বিলিরুবিনের মাত্রা কত হলে জন্ডিস হয়

রক্তের বিলিরুবিন স্তর যখন স্বাভাবিক পরিমাণ 1.2 mg/dL অথবা 25 µmol/L এর নিচে থাকে, তখন শরীর নির্বিঘ্নে কাজ করে। তবে, এই মাত্রা যখন 3 mg/dL অথবা 50 µmol/L বা তার বেশি পর্যন্ত বেড়ে যায়, তখন শরীরে জন্ডিসের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে, যা ইক্টেরাস নামেও পরিচিত। এই উচ্চ মাত্রা দেহের বিভিন্ন অংশ যেমন ত্বক, চোখের সাদা অংশ, এবং মিউকাস ঝিল্লি হলুদ রং ধারণ করাকে উদ্দীপিত করে।

বিশিষ্ট চিকিৎসক ডঃ আবেদ হোসেন অনুযায়ী, রক্তের বিলিরুবিন বাড়লে তা শরীর, চোখ ও প্রস্রাবের হলুদ রংযুক্ত হওয়াকে জানান দেয়। লাল রক্তকণিকার দ্রুত ভাঙ্গন ও বিপুল ধ্বংস, লিভারের ক্ষতির কারণে বিলিরুবিন চয়নতন্ত্রের অকার্যকারিতা অথবা পিত্তনালীর অবরোধজনিত সমস্যা বিলিরুবিন মাত্রা বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

Contents show

জন্ডিস ও বিলিরুবিনের সম্পর্ক কী?

জন্ডিস এবং বিলিরুবিনের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত জটিল এবং বৈজ্ঞানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিলিরুবিন, যা হল হিমোগ্লোবিনের বিপাক জাতীয় পণ্য, তার বৃদ্ধি পেলে জন্ডিসের লক্ষণ প্রকাশ পায়, যা ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়। জন্ডিসের সম্পর্ক সরাসরি বিলিরুবিনের কাঠামো ও কার্যকারিতার সঙ্গে জড়িত।

বিলিরুবিনের ধরণ

বিলিরুবিনের প্রধানত দুই প্রকার হয় – বেঁধে যাওয়া (কনজুগেটেড) এবং বেঁধে না যাওয়া (আনকনজুগেটেড)। বেঁধে যাওয়া বিলিরুবিন জলে দ্রবণীয় হয় এবং লিভার দ্বারা সহজেই প্রক্রিয়াকরণ করা হয়, যখন বেঁধে না যাওয়া বিলিরুবিন হল অধিক বিষাক্ত এবং পিত্তরসের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যেতে পারে না।

জন্ডিসের প্রকারভেদ

জন্ডিসের বিভিন্ন ধরনের মধ্যে প্রিহেপাটিক, হেপাটিক, এবং পোস্টহেপাটিক জন্ডিস অন্যতম। প্রিহেপাটিক জন্ডিস হয় যখন রক্তে হিমোগ্লোবিনের অত্যধিক বিনাশ ঘটে, হেপাটিক জন্ডিস লিভারের ক্ষতির কারণে হয়, এবং পোস্টহেপাটিক জন্ডিস পিত্তনালীর অবরোধের কারণে হয়। ইক্টেরাসের প্রকারভেদ এই তিন ধরনের মধ্যে বিলিরুবিনের মেটাবলিজমের বিভিন্ন পর্যায়ের ইঙ্গিত দেয়।

বিলিরুবিন কি?

বিলিরুবিন মূলত এক ধরনের হেমোগ্লোবিন বিপাকজাত পণ্য যা লাল রক্তকণিকার ভাঙন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। এটি শরীরের বর্জ্য নিষ্কাশনের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে পরিচিত। একবার যখন রক্তকণিকাগুলো ভেঙে যায়, বিলিরুবিন পরিচিতি ধীরে ধীরে লিভার ফাংশনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয়ে বিলির সাথে মিশে যায়।

বিলিরুবিনের উৎপত্তি

বিলিরুবিনের উৎপত্তি ঘটে হেমোগ্লোবিন বিপাক থেকে। যখন লাল রক্তকণিকা তার জীবনচক্র শেষ করে, হেমোগ্লোবিন যৌগ ভেঙে বিলিরুবিনে পরিণত হয়, যা অপরিহার্যভাবে লিভারে পরিশোধনের জন্য পাঠানো হয়।

আরও পড়ুনঃ  পা ও পায়ের অবশতা থামানোর উপায়

বিলিরুবিনের কার্যকারিতা

এই যৌগের প্রধান কাজ হলো শরীরের জৈবিক নিষ্কাশন প্রক্রিয়া সহায়তা করা। এটি লিভার দ্বারা পরিপাকতন্ত্রে পাঠানো হয় এবং বিলি সাথে মিশে যায় যা সহায়ক হয় মেটাবলিজমে। ওভারঅল লিভার ফাংশন এবং সুস্থ হজম প্রক্রিয়ার জন্য এটি অপরিহার্য। অতিরিক্ত বিলিরুবিন হলে তা শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সূচক হতে পারে, যেমন জন্ডিস।

স্বাস্থ্যের জন্য বিলিরুবিনের গুরুত্ব কত?

