফলাফল সচেতনতা বজায় রেখে লিভারের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। স্বাস্থ্যকর লিভারের জন্য, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধূমপান বা অ্যালকোহল পরিত্যাগ করা অত্যন্ত জরুরী।
- SGPT-এর স্তর 56 এককের বেশি হলে তা সম্ভাব্য লিভারের ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়।
- লক্ষণ যেমন দুর্বলতা, বমি ভাব, অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং জন্ডিস যদি দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া উচিত।
লিভারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য মানদণ্ড অনুসরণ করে চলাই এই জটিলতাগুলো থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব।
SGPT পরীক্ষার প্রক্রিয়া
এসজিপিটি পরীক্ষায় লিভারের অবস্থা যাচাই করা হয় এবং এটি বেশ সহজ একটি পরীক্ষার পদ্ধতি। এর মাধ্যমে লিভারের ক্রিয়াকলাপ বুঝতে সাহায্য করা হয়।
পরীক্ষার ধাপগুলি
- প্রথমে, রোগীর থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
- এরপর, নমুনাটি বিশেষ পরীক্ষা যন্ত্রে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।
- লিভার ফাংশন টেস্টের অংশ হিসেবে SGPT এর মাত্রা পরিমাপ করা হয়।
রিপোর্ট বিশ্লেষণ
রিপোর্টে SGPT এর মাত্রা পরিমাপ করে চিকিৎসকরা লিভারের স্বাস্থ্য বুঝতে পারেন। রিপোর্ট পর্যালোচনা করার সময় নিম্নলিখিত তথ্যগুলি মাথায় রাখা হয়:
- বাংলাদেশের স্বাভাবিক SGPT মাত্রা 7 থেকে 56 U/L হওয়া উচিত।
- একটি উচ্চ মাত্রা, যেমন স্বাভাবিকের তিন গুণের বেশি হলে, গুরুত্বপূর্ণ লিভারের ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়।
- পুরুষদের জন্য SGPT এর স্বাভাবিক পরিসীমা 7 থেকে 45 U/L এবং মহিলাদের জন্য এটি 7 থেকে 35 U/L হতে পারে।
এই তথ্য মোতাবেক চিকিৎসকরা রোগীর লিভারের অবস্থান নির্ধারণ করে থাকেন এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দেন।
SGPT বেড়েছে কেন চিন্তা করবেন?
SGPT বা সিরাম গ্লুটামিক-পাইরুভিক ট্রান্সমিনাজের বৃদ্ধি হল লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত, এটি হলে উচ্চমাত্রায় বিপাকীয় সমস্যা এবং লিভার ক্ষতির প্রাথমিক চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। SGPT বৃদ্ধি, বিশেষত ক্লান্তি, খাদ্যে অনীহা ও পেটের অস্বস্তির মতো লক্ষণগুলি সাধারণত লিভারের আঘাতের সূচক হিসেবে দেখা দেয়।
প্রধান লক্ষণ
- খাদ্যে অনীহা
- বাড়তি ক্লান্তি এবং দুর্বলতা
- ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া
- পেটে দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা বা অস্বস্তি
এড়ানোর উপায়
- অ্যালকোহল পান কমানো বা এড়িয়ে চলা।
- স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা, বিশেষ করে ফ্যাটি খাবার এবং চিনিযুক্ত খাবার কমানো।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো।
SGPT মাত্রা বাড়া যদি বিপাকীয় সমস্যা ও লিভার ক্ষতির প্রাথমিক চিকিৎসা সংক্রান্ত সতর্কতা দেয়, তবে নির্দিষ্ট মাত্রায় সেগুলো কীভাবে সামগ্রিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে তা বুঝতে সদা সচেষ্ট থাকা উচিত। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
SGPT বৃদ্ধির চিকিৎসা
যখন SGPT মাত্রা বৃদ্ধি পায়, এর চিকিৎসা প্রধানত লিভার রোগ প্রতিরোধ ও প্রকৃত কারণ নির্ণয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়। সাধারণত, এমন চিকিৎসা গ্রহণ করা হয় যা লিভারের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখে এবং আরও ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি
- ঔষধ চিকিৎসা: এই পদ্ধতিতে বিশেষ ধরণের ঔষধ যা লিভার ক্ষতি কমায় এবং ফাংশনালিটি বজায় রাখে, প্রয়োগ করা হয়। মাদকাসক্তি থেকে সৃষ্ট ক্ষতি, বা ভাইরাল হেপাটাইটিসের ক্ষেত্রে এমন চিকিৎসা সাহায্য করে।
- লিভার রোগ প্রতিরোধ: সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত পরীক্ষা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
জীবনযাত্রা পরিবর্তন
