সরকার বলতে কী বুঝায় – সংজ্ঞা এবং পরিচিতি
সরকার কী, এবং তারা কীভাবে ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করে, এর সংজ্ঞা ও পরিচিতি বুঝতে গেলে আমাদের এক জটিল কিন্তু মৌলিক ধারণার প্রতি নজর দিতে হবে। একটি রাজ্য বা প্রদেশে, সরকারের কাজ হল নাগরিক পরিচালনা, আইনের শাসন বজায় রাখা, এবং জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা সরবরাহ করা। বিভিন্ন ধরনের সরকার রয়েছে, যেমন গণতান্ত্রিক সরকার যা জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে এবং সরকারের কার্যক্রম প্রায়শই জনমত ও অর্থনীতির উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়।
সরকারের সংজ্ঞা অনুযায়ী, এর গঠন ও দায়িত্বে অনেক স্তরিত এলাকা আচ্ছাদন করতে হয়, যার মধ্যে রয়েছে সামাজিক মতবাদ, বৈশ্বিক এবং স্থানীয় প্রাদেশিক সুবিধা, এবং অবশ্যই নীতিমালা প্রণয়ন। একটি সুদৃঢ় সরকার তার নাগরিকদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষার মাধ্যমে জীবনের মানোন্নয়ন সাধন করে। সরকারের কর্তৃত্ববাদ এবং উৎস কীভাবে ক্ষমতার গঠন ঘটায় এবং তা কীভাবে একটি জাতির প্রগতিশীল উদ্যোগগুলির বিকাশে ভূমিকা রাখে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারের সংজ্ঞা
একটি রাষ্ট্রের মধ্যে সরকারের কেন্দ্রীয় ভূমিকা ও কার্যক্রম রূপায়ণ অত্যন্ত জরুরি। সরকার তার সরকারের উদ্দেশ্য মাধ্যমে নীতি নির্ধারণ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের দিকনির্দেশ এবং জাতীয় নিরাপত্তা প্রদানে অগ্রসর হয়। সরকারের কর্মপ্রণালী জাতির প্রয়োজন মিটানোর লক্ষ্যে বিবিধ উপায়ে পরিচালিত হয়।
রাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য
রাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য হলো তার নাগরিকদের জীবনযাত্রা উন্নত করা, অর্থনৈতিক দৃঢ়তা অর্জন, সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং সাংবিধানিক মূল্যবোধ উন্নীত করা। এ উদ্দেশ্যগুলি দেশের সরকারের কর্মপ্রণালী দ্বারা সংহত করা হয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক গঠন মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।
সরকারের বিভিন্ন রূপ
সরকারের বিভিন্ন রূপসমূহ ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত এবং ভৌগলিক অবস্থান অনুসারে গঠিত হয়েছে। যেমন, গণতন্ত্রে সরকারের রূপসমূহ মানুষের সরাসরি অংশগ্রহণ অথবা প্রতিনিধিদের মাধ্যমে চালিত হয়। আবার, একনায়কতন্ত্রে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ছায়াতলে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। অধিকার বা কর্তৃত্ববাদী পদ্ধতির সরকারের কর্মপ্রণালী ব্যক্তি বা ছোট গ্রুপের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে যায়, যা অন্যান্য ডেমোক্র্যাটিক প্রক্রিয়া থেকে পৃথক। প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বের অন্যান্য অংশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের গঠনেও এই সরকারের রূপের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
সরকারের প্রধান ভূমিকা
সরকারের তিনটি প্রধান ভূমিকা হলো অর্থনীতির উন্নয়ন, সামাজিক সেবা উন্নয়ন এবং জাতীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এই ভূমিকাগুলির মাধ্যমেই একটি সরকার তার জাতির মৌলিক চাহিদা ও অধিকার সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন
অর্থনীতির উন্নয়ন সরকারের একটি মৌলিক দায়িত্ব। এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে নাগরিকদের জীবনমান বৃদ্ধি করে। সরকার বিভিন্ন প্রকল্প এবং নীতিমালা গ্রহণ করে যা বিনিয়োগ, শিল্পায়ন, বেকারত্ব হ্রাস, এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে।
সামাজিক সুরক্ষা
সামাজিক সেবা প্রদান এবং সামাজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা সরকারের আরেকটি জরুরি দায়িত্ব। সামাজিক নিরাপত্তা প্রোগ্রামগুলি, যেমন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা, নিরাপত্তার সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরি করে যা নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
জাতীয় নিরাপত্তা