বিলিরুবিনের স্তর ও এর স্বাস্থ্য প্রভাব মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে লিভার ফাংশন ও সাধারণ স্বাস্থ্য নিরীক্ষার দিক থেকে। নির্দিষ্ট পরিসীমার বাইরে বিলিরুবিনের মাত্রার প্রভাব হতে পারে বিপজ্জনক, যা লিভারের কার্যকারিতা নির্দেশ করে

বিলিরুবিনের মাত্রার প্রভাব

স্বাস্থ্যের উপর বিলিরুবিনের উচ্চ মাত্রার প্রভাব হতে পারে নানাবিধ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে, লিভার ফাংশনের ব্যাহত হওয়া ও আক্রান্ত হওয়ার সংকেত দেয় এই উচ্চ মাত্রা। এছাড়াও, উচ্চ বিলিরুবিনের মাত্রা জন্ডিসের সাথে সংশ্লিষ্ট, যা ত্বক ও চোখের সাদা অংশের হলুদাভ হয়ে যাওয়ার প্রধান লক্ষণ।

শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর প্রভাব

বিলিরুবিনের মাত্রা শুধু লিভার ফাংশনের উপর প্রভাব ফেলে না, বরং এর প্রতিক্রিয়ায় শরীরের অন্যান্য বিভাগগুলোর উপরও প্রভাব পড়ে। যেমন, মস্তিষ্ক ও কেন্দ্রীয় নার্ভ সিস্টেমের উপর বিলিরুবিনের অতিরিক্ত মাত্রা হতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকারক। এছাড়াও, হৃদয় ও রক্তসংবহন তন্ত্রের উপর এর প্রভাব কাজ করতে পারে বিলম্বিত ও জটিল ভাবে।

  • লিভারে প্রদাহ ও সংক্রমণজনিত অবস্থার প্রাথমিক ধরণ নির্ণয়।
  • চিকিৎসা অভিজ্ঞানে বিলিরুবিনের মাত্রা পরীক্ষার মাধ্যমে লিভারের ক্ষতির গ্রাহ্যতা।

বিলিরুবিনের সঠিক পরিচর্যা ও নির্ণয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে লিভারের স্বাস্থ্য ও ফাংশন অব্যাহত রাখা সম্ভব। এটি শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষার্থে অপরিহার্য।

জন্ডিসের বিভিন্ন ধাপ

জন্ডিসের উন্নতির সাথে সাথে এর লক্ষণগুলি পরিবর্তিত হয় এবং এটি বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত করা যায়। প্রাথমিক ও গুরুতর এই দুই স্তর জন্ডিসের প্রসার ও গুরুত্ব বোঝাতে সাহায্য করে।

প্রাথমিক স্তর

জন্ডিস সাধারণত ত্বক ও চোখের সাদা অংশের হালকা হলুদাভ রং দিয়ে শুরু হয়, যা জন্ডিসের প্রাথমিক চিহ্ন হিসেবে পরিচিত। এই প্রাথমিক চিহ্নগুলি সাধারণত বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়ার প্রারম্ভিক ইঙ্গিত দেয়। প্রাথমিক জন্ডিস সাধারণত অস্থায়ী এবং কম গুরুতর হতে পারে, তবে এটি পরবর্তী ধাপে জটিল হয়ে উঠতে পারে।

গুরুতর স্তর

যখন জন্ডিস গুরুতর অবস্থায় পৌঁছায়, বিলিরুবিনের মাত্রা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়, যা ক্লিনিকালি বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। গুরুতর জন্ডিসের ক্ষেত্রে, ত্বক ও চোখ গাঢ় হলুদ বা ব্রাউনিশ হয়ে যায়, যা গুরুতর জন্ডিসের লক্ষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। এই স্তরে রোগীর অবস্থা অনেক বেশি সংকটজনক হতে পারে, যার ফলে অবিলম্বে মেডিকেল হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়।

  • হালকা থেকে মাঝারি লক্ষণগুলি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
  • চিকিৎসা না পেলে অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
  • সময়মতো চিকিৎসা রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে।
আরও পড়ুনঃ  কিডনি পাথরের ব্যথা কীভাবে দ্রুত কমাবেন

কিভাবে বিলিরুবিনের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়?