- অ্যালকোহল পরিত্যাগ: অ্যালকোহল সেবন লিভারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং SGPT মাত্রা বাড়ায়, তাই একে এড়িয়ে চলা ভালো।
- জীবনযাত্রা পরিবর্তন: সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম এসজিপিটি মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাপন পরিবর্তনের মাধ্যমে লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব। এতে করে লিভার সম্পর্কিত অসুখ বিসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব হয়।
SGPT এবং অন্যান্য লিভার এনজাইমের সম্পর্ক
লিভারের স্বাস্থ্য বিচারে SGPT এনজাইমের পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, একটি সম্পূর্ণ লিভার প্যানেল পরীক্ষার মাধ্যমে আরও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়, যেখানে AST পরীক্ষা, ALP নির্দেশক এবং GGT মাত্রা অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই এনজাইমগুলির বিভিন্ন মাত্রা লিভারের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি বা রোগের ইঙ্গিত দিতে পারে।
AST এর সাথে তুলনা
AST (Aspartate Aminotransferase) যেহেতু শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলিতেও পাওয়া যায়, এটি SGPT বা ALT উপাদানের সাথে মিলিত হয়ে লিভার ক্ষতির আরও সুনির্দিষ্ট চিত্র প্রদান করতে পারে। AST পরীক্ষা মাধ্যমে লিভারের পাশাপাশি হৃদয় এবং পেশীগুলিতেও সম্ভাব্য ক্ষতি চিহ্নিত করা যায়।
ALP এবং GGT নির্দেশক
-
ALP (Alkaline Phosphatase) সাধারণত হাড় ও লিভার আক্রান্ত হলে তার মাত্রা বেড়ে যায়। ALP নির্দেশক বেড়ে যাওয়া মানে হতে পারে বাইল নালির ব্লকেজ বা লিভার অবনতির ইঙ্গিত।
-
GGT (Gamma-Glutamyl Transferase) মাত্রা প্রধানত লিভারজনিত কারণে বৃদ্ধি পায়। মদ্যপান বা অন্য টক্সিক উৎসের কারণে লিভারে ক্ষতি ঘটলে GGT বেড়ে যায়।
এই পরীক্ষাগুলির সমন্বয়ে ডাক্তাররা লিভারের কার্যকারিতা এবং অবস্থানের সম্পূর্ণ চিত্র পেতে পারেন, যা চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করতে অপরিহার্য।
SGPT বৃদ্ধির লক্ষণ
এসজিপিটি বৃদ্ধি হলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের উপসর্গ ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পরিলক্ষিত হতে পারে যা লিভার ডিজিজ প্রতিক্রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য-এর সাথে সম্পর্কিত। এই লক্ষণগুলি সনাক্ত করা এবং পরিচর্যা নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।
সাধারণ উপসর্গ
- খাদ্যে অনীহা এবং বার বার বমি ভাব।
- পেটের উপরিভাগে ডান পাশে ব্যথা।
- শরীর ও মাথা ব্যথা যা সাধারণ পেইনকিলারে কমে না।
- ত্বক ও চোখের হলুদ ছোপ (জন্ডিস), যা লিভারের সমস্যার একটি প্রধান লক্ষণ।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব
SGPT বৃদ্ধির ফলে দীর্ঘমেয়াদে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে যা লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস করে। এগুলির মধ্যে রয়েছে:
- লিভার ফাইব্রোসিস: এটি ধীরে ধীরে লিভার কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্থ করে, যা পরবর্তীকালে লিভার সিরোসিস বা অন্যান্য গুরুতর অবস্থার জন্য দায়ী হতে পারে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য: এটি পরিপাক প্রক্রিয়া প্রভাবিত করে, যা পেটে ব্যথার সাথে সাথে মলত্যাগের সমস্যা তৈরি করে।
- হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি: লিভার দ্বারা বিষাক্ত পদার্থগুলি যথাযথভাবে বিপাক না হওয়ার ফলে মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে, যা মানসিক দুর্বলতা এবং অন্যান্য নিউরোলজিকাল সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এসজিপিটি বৃদ্ধি সহজে উপসর্গ সনাক্তকরণ এবং প্রতিকার করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সঠিক চিকিৎসা ও পরিচর্যার মাধ্যমে অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
SGPT নিয়ন্ত্রণের উপায়
