ঘুম না আসলে করণীয় কি?

জীবনযাপনে সুস্থ্য এক নিয়ামক হলো ঘুম, যার অভাব বা ঘুমের সমস্যা ব্যক্তিগত পারফরমেন্স এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে। বিবিসি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা, শিশুদের ৯ থেকে ১৩ ঘণ্টা, এবং নবজাতকদের ১২ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। অনিদ্রা সমস্যা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির সাথে যুক্ত। সঠিক ঘুম সমাধানের অভাবে স্মৃতিলোপ, মস্তিষ্কের সমস্যা, এমনকি নিদ্রা ব্যাঘাত ঘটতে পারে, বিশেষত যদি চলিত জীবনধারায় ঘুমানোর সংস্কৃতি অনুপস্থিত থাকে।

ঘুমের সমস্যার ঘটনাগুলি বিভিন্ন ধরনের অভ্যাস ও পরিবেশের কারণে ঘটতে পারে যেমন, রাত জাগা, ক্যাফেইনের অতি সেবন, কিংবা বিছানার পরিবেশ না হওয়ায়। বিশ্রামদায়ক ঘুমের জন্য ঘুমের টিপস আছে যেমন গাঢ় চকোলেট, কলা, গরম দুধ, মধু খাওয়া। ম্যাগনেসিয়াম এবং মেলাটোনিন সমৃদ্ধ খাবার ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক। অতএব, আমাদের প্রতিরাতে কেমন ঘুমাচ্ছি সে বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

Contents show

ঘুমের অভাবের কারণগুলো জানুন

প্রত্যেক মানুষের জীবনে ঘুম একটি অপরিহার্য দিক যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতা নিশ্চিত করে। তবে, নানা কারণে মানুষ ঘুমের অনিদ্রার কারণ, মানসিক চাপ এবং জীবনযাত্রা যেমন শারীরিক অসুবিধা ব্যাপক ছন্দপতনের মুখে পড়ে।

শারীরিক সমস্যাগুলি

শারীরিক সমস্যা যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ও নিম্ন রক্তচাপ ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে। এই সমস্যাগুলি শরীরে অস্বস্তি সৃষ্টি করে এবং ঘুম ভালো হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অনিদ্রাও দেখা দিতে পারে।

মানসিক চাপের প্রভাব

চাপ এবং মানসিক দুশ্চিন্তা হলো অনিদ্রার আরেকটি প্রধান কারণ। যখন মানসিক চাপের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে ঘুমের মাধ্যমে বিশ্রাম নিতে ব্যর্থ হয়। এটি অনিদ্রার একটি প্রধান কারণ যা নিয়ন্ত্রণে না আনলে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যগত জটিলতায় পরিণত হতে পারে।

জীবনযাত্রার অভ্যাস

অস্থির জীবনযাত্রা ও অস্বাস্থ্যকর ডায়েট, যেমন অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা চিনি গ্রহণ, অনিয়মিত ঘুমের সময়সূচি, এবং অত্যধিক মাধ্যম ব্যবহার ইত্যাদি ঘুমের চক্রকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।

সুতরাং, এই সমস্যাগুলোর সমাধানে সাবধানতা ও পরিকল্পিত উদ্যোগ আবশ্যিক। সন্ধ্যা থেকে ক্যাফেইন এবং ভারী খাদ্যাভ্যাস এড়িয়ে চলার মাধ্যমে, সেইসাথে নিয়মিত ব্যায়াম ও বিশ্রাম তথা সুস্থ জীবনযাত্রা গ্রহণের মাধ্যমে ঘুমের মান উন্নত করা সম্ভব।

ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে কেন?

নিদ্রা হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অপরিহার্য অংশ, এবং সঠিক ও প্রশান্তিদায়ক ঘুমানোর পরিবেশ তৈরি করার মাধ্যমে আমরা তা নিশ্চিত করতে পারি।

আরও পড়ুনঃ  অন্ডকোষ ছোট বড় হওয়ার কারন ও প্রতিকার

বিছানার পরিবেশের গুরুত্ব

ভালো ঘুমের জন্য পরিবেশ যথেষ্ট প্রশান্তিদায়ক ও আরামদায়ক হওয়া চাই। অনেকেই বলে থাকেন, শীতল তাপমাত্রা একটি আদর্শ ঘুমানোর পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ, ঘরের তাপমাত্রা যদি কম থাকে তাহলে তা আমাদের ঘুমের গুণগত মান বাড়াতে সহায়ক।

  • ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ব্যবহার করা হয় অ্যায়ার কন্ডিশনার বা ফ্যান
  • হালকা রঙের পর্দা বা ব্লাইন্ডস ব্যবহার করা যায় আলো নিয়ন্ত্রণের জন্য

ঘুম থেকে ওঠার সময়সূচি

একটি নিয়মিত তালিকা অনুসরণ করা আমাদের শারীরিক ঘড়ি বা সারকাডিয়ান রিদমকে নিয়মিত করে তোলে, যা নিদ্রার গুণগত মান বাড়ায়। প্রতি রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং প্রতি সকালে একই সময়ে উঠে পড়া উচিত।

  1. ঘুমানোর সময় এবং জেগে ওঠার সময়টি সঠিকভাবে নির্ধারণ করুন
  2. ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন, টেলিভিশন ইত্যাদি থেকে নিবির্তন জরুরি
  3. 리레ive days per week.

উপকারী কিছু অভ্যাস গ্রহণ করুন

সুস্থ ও পরিপূর্ণ ঘুমের জন্য কিছু সহজ অভ্যাস গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এই নির্দেশিকা আপনাকে ঘুম বাড়ানোর অভ্যাস তৈরির কিছু পদক্ষেপ জানাবে যা আপনাকে ভালো ঘুমের সহায়তা করবে।

রাতে গরম স্নান করা

রাতে গরম পানিতে স্নান আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে ঘুমের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। গরম স্নানের উপকারিতা অপরিসীম, এটি মাংসপেশীগুলির টান কমিয়ে আরাম দেয় এবং মানসিক চাপ হ্রাস করে, যা নিশ্চিন্ত ঘুমের জন্য আদর্শ।

সঠিক খাবার নির্বাচন

রাতের খাবারের নির্বাচন সতর্কতার সাথে করা উচিৎ। হালকা ও সহজপাচ্য খাবার নির্বাচন করা জরুরি। মশলাদার বা ভারী খাবার খাবার নির্বাচন হিসেবে উপযুক্ত নয়, কারণ এগুলি হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে যা ঘুমের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখার জন্য কম ক্যালোরি সমৃদ্ধ আহার গ্রহণ করুন।

  • শরীরকে হালকা অনুভব করার জন্য ফলমূল ও সবজি খান।
  • প্রোটিনযুক্ত খাবারগুলি, যেমন ছোট মাছ বা চিকেন ব্রেস্ট, রাতের খাবারে অন্তর্ভুক্ত করুন।
  • ভালো ঘুমের জন্য চিনি যুক্ত খাবার এবং ক্যাফেইন পরিহার করুন।

এই নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করে আপনি ঘুম বাড়ানোর অভ্যাস গড়তে পারবেন যা আপনাকে প্রতিদিন শান্তিপূর্ণ ও পুনরুদ্ধারমূলক ঘুম উপভোগ করতে সাহায্য করবে।

চেষ্টা করুন বিশ্রামদায়ক কার্যকলাপ

প্রতিদিনের জীবনের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে ও রাতের ঘুমকে আরও মধুর ও গভীর করতে বিশ্রাম উপায় অত্যন্ত জরুরি। নিম্নে কিছু সৃজনশীল অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যা আপনার শান্ত মন পেতে সাহায্য করবে।

মেডিটেশন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম

মেডিটেশন এর মাধ্যমে মনকে একাগ্রতা ও শান্তিতে নিয়ে আসা যায়। এটি মানসিক শান্তি বজায় রাখতে এবং স্ট্রেস কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, যেমন ডিপ ব্রিথিং বা প্রাণায়াম, হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে এবং দ্রুত ঘুমের জন্য প্রস্তুতি দেয়।

বই পড়া বা সঙ্গীত শোনা

রাতে বই পড়া অথবা প্রিয় সঙ্গীত শোনা প্রসন্ন মনোভাব সৃষ্টি করে। এই ধরনের কার্যকলাপগুলি মস্তিষ্ককে শিথিল করে, যা বিশ্রাম উপায় হিসেবে কাজ করে।

এই সৃজনশীল অভ্যাসগুলি মিলে একটি শান্ত ও প্রশান্তিপূর্ণ ঘুম আনার প্রক্রিয়াকে সহজতর করে তুলবে। যদিও ঘুমের বিষয়ে অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে, তা আলাদা করে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে

আরও পড়ুনঃ  কিডনি স্টোন প্রতিরোধের উপায় - স্বাস্থ্য টিপস

ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন

ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল উভয়েরই শরীরে উত্তেজক হিসেবে পরিচিতি রয়েছে, যা ঘুমের নানান সমস্যা এবং পরিপূরক উপস্থিতি ঘটিয়ে থাকে। ঘুমের সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য ক্যাফেইন সেবনঅ্যালকোহলের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি।

ক্যাফেইন এর প্রভাব

ক্যাফেইন গ্রহণ মধ্যরাতে ঘুম ভাঙ্গানোর প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি। এটি দেহের স্বাভাবিক ঘুম চক্র ব্যাহত করে, যা ঘুমের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। রাতে ক্যাফেইন সেবন এড়িয়ে চলা উচিত, বিশেষ করে ঘুমের তিন ঘণ্টা আগে থেকে।

অ্যালকোহল ও ঘুম

অ্যালকোহল প্রাথমিকভাবে ঘুম আনার সাহায্য করলেও, এর ঘুমের গভীরতা ও মান হ্রাস করে এবং ঘুম হতে মাঝেমধ্যে জাগিয়ে তোলে। ঘুমোবার আগে অ্যালকোহল সেবনকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সম্ভব হলে এড়িয়ে চলাও ঘুমের মান উন্নতির জন্য কার্যকর।

সবমিলিয়ে, সুস্থ জীবনযাপন ও ঘুমের ব্যাঘাত কমানোর লক্ষ্যে ক্যাফেইন ও অ্যালকোহলের সেবন পরিমিত হওয়া আবশ্যক। একটি সচেতন ও পরিকল্পিত জীবনযাপনের মাধ্যমে আপনি আপনার ঘুমের সমস্যাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং আপনার সার্বিক শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতির দিকে অগ্রসর হতে পারবেন।

ঘুমের জন্য সঠিক অবস্থান নির্বাচন করুন

যখন আমরা নিদ্রা অবস্থান নিয়ে ভাবি, অনেক সময় টুকটাক ব্যাপারও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তন্দ্রা পদ্ধতি এবং বিছানা আয়োজন এই ব্যাপারে আসল চ্যালেঞ্জ। সঠিক নিয়মে ঘুম এবং শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার জন্য আদর্শ অবস্থান খুজে পেতে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা দেখা যাক।

ঘুমের সঠিক ভঙ্গি

আমাদের ঘুমের ভঙ্গি আমাদের নিদ্রা অবস্থানের উপর প্রতিক্রিয়া জানায়। একটি সাধারণ পরামর্শ হলো, পিঠে কিংবা পাশফিরে শোয়া যা মেরুদণ্ড এবং ঘাড়ের সঠিক সমর্থন দেয়। হাত ও পায়ের অবস্থান সঠিক রাখা, যাতে শিরা-উপশিরায় চাপ না পড়ে, সে দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

সঙ্গী ও বিছানার স্থান

যদি আপনি অন্য কারো সঙ্গে বিছানা ভাগ করেন, তবে তন্দ্রা পদ্ধতি এবং বিছানা আয়োজন আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। নিশ্চিত করুন যে বিছানা যথেষ্ট বড় যাতে উভয়ের জন্য যথেষ্ট স্থান থাকে। বিছানার মাত্রা ও বালিশের ব্যবহার নির্বাচন করাও সহজ ঘুমের জন্য অন্যতম উপাদান।

  • কোমর ও ঘাড়ের জন্য উপযুক্ত বালিশ ব্যবহার করা।
  • বিছানায় মানানসই ম্যাট্রেস এবং বসন্ত বাছাই।
  • বিছানার তাপমাত্রা এবং আলো নিয়ন্ত্রণ করা।

এই সকল বিষয় শুধু স্বাচ্ছন্দ্যময় ঘুমের জন্য নয় বরং মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রয়োজন। সঠিক তন্দ্রা পদ্ধতি এবং বিছানা আয়োজন সুস্থ জীবনযাপনের অংশ।

নিন্দ্রা স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার অংশ

আমাদের জীবনে নিন্দ্রা ও স্বাস্থ্যের মধ্যে একটি গভীর যোগাযোগ রয়েছে। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর ঘুম আমাদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতাকে বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা সর্বাধিক কর্মক্ষম জীবন গড়ে তোলার মূল ভিত্তি।

শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য

গবেষণা অনুসারে, নিয়মিত এবং যথেষ্ট ঘুম শরীর থেকে টক্সিন বের করে এবং নানান ধরনের রোগ থেকে আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। স্বাস্থ্যকর ঘুম হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে অবদান রাখে।