জন্ডিসের ডায়াগনোসিসের জন্য বিলিরুবিন পরীক্ষা অপরিহার্য। এই রক্ত পরীক্ষাপদ্ধতি মূলত বিলিরুবিনের স্তর পরিমাপ করে, যা লিভারের ফাংশন এবং অবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর।

রক্ত পরীক্ষার প্রক্রিয়া

রক্ত পরীক্ষার পদ্ধতি অনুসরণ করে চিকিত্সকরা বিলিরুবিনের মাত্রা নির্ণয় করেন। রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার পরে, বিশেষজ্ঞ ল্যাবরেটরি তা বিশ্লেষণ করে। এই পরীক্ষায় সরাসরি এবং পরোক্ষ বিলিরুবিনের মাত্রা উভয়ই পরীক্ষা করা হয়, যা সাধারণত জন্ডিস ডায়াগনোসিসে সাহায্য করে।

স্বাভাবিক মাত্রার তুলনা

স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে, সরাসরি বিলিরুবিনের সাধারণ মাত্রা 0 থেকে 0.3 mg/dL এবং মোট বিলিরুবিনের মাত্রা 0.3 থেকে 1.9 mg/dL পর্যন্ত হয়। যদি এই মাত্রা বেশি হয়, তাহলে তা লিভারের সম্ভাব্য সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। নবজাতকদের ক্ষেত্রে পরোক্ষ বিলিরুবিনের সাধারণ মাত্রা 24 mg/dL এর নিচে থাকা প্রয়োজন। এই তথ্য চিকিৎসকদের জন্ডিস এবং অন্যান্য লিভারের রোগ নির্ধারণে সহায়তা করে।

জন্ডিস দেখা দিলে কি লক্ষণ হয়?

জন্ডিসের উপস্থিতি নির্ধারণ করার প্রথম ধাপ হল বিভিন্ন লক্ষণ চিহ্নিত করা, যার মধ্যে জন্ডিস লক্ষণত্বকের পরিবর্তন প্রধান। পরবর্তী ধাপে জন্ডিস নির্ণয় পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

ত্বকে পরিবর্তন

জন্ডিসে আক্রান্ত হলে সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হলো ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া। এই ত্বকের পরিবর্তন অনেক সময়ে সুস্পষ্ট এবং সহজেই লক্ষ্য করা যায়।

অন্য শারীরিক লক্ষণ

  • প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হলুদ বা বাদামি হয়ে যাওয়া।
  • মলের রঙ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, যা পরিপাক তন্ত্রে বিলিরুবিনের উপস্থিতি কম থাকার লক্ষণ।
  • ক্লান্তি ও ভার্চুয়াল অস্বস্তি।

এসব শারীরিক লক্ষণ পরিলক্ষিত হলে অবিলম্বে জন্ডিস নির্ণয় প্রক্রিয়াটি শুরু করা উচিত।

বিভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য বিলিরুবিনের মাত্রা

বিভিন্ন বয়সে বিলিরুবিনের মাত্রা ও তার প্রভাব ভিন্ন। বিশেষ করে নবজাতক জন্ডিস এবং এডাল্ট বিলিরুবিন স্তর নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে অনেক প্রশ্ন থাকে। এই বিষয়ে অধিক ধারণা পেতে নিম্নলিখিত তথ্য উপকারী হবে।

নবজাতকদের জন্য

নবজাতকদের মধ্যে নবজাতক জন্ডিসের দেখা দেওয়া সাধারণ ঘটনা। বিশেষত, জন্মের পর প্রথম সপ্তাহে, নবজাতকের লিভার বিলিরুবিন যথাযথভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে সক্ষম না হওয়ায়, তাদের শরীরে উচ্চ মাত্রায় বিলিরুবিন জমা হতে থাকে। এটি তাঁদের চামড়া এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ করে তোলে। যদি এই অবস্থায় বিলিরুবিনের মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়, তাহলে নবজাতকের জন্য তা জীবনহানিকর হতে পারে।