লিভারের স্বাস্থ্য বাড়ানো এবং SGPT নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সুষম আহার ও নিয়মিত শরীর চর্চা অত্যন্ত জরুরি। এই দুটি উপাদানের মাধ্যমে লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য
সুষম আহারের অভ্যাস গড়ে তোলা এসজিপিটির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এবং লিভারের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।
- প্রচুর ফল ও সবজি গ্রহণ করুন।
- ট্রান্স ফ্যাট এবং হাইড্রোজেনেটেড চর্বি এড়িয়ে চলুন।
- চিনিযুক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন চিকেন, মাছ এবং ডাল নিয়মিত গ্রহণ করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম
রোজকার জীবনে শরীর চর্চা অত্যাবশ্যক। এটি লিভারের স্বাস্থ্য বাড়ানোর পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।
- সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করুন।
- যোগব্যায়াম, দ্রুত হাঁটা, সাঁতার কাটা বা সাইক্লিং যেমন ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যান।
- টেলিভিশন দেখার সময় এবং ডেস্কে কাজ করার সময় নিয়মিত বিরতি নিন এবং সক্রিয় থাকুন।
সুষম আহার ও নিয়মিত শরীর চর্চা পাশাপাশি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পেশাদার মেডিকেল পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এসব কার্যকলাপ মিলিতভাবে লিভারের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি ও SGPT নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
লিভার সুস্থতা বৃদ্ধির টিপস
লিভার আমাদের শরীরের যকৃত অর্গান যা বিষাক্ত পদার্থ পরিশোধন করে এবং পরিষ্কার লিভার স্বাস্থ্য অবস্থানের নানা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিনের জীবনে সহজ কিন্তু কার্যকরী টিপস মেনে চললে লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পান
- হাইড্রেশন: প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করা লিভারের সুস্থতা বজায় রাখে। পানি লিভারকে পরিষ্কার করতে এবং টক্সিন মুক্ত করতে সাহায্য করে।
- দৈনিক আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করুন, যা শরীর হাইড্রেটেড রাখতে এবং লিভার সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
স্ট্রেস কমানোর কৌশল
- ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম, বিশেষ করে মেডিটেশন ও যোগা, শরীর এবং মনের চাপ হ্রাস করে, যা স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট প্রচার করে।
- দিনের শেষে কিছু সময় নিজের জন্য ব্যয় করুন, এটি মানসিক চাপ কমায় এবং লিভারের কাজ সহজ করে।
সব মিলিয়ে, পরিষ্কার লিভার সুরক্ষিত রাখতে এবং দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হাইড্রেশন এবং পর্যাপ্ত স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এর উপর জোর দেওয়া উচিত।
চিকিৎসকের সাথে কখন যোগাযোগ করবেন?
রক্তে SGPT মাত্রা বারলে তা হয়তো লিভারের এক গভীর সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। অতএব, নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ প্রত্যক্ষ করলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা ছাড়া SGPT মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যার ফলে গুরুতর লিভার ক্ষতি ঘটতে পারে।
জরুরী লক্ষণ
যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য অব্যাহত কাশি, ক্লান্তি, ওজন হ্রাস, অতিমাত্রায় ঘাম, বা শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে তা হতে পারে জরুরি সাহায্য প্রয়োজনের সংকেত। এই ধরনের লক্ষণগুলি অবহেলা না করা এবং অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
নিয়মিত পরীক্ষার গুরুত্ব
স্বাস্থ্য সংরক্ষণ এবং বিকল্প চিকিৎসা খোঁজার জন্য নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে পরীক্ষা এবং পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষত, যারা ইভাব্রাড 5mg ট্যাবলেট বা অন্যান্য অসংগত ওষুধ গ্রহণ করছেন, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করা উচিত যা লিভার বা অন্যান্য অঙ্গে অপ্রতিকূল প্রভাব ফেলে না।