আরও পড়ুনঃ  পেটের ফ্লু কিভাবে সারাবেন: টিপস

উৎপাদনশীল জীবনযাপন

পরিস্থিতি যখন চাপানো, তখন নিন্দ্রাজনিত সমস্যাগুলি প্রায়শই আমাদের কর্মক্ষম জীবন প্রভাবিত করে। একটি শান্ত এবং নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস দিনের সকল কর্মের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে তোলে। একটি ভালো রাতের ঘুম মস্তিষ্ককে পরদিনের সমস্যা সমাধান এবং সিদ্ধান্ত নির্ণয়ে আরো কার্যকর করে তোলে।

ঘুমের সমস্যা মোকাবেলার চিকিৎসা পদ্ধতি

স্বাস্থ্যবান জীবনযাপনের জন্য ঘুম অপরিহার্য। অনিদ্রা যেমন একটি সাধারণ সমস্যা, তেমনি স্লিপ অ্যাপ্নিয়া ও অন্যান্য ঘুমের অসুবিধা নিয়ে মানুষ বেশ চিন্তিত। এসব সমস্যা মোকাবেলায় ঘুমের সমস্যা চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।

চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া

যদি রাতের পর রাত আপনি ঘুমাতে না পারেন বা ঘুম ভাঙনের সমস্যায় ভুগতে থাকেন, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। চিকিৎসক নির্ণয় করতে পারেন যে কোন ধরণের চিকিৎসা আপনার জন্য উপযুক্ত হবে।

স্লিপ অ্যাপ্নিয়া ও অন্যান্য সমস্যা

স্লিপ অ্যাপ্নিয়া এমন একটি অবস্থা যেখানে ঘুমের সময় শ্বাসরোধের সমস্যা দেখা দেয়। এটি অনিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। সময়মতো ঘুমের সমস্যা চিকিৎসা শুরু করা এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ঘুম

ঘুম স্বাস্থ্যময় জীবনের জন্য অত্যাবশ্যক, তবে অনেকের জন্য এটি সহজপ্রাপ্য নয়। ঘুমের শৃঙ্খল ভেঙে গেলে তার প্রতিকারের উপায় খুঁজতে হয়। অধ্যয়নের তথ্য মতে, যে কলেজের ছাত্ররা সপ্তাহে তিনদিন বা তার বেশি ঘুমের জন্য সময় নেন এবং প্রতি বার দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘুমান, তাদের ঘুমানোর মান তাদের সমসাময়িকদের তুলনায় নিম্নগামী। অন্যদিকে, ২০১৭ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ৮-১২ সপ্তাহ ধরে প্রতি সপ্তাহে ৪-৫ দিন ৬০ মিনিট করে ব্যায়াম করা প্রাথমিক অনিদ্রার উন্নতি আনতে সহায়ক।

মোবাইল স্ক্রিনে দীর্ঘসময় ধরে তাকানোর অভ্যাস ঘুমের উপর কুপ্রভাব ফেলে, ২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার বেশি সময় বা ঘুমানোর ৩০ মিনিট আগে পর্যন্ত মোবাইলের ব্যবহার ঘুমের ব্যঘাত ঘটায়। তবে, ২০১৯ সালের এক গবেষণা বলছে, যারা ঘুমানোর আগে সঙ্গীত শোনেন, তারা তাদের থেকে ভাল ঘুমান যারা শোনেন না।

সাধারণভাবে প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতিরাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। দিন অথবা সপ্তাহ ধরে স্থায়ী হতে পারে এমন অনিদ্রা অনেক প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ঘটতে পারে, এবং অনেকের মধ্যে তিন মাস বা তদূর্ধ্ব সময় ধরে ঘটতে পারে যা ক্রনিক অনিদ্রা নামে পরিচিত। অনিদ্রা নানান শারীরিক সমস্যা, মানসিক অবসাদ, খারাপ ঘুমের অভ্যাস, এবং নির্দিষ্ট ওষুধের ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত হয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনিদ্রা বৃদ্ধি পায়, যা ঘুমের মান এবং স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। অনিদ্রার পরিণতি হিসেবে কাজ বা স্কুলের কর্মদক্ষতা হ্রাস, গাড়ি চালনা ক্ষমতায় বাধা, মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা, এবং উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের বৃদ্ধির ঝুঁকি অন্তর্ভুক্ত। আমাদের ধাত্রী নিন্দ্রা শক্তিশালী ও সক্রিয় থাকতে এবং ভালো ঘুম নিশ্চিত করার জন্য পারস্পরিক যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button