জাতীয় সুরক্ষা অপরিহার্য এবং সরকারের অন্যতম প্রাথমিক দায়িত্ব। এটি দেশকে বাহ্যিক হুমকি এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা থেকে রক্ষা করে। সরকার জাতীয় রক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং জননিরাপত্তা সেবাগুলো যেমন পুলিশ, সেনাবাহিনী, এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দ্বারা এই নীতিমালা কার্যকর করে।
সরকারের কার্যকরী কাঠামো
বাংলাদেশের সরকারের কার্যকরী কাঠামো তিনটি প্রধান শাখা নিয়ে গঠিত: নির্বাহী শাখা, আইন প্রণয়ন শাখা, এবং বিচারিক শাখা। প্রতিটি শাখার নিজস্ব দায়িত্ব ও ক্ষমতা রয়েছে যা সাংবিধানিকভাবে সংরক্ষিত।
নির্বাহী শাখা
নির্বাহী শাখা সরকারের দৈনন্দিন কার্যক্রমের পরিচালনা করে এবং নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত করে। এই শাখা রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়ন, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা, এবং জাতীয় সুরক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত।
আইন প্রণয়ন শাখা
আইন প্রণয়ন শাখা সরকারের আইনগত কাঠামোর মূল ভিত্তি। এই শাখাটি নতুন আইন তৈরি, সংশোধন এবং বাতিলের ক্ষমতা রাখে। এর মাধ্যমে সমাজের ন্যায়বিচার এবং সুশাসন সমুন্নত হয়।
বিচারিক শাখা
বিচারিক শাখা আইনের শাসন বজায় রাখে এবং বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করে। এই শাখা আইনগত বিরোধ নিরসনে চূড়ান্ত অভিযোগের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ন্যায়বিচারের গুরুত্ব উপলব্ধি করে।
সমগ্র সরকারের কার্যকরী কাঠামো এই তিন শাখার মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীন এবং বহিরাগত কার্যক্রম সুসংহত ভাবে পরিচালনা করে থাকে। এর ফলে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা এবং প্রগতি সম্ভব হয়।
সরকারের বিভিন্ন ধরণ
সরকার বিভিন্ন রূপে বিদ্যমান, যা প্রধানত তিন প্রকার। প্রথমত, গণতন্ত্রের সরকার যেখানে ক্ষমতা জনগণের হাতে থাকে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব নির্ধারিত হয়। দ্বিতীয়ত, একনায়কতন্ত্র যেখানে ক্ষমতা একজন বা একটি ছোট গোষ্ঠীর হাতে থাকে এবং কোনোরকম জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়াই সরকার পরিচালিত হয়। তৃতীয়ত, রাজতান্ত্রিক সরকার যা রাজা বা রাণী দ্বারা পরিচালিত হয় এবং ঐতিহ্যগতভাবে রাজপরিবারের ক্ষমতা প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরিত হয়।
গণতান্ত্রিক সরকার
গণতন্ত্রের সরকারে প্রতিটি নাগরিকের অভিমতের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই ধরনের সরকারে, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধিদের বেছে নেয়।
স্বৈরশাসক সরকার
একনায়কতন্ত্রের অধীনে, ক্ষমতা সীমিত সংখ্যক ব্যক্তির হাতে থাকে। এই ধরনের সরকার প্রায়ই জোরপূর্বক ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে এবং সাম্রাজ্যবাদ প্রবণতার দিকে ঝুঁকে থাকে।
রাজতান্ত্রিক সরকার
রাজতান্ত্রিক সরকারে রাজা বা রাণীর হাতে ক্ষমতা থাকে। এ ধরনের সরকারে কোনো নির্বাচনের প্রয়োজন নেই এবং ক্ষমতা রাজপরিবারের মধ্যে প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরিত হয়।
প্রতিটি সরকারের ধরণ তার নিজস্ব গুণাবলী এবং সীমাবদ্ধতা বহন করে। গণতান্ত্রিক সরকার ভোটের মাধ্যমে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে, একনায়কতন্ত্রের সরকার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রয়োগ করে, এবং রাজতান্ত্রিক সরকার ঐতিহাসিক ঐতিহ্য এবং প্রতীকী মূল্যের ওপর জোর দেয়। এই বৈচিত্রময় সরকারী কাঠামোগুলি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক সামাজিক পরিস্থিতির ভিন্নতা প্রতিফলন করে।
সরকারের নীতিমালা ও আইন
রাষ্ট্রের নীতিমালা এবং আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের ভূমিকা অপরিসীম। সঠিকভাবে নীতিমালা প্রণয়ন এবং আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়া
নীতিমালা প্রণয়নের প্রক্রিয়াটি বিস্তৃত এবং জটিল। এরমধ্যে নীতিগত পর্যালোচনা, পুনর্বিবেচনা, এবং বিভিন্ন স্তরে সমন্বয় রয়েছে। সঠিক পরামর্শ ও গণমুখী আলোচনা এর অপরিহার্য অংশ।
জাতীয় আইন এবং প্রাদেশিক আইন
জাতীয় আইন পুরো দেশের জন্য প্রযোজ্য হয়, যেখানে প্রাদেশিক আইন নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য বিশেষ নীতি এবং আইন গ্রহণ করে। প্রাদেশিক আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী নীতি প্রণয়ন করা হয়।