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে, এডাল্ট বিলিরুবিন স্তরের উচ্চতা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। বিলিরুবিন স্তর সাধারণত 1.2 mg/dL এর নিচে থাকা উচিৎ, তবে এর বেড়ে যাওয়া লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস, লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস এবং লিভার ক্যান্সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগের লক্ষণ হতে পারে। এমনকি কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবেও বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়তে পারে। সঠিক নির্ণয় এবং চিকিৎসা এই সমস্যাগুলির বর্তমান এবং ভবিষ্যত ঝুঁকিকে মোকাবিলা করতে সহায়ক।

আরও পড়ুনঃ  ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

বিলিরুবিন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাব্য কারণ

বিলিরুবিন বৃদ্ধির কারণ বিবেচনা করলে অনেক ক্ষেত্রে লিভার অভিঘাত প্রধান অবদান রাখে। লিভারের সামর্থ্য হ্রাস পাওয়া বিলিরুবিনের উচ্চতর মাত্রাকে ট্রিগার করতে পারে, যা বিভিন্ন লিভার রোগের মাধ্যমে ঘটতে পারে।

লিভার সমস্যা

  • হেপাটাইটিস: এই সংক্রমণ লিভারে প্রদাহ তৈরি করে, যা লিভার কোষগুলির ক্ষমতা হ্রাস করে এবং বিলিরুবিনের প্রক্রিয়াজাতকরণকে বাধাগ্রস্ত করে।
  • সিরোসিস: লিভারের অতিরিক্ত ক্ষতি ঘটলে সিরোসিস হতে পারে, যা বিলিরুবিন মেটাবলিজমে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে।
  • পিত্তনালীতে বাধা: পিত্তনালী বা গলব্লাডারে পাথর জমা হলে, এটি বিলিরুবিনের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে।

ইনফেকশন

ইনফেকশনের ফলে লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি হয় যা বিলিরুবিন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। বিশেষতঃ, ভাইরাল বা ব্যাক্টেরিয়াজনিত ইনফেকশনের সময় লিভারের কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে, এর ফলে বিলিরুবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

এই রোগগুলির প্রতিরোধ ও সঠিক চিকিৎসা লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং ভবিষ্যতে বিলিরুবিনের অতিরিক্ত বৃদ্ধি এড়ানোর জন্য অপরিহার্য। বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত চেকআপ ও চিকিৎসার পরামর্শ নেওয়া উচিত।

জন্ডিসের

জন্ডিস মূলত লিভার বা পিত্তনালীর সমস্যা হিসাবে প্রকাশ পায়, এবং এটি তখন হয় যখন লাল রক্ত কোষ ভেঙ্গে প্রাপ্ত বিলিরুবিন লিভারের দ্বারা পরিশোধন করা সম্ভব না হলে। নবজাতক এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য জন্ডিসের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। নবজাতকদের প্রায় ৬০% ক্ষেত্রে জন্মের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জন্ডিসের চিহ্ন দেখা যায়। স্বাভাবিক বিলিরুবিনের মাত্রা ১ মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটারের (মিগ্রা/ডিএল) কম হওয়া উচিত; এবং আনুমানিক ৩ মিগ্রা/ডিএল মাত্রার দিকে ইঙ্গিত করে জন্ডিস হতে পারে। চিকিৎসকরা নবজাতকদের বিলিরুবিনের মাত্রা প্রতিদিন ৫ মিগ্রা/ডিএল অথবা প্রতি ঘণ্টায় ০.২ মিগ্রা/ডিএলের বেশি বৃদ্ধি পেলে জন্ডিস ধরা পড়ে।

জন্ডিসের থেকে মুক্তির জন্য চিকিৎসার উপায় সরাসরি সম্পর্কিত হয় এর মূল কারণের সাথে। এই মূল কারণের মধ্যে থাকতে পারে পাথর জনিত পিত্তরোগ, অত্যধিক মদ্যপান, লিভার ইনফেকশন, হেমোলিটিক অ্যানিমিয়া, ইত্যাদি। এর চিকিৎসা হতে পারে জীবনযাত্রার পরিবর্তন, খিত্তির জন্য ওষুধ এবং গুরুতর অবস্থায় লিভার ট্রান্সপ্লান্ট।

মানুষ তাদের লিভারের যত্ন নিতে পারে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম, অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করে, এবং বিষাক্ত পদার্থ এড়িয়ে চলে। জন্ডিসের সুস্পষ্ট লক্ষণের মধ্যে রয়েছে ত্বক, মিউকাস ঝিল্লি, চোখের হলুদাভ হওয়া, ফ্যাকাশে মল, গাঢ় প্রস্রাব এবং চুলকানি।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button