- নীতিমালা প্রণয়ন: এটি জাতীয় স্তরে ব্যাপক প্রযোজ্যতার সাথে সঞ্চালিত হয়।
- আইন প্রণয়ন: বিভিন্ন আইনগত নীতি ও প্রযুক্তিগত বিষয় অনুসরণ করে আইন প্রণয়ন হয়।
- প্রাদেশিক আইন: এটি অঞ্চল বিশেষের উন্নতির লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয়।
এভাবে সরকার নানা স্তরের আইন এবং নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকে, যা পুরো দেশ এবং অঞ্চল বিশেষের উন্নয়নে জরুরি ভূমিকা রাখে।
সরকার ও নাগরিকদের সম্পর্ক
সরকার এবং নাগরিকদের মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক গড়ে তুলতে গেলে উভয় পক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরিহার্য। এই সম্পর্কের ভিত্তি হলো নাগরিক অধিকার ও নাগরিক কৰ্তব্য, সেইসাথে সরকারি দায়িত্ব।
নাগরিক অধিকার
নাগরিকদের অধিকারগুলি তাদের মৌলিক স্বার্থসমূহ সুরক্ষিত ও প্রসারিত করে, যা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি সৃষ্টি করে। এই অধিকারগুলোতে ব্যক্তির মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, শিক্ষা অধিকার, ও ধর্মীয় স্বাধীনতা অন্যতম।
দায়িত্ব ও কর্তব্য
- নাগরিকদের কর্তব্য হল আইন মেনে চলা এবং জাতীয় সুরক্ষায় অবদান রাখা।
- ভোটদান এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ ও সৎ ও জবাবদিহি প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশ নেওয়া।
- শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক হওয়ার মাধ্যমে সমাজের উন্নতি সাধন করা।
সরকারের পক্ষ থেকেও বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা; একটি সুশাসনকালীন পরিবেশ তৈরি করা যেখানে নাগরিকদের ভালবাসা ও সমান অধিকার গ্যারান্টি করা হয়। এর ফলে কেবল সমৃদ্ধি নয়, আস্থা ও সদ্ভাব সৃষ্টি হয়, যা জাতীয় অগ্রগতির স্বার্থে অপরিহার্য।
স্থানীয় সরকার
বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার প্রশাসনের একটি অপরিহার্য অংশ যা সাধারণ মানুষের জীবনের নানাবিধ প্রশাসনিক ও সামাজিক কার্যকলাপ সম্পাদন করে থাকে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত করা।
উপজেলা পরিষদ
উপজেলা স্তরে উপজেলা পরিষদ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সংস্থা যা স্থানীয় উন্নয়ন ও সাধারণ সেবার ব্যবস্থাপনায় কাজ করে। এই পরিষদ স্থানীয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট, পানি সরবরাহ প্রভৃতি সেবার উন্নতির জন্য কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নিয়োজিত থাকে।
পৌরসভা
অন্যদিকে, পৌরসভা হলো আরেকটি স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান যা শহরাঞ্চলের উন্নয়ন ও পরিচ্ছন্নতা, স্থানীয় পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা এবং শিক্ষার উন্নতির কাজে নিয়োজিত। এছাড়াও তারা জনসাধারণের কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে।
এগুলি বিবেচনায় নিয়ে, স্থানীয় সরকারের গুরুত্ব এবং ভূমিকা আমাদের সামাজিক এবং প্রশাসনিক উন্নয়নে অপরিসীম। পৌরসভা এবং উপজেলা পরিষদ এর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে সুশাসন, পারদর্শিতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতে পারে, যা সর্বোপরি জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখে।
সরকারের অর্থায়ন
সরকারি অর্থায়নে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ সংগ্রহ এবং ব্যয়ের পরিকল্পনা জড়িত। রাজস্ব আদায় ও বাজেট প্রণয়ন এই দুই প্রক্রিয়াতে প্রধান ভূমিকা রাখে।
রাজস্ব আদায়
রাজস্ব আদায় সরকারের মূল অর্থায়নের উৎস। রাজস্ব প্রধানত কর, শুল্ক, ফি ও অন্যান্য মাধ্যমে আসে। মোট রাজস্বের বেশিরভাগই সরাসরি ও পরোক্ষ কর থেকে প্রাপ্ত। গত দশকে, সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচিতে আধানের প্রায় ৫০% অর্থ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হয়েছে।
বাজেট প্রণয়ন
বাজেট প্রণয়ন হলো রাজস্ব পরিকল্পনার অপর একটি প্রধান উপাদান। বাজেটের মাধ্যমে সরকার অর্থায়ন এর বিভিন্ন উৎস প্রত্যয়িত করে, সেটি হতে পারে কর রাজস্ব অথবা কর-বহির্ভূত আয় যা সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আসে। ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরে প্রায় ৫৮% প্রধান সম্পদ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহিত হয়েছে, যা বাজেট অর্থায়নের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
সরকারের সামাজিক দায়бদ্ধতা
একটি দেশের মূল স্তম্ভগুলির মধ্যে সরকারের ভূমিকা অপরিসীম। বিশেষত, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবায় বিনিয়োগ এবং দারিদ্র্য মোচনের মাধ্যমে সরকার তার সামাজিক দায়িত্ব পালন করে থাকে। এই ক্ষেত্রগুলিতে যথাযথ বিনিয়োগ সমাজের উন্নয়নের গতিপথ নির্ধারণ করে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ
শিক্ষাগত বিনিয়োগ শিক্ষা বিনিয়োগ একটি প্রধান ক্ষেত্র যা সরকারের অন্যতম প্রাধান্য। উন্নত শিক্ষাক্রম এবং আধুনিক শিক্ষার সুযোগ সকলের জন্য সুলভ করার মাধ্যমে একটি জাতি তার সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভাবিষ্যত নির্ধারণ করে।
- যোগ্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ
- শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি
- প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা বিস্তার
- উচ্চ শিক্ষায় গবেষণার উন্নয়ন
স্বাস্থ্য সেবা ক্ষেত্রে সরকারি বিনিয়োগ জনস্বাস্থ্যের মানোন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রতম কমিউনিটি পর্যন্ত সুস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার একটি মাধ্যম।
- দুর্গম এলাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন
- মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা
- মুক্ত ভ্যাকসিন ড্রাইভ
- আধুনিক মেডিকেল প্রযুক্তি ব্যবহার
দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম
দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প ও কার্যক্রম চালানো হয়, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও দারিদ্র্য মোচন উত্থানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান
- কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প
- পেশাগত প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন
- ঝুঁকিপূর্ণ পারিবারিক সহায়তা
এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে সরকার দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ তৈরি করে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সরকার
বৈশ্বিক মঞ্চে একটি রাষ্ট্রের স্থান এবং প্রভাব বোঝা যায় তার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মাধ্যমে। প্রতিটি সরকারের বিদেশনীতি ও দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক চুক্তি তার অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উন্নয়নে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে। নীচের তথ্যগুলি সামগ্রিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।
পররাষ্ট্র নীতি এবং জোটসমূহ
রাষ্ট্রগুলির সংঘবদ্ধতা অনেক জোট এবং সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়, যেমন আফ্রিকান, ক্যারিবিয়ান ও প্যাসিফিক রাষ্ট্রগুলির এসিপি গ্রুপে ৭৯টি রাজ্যের সদস্যপদ, আরব লীগের সদস্য ২২টি এবং জাতিসংঘ রয়েছে ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্র। এছাড়াও, ন্যাটো অ্যালায়েন্সে ৩০টি সদস্য দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মিলিতভাবে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও সামরিক উন্নয়নে সমন্বিত প্রয়াস জানায়।
আন্তর্জাতিক আদালত যেমন জাতিসংঘের অন্যতম অংশ, তারা ১৭০ এরও বেশি রাষ্ট্রদ্বন্দ্ব মামলা নিষ্পত্তি করেছে, যা প্রমাণ করে বিশ্ব আইনের গুরুত্ব এবং সামঞ্জস্য।
এই ধরনের জোটসমূহ এবং আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলির অবদান রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক স্থিতি বোঝা এবং উন্নত সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। প্রায় ১১ জন নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে সম্পর্কিত যা শান্তি স্থাপন ও জাতিগত সহাবস্থানের গুরুত্বকে আরও জোরদার করে। অতএব, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি রাষ্ট্রের সক্রিয় অংশগ্রহণ তার নিজস্ব উন্নতি এবং বিশ্বের কল্যাণে অপরিহার্য।